Ajker Patrika

নিহতের ৬০ বছর পর নেতার সোনায় মোড়ানো দাঁত সমাহিত

আপডেট : ০১ জুলাই ২০২২, ০০: ১৮
নিহতের ৬০ বছর পর নেতার সোনায় মোড়ানো দাঁত সমাহিত

গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর (ডিআর কঙ্গো) স্বাধীনতার নায়ক প্যাট্রিস লুমুম্বা। তিনি খুন হওয়ার ৬০ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। কেবল এসে তাঁর সোনায় মোড়ানো একটি দাঁত সমাহিত করা হলো! অবশ্য লুমুম্বার দেহাবশেষ অ্যাসিডে গলানো হয়েছিল। এই দাঁতটিই তাঁর দেহের সংরক্ষিত একমাত্র অংশ।

নিহত লুমুম্বার দেহ অ্যাসিডে গলানোর তদারককারী বেলজিয়ান পুলিশের এক সদস্য ট্রফি হিসেবে দাঁতটি রেখে দিয়েছিলেন। এটি গত সপ্তাহে পরিবারের কাছে ফিরে এসেছে। এরপর একটি কফিনে করে ডিআর কঙ্গোর বিভিন্ন এলাকায় ঘোরানো হয়েছে।

রাজধানী কিনশাসায় লুমুম্বার সম্মানে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। সেখানেই শেষকৃত্যের আগে হাজার হাজার মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানান।

প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেডি, লুমুম্বার পরিবার এবং অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা পারিবারিক শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন। এরপর কফিনটি বিশেষভাবে নির্মিত সমাধিতে স্থানান্তর করা হয়।

প্যাট্রিস লুমুম্বা ডিআর কঙ্গোর প্রথম প্রধানমন্ত্রী এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা। আফ্রিকার উপনিবেশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান কণ্ঠ ছিলেন তিনি।

বেলজিয়াম আফ্রিকার এই বিশাল দেশটি শাসন করেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়ার ৬২ বছর পূর্তি হয়েছে।

কিন্তু নিয়ন্ত্রণ ছাড়লেও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী প্যাট্রিস লুমুম্বাকে তাদের স্বার্থ রক্ষার বাধা বলে মনে করেছিল বেলজিয়াম। লুমুম্বার কারণে কঙ্গোতে যথেষ্ট প্রভাব বজায় রাখতে পারছিল না বেলজিয়াম।

অ্যাসিডে পুরো দেহ গলানোর সময় লুমুম্বার দাঁতটি রেখে দিয়েছিলেন এক বেলজিয়ান পুলিশ সদস্য১৯৬০ সালে স্বাধীনতা দিবসের বিখ্যাত বক্তৃতায় রাজা বউদুইনসহ বেলজিয়ামের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সামনে ৩৪ বছর বয়সী লুমুম্বা দেশটির তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, বেলজিয়াম কঙ্গোলিজদের ‘অপমানজনক দাসত্বে’ শেকলবদ্ধ রেখেছে।

বেলজিয়ানরা তাঁর এমন বক্তব্যে হতবাক হয়ে গিয়েছিল। কারণ একজন কালো আফ্রিকান ইউরোপীয়দের সামনে এভাবে কথা বলার সাহস করবে এটা শ্বেতাঙ্গদের ধারণার বাইরে ছিল!

এর মাত্র দুই মাস পরেই প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অপসারিত হন লুমুম্বা। এরপর ১৯৬১ সালের জানুয়ারিতে বেলজিয়ামের মদতে তিনি দুই সহযোগীসহ ফায়ারিং স্কোয়াডে নিহত হন।

অন্য পশ্চিমা শক্তিগুলোও লুমুম্বাকে সন্দেহ করতো। তাদের ধারণা ছিল, এই স্নায়ুযুদ্ধের মধ্যে লুমুম্বা সোভিয়েতের প্রতি সহানুভূতিশীল। যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশ তাঁকে একাধিকবার হত্যার চেষ্টা করেছিল। 

জেরার্ড সোয়েট নামে বেলজিয়ামের এক পুলিশ সদস্যের দায়িত্ব ছিল সব প্রমাণ মুছে ফেলা। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে লুমুম্বার দেহ অ্যাসিডে গলিয়ে ফেলা হয়। প্রক্রিয়া চলাকালীনই ওই পুলিশ সদস্য লুমুম্বার একটি সোনায় বাঁধা দাঁত পকেটে ভরেন। পরে সেটি বেলজিয়াম নিয়ে যান।

এই হত্যাকাণ্ডের কয়েক দশক পরে ওই পুলিশ সদস্য প্রকাশ করেন যে তাঁর কাছে লুমুম্বার সেই দাঁতটি এখনো রয়েছে। এর মাত্র দুই বছর আগে বেলজিয়ামের একটি আদালত রায় দেন যে দাঁতটি তাঁর পরিবারকে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।

তবে কোভিড মহামারী এই হস্তান্তর প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত করেছে। অবশেষে তবে গত সপ্তাহে দাঁতটি ব্রাসেলসে হস্তান্তর করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

কুষ্টিয়ায় গভীর রাতে বিএনপি নেতার বাড়িতে গুলি, দেখে নেওয়ার হুমকি

মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনে প্রক্রিয়া মানা হয়নি: ইউনেসকো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত