Ajker Patrika

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ৫ পরামর্শ

ফিচার ডেস্ক
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ৫ পরামর্শ

গর্ভাবস্থা একটি আনন্দময় মুহূর্ত হলেও অনেক নারীর জন্য এটি চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন, বমি বমি ভাব, মুড সুইংসের পাশাপাশি কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয়। সেগুলোর মধ্যে একটি হলো গর্ভকালীন ডায়াবেটিস।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস কেন হয়

গর্ভাবস্থায় শরীরে প্রোজেস্টেরন, ইস্ট্রোজেন ও প্লাসেন্টাল ল্যাকট্রোজেন ইত্যাদি হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। এই হরমোনগুলো শিশুর বিকাশে সাহায্য করলেও ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে শরীর ইনসুলিনপ্রতিরোধী হয়ে পড়ে; বিশেষ করে গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রৈমাসিকে। সাধারণত অগ্ন্যাশয় এই বাড়তি চাহিদা পূরণে আরও বেশি ইনসুলিন তৈরি করে। কিন্তু যদি ইনসুলিনের উৎপাদন কম হয়, তখনই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গিয়ে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস দেখা দেয়। তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে এমন অবস্থায়ও সুস্থ থাকা সম্ভব।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা

খাবারের মাধ্যমে রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এ জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন দরকার—

আঁশযুক্ত খাবার খান: শস্যদানা, শাকসবজি, ডাল ও ফল। এগুলো ধীরে ধীরে হজম হয় এবং রক্তে শর্করা দ্রুত বাড়তে দেয় না।

স্বাস্থ্যকর চর্বি বেছে নিন: বাদাম, অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডো ইত্যাদি শরীরে স্বাস্থ্যকর চর্বি জোগায়।

লো-গ্লাইসেমিক খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন: মিষ্টিআলু, ব্রাউন রাইস ও ডাল; যা রক্তে শর্করার পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ায়।

চিনি ও মিষ্টি এড়িয়ে চলুন: মিষ্টান্ন, সফট ড্রিংকস, মিষ্টি পানীয় না খাওয়াই ভালো।

প্রোটিন গ্রহণ করুন: মুরগি, মাছ, ডিম, টফু বা ডাল-প্রোটিন শরীরকে স্থির শক্তি দেয় এবং রক্তে শর্করা স্থিতিশীল রাখে।

খাবার কয়েকবারে গ্রহণ

দিনে তিন বেলা ভারী খাবার না খেয়ে ৫-৬ বারে খান। এতে একবারে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে রক্তে হঠাৎ করে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। প্রতিবার খাবারে সামান্য পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট রাখুন।

নিয়মিত শরীরচর্চা

গর্ভাবস্থায় হালকা ব্যায়াম শরীরকে ইনসুলিনে আরও সংবেদনশীল করে তোলে। নিরাপদ ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে:

হাঁটা: খাবারের পর হালকা হাঁটা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।

প্রস্তুতিমূলক যোগব্যায়াম: মানসিক চাপ কমায় এবং শরীর সক্রিয় রাখতে সহায়ক।

সাঁতার: শরীরের ওপর চাপ না দিয়ে কার্যকর ব্যায়াম।

তবে গর্ভাবস্থায় যেকোনো ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

pregnant

রক্তে শর্করার মাত্রা পর্যবেক্ষণ

বাড়িতে গ্লুকোমিটার দিয়ে রক্তে শর্করা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। এতে বুঝতে পারবেন, কোন খাবার অথবা অভ্যাস আপনার রক্তে কীভাবে প্রভাব ফেলছে।

পর্যাপ্ত পানি পান

অনেকে এ বিষয়ে অবহেলা করেন; কিন্তু পানি পান শরীর থেকে বাড়তি শর্করা প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়। দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।

গর্ভাবস্থায় রক্তে শর্করার আদর্শ মাত্রা যত হওয়া উচিত:

  • খালি পেটে: ৯২ mg/dL-এর নিচে
  • খাওয়ার ১ ঘণ্টা পর: ১৮০ mg/dL-এর নিচে
  • খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর: ১৫৩ mg/dL-এর নিচে

২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে একজন গর্ভবতী নারীকে ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট করানো উচিত, যাতে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস আছে কি না, সেটি জানা যায়। যাঁরা উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা আরও আগে করানো উচিত।

সূত্র: হেলথশট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা মামলার আসামি দুই ভাই নেত্রকোনায় গ্রেপ্তার

‘নৌকা আউট, শাপলা ইন’, সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে এনসিপির চাওয়া

জরুরি অবস্থা ঘোষণায় লাগবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন, প্রস্তাবে একমত রাজনৈতিক দলগুলো

যশোরে কেন্দ্রের ভুলে বিজ্ঞানের ৪৮ জন ফেল, সংশোধনে জিপিএ-৫ পেল সবাই

পাওনা টাকা চাওয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধরের পর বললেন, ‘আমি যুবদলের সভাপতি, জানস?’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত