রাশেদ রাব্বি, ঢাকা
মাত্র ৪০ বছর বয়সেই পাবনার আবুল হাসনায়েতের দুটি কিডনি বিকল হয়ে পড়ে। এ জন্য ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই তাঁকে প্রতি সপ্তাহে দুটি করে ডায়ালাইসিস করাতে হতো। তবে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে তাঁকে সপ্তাহে তিনটি ডায়ালাইসিস নিতে হচ্ছে। গত তিন বছরে ডায়ালাইসিস সেবা পেতে তাঁকে বসতবাড়ি ছাড়া বাকি সব স্থাবর সম্পত্তিই বিক্রি করতে হয়েছে। অর্থাভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। দেশে জটিল কিডনি রোগে (সিকেডি) আক্রান্ত অসংখ্য রোগীর জীবনের কাহিনিই এমন করুণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশির ভাগ সিকেডি রোগীর পরিবার চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। একজন রোগীকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে তিনটি ডায়ালাইসিস নিতে হলে ৪৫ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়। আবার একবার কিডনি প্রতিস্থাপন করার পর দীর্ঘ মেয়াদে অত্যন্ত উচ্চ মূল্যের ওষুধ খেতে হয়। অনেক রোগীর পক্ষে সেটি চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। এসব রোগীকে বাঁচাতে স্বাস্থ্যবিমা চালু করা দরকার বলে তাঁরা মনে করেন।
কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটির (ক্যাম্পস) তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগীর হার ১৬-১৮ শতাংশ। কিডনি রোগের শেষ পরিণতি কিডনি বিকল। একবার কিডনি বিকল হলে বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় কিডনি সংযোজন অথবা ডায়ালাইসিস। কিন্তু এই চিকিৎসা এতটাই ব্যয়বহুল যে প্রায় ৯০ শতাংশ রোগী বিনা চিকিৎসায় অথবা আংশিক চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবছর ১ কোটি ৩০ লাখ লোক আকস্মিক কিডনি বিকল রোগে আক্রান্ত হয়, যার ৮৫ শতাংশই বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে। উন্নত দেশেই কিডনি বিকলের চিকিৎসা করতে গিয়ে সরকারগুলো হিমশিম খাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে সিকেডি রোগীদের নানা জটিলতায় ভুগতে হয়। প্রথমত, চিকিৎসা ও চিকিৎসকের অপ্রতুলতা। দ্বিতীয়ত, চিকিৎসাপদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। দেশে কিডনি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ মাত্র ১৫ জন। তা ছাড়া ব্যয়বহুল চিকিৎসা ও আইনি জটিলতায় প্রতিস্থাপনের হার অনেক কম।
অন্যদিকে সারা দেশে সরকারি পর্যায়ে ডায়ালাইসিস শয্যা আছে মাত্র ৩৬০টি। বেশির ভাগ জেলা শহরে নেই এই সুবিধা। একই সঙ্গে ডায়ালাইসিস রোগীদের অনেকেই হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের মতো জটিল সংবেদনশীল রোগে ভোগে।
ডায়ালাইসিস করাতে গিয়ে হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এমন কিছু রোগী আছেন, যাঁরা কিডনি রোগের পাশাপাশি হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে আক্রান্ত। ডায়ালাইসিস নেওয়ার সময় তাঁরা এই তথ্য গোপন করে থাকেন। কারণ, এসব রোগীদের জন্য পৃথক ডায়ালাইসিস মেশিন থাকে, যেখানে সিরিয়াল পেতে অপেক্ষা করতে হয়। ডায়ালাইসিস করানোর আগে কিছু রুটিন পরীক্ষা করানোর নিয়ম থাকলেও অনেক সেন্টারে সেটি করা হয় না। ফলে এই রোগগুলো অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
ক্যাম্পসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ বলেন, জটিল কিডনি রোগ এড়াতে কিডনি সুস্থ রাখার চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম ও কায়িক পরিশ্রম করা, পরিমিত স্বাস্থ্যসম্মত বা সুষম খাবার গ্রহণ, ওজন নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান পরিহার, পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান, তীব্র মাত্রার ব্যথার ওষুধ পরিহার করা জরুরি। তা ছাড়া যাঁরা ঝুঁকিতে আছেন, তাঁদের বছরে অন্তত ২ বার প্রস্রাব ও রক্তের ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করাতে হবে। কেননা, প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগ শনাক্ত করতে পারলে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বাবরুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নিয়মিত কিডনি প্রতিস্থাপন হয়। তবে আইনি জটিলতায় সেই হার অনেক কম। এ দেশে অঙ্গদানের সংস্কৃতি এখনো গড়ে ওঠেনি। অন্যদিকে দেশে সরকারি পর্যায়ে ডায়ালাইসিস সেবা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এসব সেন্টারে প্রতিটি ডায়ালাইসিস যন্ত্র দিনে তিন থেকে চারবার ব্যবহার করা হয়। আট বিভাগে আটটি কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের কাজ চলমান। তবে কিডনি চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যবিমার প্রচলন দরকার। তিনি বলেন, ‘বিমাসুবিধা ছাড়া আমাদের দেশের রোগীদের কিডনি চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব।’
মাত্র ৪০ বছর বয়সেই পাবনার আবুল হাসনায়েতের দুটি কিডনি বিকল হয়ে পড়ে। এ জন্য ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই তাঁকে প্রতি সপ্তাহে দুটি করে ডায়ালাইসিস করাতে হতো। তবে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে তাঁকে সপ্তাহে তিনটি ডায়ালাইসিস নিতে হচ্ছে। গত তিন বছরে ডায়ালাইসিস সেবা পেতে তাঁকে বসতবাড়ি ছাড়া বাকি সব স্থাবর সম্পত্তিই বিক্রি করতে হয়েছে। অর্থাভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। দেশে জটিল কিডনি রোগে (সিকেডি) আক্রান্ত অসংখ্য রোগীর জীবনের কাহিনিই এমন করুণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশির ভাগ সিকেডি রোগীর পরিবার চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। একজন রোগীকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে তিনটি ডায়ালাইসিস নিতে হলে ৪৫ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়। আবার একবার কিডনি প্রতিস্থাপন করার পর দীর্ঘ মেয়াদে অত্যন্ত উচ্চ মূল্যের ওষুধ খেতে হয়। অনেক রোগীর পক্ষে সেটি চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। এসব রোগীকে বাঁচাতে স্বাস্থ্যবিমা চালু করা দরকার বলে তাঁরা মনে করেন।
কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটির (ক্যাম্পস) তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগীর হার ১৬-১৮ শতাংশ। কিডনি রোগের শেষ পরিণতি কিডনি বিকল। একবার কিডনি বিকল হলে বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় কিডনি সংযোজন অথবা ডায়ালাইসিস। কিন্তু এই চিকিৎসা এতটাই ব্যয়বহুল যে প্রায় ৯০ শতাংশ রোগী বিনা চিকিৎসায় অথবা আংশিক চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবছর ১ কোটি ৩০ লাখ লোক আকস্মিক কিডনি বিকল রোগে আক্রান্ত হয়, যার ৮৫ শতাংশই বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে। উন্নত দেশেই কিডনি বিকলের চিকিৎসা করতে গিয়ে সরকারগুলো হিমশিম খাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে সিকেডি রোগীদের নানা জটিলতায় ভুগতে হয়। প্রথমত, চিকিৎসা ও চিকিৎসকের অপ্রতুলতা। দ্বিতীয়ত, চিকিৎসাপদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। দেশে কিডনি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ মাত্র ১৫ জন। তা ছাড়া ব্যয়বহুল চিকিৎসা ও আইনি জটিলতায় প্রতিস্থাপনের হার অনেক কম।
অন্যদিকে সারা দেশে সরকারি পর্যায়ে ডায়ালাইসিস শয্যা আছে মাত্র ৩৬০টি। বেশির ভাগ জেলা শহরে নেই এই সুবিধা। একই সঙ্গে ডায়ালাইসিস রোগীদের অনেকেই হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের মতো জটিল সংবেদনশীল রোগে ভোগে।
ডায়ালাইসিস করাতে গিয়ে হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এমন কিছু রোগী আছেন, যাঁরা কিডনি রোগের পাশাপাশি হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে আক্রান্ত। ডায়ালাইসিস নেওয়ার সময় তাঁরা এই তথ্য গোপন করে থাকেন। কারণ, এসব রোগীদের জন্য পৃথক ডায়ালাইসিস মেশিন থাকে, যেখানে সিরিয়াল পেতে অপেক্ষা করতে হয়। ডায়ালাইসিস করানোর আগে কিছু রুটিন পরীক্ষা করানোর নিয়ম থাকলেও অনেক সেন্টারে সেটি করা হয় না। ফলে এই রোগগুলো অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
ক্যাম্পসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ বলেন, জটিল কিডনি রোগ এড়াতে কিডনি সুস্থ রাখার চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম ও কায়িক পরিশ্রম করা, পরিমিত স্বাস্থ্যসম্মত বা সুষম খাবার গ্রহণ, ওজন নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান পরিহার, পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান, তীব্র মাত্রার ব্যথার ওষুধ পরিহার করা জরুরি। তা ছাড়া যাঁরা ঝুঁকিতে আছেন, তাঁদের বছরে অন্তত ২ বার প্রস্রাব ও রক্তের ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করাতে হবে। কেননা, প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগ শনাক্ত করতে পারলে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বাবরুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নিয়মিত কিডনি প্রতিস্থাপন হয়। তবে আইনি জটিলতায় সেই হার অনেক কম। এ দেশে অঙ্গদানের সংস্কৃতি এখনো গড়ে ওঠেনি। অন্যদিকে দেশে সরকারি পর্যায়ে ডায়ালাইসিস সেবা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এসব সেন্টারে প্রতিটি ডায়ালাইসিস যন্ত্র দিনে তিন থেকে চারবার ব্যবহার করা হয়। আট বিভাগে আটটি কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের কাজ চলমান। তবে কিডনি চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যবিমার প্রচলন দরকার। তিনি বলেন, ‘বিমাসুবিধা ছাড়া আমাদের দেশের রোগীদের কিডনি চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব।’
যুক্তরাষ্ট্রের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে গাঁজা সেবনের প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে টিনএজারদের মধ্যে টিএইচসি, সিবিডি এবং সিনথেটিক ক্যানাবিনয়েড ভ্যাপিংয়ের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। উদ্বেগজনক বিষয় হলো, অনেক কিশোর-কিশোরীই জানে না তারা
২৩ মিনিট আগেগত চার দশকের বেশি সময় ধরে কোটি মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে এইচআইভি। এবার হাতে এসেছে এক কার্যকর হাতিয়ার। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) বিশ্বের প্রথম এইচআইভি প্রতিরোধী ওষুধ ‘ইয়েজটুগো’ বা ‘লেনাক্যাপাভির’ অনুমোদন দিয়েছে, যা বছরে মাত্র দুবার ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রায় শতভাগ
২ ঘণ্টা আগেডেঙ্গুতে সর্বশেষ মারা যাওয়া তিনজনই পুরুষ। তাঁদের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৭৩।
১ দিন আগেপ্রজননসংক্রান্ত সমস্যা নির্ণয়ে চিকিৎসকদের জন্য এক নতুন সতর্কবার্তা নিয়ে এসেছে লিথুয়ানিয়ার ২৯ বছরের এক নারীর বিরল সমস্যা। বারবার চেষ্টা করেও গর্ভধারণে ব্যর্থ হওয়া এবং ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) চিকিৎসায়ও ফল না আসায় ধন্দে পড়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা।
১ দিন আগে