অনলাইন ডেস্ক
আত্মহত্যা একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বাংলাদেশে আত্মহত্যার প্রবণতা বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যা প্রতিরোধের উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাংলাদেশে এখনো আত্মহত্যা সংক্রান্ত পর্যাপ্ত গবেষণা ও কার্যকর নীতিমালা তৈরি হয়নি। বিশ্বব্যাপী ১৯৯০–২০২১ সালের মধ্যে আত্মহত্যার হার কমলেও বাংলাদেশে এটি এখনো গুরুতর সমস্যা রয়ে গেছে।
‘গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ স্টাডি ২০২১’ শীর্ষক সমীক্ষার তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশে আত্মহত্যার বর্তমান পরিস্থিতি, বয়সভিত্তিক প্রবণতা, কারণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে বিশদ আলোচনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান সাময়িকী ল্যানসেট।
ল্যানসেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আত্মহত্যাপ্রবণ দেশ। ২০২১ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় আত্মহত্যার হার প্রতি লাখে ১১ দশমিক ৪ জন, যা বৈশ্বিক গড় (৯.০)–এর চেয়ে বেশি। নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার (৮.৭) পুরুষদের তুলনায় কম হলেও এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বয়সভিত্তিক আত্মহত্যার প্রবণতায় দেখা গেছে,
১০-২৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ আত্মহত্যার হার বাংলাদেশে।
৩০-৪৯ বছর বয়সী নারীদের আত্মহত্যার হারও আশঙ্কাজনকভাবে বেশি ।
বয়স্কদের (৭০ বছরের বেশি) মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে।
এর অর্থ হলো, তরুণ ও মধ্যবয়সীদের পাশাপাশি প্রবীণদের মাঝেও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
আত্মহত্যার বৈশ্বিক চিত্র:
বিশ্বব্যাপী ২০২১ সালে আত্মহত্যার কারণে ৭ লাখ ৪৬ হাজার মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ১৯ হাজার এবং নারী ২ লাখ ২৭ হাজার। সময়ের সঙ্গে আত্মহত্যা প্রবণতা কমেছে। ১৯৯০ সালে প্রতি ১ লাখে আত্মহত্যার হার ছিল ১৪ দশমিক ৯ জন, যা ২০২১ সালে কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি লাখে ৯ জন।
অঞ্চলভেদে আত্মহত্যার সর্বোচ্চ মৃত্যুহার রেকর্ড করা হয়েছে:
পূর্ব ইউরোপে— প্রতি লাখে ১৯ দশমিক ২
দক্ষিণ সাব-সাহারান আফ্রিকায় — প্রতি লাখে ১৬ দশমিক ১
কেন্দ্রীয় সাব-সাহারান আফ্রিকায়— প্রতি লাখে ১৪ দশমিক ৪
এ ছাড়া গবেষণা চলাকালীন (১৯৯০–২০২১) আত্মহত্যায় মৃত্যুর গড় বয়স ক্রমশ বেড়েছে:
পুরুষদের ক্ষেত্রে , ১৯৯০ সালে আত্মহত্যার সময়কার গড় বয়স ছিল ৪৩ বছর (৩৮.০–৪৫.৮), যা ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ বছর (৪৩.৫–৫০.৬)।
নারীদের ক্ষেত্রে , ১৯৯০ সালে গড় বয়স ছিল ৪১ দশমিক ৯ বছর (৩০.৯–৪৬.৭), যা ২০২১ সালে বেড়ে হয়েছে ৪৬ দশমিক ৯ বছর (৪১.২–৫২.৮)।
দেখা গেছে, আত্মহত্যা চেষ্টার হার নারীদের মধ্যে পুরুষদের তুলনায় বেশি। বন্দুক ব্যবহার করে আত্মহত্যার সংখ্যা পুরুষদের মধ্যে বেশি ছিল নারীদের তুলনায় , তবে এটি দেশ ও অঞ্চলের ওপর নির্ভর করে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে।
২০২১ সালে বন্দুক ব্যবহার করে আত্মহত্যার সর্বোচ্চ হার ছিল যেসব দেশে, তার মধ্যে রয়েছে— যুক্তরাষ্ট্র, উরুগুয়ে ও ভেনেজুয়েলা।
বাংলাদেশে আত্মহত্যার কিছু কারণও শনাক্ত করেছেন গবেষকেরা। তাঁরা দেখেছেন, বাংলাদেশে আত্মহত্যার পেছনে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণগুলো হলো—
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা : বিষণ্নতা, উদ্বেগজনিত সমস্যা ও মানসিক ব্যাধি আত্মহত্যার অন্যতম প্রধান কারণ।
পারিবারিক ও সামাজিক চাপে আত্মহত্যা : পারিবারিক কলহ, দাম্পত্য সমস্যা ও পারিবারিক সহিংসতা থেকে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে।
শিক্ষা ও ক্যারিয়ারের চাপ : শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশোনার চাপ ও চাকরি না পাওয়ার হতাশা আত্মহত্যার কারণ হতে পারে।
আর্থিক অনিশ্চয়তা ও দারিদ্র্য : অর্থনৈতিক সমস্যা, ঋণের বোঝা ও বেকারত্ব আত্মহত্যার হার বাড়িয়ে দিচ্ছে।
কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে অনলাইন নির্যাতন : সাইবার বুলিং ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপমানজনিত কারণে তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে।
কৃষকদের মধ্যে কীটনাশক ব্যবহার : অনেক কৃষক কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেন, যা ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মতো দেশে অন্যতম প্রধান সমস্যা।
বাংলাদেশে আত্মহত্যা প্রতিরোধে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন—
আত্মহত্যার অপরাধমূলক আইনগত অবস্থান : বাংলাদেশে আত্মহত্যার চেষ্টা এখনো অপরাধ বলে গণ্য করা হয়, ফলে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিরা মানসিক সহায়তা নিতে ভয় পান।
সঠিক পরিসংখ্যানের অভাব : আত্মহত্যার ঘটনা যথাযথভাবে নথিভুক্ত করা হয় না, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়।
মানসিক স্বাস্থ্যসেবার অভাব : গ্রামে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সীমিত, এবং শহরেও মানসিক চিকিৎসকদের সংখ্যা খুবই কম।
সামাজিক কলঙ্ক ও কুসংস্কার : আত্মহত্যাকে অনেক ক্ষেত্রে সামাজিক ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হয়, ফলে অনেকে মানসিক চিকিৎসা নিতে চান না।
বাংলাদেশে আত্মহত্যা প্রতিরোধে কিছু সুপারিশও করেছেন গবেষকেরা:
১. আত্মহত্যাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য না করা
বাংলাদেশের আত্মহত্যা বিরোধী আইন সংশোধন করা প্রয়োজন । ভারত ২০১৭ সালে আত্মহত্যাকে অপরাধের তালিকা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশকেও এ ধরনের আইনগত সংস্কার করা দরকার।
২. মানসিক স্বাস্থ্যসেবার প্রসার
প্রতিটি জেলার হাসপাতালে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করা
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সাথে মানসিক স্বাস্থ্যকে সংযুক্ত করা
স্কুল-কলেজে মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সেলিং বাধ্যতামূলক করা
৩. আত্মহত্যা প্রতিরোধ কর্মসূচি চালু করা
৯৯৯ জাতীয় হেল্পলাইনকে আত্মহত্যা প্রতিরোধ সহায়তায় সংযুক্ত করা
গণমাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি : টেলিভিশন, রেডিও, ও সামাজিক মাধ্যমে আত্মহত্যা প্রতিরোধমূলক প্রচারণা চালানো
প্রশিক্ষণ ও গবেষণা বৃদ্ধি : পুলিশ, চিকিৎসক, ও শিক্ষকদের আত্মহত্যার ঝুঁকি নির্ণয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া
৪. কীটনাশকের সহজলভ্যতা নিয়ন্ত্রণ করা
শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেও কীটনাশকের সহজলভ্যতা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে । এতে কৃষকদের আত্মহত্যার হার কমবে।
৫. তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি
স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা
সাইবার বুলিং প্রতিরোধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ
প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আত্মহত্যা একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা, যা সঠিক নীতিমালা, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা, সচেতনতা ও আইনি সংস্কারের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব । এর জন্য সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্বাস্থ্য খাত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে । সেই সঙ্গে নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা, ও আত্মহত্যার বিরুদ্ধে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন করাই হবে এর সমাধান।
আত্মহত্যা একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বাংলাদেশে আত্মহত্যার প্রবণতা বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যা প্রতিরোধের উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাংলাদেশে এখনো আত্মহত্যা সংক্রান্ত পর্যাপ্ত গবেষণা ও কার্যকর নীতিমালা তৈরি হয়নি। বিশ্বব্যাপী ১৯৯০–২০২১ সালের মধ্যে আত্মহত্যার হার কমলেও বাংলাদেশে এটি এখনো গুরুতর সমস্যা রয়ে গেছে।
‘গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ স্টাডি ২০২১’ শীর্ষক সমীক্ষার তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশে আত্মহত্যার বর্তমান পরিস্থিতি, বয়সভিত্তিক প্রবণতা, কারণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে বিশদ আলোচনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান সাময়িকী ল্যানসেট।
ল্যানসেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আত্মহত্যাপ্রবণ দেশ। ২০২১ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় আত্মহত্যার হার প্রতি লাখে ১১ দশমিক ৪ জন, যা বৈশ্বিক গড় (৯.০)–এর চেয়ে বেশি। নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার (৮.৭) পুরুষদের তুলনায় কম হলেও এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বয়সভিত্তিক আত্মহত্যার প্রবণতায় দেখা গেছে,
১০-২৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ আত্মহত্যার হার বাংলাদেশে।
৩০-৪৯ বছর বয়সী নারীদের আত্মহত্যার হারও আশঙ্কাজনকভাবে বেশি ।
বয়স্কদের (৭০ বছরের বেশি) মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে।
এর অর্থ হলো, তরুণ ও মধ্যবয়সীদের পাশাপাশি প্রবীণদের মাঝেও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
আত্মহত্যার বৈশ্বিক চিত্র:
বিশ্বব্যাপী ২০২১ সালে আত্মহত্যার কারণে ৭ লাখ ৪৬ হাজার মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ১৯ হাজার এবং নারী ২ লাখ ২৭ হাজার। সময়ের সঙ্গে আত্মহত্যা প্রবণতা কমেছে। ১৯৯০ সালে প্রতি ১ লাখে আত্মহত্যার হার ছিল ১৪ দশমিক ৯ জন, যা ২০২১ সালে কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি লাখে ৯ জন।
অঞ্চলভেদে আত্মহত্যার সর্বোচ্চ মৃত্যুহার রেকর্ড করা হয়েছে:
পূর্ব ইউরোপে— প্রতি লাখে ১৯ দশমিক ২
দক্ষিণ সাব-সাহারান আফ্রিকায় — প্রতি লাখে ১৬ দশমিক ১
কেন্দ্রীয় সাব-সাহারান আফ্রিকায়— প্রতি লাখে ১৪ দশমিক ৪
এ ছাড়া গবেষণা চলাকালীন (১৯৯০–২০২১) আত্মহত্যায় মৃত্যুর গড় বয়স ক্রমশ বেড়েছে:
পুরুষদের ক্ষেত্রে , ১৯৯০ সালে আত্মহত্যার সময়কার গড় বয়স ছিল ৪৩ বছর (৩৮.০–৪৫.৮), যা ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ বছর (৪৩.৫–৫০.৬)।
নারীদের ক্ষেত্রে , ১৯৯০ সালে গড় বয়স ছিল ৪১ দশমিক ৯ বছর (৩০.৯–৪৬.৭), যা ২০২১ সালে বেড়ে হয়েছে ৪৬ দশমিক ৯ বছর (৪১.২–৫২.৮)।
দেখা গেছে, আত্মহত্যা চেষ্টার হার নারীদের মধ্যে পুরুষদের তুলনায় বেশি। বন্দুক ব্যবহার করে আত্মহত্যার সংখ্যা পুরুষদের মধ্যে বেশি ছিল নারীদের তুলনায় , তবে এটি দেশ ও অঞ্চলের ওপর নির্ভর করে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে।
২০২১ সালে বন্দুক ব্যবহার করে আত্মহত্যার সর্বোচ্চ হার ছিল যেসব দেশে, তার মধ্যে রয়েছে— যুক্তরাষ্ট্র, উরুগুয়ে ও ভেনেজুয়েলা।
বাংলাদেশে আত্মহত্যার কিছু কারণও শনাক্ত করেছেন গবেষকেরা। তাঁরা দেখেছেন, বাংলাদেশে আত্মহত্যার পেছনে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণগুলো হলো—
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা : বিষণ্নতা, উদ্বেগজনিত সমস্যা ও মানসিক ব্যাধি আত্মহত্যার অন্যতম প্রধান কারণ।
পারিবারিক ও সামাজিক চাপে আত্মহত্যা : পারিবারিক কলহ, দাম্পত্য সমস্যা ও পারিবারিক সহিংসতা থেকে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে।
শিক্ষা ও ক্যারিয়ারের চাপ : শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশোনার চাপ ও চাকরি না পাওয়ার হতাশা আত্মহত্যার কারণ হতে পারে।
আর্থিক অনিশ্চয়তা ও দারিদ্র্য : অর্থনৈতিক সমস্যা, ঋণের বোঝা ও বেকারত্ব আত্মহত্যার হার বাড়িয়ে দিচ্ছে।
কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে অনলাইন নির্যাতন : সাইবার বুলিং ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপমানজনিত কারণে তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে।
কৃষকদের মধ্যে কীটনাশক ব্যবহার : অনেক কৃষক কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেন, যা ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মতো দেশে অন্যতম প্রধান সমস্যা।
বাংলাদেশে আত্মহত্যা প্রতিরোধে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন—
আত্মহত্যার অপরাধমূলক আইনগত অবস্থান : বাংলাদেশে আত্মহত্যার চেষ্টা এখনো অপরাধ বলে গণ্য করা হয়, ফলে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিরা মানসিক সহায়তা নিতে ভয় পান।
সঠিক পরিসংখ্যানের অভাব : আত্মহত্যার ঘটনা যথাযথভাবে নথিভুক্ত করা হয় না, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়।
মানসিক স্বাস্থ্যসেবার অভাব : গ্রামে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সীমিত, এবং শহরেও মানসিক চিকিৎসকদের সংখ্যা খুবই কম।
সামাজিক কলঙ্ক ও কুসংস্কার : আত্মহত্যাকে অনেক ক্ষেত্রে সামাজিক ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হয়, ফলে অনেকে মানসিক চিকিৎসা নিতে চান না।
বাংলাদেশে আত্মহত্যা প্রতিরোধে কিছু সুপারিশও করেছেন গবেষকেরা:
১. আত্মহত্যাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য না করা
বাংলাদেশের আত্মহত্যা বিরোধী আইন সংশোধন করা প্রয়োজন । ভারত ২০১৭ সালে আত্মহত্যাকে অপরাধের তালিকা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশকেও এ ধরনের আইনগত সংস্কার করা দরকার।
২. মানসিক স্বাস্থ্যসেবার প্রসার
প্রতিটি জেলার হাসপাতালে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করা
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সাথে মানসিক স্বাস্থ্যকে সংযুক্ত করা
স্কুল-কলেজে মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সেলিং বাধ্যতামূলক করা
৩. আত্মহত্যা প্রতিরোধ কর্মসূচি চালু করা
৯৯৯ জাতীয় হেল্পলাইনকে আত্মহত্যা প্রতিরোধ সহায়তায় সংযুক্ত করা
গণমাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি : টেলিভিশন, রেডিও, ও সামাজিক মাধ্যমে আত্মহত্যা প্রতিরোধমূলক প্রচারণা চালানো
প্রশিক্ষণ ও গবেষণা বৃদ্ধি : পুলিশ, চিকিৎসক, ও শিক্ষকদের আত্মহত্যার ঝুঁকি নির্ণয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া
৪. কীটনাশকের সহজলভ্যতা নিয়ন্ত্রণ করা
শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেও কীটনাশকের সহজলভ্যতা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে । এতে কৃষকদের আত্মহত্যার হার কমবে।
৫. তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি
স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা
সাইবার বুলিং প্রতিরোধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ
প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আত্মহত্যা একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা, যা সঠিক নীতিমালা, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা, সচেতনতা ও আইনি সংস্কারের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব । এর জন্য সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্বাস্থ্য খাত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে । সেই সঙ্গে নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা, ও আত্মহত্যার বিরুদ্ধে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন করাই হবে এর সমাধান।
বিগত কয়েক দশক ধরেই বিশ্বে অন্যতম স্বাস্থ্য সমস্যা মুটিয়ে যাওয়া ও স্থূলতা। আগামী কয়েক দশকে এই সমস্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী ২০৫০ সালের মধ্যে অর্ধেকের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক এবং এক-তৃতীয়াংশ শিশু ও কিশোর-কিশোরী অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার শিকার হবে। এই বিষয়টি
১ ঘণ্টা আগে২০২৫ সালে এসেও এই চিত্র খুব একটা বদলায়নি। এখনো স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি ৪টি উপাদান লৌহ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি ১২, জিংকের ঘাটতিতে ভুগছে প্রায় ২৫ শতাংশ কিশোরী এবং স্থূলতায় আক্রান্ত কমপক্ষে ১০ শতাংশ।
২ ঘণ্টা আগেদেশে এক দশক আগে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এবার এক স্থানে একাধিক ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, যাকে ক্লাস্টার (গুচ্ছ) সংক্রমণ বলা হয়। একই এলাকার পাঁচ ব্যক্তির সংক্রমণের বিষয়টি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।
৫ ঘণ্টা আগেদীর্ঘদিনেও নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন না হওয়ায় অধিকাংশ মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের চাকরির বয়স উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিয়োগ সম্পন্ন না হলে আবেদনকারীরা সরকারি চাকরি পাবেন না। সরকারের পক্ষ থেকে
১ দিন আগে