Ajker Patrika

নবজাতকের নাভিতে সেঁক দেবেন না

ডা. নূরজাহান বেগম 
নবজাতকের নাভিতে  সেঁক দেবেন না

প্রশ্ন: দুই সপ্তাহ আগে আমার প্রথম সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে। যেহেতু আমার প্রথম মা হওয়ার অভিজ্ঞতা, ফলে সব মিলিয়ে বুঝতে একটু সময় লাগছে। এখন ঠান্ডা পড়েছে, নবজাতকের পরিচর্যার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয় গুরুত্বপূর্ণ? ঠিক কতক্ষণ পরপর তাকে কতটুকু খাওয়াতে হবে?
রাবেয়া আখন্দ, চাঁদপুর

নতুন মা হওয়ার জন্য আপনাকে অভিনন্দন।  ঠান্ডা কাশির ভয়ে নবজাতককে অনেক সময় অতিরিক্ত সাবধানে রাখতে গিয়ে কিছুটা ঝামেলায় পড়ে যান মা-বাবা। ঝামেলা এড়াতে কিছু বিষয় জেনে রাখা জরুরি।

যা জানতে হবে

  • নবজাতককে ঘড়ি ধরে খাওয়াতে হবে, ব্যাপারটা সে রকম নয়। আমরা বলে থাকি অন ডিমান্ড ব্রেস্ট ফিডিং; অর্থাৎ শিশু যখন খেতে চাইবে, তখন খেতে দিতে হবে। কখনো ১০ মিনিট পরেই তারা খেতে চায়, কখনো ২ ঘণ্টা পরও খেতে পারে। একটানা ২ ঘণ্টার বেশি ঘুমালে তখন উঠিয়ে খাওয়াতে হবে।
  • খাওয়ার সময় নবজাতক কিছু কিছু লক্ষণ দেখায়, যেমন আঙুল মুখে দেয়, পাশ ফিরে হাঁ করে দুধ খুঁজতে থাকে ইত্যাদি।
  • শিশুকে এক পাশের দুধ পুরো খেতে দিতে হবে। কারণ, প্রথমে পানির মতো পাতলা এলেও পরে ঘন দুধ আসে। এই ঘন দুধ বা হিন্ড মিল্কে শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য সব পুষ্টি থাকে।
  • নবজাতক যখন এক পাশ খেয়ে ছেড়ে দেবে, তখন আরেক পাশের দুধ দেবেন। অনেক সময় এক পাশের দুধ খেয়েই পেট ভরে যায়। সে ক্ষেত্রে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। পরেরবার যে পাশ থেকে খায়নি, সেটা আগে দেবেন।
  • শুধু দুধের বোঁটা খাওয়াবেন না। বোঁটাসহ কালো অংশের অনেকটা শিশুর মুখে থাকবে, তা না হলে ঠিকমতো দুধ পাবে না এবং দুধের বোঁটা ফেটে যাবে।
  • খাওয়ানোর শেষে সঙ্গে সঙ্গেই শোয়াবেন না। উঁচু করে কমপক্ষে ২০ মিনিট রাখতে হবে। ঢেকুর যে সব সময় তুলবে, ব্যাপারটা তা নয়। উঁচু করে রাখলেই হবে। অনেকে ঘাড়ের ওপর নিয়ে শিশুর পেট চেপে রাখেন। সে ক্ষেত্রে বমি করে দিতে পারে।
  • বেশির ভাগ নবজাতক সারা দিন ঘুমাতে থাকে, রাতে জেগে থাকে। ঘুমের সময় ঠিক হতে কখনো কখনো তিন মাস লেগে যায়। তাই নতুন মায়েরা যখনই সময় পাবেন, নিজেদের মতো করে বিশ্রাম নিয়ে নেবেন। এ ক্ষেত্রে পরিবারের সবার সহযোগিতা ছাড়া মায়ের একার পক্ষে খুব কষ্ট হয়ে যায়।
  • মায়ের খাবারের ওপর নবজাতকের বুকের দুধ পাওয়া এবং দুধের গুণগত মান নির্ভর করে। তাই মায়ের খাবারের বিষয়ে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
  • মায়ের খাবারের সঙ্গে শিশুর পেটব্যথা বা ঘন ঘন পায়খানা করা কিংবা রাতে কান্নাকাটি করার কোনো সম্পর্ক নেই।
  • মায়ের খাবারে পর্যাপ্ত প্রোটিন রাখতে হবে। সঙ্গে শাকসবজি, ফলমূল, দুধ বা দুধের তৈরি খাবার দিতে হবে এবং তরল খাবার বেশি খাওয়ার ব্যাপারে নজর রাখতে হবে। বুকের দুধ খাওয়ানোর পরপরই তরল কিছু খেয়ে নিতে হবে।
  • নবজাতক প্রতিবার খাওয়ার পর অল্প অল্প তরল ছানা ছানা পায়খানা করে। এটা স্বাভাবিক। কখনো কখনো দিনে ১৫ থেকে ২০ বার পর্যন্ত পায়খানা করতে পারে। শুধু বুকের দুধ খাওয়া নবজাতক ৩ থেকে ৭ দিন পরপর পায়খানা করে। দুটোই স্বাভাবিক।
  • ২৪ ঘণ্টায় ন্যূনতম ৬ বার প্রস্রাব করছে কি না, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। সারা দিনে ৬ বার প্রস্রাব করার অর্থ হচ্ছে শিশু পর্যাপ্ত দুধ পাচ্ছে।
  • নবজাতকের কান্নাকাটি মানেই দুধ পাচ্ছে না, এটা ভাবা ঠিক নয়। সে কান্নাকাটি করলেই মাকে দোষ দেওয়া কিংবা কৌটার দুধ খাওয়ানোর জন্য চাপ দেওয়া যাবে না।
  • সাধারণত ৩ বা ৪ সপ্তাহ পর থেকে অনেক শিশু সন্ধ্যার পর এবং রাতে অনেক বেশি কান্না করতে থাকে। লাল হয়ে যায় কান্না করতে করতে। এই সমস্যা বেশ কিছুদিন থাকে। সোজা করে কোলে নিয়ে রাখা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে কিছু ওষুধ খাওয়ালে কিছুটা কমে। তবে অনেক সময় পুরোপুরি ভালো হয় না। এটা একটা নির্দিষ্ট সময় পর আপনাআপনি ঠিক হয়ে যায়।
  • নবজাতকের নাভিতে সেঁক দেবেন না; বিশেষ করে অনেকে সরিষার তেল দিয়ে সেঁক দিতে পছন্দ করেন। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।
  • অনেকের ধারণা, নাভি না পড়া পর্যন্ত শিশুকে গোসল দেওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে অনেক দিন গোসল না দেওয়ার জন্য পরে ত্বকে সংক্রমণ হতে পারে।
  • জন্মের ৩ দিন পর থেকে প্রতিদিন নবজাতককে গোসল করাতে হবে। যেহেতু এখন শীতকাল, তাই যেদিন খুব বেশি ঠান্ডা পড়বে কিংবা শৈত্যপ্রবাহ থাকবে, সেদিন মাথাসহ পুরো শরীর মুছিয়ে দিতে হবে গোসল না করাতে চাইলে।
  • গোসলের পর সরিষার তেল ব্যবহার করবেন না। এতে শিশু ঘেমে গিয়ে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
  • তেল মাখাতে চাইলে গোসলের আগে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। গোসলের পর লোশন দিতে পারবেন।
  • সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন সাবান-শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারবেন।
  • শিশুর বয়স এক মাস না হলে চুল ফেলবেন না। চুল ঠান্ডা থেকে বাঁচায়। তবে বেশি বড় হয়ে গেলে ছোট করে দিতে পারেন। নবজাতকের চুল অপবিত্র নয়।
  • সোয়েটার, কাঁথা বা কম্বল দিয়ে শিশুকে সব সময় ঢেকে রাখবেন না; বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর সময়। নবজাতকেরা খুব দ্রুত ঘেমে যায়। আপনি নিজেই বুঝে যাবেন, কখন ঢেকে রাখতে হবে, কতটা কাপড় পরাতে হবে।
  • এ সময় নবজাতকের নাক সব সময় বন্ধ থাকে। তাই খেতে গেলে বা নিশ্বাসের সময় শব্দ হয়, কোলে নিলে, পিঠে হাত দিলে ঘড়ঘড় আওয়াজ হয়। এটার মানে ঠান্ডা লেগে থাকা নয়।
  • নাক পরিষ্কার রাখতে হবে এবং বারবার সাধারণ স্যালাইন নাকের ড্রপ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে, বিশেষ করে বুকের দুধ খাওয়ানোর আগে।

প্রশ্ন: আমি সন্তান প্রসব করেছি ১১ দিন আগে। হাসপাতাল থেকে বলে দেওয়া হয়েছে, শিশুর ত্বকে সরিষার তেল ব্যবহার না করতে। কিন্তু আমার মা ও শাশুড়ি বলছেন, সরিষার তেল না দিলে হার শক্ত হবে না। এখন আমার কী করণীয়? আসলেই কি সরিষার তেল ক্ষতিকর? 
পাপিয়া আক্তার, দিনাজপুর

নবজাতককে সরিষার তেল মালিশ করার সংস্কৃতি কিংবা সংস্কার আমাদের সমাজের যেমন চিরাচরিত অভ্যাস, ঠিক তেমনি বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এর প্রচলন রয়েছে; বিশেষ করে নেপাল ও জাপানে। নানা তর্ক, এমনকি গবেষণাও হয়েছে নবজাতকদের শরীরে সরিষার তেল মালিশ নিয়ে। এক দল গবেষক বলেন, কিছু উপকার রয়েছে তেল মালিশে। আবার গবেষণায় দেখানো হয়েছে, সরিষার তেল নবজাতকের জন্য ক্ষতিকর।

এই তেল ঝাঁজালো এবং ত্বকের ওপর আস্তরণ তৈরি করে। ফলে ময়লা জমে থাকে, দুর্গন্ধ হয়।

দেড় মাস পর্যন্ত শিশুর ত্বক বেশ পাতলা ও সংবেদনশীল থাকে। তাই সরিষার তেল প্রদাহ কিংবা র‍্যাশের কারণ হতে পারে। সুতরাং সরিষার তেল ব্যবহার না করাই ভালো। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, নবজাতকের চোখে, নাকের ছিদ্র এবং নাভিতে কখনোই সরিষার তেল লাগানো যাবে না। বহু বছরের পুরোনো সংস্কার থেকে বের হয়ে আসা মুশকিল। তাই পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের এসব বিষয়ে বুঝিয়ে বলতে হবে।

পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. নূরজাহান বেগম, স্পেশালিস্ট, পেডিয়াট্রিক আইসিইউ, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইয়ামাল কি তাহলে এভাবেই হারিয়ে যাবেন

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

সন্ধ্যা থেকে বন্ধ থাকবে নির্বাচন ভবনের আশপাশের ব্যবসা কার্যক্রম

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

থেমে নয়, একটানা হাঁটাই হৃদ্‌যন্ত্রের স্বাস্থ্য ও আয়ু বাড়ায়—নতুন গবেষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ০০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ সময় হাঁটার অভ্যাস শুধু মন ভালো রাখে না, বরং হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমিয়ে আয়ু বাড়াতে সাহায্য করে। ‘অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিন’-এ প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণা এমনটাই জানিয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা একটানা ১০ মিনিটের বেশি সময় হাঁটেন, তাঁদের মধ্যে হৃদ্‌রোগ ও অকালমৃত্যুর ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কম। অন্যদিকে, যাঁরা হাঁটেন কিন্তু ছোট ছোট সময় ধরে, তাঁদের মধ্যে এই উপকারিতা কম দেখা গেছে।

গবেষণার প্রধান লেখক স্পেনের ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব মাদ্রিদের সহযোগী অধ্যাপক ড. বোরখা দেল পোজো ক্রুজ বলেন, ‘আমরা সাধারণত দৈনিক পদক্ষেপের সংখ্যা নিয়ে কথা বলি—যেমন ১০ হাজার পদক্ষেপের লক্ষ্য। কিন্তু আমাদের গবেষণা দেখিয়েছে, কীভাবে সেই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হচ্ছে, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ; বিশেষ করে যাঁরা কম সক্রিয়, তাঁরা যদি অল্প সময়ের বদলে কিছু দীর্ঘ হাঁটা যোগ করেন, তাতেও হৃদ্স্বাস্থ্যে বড় পরিবর্তন আসতে পারে।’

এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২৮ অক্টোবর) সিএনএন জানিয়েছে, বিশ্বের প্রায় ৩১ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম করেন না। তাঁদের অনেকে সপ্তাহে ১৫০ মিনিটের কম ব্যায়াম করেন, যা হৃদ্‌রোগ, অনিদ্রা ও মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল জিউইশ হেলথ ইনস্টিটিউটের হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধ ও সুস্থতা বিভাগের পরিচালক ড. অ্যান্ড্রু ফ্রিম্যান বলেন, ‘প্রায় সবাই কিছু সময় হাঁটতে পারেন, কিন্তু ২০, ৩০ বা ৬০ মিনিট একটানা হাঁটা কঠিন হয়ে যায়। তাই ধীরে ধীরে সেই ক্ষমতা তৈরি করাটাই আসল বিষয়।’

দীর্ঘ সময় হাঁটার ফলে শরীরে রক্তসঞ্চালন ভালো হয়, রক্তচাপ কমে এবং রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে প্রদাহ ও মানসিক চাপ কমে, হৃদ্‌পেশি শক্ত হয়। ফ্রিম্যান বলেন, ‘এটা অনেকটা ৪৫ কেজির ডাম্বেল তোলার মতো। প্রথমে পারা যায় না, কিন্তু অনুশীলনে সক্ষমতা বাড়ে—হৃদ্‌যন্ত্রও তেমনি।’

গবেষকেরা বলেন, প্রতিদিন নির্দিষ্ট ধাপের লক্ষ্য না রেখে বরং সময়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। দিনে অন্তত কিছু সময় একটানা হাঁটলে উপকার পাওয়া যায়। গতি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে ধারাবাহিক ও দীর্ঘ সময় হাঁটা বেশি ফল দেয়।

ড. দেল পোজো ক্রুজ পরামর্শ দিয়েছেন, ‘দিনে একাধিকবার ২০-৩০ মিনিট করে টানা হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে শরীর সক্রিয় থাকবে, হৃদ্‌যন্ত্র মজবুত হবে।’

হাঁটার সঠিক ভঙ্গিও জরুরি—শরীর সোজা রাখুন, কাঁধ পেছনে দিন এবং হাত দোলান। এতে ভারসাম্য বজায় থাকে ও শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক হয়।

গবেষণাটি যুক্তরাজ্যের ৩৩ হাজার প্রাপ্তবয়স্কের তথ্য বিশ্লেষণ করে তৈরি হয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা দৈনিক ৮ হাজার ধাপের কম হাঁটতেন এবং কারও বড় রোগ ছিল না। এক সপ্তাহের ডেটা সংগ্রহের মাধ্যমে গবেষণাটি সম্পন্ন হয়।

সবশেষে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নিয়মিত ও দীর্ঘ সময় হাঁটা এমন একটি সহজ উপায়, যা ব্যয়বহুল চিকিৎসা ছাড়াই হৃদ্‌স্বাস্থ্য রক্ষা এবং আয়ু বৃদ্ধিতে অসাধারণ ভূমিকা রাখতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইয়ামাল কি তাহলে এভাবেই হারিয়ে যাবেন

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

সন্ধ্যা থেকে বন্ধ থাকবে নির্বাচন ভবনের আশপাশের ব্যবসা কার্যক্রম

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডেঙ্গুতে এক দিনে আরও ৬ জনের মৃত্যু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ২৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে এক দিনে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৯৮৩ জন।

এ ছাড়া এক সপ্তাহে সারা দেশে ডেঙ্গু জ্বরে মারা গেছে ১০ জন এবং আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ১২৬ জন। আর চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২৬৯ জন এবং আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৬৬ হাজার ৪২৩ জন।

এ বছরের শুরু থেকে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটেছিল সেপ্টেম্বর মাসে, ১৫ হাজার ৮৬৬ জনের। চলতি অক্টোবরের সপ্তাহখানেক বাকি থাকতেই সংক্রমণের সংখ্যা তা ছাড়িয়ে গেছে। অক্টোবর মাসেই সবচেয়ে বেশি ১৯ হাজার ৮১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইয়ামাল কি তাহলে এভাবেই হারিয়ে যাবেন

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

সন্ধ্যা থেকে বন্ধ থাকবে নির্বাচন ভবনের আশপাশের ব্যবসা কার্যক্রম

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডেঙ্গুতে সংক্রমণ গত মাসের রেকর্ড ছাড়াল, এক দিনে মৃত্যু আরও ৪

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ৩১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন ধরেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কয়েকজন করে মারা যাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে।

ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন পুরুষ এবং একজন নারী। মৃত ব্যক্তিরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বরগুনার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সংক্রমণ ও হাসপাতালে ভর্তির হারও ঊর্ধ্বমুখী। গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১৪৩ জন রোগী। এ নিয়ে এ বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৪৪০ জনে।

এ বছরের শুরু থেকে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটেছিল সেপ্টেম্বর মাসে, ১৫ হাজার ৮৬৬ জনের। চলতি অক্টোবরের সপ্তাহখানেক বাকি থাকতেই সংক্রমণের সংখ্যা তা ছাড়িয়ে গেছে। অক্টোবর মাসেই সবচেয়ে বেশি ১৮ হাজার ৯৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬৫ জনের।

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৩১৯ জনই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায়। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে ২৮১, ময়মনসিংহে ৫৬, চট্টগ্রামে ১২১, খুলনায় ৬৫, রাজশাহীতে ৫৬, রংপুরে ৫০, বরিশালে ১৮৬ এবং সিলেটে ৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২ হাজার ৭৩৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৯৩০, আর রাজধানীর বাইরে ১ হাজার ৮০৩ জন ভর্তি রয়েছে।

দেশে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। সে বছর মারা যায় ১ হাজার ৭০৫ জন রোগী। এ ছাড়া ২০২৪ সালে ১ লাখ ১ হাজার ২১১,২০২২ সালে ৬২ হাজার ৩৮২,২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯,২০২০ সালে ১ হাজার ৪০৫ এবং ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইয়ামাল কি তাহলে এভাবেই হারিয়ে যাবেন

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

সন্ধ্যা থেকে বন্ধ থাকবে নির্বাচন ভবনের আশপাশের ব্যবসা কার্যক্রম

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দাঁতের যত্নে অবহেলায় হতে পারে বিপদ

ডা. পূজা সাহা
দাঁতের যত্নে অবহেলায় হতে পারে বিপদ

দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।

দাঁতে ব্যথা হলে আগে কারণ জানা

দাঁতে ব্যথা মানেই শুধু ক্যাভিটি নয়। দাঁতের গোড়ায় পাথর জমে যাওয়া, স্নায়ুতে প্রদাহ, মাড়ির সংক্রমণ কিংবা দাঁতের ক্ষয়—এসব কারণেও ব্যথা হতে পারে। তাই দাতে ব্যথা হলে প্রথমে কারণটা জানা জরুরি। অস্থায়ী স্বস্তির জন্য দিনে কয়েকবার কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে। দাঁতের সেনসিটিভিটি কমানোর টুথপেস্টও কিছুটা সহায়ক। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য অবশ্যই দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

দাঁতের যত্ন মানেই সার্বিক সুস্থতা

দাঁতের যত্ন শুধু সুন্দর হাসির জন্য নয়, শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অংশও। দাঁতের ক্ষয় বা সংক্রমণ অবহেলা করলে তা মাড়ি, হাড় এমনকি হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে। সঠিক যত্নে এই সমস্যা অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়।

টক খাবারে দাঁতের ক্ষয়

অতিরিক্ত টক বা অ্যাসিডযুক্ত খাবার দাঁতের এনামেল দুর্বল করে দেয়। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল, লেবু, টমেটো বা টক স্যুপ নিয়মিত খেলে দাঁতের বাইরের স্তর ক্ষয় হয়ে যেতে পারে। এতে দাঁত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে, ব্যথা বা ঝাঁজালো অনুভূতি দেখা দেয়। যাদের পারিবারিকভাবে দাঁত দুর্বল, তাদের ঝুঁকি আরও বেশি। দাঁতের ক্ষয় পুরোপুরি বন্ধ না হলেও চিকিৎসার মাধ্যমে তা মেরামত করা অনেকটা সম্ভব। ক্ষয়ের পরিমাণ অনুযায়ী ফিলিং বা অন্যান্য চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। এই অবস্থায় টক খাবার খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আর দাঁত ব্রাশ করার আগে অন্তত ৩০ মিনিট বিরতি দিন। অ্যাসিডজাতীয় খাবার খাওয়ার পরপরই দাঁত ব্রাশ করলে এনামেল আরও নরম হয়ে ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ায়।

স্কেলিং নিয়ে ভুল ধারণা

অনেকের ধারণা, দাঁতের স্কেলিং করালে দাঁত নরম বা আলগা হয়ে যায়। বাস্তবে এ তথ্য ভুল। স্কেলিংয়ের সময় দাঁতের পাথর বা ক্যালকুলাস সরানো হয়। স্কেলিংয়ের পর কিছু সময়ের জন্য দাঁত আলগা মনে হতে পারে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। দাঁতে দাগ বা পাথর দেখা দিলে স্কেলিং করানো উচিত। তবে দাঁত সাদা করতে চাইলে আলাদা ব্লিচিং বা হোয়াইটেনিং চিকিৎসা লাগে।

দাঁত আঁকাবাঁকা হলে করণীয়

শিশুদের ক্ষেত্রে দুধদাঁত সময়ের আগে কিংবা পরে পড়লে স্থায়ী দাঁত সোজাভাবে ওঠে না। ফলে দাঁত আঁকাবাঁকা হয়ে যায়। এতে শুধু চেহারার সৌন্দর্য নয়, উচ্চারণেও প্রভাব পড়তে পারে। এ সমস্যা থাকলে দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শে অর্থোডন্টিক চিকিৎসা (ব্রেস অথবা অ্যালাইনার) নেওয়া যায়। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শিশুর বয়স, দাঁতের অবস্থা এবং মুখের গঠন বিবেচনা করা জরুরি।

কিছু সাধারণ পরামর্শ

  • দিনে অন্তত দুবার নরম ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করুন।
  • প্রতি তিন মাসে একবার টুথব্রাশ পরিবর্তন করুন।
  • আঁশযুক্ত ও ক্যালসিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার বেশি খান।
  • চিনি বা টক খাবার খাওয়ার পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
  • বছরে অন্তত একবার দাঁতের চিকিৎসকের কাছে গিয়ে দাঁত পরীক্ষা করান।
  • দাঁতের ব্যথা, ক্ষয় অথবা সেনসিটিভিটি দেখা দিলে তা অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা নিন। কারণ, দাঁত হারানো মানে শুধু সৌন্দর্য নয়, আত্মবিশ্বাসও হারিয়ে ফেলা। নিয়মিত যত্ন নিলে দাঁত থাকবে মজবুত, আর হাসিও হয়ে উঠবে উজ্জ্বল।

লেখক: ডেন্টাল সার্জন, সিকদার ডেন্টাল কেয়ার, মিরপুর, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইয়ামাল কি তাহলে এভাবেই হারিয়ে যাবেন

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

সন্ধ্যা থেকে বন্ধ থাকবে নির্বাচন ভবনের আশপাশের ব্যবসা কার্যক্রম

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত