Ajker Patrika

সরকারি তহবিল হ্রাস আত্মহত্যা প্রতিরোধ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করবে: মানসিক স্বাস্থ্য খাতসংশ্লিষ্টরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও কর্মশালা। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও কর্মশালা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্বেগজনক পর্যায়ে থাকলেও মানসিক স্বাস্থ্য খাতে সরকারি তহবিল বরাদ্দ কমে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এ খাতসংশ্লিষ্টরা। আজ বুধবার ‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও কর্মশালায় এ কথা বলেন তাঁরা।

বেসরকারি সংগঠন ইনার হুইল ক্লাবের সহযোগিতায় আত্মহত্যা প্রতিরোধমূলক সংগঠন ব্রাইটার টুমোরো ফাউন্ডেশন (বিটিএফ) ‘আত্মহত্যার আখ্যান পরিবর্তন’ (চেঞ্জিং দ্য ন্যারেটিভ অন সুইসাইড) শীর্ষক আলোচনা সভা এবং ‘লেটস টক অ্যাবাউট সুইসাইড: হাউ টু হ্যান্ডেল আ সুইসাইডাল পেশেন্ট’ শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করে।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য খাতে সরকারি তহবিল বরাদ্দ কমে যাওয়া আত্মহত্যা প্রতিরোধ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করবে। বিশেষত যেখানে সম্পদের অপ্রতুলতা রয়েছে, সেসব জায়গা টেকসই ও পর্যাপ্ত বিনিয়োগের অভাবে ইতিমধ্যে ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি জয়শ্রী জামান। তিনি বলেন, সরকারি তহবিল হ্রাস পরিষেবাগুলোকে সংকুচিত করবে এবং সরাসরি যুক্তরা অসহায় হয়ে পড়বে। সবচেয়ে ভয়াবহ ও দুঃখজনক বিষয় হলো, যে জীবনগুলো বাঁচানো যেত, তা হারিয়ে যাবে। মানসিক স্বাস্থ্য খাতের এই কাটছাঁট এমন এক সময়ে করা হয়েছে, যখন মানসিক স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন আগের চেয়ে বেশি এবং কিছু জনগোষ্ঠী অবকাঠামোগত স্বাস্থ্যবৈষম্যের মুখোমুখি। সেবার ক্ষেত্রে তারা ক্রমবর্ধমান বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।

সভায় আলোচকেরা বলেন, আত্মহত্যার সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পৃক্ত হলো বিষণ্নতা। অনিয়ন্ত্রিত আবেগও মানুষকে ভুল পথে নিয়ে যায়। বিশেষত তরুণ বয়সীদের ক্ষেত্রে। প্রতিবছর আত্মহত্যায় যত লোক মারা যায়, এর মধ্যে ২ দশমিক ০৬ শতাংশ বাংলাদেশি। তরুণদের মৃত্যুর একটি বড় কারণ আত্মহত্যা।

বক্তারা আত্মহত্যা প্রতিরোধ ও মানসিক স্বাস্থ্যকে জননীতিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান।

বক্তারা আলোচনা সভায় কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধে সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রমাণভিত্তিক কৌশল তৈরি এবং বাস্তবায়ন, মানসম্পন্ন সেবার প্রবেশগম্যতা উন্নত করা ও দুর্দশাগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি। মানুষের কথা বলার ও সাহায্য চাওয়ার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তাঁরা আত্মহত্যা সম্পর্কে খোলামেলা ও সহানুভূতিশীল আলোচনা গড়ে তোলার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে আত্মহত্যা-সম্পর্কিত কুসংস্কার, নীরবতা ও ভুল-বোঝাবুঝি থেকে বেড়িয়ে এসে সহানুভূতিশীল ও মানবিক সমাজ গঠন প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন তাঁরা।

কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের কমিউনিটি ও সোশ্যাল সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা রহমান, প্রফেশনাল কাউন্সেলিং সেন্টার বৃদ্ধি নেটওয়ার্কের সিইও মো. আকবর হোসেন ও সিটি হাসপাতালের চিফ অব অপারেশন পলিয়েটিভ কেয়ার স্পেশালিস্ট ফারজানা ইসলাম শম্পা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত