Ajker Patrika

বর্ষাকালে ফ্লু: সতর্ক থাকুন ৫ বিষয়ে

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ১৪ জুন ২০২৫, ১৩: ০৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বর্ষা আসছে। এই মৌসুমে শুধু বৃষ্টি-বাদল আর স্নিগ্ধতা নয়, সঙ্গে বাড়ে সংক্রামক নানা রোগের শঙ্কাও। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু। এ সময় সুস্থ থাকতে ফ্লুর লক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি। অনেক সময় এটি সাধারণ ঠান্ডা লাগা কিংবা কোভিড-১৯-এর সঙ্গে মিলেও যেতে পারে। সময়মতো চিহ্নিত করতে পারলে উপযুক্ত চিকিৎসায় দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব।

বর্ষাকালে ফ্লুর প্রকোপ বাড়ার কারণ
বর্ষার সময় পরিবেশে আর্দ্রতা বেড়ে যায়, বাতাসে ঠান্ডা ভাব বাড়ে, চারপাশে জমে থাকা পানি রোগ-জীবাণুর বংশবিস্তারের জন্য আদর্শ পরিবেশ সৃষ্টি করে। এ সময় প্রাকৃতিক কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। পাশাপাশি অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন এবং পরিচ্ছন্নতার অভাবে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ছড়াতে পারে খুব সহজে। এসব কারণে বর্ষাকালে ফ্লুর সংক্রমণ বেশি হয়।

ফ্লুর ৫টি প্রধান উপসর্গ
হঠাৎ জ্বর

১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট কিংবা তার বেশি তাপমাত্রায় হঠাৎ জ্বর আসতে পারে। ফ্লুতে জ্বর খুব দ্রুত তীব্রভাবে দেখা দেয়। এর সঙ্গে ঠান্ডা লাগা, শরীর কাঁপা অথবা অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।

গলাব্যথা ও নাক বন্ধ
ফ্লুর শুরুতেই গলাব্যথা দেখা দেয়। এর সঙ্গে নাক দিয়ে পানি পড়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং হাঁচি আসা খুব সাধারণ ঘটনা। এই উপসর্গগুলো সাধারণ ঠান্ডার মতো মনে হয়। এর সঙ্গে জ্বর, শরীর ব্যথা কিংবা ক্লান্তি থাকলে সে ক্ষেত্রে ফ্লু হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কারণ, ফ্লু ভাইরাস শ্বাসনালিতে সংক্রমণ ঘটিয়ে গলা ও নাকের মধ্যে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে। ফলে গলাব্যথা তীব্র হয় এবং নাকের নালিগুলো বৃদ্ধি পেয়ে বন্ধ হয়ে যায়।

মাথাব্যথা ও চোখে অস্বস্তি
ফ্লুর সময় অনেকে মাথায় তীব্র চাপ বা ব্যথা অনুভব করেন। ভাইরাসের কারণে মাথার রক্তনালিগুলো ফুলে উঠতে পারে। এ ছাড়া চোখের চারপাশে অস্বস্তি, লালচে ভাব কিংবা চোখে পানি পড়াও ফ্লু হওয়ার সাধারণ লক্ষণ। অনেক সময় এগুলো সিজনাল অ্যালার্জির মতো মনে হতে পারে। তবে এর সঙ্গে জ্বর, কাশি অথবা গলাব্যথা থাকলে ফ্লু হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

দীর্ঘস্থায়ী কাশি
ফ্লুর একটি সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ হলো শুষ্ক ও কষ্টদায়ক কাশি। শুরুতে এটি হালকা মাত্রার হলেও সময়ের সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে তীব্র ও স্থায়ী আকার ধারণ করতে পারে। কাশির সঙ্গে অনেক সময় গলাব্যথা ও বুকে অস্বস্তি অনুভূত হয়, যা শরীরকে বেশ অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দেয়।

শরীর ব্যথা ও দুর্বলতা
ফ্লুতে প্রায়ই পেশিব্যথা, গাঁটে গাঁটে ব্যথা এবং প্রচণ্ড ক্লান্তি দেখা যায়। জ্বর চলে গেলেও দুর্বলতা কয়েক দিন থাকতে পারে। সাধারণ ব্যস্ত জীবনে এমন হঠাৎ অসহ্য ব্যথা ও ক্লান্তি দেখা দিলে সতর্ক হওয়া উচিত।

চিকিৎসকের পরামর্শ
সাধারণত বিশ্রাম, পর্যাপ্ত পানি পান এবং সাধারণ ওষুধেই ফ্লু ভালো হয়ে যায়। তবে যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম; যেমন শিশু, বয়স্ক, গর্ভবতী বা দীর্ঘস্থায়ী অসুখে ভোগা মানুষ, তাদের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে। শ্বাসকষ্ট, বুকব্যথা, মাথা ঘোরা কিংবা লাগাতার বমির মতো সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।

কীভাবে ফ্লু প্রতিরোধ করা যায়

» প্রতিবছর ফ্লুর টিকা নেওয়ার চেষ্টা করুন।

» নিয়মিত সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।

» পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

» অসুস্থ মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।

» পুষ্টিকর খাবার খান এবং ফলমূল ও শাকসবজি বেশি গ্রহণ করুন।

» বৃষ্টিতে ভিজে গেলে দ্রুত শুকনো জামাকাপড় পরে নিন।

সূত্র: হেলথশট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত