আজকের পত্রিকা ডেস্ক
অনেক বছর ধরে স্থূলতাকে একক রোগ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি উঠেছে। কারণ এটি শুধু ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, স্ট্রোক কিংবা কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় না, স্থূলতা নিজেও এমন একটি স্বতন্ত্র স্বাস্থ্য সমস্যা, যার আলাদাভাবে চিকিৎসা প্রয়োজন।
স্থূলতা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ালেও অনেক সময় ওজন বেশি থাকলেও কেউ অসুস্থ হন না। তাই স্থূলতাকে রোগ হিসেবে গণ্য করা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে বিতর্ক ছিল।
দুই বছর আগেও এই বিতর্ক তেমন গুরুত্ব পায়নি, কারণ তখন স্থূলতা মোকাবিলায় চিকিৎসার বাস্তবসম্মত বিকল্প ছিল খুবই কম। ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি ও সাধারণ খাদ্য-ব্যায়াম ছাড়া নতুন কিছু ছিল না। তবে ২০২৩ সালে ‘জিএলপি-১’ ওজন কমানোর ওষুধের আগমন (যেমন সেমাগ্লুটাইড বা ওয়েগোভি) পুরো চিত্রটাই বদলে দিয়েছে।
যদি এসব ওষুধ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এবং ন্যায়সংগতভাবে দেওয়ার কথা হয়, তাহলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, যাদের ওজন বেশি, তাদের মধ্যে কে সত্যিই অসুস্থ এবং কারা সুস্থ—এটি কীভাবে নির্ণয় করা হবে।
সম্প্রতি ‘দ্য ল্যানসেট’ এর আয়োজনে ৫৬ জন চিকিৎসকের একটি কমিশন এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। তারা স্থূলতা নির্ণয় পদ্ধতি প্রস্তাব করেছে। স্থূলতাকে কখন রোগ হিসেবে গণ্য করা হবে তা এই পদ্ধতি স্পষ্ট করে।
বর্তমানে স্থূলতা নির্ণয়ের প্রধান মাপকাঠি হচ্ছে ‘বডি মাস ইনডেক্স’ (বিএমআই)। এই মাপকাঠিতে ওজনকে উচ্চতার বর্গ দিয়ে ভাগ করা হয়। এই গণনায় ওজন থাকে কেজিতে ও ওজন থাকে মিটারে।
কারও বিএমআই ৩০-এর বেশি হলে তাকে স্থূল হিসেবে ধরা হয়। তবে অনেক সময় উচ্চ বিএমআই থাকা সত্ত্বেও কেউ অসুস্থ হন না। এমনকি পেশিবহুল ক্রীড়াবিদেরও বিএমআই বেশি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এই মাপকাঠি তাদের স্থূল হিসেবে চিহ্নিত করে। এ ছাড়া বিএমআই শরীরের চর্বির বণ্টন বিবেচনা করে না, যেখানে ‘ভিসেরাল ফ্যাট’ (যেমন: আপেলাকৃতির শরীরে বিভিন্ন অঙ্গের চারপাশের চর্বি) অনেক বেশি ক্ষতিকর ‘সাবকুটেনিয়াস ফ্যাট’ (যেমন নাশপাতি আকৃতির শরীরে ত্বকের নিচে জমা চর্বি) থেকে। ল্যানসেট কমিশন এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েছে।
তারা ‘ক্লিনিক্যাল স্থূলতা’ নামে একটি নতুন রোগের সংজ্ঞা দিয়েছে, যা নির্ণয় করতে দুই ধাপের পদ্ধতি প্রস্তাব করেছে। প্রথমত, বিএমআইয়ের সঙ্গে শরীরের তৃতীয় একটি মাপ যেমন—কোমরের মাপ, কোমর-নিতম্বের অনুপাত বা কোমর-উচ্চতার অনুপাতও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এগুলো দেখে বোঝা যায় চর্বি শরীরের কোথায় জমেছে। আধুনিক স্ক্যানিং প্রযুক্তি দিয়ে সরাসরি শরীরের চর্বির পরিমাণ মাপাও ভালো।
দ্বিতীয়ত, যদি সংশোধিত পরিমাপ স্থূলতা নিশ্চিত করে, তাহলে আরেকটু গভীরে দেখতে হবে। যেমন: শরীরের কোনো অঙ্গ ঠিকঠাক কাজ করতে পারছেন কি না বা দৈনন্দিন কাজগুলো করতে সমস্যা হচ্ছে কি না। যেমন: গোসল, খাওয়া, পোশাক পরিধান ইত্যাদি।
কমিশনের ১৮টি নির্ণায়ক লক্ষণের মধ্যে রয়েছে—শ্বাসকষ্ট, স্থূলতাজনিত হার্ট ফেইলিওর, হাঁটু বা কনুই ব্যথা এবং লিভার, হার্ট, কিডনি, প্রস্রাব ও প্রজননসংক্রান্ত অঙ্গের নানা সমস্যা। যারা এই লক্ষণগুলো থেকে মুক্ত, তাদের ‘প্রিক্লিনিক্যাল স্থূলতা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। কারণ তারা এখনো অসুস্থ না হলেও ভবিষ্যতে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে তাদের জন্য এখনই ওষুধ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
কিংস কলেজ লন্ডনের মেটাবলিক ও ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ফ্রান্সেসকো রুবিনো, লেন, স্থূলতাকে রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা এক ‘বৈপ্লবিক পরিবর্তন’। এখন লক্ষ্যমাত্রা হলো, প্রায় ১০০ কোটি স্থূলতা রোগীর মধ্যে কে ‘ক্লিনিক্যাল স্থূলতা’ আক্রান্ত তা নির্ধারণ করা। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, পুরোনো বিএমআই মাপকাঠিতে স্থূলতার মধ্যে ২০-৪০ শতাংশ ব্যক্তিই লোকই ক্লিনিক্যাল স্থূলতা হবে এবং তাদের চিকিৎসার প্রয়োজন।
বিশ্বের ৭৬টি শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থা যেমন: আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন, চায়না ডায়াবেটিস সোসাইটি এবং অল ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভান্সিং রিসার্চ ইন স্থূলতা ইতিমধ্যে এই কমিশনের পদ্ধতি মেনে নিয়েছে। তবে চিকিৎসার ক্ষেত্রে ও জনমত পরিবর্তন কত দ্রুত হবে, তা সময়ই বলবে।
তথ্যসূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট
অনেক বছর ধরে স্থূলতাকে একক রোগ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি উঠেছে। কারণ এটি শুধু ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, স্ট্রোক কিংবা কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় না, স্থূলতা নিজেও এমন একটি স্বতন্ত্র স্বাস্থ্য সমস্যা, যার আলাদাভাবে চিকিৎসা প্রয়োজন।
স্থূলতা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ালেও অনেক সময় ওজন বেশি থাকলেও কেউ অসুস্থ হন না। তাই স্থূলতাকে রোগ হিসেবে গণ্য করা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে বিতর্ক ছিল।
দুই বছর আগেও এই বিতর্ক তেমন গুরুত্ব পায়নি, কারণ তখন স্থূলতা মোকাবিলায় চিকিৎসার বাস্তবসম্মত বিকল্প ছিল খুবই কম। ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি ও সাধারণ খাদ্য-ব্যায়াম ছাড়া নতুন কিছু ছিল না। তবে ২০২৩ সালে ‘জিএলপি-১’ ওজন কমানোর ওষুধের আগমন (যেমন সেমাগ্লুটাইড বা ওয়েগোভি) পুরো চিত্রটাই বদলে দিয়েছে।
যদি এসব ওষুধ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এবং ন্যায়সংগতভাবে দেওয়ার কথা হয়, তাহলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, যাদের ওজন বেশি, তাদের মধ্যে কে সত্যিই অসুস্থ এবং কারা সুস্থ—এটি কীভাবে নির্ণয় করা হবে।
সম্প্রতি ‘দ্য ল্যানসেট’ এর আয়োজনে ৫৬ জন চিকিৎসকের একটি কমিশন এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। তারা স্থূলতা নির্ণয় পদ্ধতি প্রস্তাব করেছে। স্থূলতাকে কখন রোগ হিসেবে গণ্য করা হবে তা এই পদ্ধতি স্পষ্ট করে।
বর্তমানে স্থূলতা নির্ণয়ের প্রধান মাপকাঠি হচ্ছে ‘বডি মাস ইনডেক্স’ (বিএমআই)। এই মাপকাঠিতে ওজনকে উচ্চতার বর্গ দিয়ে ভাগ করা হয়। এই গণনায় ওজন থাকে কেজিতে ও ওজন থাকে মিটারে।
কারও বিএমআই ৩০-এর বেশি হলে তাকে স্থূল হিসেবে ধরা হয়। তবে অনেক সময় উচ্চ বিএমআই থাকা সত্ত্বেও কেউ অসুস্থ হন না। এমনকি পেশিবহুল ক্রীড়াবিদেরও বিএমআই বেশি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এই মাপকাঠি তাদের স্থূল হিসেবে চিহ্নিত করে। এ ছাড়া বিএমআই শরীরের চর্বির বণ্টন বিবেচনা করে না, যেখানে ‘ভিসেরাল ফ্যাট’ (যেমন: আপেলাকৃতির শরীরে বিভিন্ন অঙ্গের চারপাশের চর্বি) অনেক বেশি ক্ষতিকর ‘সাবকুটেনিয়াস ফ্যাট’ (যেমন নাশপাতি আকৃতির শরীরে ত্বকের নিচে জমা চর্বি) থেকে। ল্যানসেট কমিশন এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েছে।
তারা ‘ক্লিনিক্যাল স্থূলতা’ নামে একটি নতুন রোগের সংজ্ঞা দিয়েছে, যা নির্ণয় করতে দুই ধাপের পদ্ধতি প্রস্তাব করেছে। প্রথমত, বিএমআইয়ের সঙ্গে শরীরের তৃতীয় একটি মাপ যেমন—কোমরের মাপ, কোমর-নিতম্বের অনুপাত বা কোমর-উচ্চতার অনুপাতও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এগুলো দেখে বোঝা যায় চর্বি শরীরের কোথায় জমেছে। আধুনিক স্ক্যানিং প্রযুক্তি দিয়ে সরাসরি শরীরের চর্বির পরিমাণ মাপাও ভালো।
দ্বিতীয়ত, যদি সংশোধিত পরিমাপ স্থূলতা নিশ্চিত করে, তাহলে আরেকটু গভীরে দেখতে হবে। যেমন: শরীরের কোনো অঙ্গ ঠিকঠাক কাজ করতে পারছেন কি না বা দৈনন্দিন কাজগুলো করতে সমস্যা হচ্ছে কি না। যেমন: গোসল, খাওয়া, পোশাক পরিধান ইত্যাদি।
কমিশনের ১৮টি নির্ণায়ক লক্ষণের মধ্যে রয়েছে—শ্বাসকষ্ট, স্থূলতাজনিত হার্ট ফেইলিওর, হাঁটু বা কনুই ব্যথা এবং লিভার, হার্ট, কিডনি, প্রস্রাব ও প্রজননসংক্রান্ত অঙ্গের নানা সমস্যা। যারা এই লক্ষণগুলো থেকে মুক্ত, তাদের ‘প্রিক্লিনিক্যাল স্থূলতা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। কারণ তারা এখনো অসুস্থ না হলেও ভবিষ্যতে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে তাদের জন্য এখনই ওষুধ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
কিংস কলেজ লন্ডনের মেটাবলিক ও ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ফ্রান্সেসকো রুবিনো, লেন, স্থূলতাকে রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা এক ‘বৈপ্লবিক পরিবর্তন’। এখন লক্ষ্যমাত্রা হলো, প্রায় ১০০ কোটি স্থূলতা রোগীর মধ্যে কে ‘ক্লিনিক্যাল স্থূলতা’ আক্রান্ত তা নির্ধারণ করা। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, পুরোনো বিএমআই মাপকাঠিতে স্থূলতার মধ্যে ২০-৪০ শতাংশ ব্যক্তিই লোকই ক্লিনিক্যাল স্থূলতা হবে এবং তাদের চিকিৎসার প্রয়োজন।
বিশ্বের ৭৬টি শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থা যেমন: আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন, চায়না ডায়াবেটিস সোসাইটি এবং অল ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভান্সিং রিসার্চ ইন স্থূলতা ইতিমধ্যে এই কমিশনের পদ্ধতি মেনে নিয়েছে। তবে চিকিৎসার ক্ষেত্রে ও জনমত পরিবর্তন কত দ্রুত হবে, তা সময়ই বলবে।
তথ্যসূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট
সারা দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোয় আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু শনাক্তের এনএস-ওয়ান পরীক্ষা বিনা মূল্যে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগেঅ্যানাটমিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের উদ্যোগে দেশে প্রথমবারের মতো গতকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) পালিত হয়েছে বিশ্ব অ্যানাটমি দিবস বা ‘ওয়ার্ল্ড অ্যানাটমি ডে’।
১২ ঘণ্টা আগেমুগদার ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের সিঁড়িতেই গা ছেড়ে দিয়েছিলেন ডেঙ্গু আক্রান্ত অশীতিপর নবারুণ দাস। সঙ্গে থাকা পুত্রবধূ রমা দাসকে জিজ্ঞেস করে জানা গেল, তাঁরা এসেছেন মুন্সিগঞ্জ থেকে। সেখানকার চিকিৎসক পাঠিয়েছেন ঢাকায়। সিট খালি না থাকায় তাঁদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
১ দিন আগেএশিয়া-ওশেনিয়া ফেডারেশন অব অর্গানাইজেশনস ফর মেডিকেল ফিজিকস (এএফওএমপি)-এর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের মেডিকেল ফিজিকস বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. হাসিন অনুপমা আজহারি। এই নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি এএফওএমপির ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রফেসর ইভা বেজাকের পর দ্বিতীয় নারী হিসেবে মর্যাদাপূর্
৪ দিন আগে