Ajker Patrika

ফুটবলে বেশি হেড নিলে মস্তিষ্কের ক্ষতি, কমে যেতে পারে বুদ্ধি: গবেষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গবেষণার অংশ হিসেবে খেলোয়াড়দের মেমোরি (স্মৃতিশক্তি) ও লার্নিং (শেখার ক্ষমতা) পরীক্ষা নেওয়া হয়। ছবি: এএফপি
গবেষণার অংশ হিসেবে খেলোয়াড়দের মেমোরি (স্মৃতিশক্তি) ও লার্নিং (শেখার ক্ষমতা) পরীক্ষা নেওয়া হয়। ছবি: এএফপি

বিশ্বজুড়ে কোটি মানুষের প্রিয় খেলা ফুটবল এবার আলোচনায় এসেছে মস্তিষ্কে ক্ষতির আশঙ্কা নিয়ে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, বারবার হেড নেওয়ার ফলে মস্তিষ্কেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এমনকি যেসব অপেশাদার খেলোয়াড় কখনো মাথায় আঘাত পাওয়ার কথা জানাননি, তাঁদের মস্তিষ্কেও এই ক্ষতি দেখা যেতে পারে।

আমেরিকার কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসায়েন্টিস্ট মাইকেল লিপটনের নেতৃত্বে পরিচালিত এ গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর হাজারের বেশি হেড করা অপেশাদার ফুটবলারের মস্তিষ্কের সামনের অংশে, চোখের পেছনের দিকের ভাঁজে (কোর্টিকাল গ্রে ম্যাটার–হোয়াইট ম্যাটার ইন্টারফেস বা জেডব্লিউআই) সূক্ষ্ম পরিবর্তন দেখা গেছে। বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে এসব পরিবর্তন মিলেছে।

উল্লেখ্য, জেডব্লিউআই হলো সেই সংযোগস্থল, যেখানে এই গ্রে-ম্যাটার ও হোয়াইট-ম্যাটার নামের দুই ধরনের মস্তিষ্কের টিস্যু পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকে।

এই গবেষণায় অংশ নেন ৩৫২ জন অপেশাদার প্রাপ্তবয়স্ক ফুটবলার, যাঁরা কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে ফুটবল খেলছেন এবং গবেষণা শুরুর আগে শেষ ছয় মাসের মধ্যেও খেলা চালিয়ে গেছেন।

এই ফুটবলারদের ব্রেইন স্ক্যান করে গবেষক দল দেখতে পান, যাঁরা বেশি হেড নেন, তাঁদের মস্তিষ্কের জেডব্লিউআই অঞ্চলে স্পষ্ট গঠনগত পরিবর্তন রয়েছে।

লিপটনের গবেষক দল সম্প্রতি একটি নতুন ইমেজিং পদ্ধতি তৈরি করেছে, যেটি দিয়ে এই জটিল অঞ্চলের ক্ষতি শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, হেড বেশি করলে মস্তিষ্কের গ্রে-ম্যাটার ও হোয়াইট-ম্যাটারের মাঝের সীমানাটি অনেকটাই অস্পষ্ট বা ‘ঝাপসা’ হয়ে যায়।

লিপটনের মতে, ‘এই সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলো মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার ঘাটতির কারণ হতে পারে।’

গবেষণার অংশ হিসেবে খেলোয়াড়দের মেমোরি (স্মৃতিশক্তি) ও লার্নিং (শেখার ক্ষমতা) পরীক্ষা নেওয়া হয়। দেখা যায়, যাঁরা বেশি হেড করেছেন, তাঁদের ফলাফল কিছুটা খারাপ। তবে পার্থক্য খুব বড় না হলেও পরিসংখ্যানগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।

লিপটনের গবেষণা বলছে, শুধু পেশাদার বা মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত খেলোয়াড় নন, অপেশাদার এবং আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ খেলোয়াড়দের মস্তিষ্ক ফুটবলের হেডের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গবেষণার গুরুত্ব এখানেই যে, এটি প্রথমবারের মতো স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে—বারবার মাথায় ধাক্কা লাগার ফলে মস্তিষ্কে নির্দিষ্ট ধরনের পরিবর্তন ঘটে, যা পরবর্তী সময়ে মানসিক দক্ষতা বা বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতায় ব্যাঘাত ঘটায়।’

আগের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, সাঁতারুদের তুলনায় অপেশাদার ফুটবলারের মস্তিষ্কের হোয়াইট ম্যাটারে পরিবর্তন দেখা যায়। তবে তখন এই পরিবর্তনের সঙ্গে কগনিটিভ (বুদ্ধিবৃত্তিক) বা মানসিক দক্ষতার সম্পর্ক স্পষ্ট করা যায়নি।

এবার জেডব্লিউআইতে পাওয়া ক্ষতির জায়গাটি এমন এক স্থান, যেখানে আগে অনেক গবেষণায় নজর দেওয়া হয়নি, ফলে আগের গবেষণাগুলোতে দ্বিমত দেখা গেছে।

গবেষকেরা আশঙ্কা করছেন, মস্তিষ্কের এই জেডব্লিউআই অঞ্চলের ক্ষতির কারণে ভবিষ্যতে কেউ ক্রনিক ট্রমাটিক এনসেফালোপ্যাথির (সিটিই) মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

এই গবেষণাপত্র জামা নেটওয়ার্ক ওপেনে (JAMA Network Open) প্রকাশিত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভারতের হারে বাংলাদেশের বিদায়, হামজার হতাশা

এবার দলগুলো পেল চূড়ান্ত জুলাই সনদ ও স্বাক্ষরের আমন্ত্রণপত্র

সেনা কর্মকর্তাদের জন্য ‘সাবজেল’ ঘোষণার যৌক্তিকতা কী, টিআইবির প্রশ্ন

ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পরে ভাতিজিকে পিটিয়ে হত্যা করলেন হাবিল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত