Ajker Patrika

ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি চোখের রোগের কারণ

ডা. মো. আরমান হোসেন রনি
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি চোখের রোগের কারণ

ত্বক উজ্জ্বল করার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ব্যবহার করে থাকি। এসব ক্রিমে স্টেরয়েডসহ বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান থাকতে পারে, যেগুলোর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চোখের রেটিনা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, চোখের এই রোগকে বলে সেন্ট্রাল সেরাস রেটিনোপ্যাথি বা সিএসআর।

সেন্ট্রাল সেরাস রেটিনোপ্যাথি হলে রেটিনার পেছনে তরল জমা হয় এবং তা দৃষ্টিকে প্রভাবিত করে। রেটিনা হলো চোখের পেছনে একটি পাতলা সংবেদনশীল পর্দা, যা আমাদের দেখতে সাহায্য করে। তরল জমা হওয়ার ফলে রেটিনা আংশিক বিচ্ছিন্ন হতে পারে। এটি সাধারণত এক বা উভয় চোখকে প্রভাবিত করে বা করতে পারে। নারীদের তুলনায় অল্পবয়সী কিংবা মধ্যবয়সী পুরুষদের এটি বেশি হয়।

লক্ষণ
এই রোগে প্রথমে যে লক্ষণটি দেখা যায় তা হলো, আক্রান্ত চোখে ঝাপসা দেখা। অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে আছে:

  • কেন্দ্রীয় দৃষ্টিতে অন্ধকার থাকা।
  • সরলরেখাগুলো আঁকাবাঁকা দেখা।
  • বস্তু মূল আকারের চেয়ে ছোট দেখা।

কারণ
অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তাকে সিএসআরের অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়। মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা মানুষের শরীরে কর্টিসল নামের হরমোন নিঃসরণ করে, যা চোখের প্রদাহ তৈরি করতে পারে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে রেটিনা। অন্যান্য ঝুঁকির কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে,

  • স্টেরয়েডযুক্ত ক্রিম ও ওষুধ সেবন।
  • অটো ইমিউন রোগ, যেমন লুপাস ও রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস।
  • হৃদ্‌রোগ বা উচ্চ রক্তচাপ।
  • অন্তর্মুখী ব্যক্তিত্ব; অর্থাৎ লাজুক ব্যক্তি, যাদের অন্যের সঙ্গে সহজে মিশতে বা কথা বলতে সমস্যা হয় এবং সে জন্য মানসিক চাপে ভোগে।
  • ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ।
  • ঘুমের সমস্যা, যেমন স্লিপ অ্যাপনিয়া কিংবা অনিদ্রা।

চিকিৎসা
সেন্ট্রাল সেরাস রেটিনোপ্যাথি শতকরা ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে নিজেই ঠিক হয়ে যায়। যদি কয়েক মাসের মধ্যে তরল নিজ থেকে কমে না যায়, তাহলে চিকিৎসা নিতে হবে।

  • ওষুধ: অ্যান্টি ভিইজিএফ ও দুশ্চিন্তা কমানোর ওষুধ এ ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।
  • ফটো ডায়নামিক থেরাপি: রোগটি দীর্ঘস্থায়ী হলে এই থেরাপি ব্যবহার করা হয়।
  • লেজার চিকিৎসা: রোগের ধরনের ওপর নির্ভর করে এ চিকিৎসা দেওয়া হয়।

প্রতিরোধ

  • প্রতিদিন রাতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
  • ক্যাফেইন, অ্যালকোহল ও স্টেরয়েড সীমিতভাবে ব্যবহার করতে হবে।
  • স্টেরয়েডযুক্ত ত্বকের রং ফরসা করার ক্রিম ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। 
  • নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
  • প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটাতে হবে।
  • দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপন করতে হবে।

পরামর্শ: চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা এবং কনসালট্যান্ট (চক্ষু), দীন মোহাম্মদ আই হসপিটাল, সোবহানবাগ, ঢাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত