অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
ডায়াবেটিস রোগ ভয়াবহ আকারে বাড়ছে বিশ্বজুড়ে। অনেকেই জানেন না তাঁদের মধ্যে লুকিয়ে আছে রোগটি। এ বিষয়ে সচেতনতা তাই খুব প্রয়োজন। বিশ্বে যে ১০টি দেশে ডায়াবেটিস বেশি, আমাদের দেশ তার মধ্যে একটি। বিশ্বে যেসব দেশে উচ্চ হারে ডায়াবেটিস বাড়ছে, সেসব দেশের মধ্যে প্রথম দিকে আছে চীন, ভারত আর বাংলাদেশ।
নানা গবেষণায় দেখা যায়, অসুস্থতা আর মৃত্যুর হারে বড় ভূমিকা রাখে ডায়াবেটিস। এর মোকাবিলায় যা বোঝার বিষয়, একে নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ বড় কথা নয়। ওষুধের সঙ্গে জীবনশৈলীর সামঞ্জস্য বিধান করা বড় বিষয়। ডায়াবেটিস হতে পারে এমন শঙ্কা হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। আমরা জেনেছি, বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ৯০-৯৫ শতাংশ হলো টাইপ-২ ডায়াবেটিস। এঁদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ মারা যান হৃদ্রোগে। কিছু স্ট্রোকেও মারা যান। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রক্তচাপ ও লিপিড নিয়ন্ত্রণও আবশ্যক। টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ৫০ শতাংশের কোনো লক্ষণ থাকে না। তাই তাঁরা যখন চিকিৎসকের কাছে যান, তত দিনে আক্রান্ত হওয়ার পাঁচ-ছয় বছর পার হয়ে যায়।
যারা আক্রান্ত হতে পারে
স্থুল মানুষ, পরিবারে কারও ডায়াবেটিস থাকলে, শরীরচর্চা না করলে, স্ট্রেস থাকলে ডায়াবেটিসের প্রবণতা বেশি থাকে। অনেক রোগী আক্রান্ত হলে বিষণ্ণতায় ভোগেন,
তাই মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি।
প্রতিরোধে
আমরা জানি, ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় মহান চিকিৎসক অধ্যাপক মোহাম্মাদ ইব্রাহিমের সেই অমর বাণী, ‘ডায়েট, ড্রাগ ও ডিসিপ্লিন।’ মানে সঠিক খাদ্যবিধি, প্রয়োজনে ওষুধ আর সুশৃঙ্খল কর্মঠ জীবন ডায়াবেটিসদূরে রাখে।
যা করতে হবে
বয়স ২০ হওয়ার পর থেকে রক্তের গ্লুকোজ মেপে দেখা উচিত সবারই। যদি দেখা যায়, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, কিন্তু ডায়াবেটিসের পর্যায়ে যায়নি, সেটা ডায়াবেটিসের প্রাথমিক পর্যায়। এ সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ সম্ভব আর হলেও একে বিলম্বিত করা সম্ভব। এ ছাড়া ডায়াবেটিক কেন্দ্রে গিয়ে কোনো কিছু খাওয়ার আগে রক্তের গ্লুকোজ, খাবার বা গ্লুকোজ শরবত পানের দুই ঘণ্টা পর আরেকবার নমুনায় রক্তের গ্লুকোজ মাপতে হবে। ঘরে বসে মনিটরে গ্লুকোজ মাপা যায়।
সঠিক খাদ্যবিধি
আর সঠিক খাদ্যবিধি সময়মতো আহার, বারবার কম কম
করে খাওয়া, একবারে বেশি না খাওয়া। শর্করা কম আর পরিমিত
চর্বি ও প্রোটিন খেতে হবে। খেতে হবে প্রচুর শাকসবজি। লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত, ডাল, চর্বি ছাড়া মাংস, মাছ, ডিম। আর বাদ দিতে হবে চর্বিযুক্ত মাংস, ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, বেশি লবণ, বেশি চিনিসহ মিষ্টিজাতীয় খাবার।
শরীরচর্চা
আর শরীরের চর্চা। অন্তত দিনে আধা ঘণ্টা জোরে হাঁটা বা এর সঙ্গে মাঝে মাঝে ভার উত্তোলন, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, জগিং আর দড়ি লাফ।
কোভিড ও ডায়াবেটিস
এবার কোভিড আর ডায়াবেটিস এসেছে আলোচনায়। এবারের প্রতিপাদ্যও তাই ‘কোভিড ও ডায়াবেটিস, প্রতিরোধে বাঁচবে জীবন।’ রক্তে গ্লুকোজ বেশি থাকলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়। তাই মানুষ খুব সহজে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। তেমনি কোভিড থাকলেও ডায়াবেটিস জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তাই করোনা প্রতিরোধের জন্য যেসব স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা আছে, যেমন—মাস্ক পরা, বারবার সাবানজলে হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলা, সেগুলোপালন করতে হবে। জনসমাগম এড়াতে হবে। আর যাঁরা ডায়াবেটিস রোগী, তাঁরা প্রয়োজনে চিকিৎসক আর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগের জন্য দরকারি তথ্য কাছে রাখুন।যাঁরা ডায়াবেটিস রোগী আর বারডেমে তালিকায় আছেন, তাঁরা ডায়াবেটিস গাইড বই কাছে রাখুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।
যা করবেন
লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকের কলেজ
ডায়াবেটিস রোগ ভয়াবহ আকারে বাড়ছে বিশ্বজুড়ে। অনেকেই জানেন না তাঁদের মধ্যে লুকিয়ে আছে রোগটি। এ বিষয়ে সচেতনতা তাই খুব প্রয়োজন। বিশ্বে যে ১০টি দেশে ডায়াবেটিস বেশি, আমাদের দেশ তার মধ্যে একটি। বিশ্বে যেসব দেশে উচ্চ হারে ডায়াবেটিস বাড়ছে, সেসব দেশের মধ্যে প্রথম দিকে আছে চীন, ভারত আর বাংলাদেশ।
নানা গবেষণায় দেখা যায়, অসুস্থতা আর মৃত্যুর হারে বড় ভূমিকা রাখে ডায়াবেটিস। এর মোকাবিলায় যা বোঝার বিষয়, একে নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ বড় কথা নয়। ওষুধের সঙ্গে জীবনশৈলীর সামঞ্জস্য বিধান করা বড় বিষয়। ডায়াবেটিস হতে পারে এমন শঙ্কা হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। আমরা জেনেছি, বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ৯০-৯৫ শতাংশ হলো টাইপ-২ ডায়াবেটিস। এঁদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ মারা যান হৃদ্রোগে। কিছু স্ট্রোকেও মারা যান। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রক্তচাপ ও লিপিড নিয়ন্ত্রণও আবশ্যক। টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ৫০ শতাংশের কোনো লক্ষণ থাকে না। তাই তাঁরা যখন চিকিৎসকের কাছে যান, তত দিনে আক্রান্ত হওয়ার পাঁচ-ছয় বছর পার হয়ে যায়।
যারা আক্রান্ত হতে পারে
স্থুল মানুষ, পরিবারে কারও ডায়াবেটিস থাকলে, শরীরচর্চা না করলে, স্ট্রেস থাকলে ডায়াবেটিসের প্রবণতা বেশি থাকে। অনেক রোগী আক্রান্ত হলে বিষণ্ণতায় ভোগেন,
তাই মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি।
প্রতিরোধে
আমরা জানি, ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় মহান চিকিৎসক অধ্যাপক মোহাম্মাদ ইব্রাহিমের সেই অমর বাণী, ‘ডায়েট, ড্রাগ ও ডিসিপ্লিন।’ মানে সঠিক খাদ্যবিধি, প্রয়োজনে ওষুধ আর সুশৃঙ্খল কর্মঠ জীবন ডায়াবেটিসদূরে রাখে।
যা করতে হবে
বয়স ২০ হওয়ার পর থেকে রক্তের গ্লুকোজ মেপে দেখা উচিত সবারই। যদি দেখা যায়, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, কিন্তু ডায়াবেটিসের পর্যায়ে যায়নি, সেটা ডায়াবেটিসের প্রাথমিক পর্যায়। এ সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ সম্ভব আর হলেও একে বিলম্বিত করা সম্ভব। এ ছাড়া ডায়াবেটিক কেন্দ্রে গিয়ে কোনো কিছু খাওয়ার আগে রক্তের গ্লুকোজ, খাবার বা গ্লুকোজ শরবত পানের দুই ঘণ্টা পর আরেকবার নমুনায় রক্তের গ্লুকোজ মাপতে হবে। ঘরে বসে মনিটরে গ্লুকোজ মাপা যায়।
সঠিক খাদ্যবিধি
আর সঠিক খাদ্যবিধি সময়মতো আহার, বারবার কম কম
করে খাওয়া, একবারে বেশি না খাওয়া। শর্করা কম আর পরিমিত
চর্বি ও প্রোটিন খেতে হবে। খেতে হবে প্রচুর শাকসবজি। লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত, ডাল, চর্বি ছাড়া মাংস, মাছ, ডিম। আর বাদ দিতে হবে চর্বিযুক্ত মাংস, ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, বেশি লবণ, বেশি চিনিসহ মিষ্টিজাতীয় খাবার।
শরীরচর্চা
আর শরীরের চর্চা। অন্তত দিনে আধা ঘণ্টা জোরে হাঁটা বা এর সঙ্গে মাঝে মাঝে ভার উত্তোলন, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, জগিং আর দড়ি লাফ।
কোভিড ও ডায়াবেটিস
এবার কোভিড আর ডায়াবেটিস এসেছে আলোচনায়। এবারের প্রতিপাদ্যও তাই ‘কোভিড ও ডায়াবেটিস, প্রতিরোধে বাঁচবে জীবন।’ রক্তে গ্লুকোজ বেশি থাকলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়। তাই মানুষ খুব সহজে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। তেমনি কোভিড থাকলেও ডায়াবেটিস জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তাই করোনা প্রতিরোধের জন্য যেসব স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা আছে, যেমন—মাস্ক পরা, বারবার সাবানজলে হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলা, সেগুলোপালন করতে হবে। জনসমাগম এড়াতে হবে। আর যাঁরা ডায়াবেটিস রোগী, তাঁরা প্রয়োজনে চিকিৎসক আর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগের জন্য দরকারি তথ্য কাছে রাখুন।যাঁরা ডায়াবেটিস রোগী আর বারডেমে তালিকায় আছেন, তাঁরা ডায়াবেটিস গাইড বই কাছে রাখুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।
যা করবেন
লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকের কলেজ
আমাদের অনেকের প্রায় অনেক সময় নাক খোঁটানোর অভ্যাস আছে। আপাতদৃষ্টে বিষয়টি খুব সাধারণ মনে হলেও গবেষকেরা বলছেন, নাক খোঁটানোর বিষয়টি মোটেও নিরাপদ নয়। ২০২২ সালে বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল নেচারে প্রকাশিত এক গবেষণায় নাক খোঁটার সঙ্গে স্মৃতিভ্রংশ বা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকির ক্ষীণ কিন্তু সম্ভাব্য যোগসূত্রের কথা বলা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেদীর্ঘদিন ধরে নারীদেহের এক প্রত্যঙ্গকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে মনে করা হতো। তবে নতুন এক গবেষণায় জানা যায়, এই প্রত্যঙ্গটিই নারীর ডিম্বাশয়ের বিকাশ ও প্রজনন ক্ষমতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৬ ঘণ্টা আগেনানা কারণে ঘুম নেই, মেজাজ খিটখিটে, অতিরিক্ত রাগ আর কোনো কিছুতেই প্রশান্তি নেই। এসব কারণে ইদানীং মানসিক সমস্যার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। মানসিক সমস্যা মানুষেরই হয়। বিশেষ করে যুবসমাজ এ সমস্যায় ভুগছে মারাত্মকভাবে। যে কারণেই হোক না কেন, মানসিক সমস্যা রোগী নিজে বুঝতে পারে না। তাকে বলাও যায় না...
৩ দিন আগেঅফিসে বারবার ঘুম পেলে তা কাজের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। ডেডলাইন মিস করা, কাজ জমে যাওয়া, এমনকি চাকরিও ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ঘুমের সমস্যা থাকলে চিকিৎসা জরুরি। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে কাজের সময় ঘুম পাওয়া থেকে রেহাই পেতে পারেন।
৩ দিন আগে