অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
প্রশ্ন: ছেলের বয়স চার বছর। ও যখন পেটে ছিল, তখন খুব মানসিক চাপে ছিলাম। শ্বশুরবাড়িতে ছিলাম। শারীরিক ধকলও গেছে। ছেলেটা প্রচণ্ড জেদি আর রাগী হয়েছে। ঘুম থেকে উঠেই চিৎকার-চেঁচামেচি করে, জিনিসপত্র ভাঙে। দিনে বেশ কয়েকবার সে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে, তখন বয়সে বড়দেরও মানে না। প্রচণ্ড রেগে গেলে মেঝেতে বা দেয়ালে মাথা ঠোকে। এটা কি কোনো মানসিক রোগ? ওর এমনিতে কোনো শারীরিক সমস্যা নেই। কী করতে পারি, জানাবেন। আনিকা রহমান, মানিকগঞ্জ
আমাদের মানসিকভাবে বেড়ে ওঠার কতগুলো ধাপ আছে। একে আমরা সাইকেল অব ডেভেলপমেন্ট বলি। আপনার সন্তান এখন তার মধ্যে আইডেন্টিটি স্টেজে আছে। এই বয়সের শিশুরা সবকিছুতেই ‘আমি আমি’ করে। সেটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু আপনি বলেছেন যে আপনার সন্তান প্রচণ্ড জেদি এবং রাগী হয়েছে। সেই সঙ্গে জিনিসপত্র ভাঙে। পরিবারে এ ধরনের প্রাপ্তবয়স্ক কি কেউ আছেন যিনি জেদ করেন, চিৎকার বা চেঁচামেচি করেন বা জিনিস ভাঙেন? শিশুরা অনুকরণপ্রিয় হয়। কাজেই পরিবারের কারও কাছ থেকে এটা শিখছে কি না, খেয়াল করা প্রয়োজন।
দ্বিতীয় কথাটি জরুরি। প্রচণ্ড রেগে গেলে সে মেঝেতে বা দেয়ালে মাথা ঠোকে। এমনটি কি সে বড় কারও কাছ থেকে দেখে শিখেছে? উত্তরটি যদি না হয়, তবে শিশুকে জিজ্ঞেস করুন, সে কেন রাগ করছে? আমরা মনে করি, তারা কিছু বোঝে না। তাদের শুধু ভালো খাবার আর দামি খেলনা দিলেই সন্তুষ্ট থাকবে। কিন্তু একটা চার বছরের শিশু নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে সম্পূর্ণভাবে সক্ষম। কাজেই একটু খেয়াল করা দরকার তার কিসে রাগ হচ্ছে? এ ক্ষেত্রে মা-বাবার দ্বন্দ্ব বা ঝগড়া দেখেও শিশু অনুকরণ করে। আপনি একক না যৌথ পরিবারে থাকেন, সেটা জানাননি। কাজেই পারিবারিক তথ্যগুলো ছাড়া মন্তব্য করা কঠিন।
আমরা মনস্তাত্ত্বিকভাবে বলি শিশুর সমস্যা নয়। আসল সমস্যা অভিভাবকদের। তারপরও যদি আপনার মনে হয় যে এটা মানসিক রোগ, নিকটস্থ কোনো চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।
প্রশ্ন: আমি কর্মজীবী নারী। বেশ কিছু সমস্যার মধ্যে আছি। তিন বছর ধরে চেষ্টা করেও সন্তান নিতে পারছি না। এখন প্রায় আশা ছেড়ে দিয়েছি। কিছুদিন আগেও স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। এখন স্বাভাবিক, তবে মানসিক ও শারীরিক যোগাযোগ কমে গেছে একেবারেই। সাত বছর বিবাহিত জীবনে খুব কম সময়ই মানসিক চাপ থেকে রেহাই পেয়েছি। ইদানীং যে সমস্যাটা হচ্ছে, অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পর আর কিছুই ভালো লাগে না। দম বন্ধ হয়ে আসে, অস্থির লাগে। মনে হয় মৃত্য়ুকূপে ঢুকে পড়েছি। বন্ধুদের সঙ্গে স্বাভাবিক যোগাযোগ রক্ষা করা এবং কারও সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করে না। বাগান করতে, ঘর গোছাতে, বই পড়তে, সিনেমা দেখতে—কিছু করতেই ভালো লাগে না। একা যে ঘুরে আসব, সেটাও মন টানে না। শুধু চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করে। স্বামী অনেক রাত করে বাড়ি ফেরেন। ফলে তার সঙ্গেও সময় কাটানো হয় না। এই জীবনটা চাই না। এক-দেড় মাস ধরে এভাবে কাটছে। আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ঢাকা
যেখানে বর্তমান সম্পর্কে আপনি মানসিক ও শারীরিকভাবে ছন্দে নেই এবং আপনি বলেছেন সাত বছরের বিবাহিত জীবনে খুব কম সময় মানসিক চাপ থেকে রেহাই পেয়েছেন, সে ক্ষেত্রে আমি একটু আপনাকে নিজের চোখে আয়না ধরতে বলব। কারণ গর্ভকালীন এবং গর্ভ-পরবর্তী সময়ে ধারাবাহিকভাবে শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন ধরনের আবেগীয় পরিবর্তন ঘটে। সেগুলো সামলাতে হবে সুস্থ থাকতে হলে।
সন্তান কি সত্যিই আপনাদের দুজনের ভালোবাসার ফসল, নাকি সংসারের একঘেয়েমি কাটানোর একটি তথাকথিত উপকরণ? আমাদের সমাজে একটি মিথ বা ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে। সেটি হলো, দাম্পত্য সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না, কাজেই সন্তান নিয়ে নাও।
আপনি লিখেছেন, বাড়ি ফিরে এলে দম বন্ধ হয় এবং বাড়িকে মৃত্যুকূপের সঙ্গে তুলনা করেছেন। অন্য কারও সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছাও কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আমি বলব, অবিলম্বে আপনি একজন মনোরোগ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। কোনো কারণে বিষণ্নতা বা অন্য কিছুতে ভুগছেন কি না, সেটা জানা জরুরি। সময়টা যেহেতু দেড় মাস, কাজেই এটাই প্রকৃষ্ট সময় আর দেরি করবেন না।
মনে রাখবেন, পেট খারাপ হলে যদি আমরা চিকিৎসা নিতে পারি, মন খারাপ হলেও চিকিৎসা নেওয়া দরকার। কখনো কখনো কাউন্সেলিং বা সাইকোথেরাপি আবার কখনো কখনো ওষুধ অথবা সবগুলোই প্রয়োজন হতে পারে মনের চিকিৎসায়। এতে লজ্জার কিছু নেই। মানসিক চিকিৎসা নেওয়া মানে পাগল হয়ে গেছি ভাবাটা আরেকটা ভ্রান্ত ধারণা।
পরামর্শ দিয়েছেন, অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া, চিকিৎসক ও কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা
প্রশ্ন: ছেলের বয়স চার বছর। ও যখন পেটে ছিল, তখন খুব মানসিক চাপে ছিলাম। শ্বশুরবাড়িতে ছিলাম। শারীরিক ধকলও গেছে। ছেলেটা প্রচণ্ড জেদি আর রাগী হয়েছে। ঘুম থেকে উঠেই চিৎকার-চেঁচামেচি করে, জিনিসপত্র ভাঙে। দিনে বেশ কয়েকবার সে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে, তখন বয়সে বড়দেরও মানে না। প্রচণ্ড রেগে গেলে মেঝেতে বা দেয়ালে মাথা ঠোকে। এটা কি কোনো মানসিক রোগ? ওর এমনিতে কোনো শারীরিক সমস্যা নেই। কী করতে পারি, জানাবেন। আনিকা রহমান, মানিকগঞ্জ
আমাদের মানসিকভাবে বেড়ে ওঠার কতগুলো ধাপ আছে। একে আমরা সাইকেল অব ডেভেলপমেন্ট বলি। আপনার সন্তান এখন তার মধ্যে আইডেন্টিটি স্টেজে আছে। এই বয়সের শিশুরা সবকিছুতেই ‘আমি আমি’ করে। সেটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু আপনি বলেছেন যে আপনার সন্তান প্রচণ্ড জেদি এবং রাগী হয়েছে। সেই সঙ্গে জিনিসপত্র ভাঙে। পরিবারে এ ধরনের প্রাপ্তবয়স্ক কি কেউ আছেন যিনি জেদ করেন, চিৎকার বা চেঁচামেচি করেন বা জিনিস ভাঙেন? শিশুরা অনুকরণপ্রিয় হয়। কাজেই পরিবারের কারও কাছ থেকে এটা শিখছে কি না, খেয়াল করা প্রয়োজন।
দ্বিতীয় কথাটি জরুরি। প্রচণ্ড রেগে গেলে সে মেঝেতে বা দেয়ালে মাথা ঠোকে। এমনটি কি সে বড় কারও কাছ থেকে দেখে শিখেছে? উত্তরটি যদি না হয়, তবে শিশুকে জিজ্ঞেস করুন, সে কেন রাগ করছে? আমরা মনে করি, তারা কিছু বোঝে না। তাদের শুধু ভালো খাবার আর দামি খেলনা দিলেই সন্তুষ্ট থাকবে। কিন্তু একটা চার বছরের শিশু নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে সম্পূর্ণভাবে সক্ষম। কাজেই একটু খেয়াল করা দরকার তার কিসে রাগ হচ্ছে? এ ক্ষেত্রে মা-বাবার দ্বন্দ্ব বা ঝগড়া দেখেও শিশু অনুকরণ করে। আপনি একক না যৌথ পরিবারে থাকেন, সেটা জানাননি। কাজেই পারিবারিক তথ্যগুলো ছাড়া মন্তব্য করা কঠিন।
আমরা মনস্তাত্ত্বিকভাবে বলি শিশুর সমস্যা নয়। আসল সমস্যা অভিভাবকদের। তারপরও যদি আপনার মনে হয় যে এটা মানসিক রোগ, নিকটস্থ কোনো চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।
প্রশ্ন: আমি কর্মজীবী নারী। বেশ কিছু সমস্যার মধ্যে আছি। তিন বছর ধরে চেষ্টা করেও সন্তান নিতে পারছি না। এখন প্রায় আশা ছেড়ে দিয়েছি। কিছুদিন আগেও স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। এখন স্বাভাবিক, তবে মানসিক ও শারীরিক যোগাযোগ কমে গেছে একেবারেই। সাত বছর বিবাহিত জীবনে খুব কম সময়ই মানসিক চাপ থেকে রেহাই পেয়েছি। ইদানীং যে সমস্যাটা হচ্ছে, অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পর আর কিছুই ভালো লাগে না। দম বন্ধ হয়ে আসে, অস্থির লাগে। মনে হয় মৃত্য়ুকূপে ঢুকে পড়েছি। বন্ধুদের সঙ্গে স্বাভাবিক যোগাযোগ রক্ষা করা এবং কারও সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করে না। বাগান করতে, ঘর গোছাতে, বই পড়তে, সিনেমা দেখতে—কিছু করতেই ভালো লাগে না। একা যে ঘুরে আসব, সেটাও মন টানে না। শুধু চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করে। স্বামী অনেক রাত করে বাড়ি ফেরেন। ফলে তার সঙ্গেও সময় কাটানো হয় না। এই জীবনটা চাই না। এক-দেড় মাস ধরে এভাবে কাটছে। আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ঢাকা
যেখানে বর্তমান সম্পর্কে আপনি মানসিক ও শারীরিকভাবে ছন্দে নেই এবং আপনি বলেছেন সাত বছরের বিবাহিত জীবনে খুব কম সময় মানসিক চাপ থেকে রেহাই পেয়েছেন, সে ক্ষেত্রে আমি একটু আপনাকে নিজের চোখে আয়না ধরতে বলব। কারণ গর্ভকালীন এবং গর্ভ-পরবর্তী সময়ে ধারাবাহিকভাবে শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন ধরনের আবেগীয় পরিবর্তন ঘটে। সেগুলো সামলাতে হবে সুস্থ থাকতে হলে।
সন্তান কি সত্যিই আপনাদের দুজনের ভালোবাসার ফসল, নাকি সংসারের একঘেয়েমি কাটানোর একটি তথাকথিত উপকরণ? আমাদের সমাজে একটি মিথ বা ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে। সেটি হলো, দাম্পত্য সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না, কাজেই সন্তান নিয়ে নাও।
আপনি লিখেছেন, বাড়ি ফিরে এলে দম বন্ধ হয় এবং বাড়িকে মৃত্যুকূপের সঙ্গে তুলনা করেছেন। অন্য কারও সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছাও কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আমি বলব, অবিলম্বে আপনি একজন মনোরোগ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। কোনো কারণে বিষণ্নতা বা অন্য কিছুতে ভুগছেন কি না, সেটা জানা জরুরি। সময়টা যেহেতু দেড় মাস, কাজেই এটাই প্রকৃষ্ট সময় আর দেরি করবেন না।
মনে রাখবেন, পেট খারাপ হলে যদি আমরা চিকিৎসা নিতে পারি, মন খারাপ হলেও চিকিৎসা নেওয়া দরকার। কখনো কখনো কাউন্সেলিং বা সাইকোথেরাপি আবার কখনো কখনো ওষুধ অথবা সবগুলোই প্রয়োজন হতে পারে মনের চিকিৎসায়। এতে লজ্জার কিছু নেই। মানসিক চিকিৎসা নেওয়া মানে পাগল হয়ে গেছি ভাবাটা আরেকটা ভ্রান্ত ধারণা।
পরামর্শ দিয়েছেন, অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া, চিকিৎসক ও কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা
দীর্ঘদিনেও নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন না হওয়ায় অধিকাংশ মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের চাকরির বয়স উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিয়োগ সম্পন্ন না হলে আবেদনকারীরা সরকারি চাকরি পাবেন না। সরকারের পক্ষ থেকে
১৭ ঘণ্টা আগেবদলি বা পদায়নকৃত কর্মকর্তারা আগামী ৬ মার্চের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। অন্যথায় ৯ মার্চ হতে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত হবেন মর্মে গণ্য হবেন। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে
১৭ ঘণ্টা আগেদেশে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্তের এক দশক পর এবার ভাইরাসটির ক্লাস্টার (গুচ্ছ) সংক্রমণ অর্থাৎ এক স্থানে একাধিক ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। একই এলাকার পাঁচ ব্যক্তির সংক্রমণের বিষয়টি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময়...
১৯ ঘণ্টা আগেস্বাস্থ্যকর খাবার যদি বেশি খাওয়া হয় তাহলে সেটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। হেলদি ফ্যাটযুক্ত খাবার অতিরিক্ত গ্রহণে ক্যালরি বেড়ে যেতে পারে, ফাইবারযুক্ত খাবার অতিরিক্ত গ্রহণ পেটে গ্যাস ও অস্বস্তির কারণ হতে পারে। আবার অতিরিক্ত প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তাই যেকোনো খাবারের...
১ দিন আগে