রিমন রহমান, রাজশাহী

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা পার্কে। জানা গেল, রোজ ভোরে এখানে শরীরচর্চা করেন জ্যেষ্ঠ এই নাগরিকেরা।
এভাবে টানা ২৩ বছর রাজশাহীর একদল স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ শরীরচর্চা করে চলেছেন। একসঙ্গে চলতে চলতে তাঁরা একটি সংগঠনও দাঁড় করেছেন, নাম ‘উজ্জীবন পদ্মার পাড়, রাজশাহী’। সংগঠনে এখন সদস্য প্রায় ৬০ জন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষ প্রতিদিনই ভোরে এক হন শরীরচর্চা করতে। তাঁরা এখন শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত। যান না চিকিৎসকের কাছে; বরং শরীরচর্চার জন্য কয়েকজন চিকিৎসকই আসেন তাঁদের কাছে, পদ্মার পাড়ে!
বাধা ডিঙিয়ে উজ্জীবিত উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের স্লোগান হলো ‘নিয়মিত হাঁটুন, সুস্থ থাকুন’। সংগঠনের সদস্যরা আগে রাজশাহী রিভারভিউ স্কুলের মাঠে শরীরচর্চা করতেন। সেখানে হাসিঠাট্টা হতো, জোরে শব্দ হতো। অভিযোগ এল পাশেই থাকা জেলা প্রশাসকের বাংলো থেকে। ফলে জায়গা ছাড়তে হলো তাঁদের। গেলেন শিশু একাডেমির মাঠে। আপত্তি এল সেখানেও। এরপর শিমলা পার্ক। এখানে কোনো আপত্তি নেই। প্রায় আট বছর ধরে রোজ ভোরে সেখানেই চলছে শরীরচর্চা। এখানে যাঁরা আসেন, তাঁদের বেশির ভাগই বার্ধক্যে পৌঁছেছেন। তবে উজ্জীবনের মাধ্যমে বার্ধক্য জয় করে জীবনকে একেবারে নতুনভাবে উজ্জীবিত করেছেন তাঁরা।
হেঁটে হেঁটে পার্কে
রোজ ভোরে সবাই বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে শিমলা পার্কে আসেন। কেউ কেউ মসজিদে ফজরের নামাজ আদায়ের পর বাড়ি না ফিরে হাঁটা দেন পার্কের উদ্দেশে। শিমলা পার্কে এসে সবাই গোল হয়ে দাঁড়ান। তারপর শরীর নিয়ে চলে নানা রকম কসরত। বুধবার ভোরে পার্কে গিয়ে দেখা গেল, একজন বাঁশি বাজিয়ে শরীরচর্চা শুরুর সংকেত দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সবাই বৃত্তাকারে দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর মুখে ‘হু-হা, হা-হু’ শব্দ করে, কখনো দুহাত দুই দিকে প্রসারিত করার সঙ্গে সঙ্গে কোমর ভাঁজ করে নিচু হচ্ছেন সবাই। আবার কখনো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছেন। এটি তাঁদের কণ্ঠের ব্যায়াম। চোখ পিটপিট করে চোখের ব্যায়াম করার সময় একজন সুরে সুরে বলে উঠলেন, ‘চোখের ব্যায়াম করলে চোখের অবস্থা ভালো থাকবে। সুচের গোড়ায় সুতা পরাতে পারবে..।’ ফুসফুস আর হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা বাড়াতে যে যতক্ষণ পারলেন নিশ্বাস ধরে রাখলেন। তারপর দম ছাড়লেন মুখে শব্দ করে।
শরীরচর্চার শেষ পর্যায়ে শপথ করালেন দলনেতা। শপথে বলা হলো, ‘সুস্থ থাকতে ধূমপান না করি। পরিমিত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করি। শারীরিক সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করি। নৈতিকতাবিরোধী কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখি। নিত্যদিনের কাজে মানুষের মঙ্গল কামনা করি। দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখি।’ এরপর ১ বলে নিজের নাম বললেন। এভাবে গণনা ও নাম বলা শেষ হলে শরীরচর্চাও শেষ হলো। পরে পার্কের কোণে থাকা ছোট্ট চায়ের দোকানে কেউ কেউ চা পান করলেন। কেউ গল্পগুজব, হাসিঠাট্টা করে বাড়ি ফিরলেন।
নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন। শহরের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা তিনি। ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা। অবসর নিয়েছেন ২০১৬ সালে। ২০০০ সাল থেকে তিনি এই সংগঠন চালাচ্ছেন। দলনেতা হিসেবে শরীরচর্চা করাচ্ছেন বিনা পয়সায়। তিনি সংগঠনটির সভাপতি। জাহাঙ্গীর রতন একবার প্রশিক্ষণের জন্য গিয়েছিলেন ভারতে। সেখানে শরীরচর্চাও করতে হয়েছিল। দেশে ফেরার পর তার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য একা একা শরীরচর্চা শুরু করেছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন অন্যরা। অনেকে অসুস্থ অবস্থায় এসে সুস্থ হয়েছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন বললেন, ‘শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক উপকার করে। ছোটখাটো যেসব শারীরিক সমস্যা, সেগুলো এমনিই চলে যায়, চিকিৎসকের দরকার হয় না। তাই আমি নিজে শরীরচর্চা করি এবং অন্যদের উৎসাহিত করি।’
শরীরচর্চার সময় সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম। তিনি সরকারি চাকুরে। নজরুল ইসলাম বললেন, ‘বয়স আপনার যতই হোক না কেন, খেলাধুলা ও শরীরচর্চার বিকল্প নেই। উজ্জীবন পদ্মার পাড় তেমনই স্বাস্থ্যসচেতনমূলক একটি সংগঠন। যে কেউ এখানে শরীরচর্চার জন্য আসতে পারেন। আমি নিজে পাঁচ বছর ধরে আসি। এটা এখন আমার জীবনের অংশ।’
নেই অবসাদ ও অসুস্থতা
পরপর দুই ছেলের মৃত্যুতে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন হাসান আলী। প্রায় ১০ বছর আগে তাঁকে উজ্জীবনে আনেন জাহাঙ্গীর রতন। এখন হাসান আলী সব অবসাদ ভুলে গেছেন। হৃৎপিণ্ডে বাইপাস সার্জারি করাতে হয়েছে সিরাজুল ইসলাম (৬০) ও হারুন-অর-রশিদের (৫৮)। এখন নিয়মিত পদ্মাপাড়ের মুক্ত বাতাসে শরীরচর্চা করে তাঁরা ভালো আছেন।
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের নির্বাহী কমিটির পাশাপাশি একটি উপদেষ্টা কমিটিও আছে। সেই কমিটির সদস্য খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বেল্টু। তিনি বললেন, ‘রোজ ভোরে আমরা হাঁটাহাঁটির পর এক ঘণ্টা শরীরচর্চা করি। এই রুটিন প্রায় ২৫ বছর ধরে চলছে। এখানে হাতের, হার্টের, চোখের, পায়েরসহ সব ধরনের ব্যায়াম করা হয়।’
আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. নুরুদ্দীন বললেন, ‘এটা বিজ্ঞানসম্মত। স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। কোনো দুর্যোগ ছাড়া প্রতিদিনই আমাদের শরীরচর্চা হয়। পিএইডি থেকে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ম্যাজিস্ট্রেট, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ—সবাই এখানে আসেন। আমরা খুব আন্তরিকভাবে এটাকে ভালোবাসি। আমরা নিজ উদ্যোগেই মনের টানে চলে আসি। প্রায় এক ঘণ্টা অনুশীলনের পর চায়ের আড্ডা হয়। আমরা মন খুলে সবাই আলাপ করি। কার কী সমস্যা আছে বলি। মন খুলে হাসি। মনটা প্রফুল্ল হয়।’
ওষুধ ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন মামুন প্রথমে লজ্জা পেতেন। এখন বলছেন, ‘নিজে সুস্থ আর ভালো থাকার স্বার্থে এখানে আসি। এখানে শরীরচর্চার কারণে ছোটখাটো কোনো সমস্যা শরীরে হয় না। চিকিৎসকের কাছেও যেতে হয় না। আমি আগে শুধু এমনিই হাঁটতাম। পার্কে এসে প্রথমে লজ্জা পেতাম। একটু আড়ালে ব্যায়াম করে চলে যেতাম। পরে দেখলাম, সবাই একসঙ্গে শরীরচর্চা করছেন। বিষয়টা খুব ভালো লাগছে। তারপর আমিও যুক্ত হলাম।’
সামাজিক কর্মকাণ্ডে উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের একটি কার্যালয় আছে রাজশাহী শহরের মনিবাজারে। সেখানে মাসে একবার সভা হয়। কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সদস্যরা নিজেরাই টাকা তুলে প্রয়োজনে শীতবস্ত্র কিংবা খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। কন্যাদায়গ্রস্ত পরিবারকে অর্থসহায়তা করেন। দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বই কিনে দেন। বেতন পরিশোধ করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। দুস্থদের দেন চিকিৎসাসহায়তা। পাশাপাশি নিজেদের বিনোদনের জন্য আয়োজন করেন বনভোজন। উজ্জীবনের সদস্যরা জানান, এসব কাজে তাঁরা মানসিক প্রশান্তি পান।

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা পার্কে। জানা গেল, রোজ ভোরে এখানে শরীরচর্চা করেন জ্যেষ্ঠ এই নাগরিকেরা।
এভাবে টানা ২৩ বছর রাজশাহীর একদল স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ শরীরচর্চা করে চলেছেন। একসঙ্গে চলতে চলতে তাঁরা একটি সংগঠনও দাঁড় করেছেন, নাম ‘উজ্জীবন পদ্মার পাড়, রাজশাহী’। সংগঠনে এখন সদস্য প্রায় ৬০ জন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষ প্রতিদিনই ভোরে এক হন শরীরচর্চা করতে। তাঁরা এখন শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত। যান না চিকিৎসকের কাছে; বরং শরীরচর্চার জন্য কয়েকজন চিকিৎসকই আসেন তাঁদের কাছে, পদ্মার পাড়ে!
বাধা ডিঙিয়ে উজ্জীবিত উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের স্লোগান হলো ‘নিয়মিত হাঁটুন, সুস্থ থাকুন’। সংগঠনের সদস্যরা আগে রাজশাহী রিভারভিউ স্কুলের মাঠে শরীরচর্চা করতেন। সেখানে হাসিঠাট্টা হতো, জোরে শব্দ হতো। অভিযোগ এল পাশেই থাকা জেলা প্রশাসকের বাংলো থেকে। ফলে জায়গা ছাড়তে হলো তাঁদের। গেলেন শিশু একাডেমির মাঠে। আপত্তি এল সেখানেও। এরপর শিমলা পার্ক। এখানে কোনো আপত্তি নেই। প্রায় আট বছর ধরে রোজ ভোরে সেখানেই চলছে শরীরচর্চা। এখানে যাঁরা আসেন, তাঁদের বেশির ভাগই বার্ধক্যে পৌঁছেছেন। তবে উজ্জীবনের মাধ্যমে বার্ধক্য জয় করে জীবনকে একেবারে নতুনভাবে উজ্জীবিত করেছেন তাঁরা।
হেঁটে হেঁটে পার্কে
রোজ ভোরে সবাই বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে শিমলা পার্কে আসেন। কেউ কেউ মসজিদে ফজরের নামাজ আদায়ের পর বাড়ি না ফিরে হাঁটা দেন পার্কের উদ্দেশে। শিমলা পার্কে এসে সবাই গোল হয়ে দাঁড়ান। তারপর শরীর নিয়ে চলে নানা রকম কসরত। বুধবার ভোরে পার্কে গিয়ে দেখা গেল, একজন বাঁশি বাজিয়ে শরীরচর্চা শুরুর সংকেত দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সবাই বৃত্তাকারে দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর মুখে ‘হু-হা, হা-হু’ শব্দ করে, কখনো দুহাত দুই দিকে প্রসারিত করার সঙ্গে সঙ্গে কোমর ভাঁজ করে নিচু হচ্ছেন সবাই। আবার কখনো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছেন। এটি তাঁদের কণ্ঠের ব্যায়াম। চোখ পিটপিট করে চোখের ব্যায়াম করার সময় একজন সুরে সুরে বলে উঠলেন, ‘চোখের ব্যায়াম করলে চোখের অবস্থা ভালো থাকবে। সুচের গোড়ায় সুতা পরাতে পারবে..।’ ফুসফুস আর হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা বাড়াতে যে যতক্ষণ পারলেন নিশ্বাস ধরে রাখলেন। তারপর দম ছাড়লেন মুখে শব্দ করে।
শরীরচর্চার শেষ পর্যায়ে শপথ করালেন দলনেতা। শপথে বলা হলো, ‘সুস্থ থাকতে ধূমপান না করি। পরিমিত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করি। শারীরিক সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করি। নৈতিকতাবিরোধী কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখি। নিত্যদিনের কাজে মানুষের মঙ্গল কামনা করি। দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখি।’ এরপর ১ বলে নিজের নাম বললেন। এভাবে গণনা ও নাম বলা শেষ হলে শরীরচর্চাও শেষ হলো। পরে পার্কের কোণে থাকা ছোট্ট চায়ের দোকানে কেউ কেউ চা পান করলেন। কেউ গল্পগুজব, হাসিঠাট্টা করে বাড়ি ফিরলেন।
নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন। শহরের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা তিনি। ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা। অবসর নিয়েছেন ২০১৬ সালে। ২০০০ সাল থেকে তিনি এই সংগঠন চালাচ্ছেন। দলনেতা হিসেবে শরীরচর্চা করাচ্ছেন বিনা পয়সায়। তিনি সংগঠনটির সভাপতি। জাহাঙ্গীর রতন একবার প্রশিক্ষণের জন্য গিয়েছিলেন ভারতে। সেখানে শরীরচর্চাও করতে হয়েছিল। দেশে ফেরার পর তার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য একা একা শরীরচর্চা শুরু করেছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন অন্যরা। অনেকে অসুস্থ অবস্থায় এসে সুস্থ হয়েছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন বললেন, ‘শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক উপকার করে। ছোটখাটো যেসব শারীরিক সমস্যা, সেগুলো এমনিই চলে যায়, চিকিৎসকের দরকার হয় না। তাই আমি নিজে শরীরচর্চা করি এবং অন্যদের উৎসাহিত করি।’
শরীরচর্চার সময় সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম। তিনি সরকারি চাকুরে। নজরুল ইসলাম বললেন, ‘বয়স আপনার যতই হোক না কেন, খেলাধুলা ও শরীরচর্চার বিকল্প নেই। উজ্জীবন পদ্মার পাড় তেমনই স্বাস্থ্যসচেতনমূলক একটি সংগঠন। যে কেউ এখানে শরীরচর্চার জন্য আসতে পারেন। আমি নিজে পাঁচ বছর ধরে আসি। এটা এখন আমার জীবনের অংশ।’
নেই অবসাদ ও অসুস্থতা
পরপর দুই ছেলের মৃত্যুতে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন হাসান আলী। প্রায় ১০ বছর আগে তাঁকে উজ্জীবনে আনেন জাহাঙ্গীর রতন। এখন হাসান আলী সব অবসাদ ভুলে গেছেন। হৃৎপিণ্ডে বাইপাস সার্জারি করাতে হয়েছে সিরাজুল ইসলাম (৬০) ও হারুন-অর-রশিদের (৫৮)। এখন নিয়মিত পদ্মাপাড়ের মুক্ত বাতাসে শরীরচর্চা করে তাঁরা ভালো আছেন।
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের নির্বাহী কমিটির পাশাপাশি একটি উপদেষ্টা কমিটিও আছে। সেই কমিটির সদস্য খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বেল্টু। তিনি বললেন, ‘রোজ ভোরে আমরা হাঁটাহাঁটির পর এক ঘণ্টা শরীরচর্চা করি। এই রুটিন প্রায় ২৫ বছর ধরে চলছে। এখানে হাতের, হার্টের, চোখের, পায়েরসহ সব ধরনের ব্যায়াম করা হয়।’
আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. নুরুদ্দীন বললেন, ‘এটা বিজ্ঞানসম্মত। স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। কোনো দুর্যোগ ছাড়া প্রতিদিনই আমাদের শরীরচর্চা হয়। পিএইডি থেকে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ম্যাজিস্ট্রেট, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ—সবাই এখানে আসেন। আমরা খুব আন্তরিকভাবে এটাকে ভালোবাসি। আমরা নিজ উদ্যোগেই মনের টানে চলে আসি। প্রায় এক ঘণ্টা অনুশীলনের পর চায়ের আড্ডা হয়। আমরা মন খুলে সবাই আলাপ করি। কার কী সমস্যা আছে বলি। মন খুলে হাসি। মনটা প্রফুল্ল হয়।’
ওষুধ ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন মামুন প্রথমে লজ্জা পেতেন। এখন বলছেন, ‘নিজে সুস্থ আর ভালো থাকার স্বার্থে এখানে আসি। এখানে শরীরচর্চার কারণে ছোটখাটো কোনো সমস্যা শরীরে হয় না। চিকিৎসকের কাছেও যেতে হয় না। আমি আগে শুধু এমনিই হাঁটতাম। পার্কে এসে প্রথমে লজ্জা পেতাম। একটু আড়ালে ব্যায়াম করে চলে যেতাম। পরে দেখলাম, সবাই একসঙ্গে শরীরচর্চা করছেন। বিষয়টা খুব ভালো লাগছে। তারপর আমিও যুক্ত হলাম।’
সামাজিক কর্মকাণ্ডে উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের একটি কার্যালয় আছে রাজশাহী শহরের মনিবাজারে। সেখানে মাসে একবার সভা হয়। কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সদস্যরা নিজেরাই টাকা তুলে প্রয়োজনে শীতবস্ত্র কিংবা খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। কন্যাদায়গ্রস্ত পরিবারকে অর্থসহায়তা করেন। দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বই কিনে দেন। বেতন পরিশোধ করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। দুস্থদের দেন চিকিৎসাসহায়তা। পাশাপাশি নিজেদের বিনোদনের জন্য আয়োজন করেন বনভোজন। উজ্জীবনের সদস্যরা জানান, এসব কাজে তাঁরা মানসিক প্রশান্তি পান।
রিমন রহমান, রাজশাহী

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা পার্কে। জানা গেল, রোজ ভোরে এখানে শরীরচর্চা করেন জ্যেষ্ঠ এই নাগরিকেরা।
এভাবে টানা ২৩ বছর রাজশাহীর একদল স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ শরীরচর্চা করে চলেছেন। একসঙ্গে চলতে চলতে তাঁরা একটি সংগঠনও দাঁড় করেছেন, নাম ‘উজ্জীবন পদ্মার পাড়, রাজশাহী’। সংগঠনে এখন সদস্য প্রায় ৬০ জন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষ প্রতিদিনই ভোরে এক হন শরীরচর্চা করতে। তাঁরা এখন শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত। যান না চিকিৎসকের কাছে; বরং শরীরচর্চার জন্য কয়েকজন চিকিৎসকই আসেন তাঁদের কাছে, পদ্মার পাড়ে!
বাধা ডিঙিয়ে উজ্জীবিত উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের স্লোগান হলো ‘নিয়মিত হাঁটুন, সুস্থ থাকুন’। সংগঠনের সদস্যরা আগে রাজশাহী রিভারভিউ স্কুলের মাঠে শরীরচর্চা করতেন। সেখানে হাসিঠাট্টা হতো, জোরে শব্দ হতো। অভিযোগ এল পাশেই থাকা জেলা প্রশাসকের বাংলো থেকে। ফলে জায়গা ছাড়তে হলো তাঁদের। গেলেন শিশু একাডেমির মাঠে। আপত্তি এল সেখানেও। এরপর শিমলা পার্ক। এখানে কোনো আপত্তি নেই। প্রায় আট বছর ধরে রোজ ভোরে সেখানেই চলছে শরীরচর্চা। এখানে যাঁরা আসেন, তাঁদের বেশির ভাগই বার্ধক্যে পৌঁছেছেন। তবে উজ্জীবনের মাধ্যমে বার্ধক্য জয় করে জীবনকে একেবারে নতুনভাবে উজ্জীবিত করেছেন তাঁরা।
হেঁটে হেঁটে পার্কে
রোজ ভোরে সবাই বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে শিমলা পার্কে আসেন। কেউ কেউ মসজিদে ফজরের নামাজ আদায়ের পর বাড়ি না ফিরে হাঁটা দেন পার্কের উদ্দেশে। শিমলা পার্কে এসে সবাই গোল হয়ে দাঁড়ান। তারপর শরীর নিয়ে চলে নানা রকম কসরত। বুধবার ভোরে পার্কে গিয়ে দেখা গেল, একজন বাঁশি বাজিয়ে শরীরচর্চা শুরুর সংকেত দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সবাই বৃত্তাকারে দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর মুখে ‘হু-হা, হা-হু’ শব্দ করে, কখনো দুহাত দুই দিকে প্রসারিত করার সঙ্গে সঙ্গে কোমর ভাঁজ করে নিচু হচ্ছেন সবাই। আবার কখনো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছেন। এটি তাঁদের কণ্ঠের ব্যায়াম। চোখ পিটপিট করে চোখের ব্যায়াম করার সময় একজন সুরে সুরে বলে উঠলেন, ‘চোখের ব্যায়াম করলে চোখের অবস্থা ভালো থাকবে। সুচের গোড়ায় সুতা পরাতে পারবে..।’ ফুসফুস আর হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা বাড়াতে যে যতক্ষণ পারলেন নিশ্বাস ধরে রাখলেন। তারপর দম ছাড়লেন মুখে শব্দ করে।
শরীরচর্চার শেষ পর্যায়ে শপথ করালেন দলনেতা। শপথে বলা হলো, ‘সুস্থ থাকতে ধূমপান না করি। পরিমিত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করি। শারীরিক সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করি। নৈতিকতাবিরোধী কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখি। নিত্যদিনের কাজে মানুষের মঙ্গল কামনা করি। দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখি।’ এরপর ১ বলে নিজের নাম বললেন। এভাবে গণনা ও নাম বলা শেষ হলে শরীরচর্চাও শেষ হলো। পরে পার্কের কোণে থাকা ছোট্ট চায়ের দোকানে কেউ কেউ চা পান করলেন। কেউ গল্পগুজব, হাসিঠাট্টা করে বাড়ি ফিরলেন।
নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন। শহরের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা তিনি। ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা। অবসর নিয়েছেন ২০১৬ সালে। ২০০০ সাল থেকে তিনি এই সংগঠন চালাচ্ছেন। দলনেতা হিসেবে শরীরচর্চা করাচ্ছেন বিনা পয়সায়। তিনি সংগঠনটির সভাপতি। জাহাঙ্গীর রতন একবার প্রশিক্ষণের জন্য গিয়েছিলেন ভারতে। সেখানে শরীরচর্চাও করতে হয়েছিল। দেশে ফেরার পর তার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য একা একা শরীরচর্চা শুরু করেছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন অন্যরা। অনেকে অসুস্থ অবস্থায় এসে সুস্থ হয়েছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন বললেন, ‘শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক উপকার করে। ছোটখাটো যেসব শারীরিক সমস্যা, সেগুলো এমনিই চলে যায়, চিকিৎসকের দরকার হয় না। তাই আমি নিজে শরীরচর্চা করি এবং অন্যদের উৎসাহিত করি।’
শরীরচর্চার সময় সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম। তিনি সরকারি চাকুরে। নজরুল ইসলাম বললেন, ‘বয়স আপনার যতই হোক না কেন, খেলাধুলা ও শরীরচর্চার বিকল্প নেই। উজ্জীবন পদ্মার পাড় তেমনই স্বাস্থ্যসচেতনমূলক একটি সংগঠন। যে কেউ এখানে শরীরচর্চার জন্য আসতে পারেন। আমি নিজে পাঁচ বছর ধরে আসি। এটা এখন আমার জীবনের অংশ।’
নেই অবসাদ ও অসুস্থতা
পরপর দুই ছেলের মৃত্যুতে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন হাসান আলী। প্রায় ১০ বছর আগে তাঁকে উজ্জীবনে আনেন জাহাঙ্গীর রতন। এখন হাসান আলী সব অবসাদ ভুলে গেছেন। হৃৎপিণ্ডে বাইপাস সার্জারি করাতে হয়েছে সিরাজুল ইসলাম (৬০) ও হারুন-অর-রশিদের (৫৮)। এখন নিয়মিত পদ্মাপাড়ের মুক্ত বাতাসে শরীরচর্চা করে তাঁরা ভালো আছেন।
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের নির্বাহী কমিটির পাশাপাশি একটি উপদেষ্টা কমিটিও আছে। সেই কমিটির সদস্য খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বেল্টু। তিনি বললেন, ‘রোজ ভোরে আমরা হাঁটাহাঁটির পর এক ঘণ্টা শরীরচর্চা করি। এই রুটিন প্রায় ২৫ বছর ধরে চলছে। এখানে হাতের, হার্টের, চোখের, পায়েরসহ সব ধরনের ব্যায়াম করা হয়।’
আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. নুরুদ্দীন বললেন, ‘এটা বিজ্ঞানসম্মত। স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। কোনো দুর্যোগ ছাড়া প্রতিদিনই আমাদের শরীরচর্চা হয়। পিএইডি থেকে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ম্যাজিস্ট্রেট, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ—সবাই এখানে আসেন। আমরা খুব আন্তরিকভাবে এটাকে ভালোবাসি। আমরা নিজ উদ্যোগেই মনের টানে চলে আসি। প্রায় এক ঘণ্টা অনুশীলনের পর চায়ের আড্ডা হয়। আমরা মন খুলে সবাই আলাপ করি। কার কী সমস্যা আছে বলি। মন খুলে হাসি। মনটা প্রফুল্ল হয়।’
ওষুধ ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন মামুন প্রথমে লজ্জা পেতেন। এখন বলছেন, ‘নিজে সুস্থ আর ভালো থাকার স্বার্থে এখানে আসি। এখানে শরীরচর্চার কারণে ছোটখাটো কোনো সমস্যা শরীরে হয় না। চিকিৎসকের কাছেও যেতে হয় না। আমি আগে শুধু এমনিই হাঁটতাম। পার্কে এসে প্রথমে লজ্জা পেতাম। একটু আড়ালে ব্যায়াম করে চলে যেতাম। পরে দেখলাম, সবাই একসঙ্গে শরীরচর্চা করছেন। বিষয়টা খুব ভালো লাগছে। তারপর আমিও যুক্ত হলাম।’
সামাজিক কর্মকাণ্ডে উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের একটি কার্যালয় আছে রাজশাহী শহরের মনিবাজারে। সেখানে মাসে একবার সভা হয়। কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সদস্যরা নিজেরাই টাকা তুলে প্রয়োজনে শীতবস্ত্র কিংবা খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। কন্যাদায়গ্রস্ত পরিবারকে অর্থসহায়তা করেন। দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বই কিনে দেন। বেতন পরিশোধ করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। দুস্থদের দেন চিকিৎসাসহায়তা। পাশাপাশি নিজেদের বিনোদনের জন্য আয়োজন করেন বনভোজন। উজ্জীবনের সদস্যরা জানান, এসব কাজে তাঁরা মানসিক প্রশান্তি পান।

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা পার্কে। জানা গেল, রোজ ভোরে এখানে শরীরচর্চা করেন জ্যেষ্ঠ এই নাগরিকেরা।
এভাবে টানা ২৩ বছর রাজশাহীর একদল স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ শরীরচর্চা করে চলেছেন। একসঙ্গে চলতে চলতে তাঁরা একটি সংগঠনও দাঁড় করেছেন, নাম ‘উজ্জীবন পদ্মার পাড়, রাজশাহী’। সংগঠনে এখন সদস্য প্রায় ৬০ জন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষ প্রতিদিনই ভোরে এক হন শরীরচর্চা করতে। তাঁরা এখন শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত। যান না চিকিৎসকের কাছে; বরং শরীরচর্চার জন্য কয়েকজন চিকিৎসকই আসেন তাঁদের কাছে, পদ্মার পাড়ে!
বাধা ডিঙিয়ে উজ্জীবিত উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের স্লোগান হলো ‘নিয়মিত হাঁটুন, সুস্থ থাকুন’। সংগঠনের সদস্যরা আগে রাজশাহী রিভারভিউ স্কুলের মাঠে শরীরচর্চা করতেন। সেখানে হাসিঠাট্টা হতো, জোরে শব্দ হতো। অভিযোগ এল পাশেই থাকা জেলা প্রশাসকের বাংলো থেকে। ফলে জায়গা ছাড়তে হলো তাঁদের। গেলেন শিশু একাডেমির মাঠে। আপত্তি এল সেখানেও। এরপর শিমলা পার্ক। এখানে কোনো আপত্তি নেই। প্রায় আট বছর ধরে রোজ ভোরে সেখানেই চলছে শরীরচর্চা। এখানে যাঁরা আসেন, তাঁদের বেশির ভাগই বার্ধক্যে পৌঁছেছেন। তবে উজ্জীবনের মাধ্যমে বার্ধক্য জয় করে জীবনকে একেবারে নতুনভাবে উজ্জীবিত করেছেন তাঁরা।
হেঁটে হেঁটে পার্কে
রোজ ভোরে সবাই বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে শিমলা পার্কে আসেন। কেউ কেউ মসজিদে ফজরের নামাজ আদায়ের পর বাড়ি না ফিরে হাঁটা দেন পার্কের উদ্দেশে। শিমলা পার্কে এসে সবাই গোল হয়ে দাঁড়ান। তারপর শরীর নিয়ে চলে নানা রকম কসরত। বুধবার ভোরে পার্কে গিয়ে দেখা গেল, একজন বাঁশি বাজিয়ে শরীরচর্চা শুরুর সংকেত দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সবাই বৃত্তাকারে দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর মুখে ‘হু-হা, হা-হু’ শব্দ করে, কখনো দুহাত দুই দিকে প্রসারিত করার সঙ্গে সঙ্গে কোমর ভাঁজ করে নিচু হচ্ছেন সবাই। আবার কখনো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছেন। এটি তাঁদের কণ্ঠের ব্যায়াম। চোখ পিটপিট করে চোখের ব্যায়াম করার সময় একজন সুরে সুরে বলে উঠলেন, ‘চোখের ব্যায়াম করলে চোখের অবস্থা ভালো থাকবে। সুচের গোড়ায় সুতা পরাতে পারবে..।’ ফুসফুস আর হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা বাড়াতে যে যতক্ষণ পারলেন নিশ্বাস ধরে রাখলেন। তারপর দম ছাড়লেন মুখে শব্দ করে।
শরীরচর্চার শেষ পর্যায়ে শপথ করালেন দলনেতা। শপথে বলা হলো, ‘সুস্থ থাকতে ধূমপান না করি। পরিমিত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করি। শারীরিক সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করি। নৈতিকতাবিরোধী কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখি। নিত্যদিনের কাজে মানুষের মঙ্গল কামনা করি। দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখি।’ এরপর ১ বলে নিজের নাম বললেন। এভাবে গণনা ও নাম বলা শেষ হলে শরীরচর্চাও শেষ হলো। পরে পার্কের কোণে থাকা ছোট্ট চায়ের দোকানে কেউ কেউ চা পান করলেন। কেউ গল্পগুজব, হাসিঠাট্টা করে বাড়ি ফিরলেন।
নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন। শহরের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা তিনি। ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা। অবসর নিয়েছেন ২০১৬ সালে। ২০০০ সাল থেকে তিনি এই সংগঠন চালাচ্ছেন। দলনেতা হিসেবে শরীরচর্চা করাচ্ছেন বিনা পয়সায়। তিনি সংগঠনটির সভাপতি। জাহাঙ্গীর রতন একবার প্রশিক্ষণের জন্য গিয়েছিলেন ভারতে। সেখানে শরীরচর্চাও করতে হয়েছিল। দেশে ফেরার পর তার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য একা একা শরীরচর্চা শুরু করেছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন অন্যরা। অনেকে অসুস্থ অবস্থায় এসে সুস্থ হয়েছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন বললেন, ‘শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক উপকার করে। ছোটখাটো যেসব শারীরিক সমস্যা, সেগুলো এমনিই চলে যায়, চিকিৎসকের দরকার হয় না। তাই আমি নিজে শরীরচর্চা করি এবং অন্যদের উৎসাহিত করি।’
শরীরচর্চার সময় সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম। তিনি সরকারি চাকুরে। নজরুল ইসলাম বললেন, ‘বয়স আপনার যতই হোক না কেন, খেলাধুলা ও শরীরচর্চার বিকল্প নেই। উজ্জীবন পদ্মার পাড় তেমনই স্বাস্থ্যসচেতনমূলক একটি সংগঠন। যে কেউ এখানে শরীরচর্চার জন্য আসতে পারেন। আমি নিজে পাঁচ বছর ধরে আসি। এটা এখন আমার জীবনের অংশ।’
নেই অবসাদ ও অসুস্থতা
পরপর দুই ছেলের মৃত্যুতে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন হাসান আলী। প্রায় ১০ বছর আগে তাঁকে উজ্জীবনে আনেন জাহাঙ্গীর রতন। এখন হাসান আলী সব অবসাদ ভুলে গেছেন। হৃৎপিণ্ডে বাইপাস সার্জারি করাতে হয়েছে সিরাজুল ইসলাম (৬০) ও হারুন-অর-রশিদের (৫৮)। এখন নিয়মিত পদ্মাপাড়ের মুক্ত বাতাসে শরীরচর্চা করে তাঁরা ভালো আছেন।
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের নির্বাহী কমিটির পাশাপাশি একটি উপদেষ্টা কমিটিও আছে। সেই কমিটির সদস্য খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বেল্টু। তিনি বললেন, ‘রোজ ভোরে আমরা হাঁটাহাঁটির পর এক ঘণ্টা শরীরচর্চা করি। এই রুটিন প্রায় ২৫ বছর ধরে চলছে। এখানে হাতের, হার্টের, চোখের, পায়েরসহ সব ধরনের ব্যায়াম করা হয়।’
আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. নুরুদ্দীন বললেন, ‘এটা বিজ্ঞানসম্মত। স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। কোনো দুর্যোগ ছাড়া প্রতিদিনই আমাদের শরীরচর্চা হয়। পিএইডি থেকে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ম্যাজিস্ট্রেট, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ—সবাই এখানে আসেন। আমরা খুব আন্তরিকভাবে এটাকে ভালোবাসি। আমরা নিজ উদ্যোগেই মনের টানে চলে আসি। প্রায় এক ঘণ্টা অনুশীলনের পর চায়ের আড্ডা হয়। আমরা মন খুলে সবাই আলাপ করি। কার কী সমস্যা আছে বলি। মন খুলে হাসি। মনটা প্রফুল্ল হয়।’
ওষুধ ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন মামুন প্রথমে লজ্জা পেতেন। এখন বলছেন, ‘নিজে সুস্থ আর ভালো থাকার স্বার্থে এখানে আসি। এখানে শরীরচর্চার কারণে ছোটখাটো কোনো সমস্যা শরীরে হয় না। চিকিৎসকের কাছেও যেতে হয় না। আমি আগে শুধু এমনিই হাঁটতাম। পার্কে এসে প্রথমে লজ্জা পেতাম। একটু আড়ালে ব্যায়াম করে চলে যেতাম। পরে দেখলাম, সবাই একসঙ্গে শরীরচর্চা করছেন। বিষয়টা খুব ভালো লাগছে। তারপর আমিও যুক্ত হলাম।’
সামাজিক কর্মকাণ্ডে উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের একটি কার্যালয় আছে রাজশাহী শহরের মনিবাজারে। সেখানে মাসে একবার সভা হয়। কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সদস্যরা নিজেরাই টাকা তুলে প্রয়োজনে শীতবস্ত্র কিংবা খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। কন্যাদায়গ্রস্ত পরিবারকে অর্থসহায়তা করেন। দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বই কিনে দেন। বেতন পরিশোধ করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। দুস্থদের দেন চিকিৎসাসহায়তা। পাশাপাশি নিজেদের বিনোদনের জন্য আয়োজন করেন বনভোজন। উজ্জীবনের সদস্যরা জানান, এসব কাজে তাঁরা মানসিক প্রশান্তি পান।

দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন ধরেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কয়েকজন করে মারা যাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে।
১০ ঘণ্টা আগে
দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
২ দিন আগে
স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
২ দিন আগে
পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন ধরেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কয়েকজন করে মারা যাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে।
ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন পুরুষ এবং একজন নারী। মৃত ব্যক্তিরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বরগুনার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সংক্রমণ ও হাসপাতালে ভর্তির হারও ঊর্ধ্বমুখী। গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১৪৩ জন রোগী। এ নিয়ে এ বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৪৪০ জনে।
এ বছরের শুরু থেকে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটেছিল সেপ্টেম্বর মাসে, ১৫ হাজার ৮৬৬ জনের। চলতি অক্টোবরের সপ্তাহখানেক বাকি থাকতেই সংক্রমণের সংখ্যা তা ছাড়িয়ে গেছে। অক্টোবর মাসেই সবচেয়ে বেশি ১৮ হাজার ৯৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬৫ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৩১৯ জনই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায়। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে ২৮১, ময়মনসিংহে ৫৬, চট্টগ্রামে ১২১, খুলনায় ৬৫, রাজশাহীতে ৫৬, রংপুরে ৫০, বরিশালে ১৮৬ এবং সিলেটে ৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২ হাজার ৭৩৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৯৩০, আর রাজধানীর বাইরে ১ হাজার ৮০৩ জন ভর্তি রয়েছে।
দেশে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। সে বছর মারা যায় ১ হাজার ৭০৫ জন রোগী। এ ছাড়া ২০২৪ সালে ১ লাখ ১ হাজার ২১১,২০২২ সালে ৬২ হাজার ৩৮২,২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯,২০২০ সালে ১ হাজার ৪০৫ এবং ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন ধরেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কয়েকজন করে মারা যাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে।
ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন পুরুষ এবং একজন নারী। মৃত ব্যক্তিরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বরগুনার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সংক্রমণ ও হাসপাতালে ভর্তির হারও ঊর্ধ্বমুখী। গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১৪৩ জন রোগী। এ নিয়ে এ বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৪৪০ জনে।
এ বছরের শুরু থেকে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটেছিল সেপ্টেম্বর মাসে, ১৫ হাজার ৮৬৬ জনের। চলতি অক্টোবরের সপ্তাহখানেক বাকি থাকতেই সংক্রমণের সংখ্যা তা ছাড়িয়ে গেছে। অক্টোবর মাসেই সবচেয়ে বেশি ১৮ হাজার ৯৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬৫ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৩১৯ জনই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায়। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে ২৮১, ময়মনসিংহে ৫৬, চট্টগ্রামে ১২১, খুলনায় ৬৫, রাজশাহীতে ৫৬, রংপুরে ৫০, বরিশালে ১৮৬ এবং সিলেটে ৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২ হাজার ৭৩৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৯৩০, আর রাজধানীর বাইরে ১ হাজার ৮০৩ জন ভর্তি রয়েছে।
দেশে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। সে বছর মারা যায় ১ হাজার ৭০৫ জন রোগী। এ ছাড়া ২০২৪ সালে ১ লাখ ১ হাজার ২১১,২০২২ সালে ৬২ হাজার ৩৮২,২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯,২০২০ সালে ১ হাজার ৪০৫ এবং ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা
০২ মার্চ ২০২৪
দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
২ দিন আগে
স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
২ দিন আগে
পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
২ দিন আগেডা. পূজা সাহা

দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
দাঁতে ব্যথা হলে আগে কারণ জানা
দাঁতে ব্যথা মানেই শুধু ক্যাভিটি নয়। দাঁতের গোড়ায় পাথর জমে যাওয়া, স্নায়ুতে প্রদাহ, মাড়ির সংক্রমণ কিংবা দাঁতের ক্ষয়—এসব কারণেও ব্যথা হতে পারে। তাই দাতে ব্যথা হলে প্রথমে কারণটা জানা জরুরি। অস্থায়ী স্বস্তির জন্য দিনে কয়েকবার কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে। দাঁতের সেনসিটিভিটি কমানোর টুথপেস্টও কিছুটা সহায়ক। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য অবশ্যই দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
দাঁতের যত্ন মানেই সার্বিক সুস্থতা
দাঁতের যত্ন শুধু সুন্দর হাসির জন্য নয়, শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অংশও। দাঁতের ক্ষয় বা সংক্রমণ অবহেলা করলে তা মাড়ি, হাড় এমনকি হৃদ্রোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে। সঠিক যত্নে এই সমস্যা অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়।
টক খাবারে দাঁতের ক্ষয়
অতিরিক্ত টক বা অ্যাসিডযুক্ত খাবার দাঁতের এনামেল দুর্বল করে দেয়। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল, লেবু, টমেটো বা টক স্যুপ নিয়মিত খেলে দাঁতের বাইরের স্তর ক্ষয় হয়ে যেতে পারে। এতে দাঁত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে, ব্যথা বা ঝাঁজালো অনুভূতি দেখা দেয়। যাদের পারিবারিকভাবে দাঁত দুর্বল, তাদের ঝুঁকি আরও বেশি। দাঁতের ক্ষয় পুরোপুরি বন্ধ না হলেও চিকিৎসার মাধ্যমে তা মেরামত করা অনেকটা সম্ভব। ক্ষয়ের পরিমাণ অনুযায়ী ফিলিং বা অন্যান্য চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। এই অবস্থায় টক খাবার খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আর দাঁত ব্রাশ করার আগে অন্তত ৩০ মিনিট বিরতি দিন। অ্যাসিডজাতীয় খাবার খাওয়ার পরপরই দাঁত ব্রাশ করলে এনামেল আরও নরম হয়ে ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ায়।
স্কেলিং নিয়ে ভুল ধারণা
অনেকের ধারণা, দাঁতের স্কেলিং করালে দাঁত নরম বা আলগা হয়ে যায়। বাস্তবে এ তথ্য ভুল। স্কেলিংয়ের সময় দাঁতের পাথর বা ক্যালকুলাস সরানো হয়। স্কেলিংয়ের পর কিছু সময়ের জন্য দাঁত আলগা মনে হতে পারে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। দাঁতে দাগ বা পাথর দেখা দিলে স্কেলিং করানো উচিত। তবে দাঁত সাদা করতে চাইলে আলাদা ব্লিচিং বা হোয়াইটেনিং চিকিৎসা লাগে।
দাঁত আঁকাবাঁকা হলে করণীয়
শিশুদের ক্ষেত্রে দুধদাঁত সময়ের আগে কিংবা পরে পড়লে স্থায়ী দাঁত সোজাভাবে ওঠে না। ফলে দাঁত আঁকাবাঁকা হয়ে যায়। এতে শুধু চেহারার সৌন্দর্য নয়, উচ্চারণেও প্রভাব পড়তে পারে। এ সমস্যা থাকলে দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শে অর্থোডন্টিক চিকিৎসা (ব্রেস অথবা অ্যালাইনার) নেওয়া যায়। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শিশুর বয়স, দাঁতের অবস্থা এবং মুখের গঠন বিবেচনা করা জরুরি।
কিছু সাধারণ পরামর্শ
লেখক: ডেন্টাল সার্জন, সিকদার ডেন্টাল কেয়ার, মিরপুর, ঢাকা

দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
দাঁতে ব্যথা হলে আগে কারণ জানা
দাঁতে ব্যথা মানেই শুধু ক্যাভিটি নয়। দাঁতের গোড়ায় পাথর জমে যাওয়া, স্নায়ুতে প্রদাহ, মাড়ির সংক্রমণ কিংবা দাঁতের ক্ষয়—এসব কারণেও ব্যথা হতে পারে। তাই দাতে ব্যথা হলে প্রথমে কারণটা জানা জরুরি। অস্থায়ী স্বস্তির জন্য দিনে কয়েকবার কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে। দাঁতের সেনসিটিভিটি কমানোর টুথপেস্টও কিছুটা সহায়ক। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য অবশ্যই দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
দাঁতের যত্ন মানেই সার্বিক সুস্থতা
দাঁতের যত্ন শুধু সুন্দর হাসির জন্য নয়, শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অংশও। দাঁতের ক্ষয় বা সংক্রমণ অবহেলা করলে তা মাড়ি, হাড় এমনকি হৃদ্রোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে। সঠিক যত্নে এই সমস্যা অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়।
টক খাবারে দাঁতের ক্ষয়
অতিরিক্ত টক বা অ্যাসিডযুক্ত খাবার দাঁতের এনামেল দুর্বল করে দেয়। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল, লেবু, টমেটো বা টক স্যুপ নিয়মিত খেলে দাঁতের বাইরের স্তর ক্ষয় হয়ে যেতে পারে। এতে দাঁত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে, ব্যথা বা ঝাঁজালো অনুভূতি দেখা দেয়। যাদের পারিবারিকভাবে দাঁত দুর্বল, তাদের ঝুঁকি আরও বেশি। দাঁতের ক্ষয় পুরোপুরি বন্ধ না হলেও চিকিৎসার মাধ্যমে তা মেরামত করা অনেকটা সম্ভব। ক্ষয়ের পরিমাণ অনুযায়ী ফিলিং বা অন্যান্য চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। এই অবস্থায় টক খাবার খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আর দাঁত ব্রাশ করার আগে অন্তত ৩০ মিনিট বিরতি দিন। অ্যাসিডজাতীয় খাবার খাওয়ার পরপরই দাঁত ব্রাশ করলে এনামেল আরও নরম হয়ে ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ায়।
স্কেলিং নিয়ে ভুল ধারণা
অনেকের ধারণা, দাঁতের স্কেলিং করালে দাঁত নরম বা আলগা হয়ে যায়। বাস্তবে এ তথ্য ভুল। স্কেলিংয়ের সময় দাঁতের পাথর বা ক্যালকুলাস সরানো হয়। স্কেলিংয়ের পর কিছু সময়ের জন্য দাঁত আলগা মনে হতে পারে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। দাঁতে দাগ বা পাথর দেখা দিলে স্কেলিং করানো উচিত। তবে দাঁত সাদা করতে চাইলে আলাদা ব্লিচিং বা হোয়াইটেনিং চিকিৎসা লাগে।
দাঁত আঁকাবাঁকা হলে করণীয়
শিশুদের ক্ষেত্রে দুধদাঁত সময়ের আগে কিংবা পরে পড়লে স্থায়ী দাঁত সোজাভাবে ওঠে না। ফলে দাঁত আঁকাবাঁকা হয়ে যায়। এতে শুধু চেহারার সৌন্দর্য নয়, উচ্চারণেও প্রভাব পড়তে পারে। এ সমস্যা থাকলে দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শে অর্থোডন্টিক চিকিৎসা (ব্রেস অথবা অ্যালাইনার) নেওয়া যায়। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শিশুর বয়স, দাঁতের অবস্থা এবং মুখের গঠন বিবেচনা করা জরুরি।
কিছু সাধারণ পরামর্শ
লেখক: ডেন্টাল সার্জন, সিকদার ডেন্টাল কেয়ার, মিরপুর, ঢাকা

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা
০২ মার্চ ২০২৪
দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন ধরেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কয়েকজন করে মারা যাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে।
১০ ঘণ্টা আগে
স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
২ দিন আগে
পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
২ দিন আগেডা. মো. নূর আলম

স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
কশেরুকা কী
মানবদেহের মেরুদণ্ড অনেক কশেরুকা দিয়ে গঠিত। প্রতিটি কশেরুকা অস্থি ও তরুণাস্থির সমন্বয়ে তৈরি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স কিংবা ক্ষয়ের কারণে কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্ক তার স্থিতিস্থাপকতা হারায়, শুকিয়ে যায় এবং ফেটে যেতে পারে। এতে দুই কশেরুকা একে অপরের সঙ্গে ঘষা খায় এবং হাড়ে ধারালো দানা তৈরি হয়, যা এক্স-রেতে দেখা যায়। এ দানাগুলো স্নায়ুতে চাপ দিলে হাত বা পায়ে তীব্র ব্যথা ও অসাড়তা দেখা দিতে পারে।
ডিস্ক যখন তার জায়গা থেকে সরে যায়, সেটাকে বলে ‘স্লিপড ডিস্ক’। সাধারণত দুর্ঘটনা, পড়ে যাওয়া কিংবা ঘাড়ে আঘাতের কারণে এটি হয়। ডিস্কের স্থিতিস্থাপকতা কমে গেলে মেরুদণ্ডের নড়াচড়া কঠিন হয়ে পড়ে।
কেন বাড়ছে এই রোগ
আগের তুলনায় এখন স্পন্ডিলাইটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে; বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন; যেমন আইটি কিংবা বিপিও খাতের কর্মীরা—তাঁদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। এখন প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৭ জন কোনো না কোনোভাবে ঘাড়, পিঠ বা কোমরের ব্যথায় ভুগছেন।
স্পন্ডিলাইটিসের প্রধান ধরন
সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলাইটিস: ঘাড়ের অংশে এই ব্যথা শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে কাঁধ, কলারবোন ও ঘাড়সংলগ্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ঘাড় ঘোরাতে কষ্ট হয়, মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা হতে পারে।
লাম্বার স্পন্ডিলাইটিস: এতে কোমরের নিচের অংশে ব্যথা হয়, যা পিঠ ও পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস: এটি একধরনের প্রদাহজনিত আর্থ্রাইটিস, যা মেরুদণ্ড এবং শ্রোণির সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্যাক্রোইলিয়াক জয়েন্টকে প্রভাবিত করে। এতে নিতম্ব, কোমর এবং পিঠে ক্রমাগত
ব্যথা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেরুদণ্ডের হাড়গুলো একত্রে মিশে যেতে পারে, যাকে বলে ‘Bamboo Spine’। এতে রোগী ধীরে ধীরে চলাচলের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।
সাধারণ লক্ষণ
সম্ভাব্য কারণ
পরামর্শ
যদি ঘাড়, পিঠ অথবা কোমরে দীর্ঘদিন ব্যথা থাকে, আঙুল অবশ হয় বা চলাফেরায় অসুবিধা দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সময়মতো চিকিৎসা নিলে স্পন্ডিলাইটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায়।
লেখক: জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর-৬

স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
কশেরুকা কী
মানবদেহের মেরুদণ্ড অনেক কশেরুকা দিয়ে গঠিত। প্রতিটি কশেরুকা অস্থি ও তরুণাস্থির সমন্বয়ে তৈরি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স কিংবা ক্ষয়ের কারণে কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্ক তার স্থিতিস্থাপকতা হারায়, শুকিয়ে যায় এবং ফেটে যেতে পারে। এতে দুই কশেরুকা একে অপরের সঙ্গে ঘষা খায় এবং হাড়ে ধারালো দানা তৈরি হয়, যা এক্স-রেতে দেখা যায়। এ দানাগুলো স্নায়ুতে চাপ দিলে হাত বা পায়ে তীব্র ব্যথা ও অসাড়তা দেখা দিতে পারে।
ডিস্ক যখন তার জায়গা থেকে সরে যায়, সেটাকে বলে ‘স্লিপড ডিস্ক’। সাধারণত দুর্ঘটনা, পড়ে যাওয়া কিংবা ঘাড়ে আঘাতের কারণে এটি হয়। ডিস্কের স্থিতিস্থাপকতা কমে গেলে মেরুদণ্ডের নড়াচড়া কঠিন হয়ে পড়ে।
কেন বাড়ছে এই রোগ
আগের তুলনায় এখন স্পন্ডিলাইটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে; বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন; যেমন আইটি কিংবা বিপিও খাতের কর্মীরা—তাঁদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। এখন প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৭ জন কোনো না কোনোভাবে ঘাড়, পিঠ বা কোমরের ব্যথায় ভুগছেন।
স্পন্ডিলাইটিসের প্রধান ধরন
সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলাইটিস: ঘাড়ের অংশে এই ব্যথা শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে কাঁধ, কলারবোন ও ঘাড়সংলগ্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ঘাড় ঘোরাতে কষ্ট হয়, মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা হতে পারে।
লাম্বার স্পন্ডিলাইটিস: এতে কোমরের নিচের অংশে ব্যথা হয়, যা পিঠ ও পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস: এটি একধরনের প্রদাহজনিত আর্থ্রাইটিস, যা মেরুদণ্ড এবং শ্রোণির সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্যাক্রোইলিয়াক জয়েন্টকে প্রভাবিত করে। এতে নিতম্ব, কোমর এবং পিঠে ক্রমাগত
ব্যথা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেরুদণ্ডের হাড়গুলো একত্রে মিশে যেতে পারে, যাকে বলে ‘Bamboo Spine’। এতে রোগী ধীরে ধীরে চলাচলের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।
সাধারণ লক্ষণ
সম্ভাব্য কারণ
পরামর্শ
যদি ঘাড়, পিঠ অথবা কোমরে দীর্ঘদিন ব্যথা থাকে, আঙুল অবশ হয় বা চলাফেরায় অসুবিধা দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সময়মতো চিকিৎসা নিলে স্পন্ডিলাইটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায়।
লেখক: জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর-৬

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা
০২ মার্চ ২০২৪
দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন ধরেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কয়েকজন করে মারা যাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে।
১০ ঘণ্টা আগে
দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
২ দিন আগে
পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
২ দিন আগেডা. মো. মাজহারুল হক তানিম

পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
কখন বলবেন বেশি রক্ত যাচ্ছে
পিরিয়ডের সময় বেশি রক্তপাত হলে তাকে বলা হয় ম্যানোরেজিয়া। এর সাধারণ লক্ষণগুলো হলো
সাত দিনের বেশি সময় ধরে রক্তপাত হলে, সংখ্যায় বেশি প্যাড ব্যবহারের প্রয়োজন হলে এবং ব্লিডিংয়ের সঙ্গে চাকা চাকা রক্তপাত হলে।
কেন বেশি ব্লিডিং হতে পারে
করণীয়
হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অতিরিক্ত মাসিকের রক্তপাতের ক্ষেত্রে, রক্তপ্রবাহ এবং পেটের খিঁচুনি আপনার স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করে। যদি অতিরিক্ত মাসিকের রক্তপাতের কারণে পিরিয়ডকে ভয় পান, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। এর অনেক চিকিৎসা রয়েছে, যা সাহায্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর দরকার হয়। যেমন হরমোনের সমস্যা আছে কি না বা প্লিসটিক ওভারেসি সিনড্রোম আছে কি না অথবা থাইরো হরমোনের সমস্যা আছে কি না। আলট্রাসনো করেও অনেক সময় দেখা হয়, জরায়ুতে কোনো টিউমার আছে কি না। ওষুধ দেওয়ার ক্ষেত্রে, যাদের হরমনাল ইমব্যালেন্স থাকে, তাদের ক্ষেত্রে হরমোন ব্যালেন্স করার জন্য প্রজেস্টেরন-জাতীয় হরমোন দিয়ে থাকি। আবার থাইরো হরমোনের তারতম্য থাকলে থাইরো হরমোনের রিপ্লেসমেন্ট বা যে কারণে হচ্ছে, সেটার ওষুধ দিয়ে থাকি। টিউমার থাকলে অনেক সময় অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। তবে এই অপারেশন সব সময় যে দরকার হয় এমন নয়; বা অতিরিক্ত ব্লিডিং হলেই যে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে হবে, তা কিন্তু নয়।
লেখক: হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
কখন বলবেন বেশি রক্ত যাচ্ছে
পিরিয়ডের সময় বেশি রক্তপাত হলে তাকে বলা হয় ম্যানোরেজিয়া। এর সাধারণ লক্ষণগুলো হলো
সাত দিনের বেশি সময় ধরে রক্তপাত হলে, সংখ্যায় বেশি প্যাড ব্যবহারের প্রয়োজন হলে এবং ব্লিডিংয়ের সঙ্গে চাকা চাকা রক্তপাত হলে।
কেন বেশি ব্লিডিং হতে পারে
করণীয়
হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অতিরিক্ত মাসিকের রক্তপাতের ক্ষেত্রে, রক্তপ্রবাহ এবং পেটের খিঁচুনি আপনার স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করে। যদি অতিরিক্ত মাসিকের রক্তপাতের কারণে পিরিয়ডকে ভয় পান, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। এর অনেক চিকিৎসা রয়েছে, যা সাহায্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর দরকার হয়। যেমন হরমোনের সমস্যা আছে কি না বা প্লিসটিক ওভারেসি সিনড্রোম আছে কি না অথবা থাইরো হরমোনের সমস্যা আছে কি না। আলট্রাসনো করেও অনেক সময় দেখা হয়, জরায়ুতে কোনো টিউমার আছে কি না। ওষুধ দেওয়ার ক্ষেত্রে, যাদের হরমনাল ইমব্যালেন্স থাকে, তাদের ক্ষেত্রে হরমোন ব্যালেন্স করার জন্য প্রজেস্টেরন-জাতীয় হরমোন দিয়ে থাকি। আবার থাইরো হরমোনের তারতম্য থাকলে থাইরো হরমোনের রিপ্লেসমেন্ট বা যে কারণে হচ্ছে, সেটার ওষুধ দিয়ে থাকি। টিউমার থাকলে অনেক সময় অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। তবে এই অপারেশন সব সময় যে দরকার হয় এমন নয়; বা অতিরিক্ত ব্লিডিং হলেই যে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে হবে, তা কিন্তু নয়।
লেখক: হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা
০২ মার্চ ২০২৪
দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন ধরেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কয়েকজন করে মারা যাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে।
১০ ঘণ্টা আগে
দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
২ দিন আগে
স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
২ দিন আগে