মো. আরমান বিন আজিজ
প্রতি চারজন মানুষের মধ্যে একজন চোখের কোনো না কোনো প্রকার অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় ভুগে থাকে। এটি খুবই সাধারণ অসুখ, তবে ছোঁয়াচে নয়।
কোনো জিনিসের প্রতি শরীরের অতি সংবেদনশীলতা থাকলে ওই বস্তু বা জিনিস শরীরের সংস্পর্শে এলে অতি দ্রুত কিছু উপসর্গ তৈরি হয়। যেমন ত্বক লাল হয়ে যায়, চুলকায়, ফুলে যায়, পানি পড়ে ইত্যাদি। যখন অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী বস্তু চোখের সংস্পর্শে আসে তখন চোখেও একই প্রতিক্রিয়া হয়। একে চোখের অ্যালার্জি বা অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস বলা হয়। তবে চোখের অন্যান্য অসুখ আর চোখের অ্যালার্জি এক নয়।
অ্যালার্জি কেন হয়
যেসব পদার্থ অ্যালার্জি তৈরি করে, সেগুলোকে বলে অ্যালার্জেন। সেগুলো চোখের সংস্পর্শে গেলে তৈরি হয় চোখের অ্যালার্জি।
চোখের যত অ্যালার্জি
চোখে সাধারণত ৬ ধরণের অ্যালার্জি হয়ে থাকে।
সিজনাল অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস
এটিতেই মানুষ আক্রান্ত হয় বেশি। বিশেষ বিশেষ ঋতুতে এর প্রকোপ বাড়ে। যেমন, শীতের শেষে। বাতাসে ভেসে বেড়ানো ফুলের রেণু, ধুলাবালি ইত্যাদি অ্যালার্জেন চোখ ও নাকের সংস্পর্শে আসার কারণে এটি
হতে পারে।
রোগের লক্ষণ
পেরেনিয়াল অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস
সারা বছর ধরেই এ রোগটি কমবেশি হতে দেখা যায়। সাধারণত লেপ, তোশক, কাঁথা ইত্যাদি থেকে চোখের এই অ্যালার্জি হয়ে থাকে। লক্ষণ কমবেশি সিজনাল কনজাংটিভাইটিসের মতোই।
ভারনাল কেরাটো-কনজাংটিভাইটিস
শীতের শেষের দিকে, ফেব্রুয়ারি-মার্চে, রোগটি বেশি হয়। এতে সাধারণত ছোটরা বেশি আক্রান্ত হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমতে থাকে। তিনজন শতাংশ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এ রোগে যাঁরা আক্রান্ত হন, তাঁদের অনেকের আবার হাঁপানি, চর্মরোগ ইত্যাদি থাকে। কর্নিয়া ঘোলা হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে।
রোগে লক্ষণ
অ্যাটপিক কেরাটো-কনজাংটিভাইটিস
সাধারণত বয়স্ক মানুষ এতে বেশি আক্রান্ত হয়। আগে থেকেই যাঁদের ত্বকের প্রদাহ বা ডার্মাটাইটিস থাকে, তাঁদের রোগটি হওয়ার ঝুঁকি বেশি। সারা বছরই রোগটি হতে দেখা যায়।
রোগের লক্ষণ
রোগের লক্ষণ
জায়ান্ট প্যাপিলারি কনজাংটিভাইটিস
কন্ট্যাক্ট অ্যালার্জির একটি মারাত্মক ধরন এটি।
রোগের লক্ষণ
যাঁদের বেশি হয়
পারিবারিকভাবে যাঁদের হাঁপানি, চর্মরোগ, সর্দিজ্বর ইত্যাদি বেশি হওয়ার ইতিহাস থাকে, তাঁরা অন্যদের চেয়ে বেশি মাত্রায় চোখের অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় ভোগেন। তবে চোখের কোনো কোনো অসুখও অনেক সময় অ্যালার্জি বলে মনে হতে পারে। এ ধরনের অসুখের মধ্যে আছে চোখ ওঠা, আঘাতজনিত চোখের প্রদাহ ইত্যাদি।
চিকিৎসা
চোখের অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।
এ জন্য–
স্বল্পমেয়াদি চিকিৎসা হিসেবে সাধারণত চোখের ড্রপ ও অ্যালার্জি প্রতিরোধী ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এতে ভালো না হলে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়। কখনো কখনো চোখের কর্নিয়া ঠিক রাখতে চোখের কৃত্রিম পানি ড্রপ হিসেবে নিয়মিত দিতে হয়। তবে আগে থেকেই যাঁদের চোখের অসুখ,
যেমন গ্লকোমা, ছানি কিংবা রেটিনাইটিস আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে নাক বন্ধ ভাব দূর করার ওষুধ বা ডিকনজাস্ট্যান্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে
সতর্ক থাকতে হবে।
চোখের অ্যালার্জির পরিণতি
লেখক: সাবেক ফ্যাকাল্টি ও প্রশিক্ষক, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং কনসালট্যান্ট, আঞ্জুমান ভিশন কেয়ার, চট্টগ্রাম
এই সম্পর্কিত পড়ুন:
প্রতি চারজন মানুষের মধ্যে একজন চোখের কোনো না কোনো প্রকার অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় ভুগে থাকে। এটি খুবই সাধারণ অসুখ, তবে ছোঁয়াচে নয়।
কোনো জিনিসের প্রতি শরীরের অতি সংবেদনশীলতা থাকলে ওই বস্তু বা জিনিস শরীরের সংস্পর্শে এলে অতি দ্রুত কিছু উপসর্গ তৈরি হয়। যেমন ত্বক লাল হয়ে যায়, চুলকায়, ফুলে যায়, পানি পড়ে ইত্যাদি। যখন অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী বস্তু চোখের সংস্পর্শে আসে তখন চোখেও একই প্রতিক্রিয়া হয়। একে চোখের অ্যালার্জি বা অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস বলা হয়। তবে চোখের অন্যান্য অসুখ আর চোখের অ্যালার্জি এক নয়।
অ্যালার্জি কেন হয়
যেসব পদার্থ অ্যালার্জি তৈরি করে, সেগুলোকে বলে অ্যালার্জেন। সেগুলো চোখের সংস্পর্শে গেলে তৈরি হয় চোখের অ্যালার্জি।
চোখের যত অ্যালার্জি
চোখে সাধারণত ৬ ধরণের অ্যালার্জি হয়ে থাকে।
সিজনাল অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস
এটিতেই মানুষ আক্রান্ত হয় বেশি। বিশেষ বিশেষ ঋতুতে এর প্রকোপ বাড়ে। যেমন, শীতের শেষে। বাতাসে ভেসে বেড়ানো ফুলের রেণু, ধুলাবালি ইত্যাদি অ্যালার্জেন চোখ ও নাকের সংস্পর্শে আসার কারণে এটি
হতে পারে।
রোগের লক্ষণ
পেরেনিয়াল অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস
সারা বছর ধরেই এ রোগটি কমবেশি হতে দেখা যায়। সাধারণত লেপ, তোশক, কাঁথা ইত্যাদি থেকে চোখের এই অ্যালার্জি হয়ে থাকে। লক্ষণ কমবেশি সিজনাল কনজাংটিভাইটিসের মতোই।
ভারনাল কেরাটো-কনজাংটিভাইটিস
শীতের শেষের দিকে, ফেব্রুয়ারি-মার্চে, রোগটি বেশি হয়। এতে সাধারণত ছোটরা বেশি আক্রান্ত হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমতে থাকে। তিনজন শতাংশ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এ রোগে যাঁরা আক্রান্ত হন, তাঁদের অনেকের আবার হাঁপানি, চর্মরোগ ইত্যাদি থাকে। কর্নিয়া ঘোলা হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে।
রোগে লক্ষণ
অ্যাটপিক কেরাটো-কনজাংটিভাইটিস
সাধারণত বয়স্ক মানুষ এতে বেশি আক্রান্ত হয়। আগে থেকেই যাঁদের ত্বকের প্রদাহ বা ডার্মাটাইটিস থাকে, তাঁদের রোগটি হওয়ার ঝুঁকি বেশি। সারা বছরই রোগটি হতে দেখা যায়।
রোগের লক্ষণ
রোগের লক্ষণ
জায়ান্ট প্যাপিলারি কনজাংটিভাইটিস
কন্ট্যাক্ট অ্যালার্জির একটি মারাত্মক ধরন এটি।
রোগের লক্ষণ
যাঁদের বেশি হয়
পারিবারিকভাবে যাঁদের হাঁপানি, চর্মরোগ, সর্দিজ্বর ইত্যাদি বেশি হওয়ার ইতিহাস থাকে, তাঁরা অন্যদের চেয়ে বেশি মাত্রায় চোখের অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় ভোগেন। তবে চোখের কোনো কোনো অসুখও অনেক সময় অ্যালার্জি বলে মনে হতে পারে। এ ধরনের অসুখের মধ্যে আছে চোখ ওঠা, আঘাতজনিত চোখের প্রদাহ ইত্যাদি।
চিকিৎসা
চোখের অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।
এ জন্য–
স্বল্পমেয়াদি চিকিৎসা হিসেবে সাধারণত চোখের ড্রপ ও অ্যালার্জি প্রতিরোধী ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এতে ভালো না হলে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়। কখনো কখনো চোখের কর্নিয়া ঠিক রাখতে চোখের কৃত্রিম পানি ড্রপ হিসেবে নিয়মিত দিতে হয়। তবে আগে থেকেই যাঁদের চোখের অসুখ,
যেমন গ্লকোমা, ছানি কিংবা রেটিনাইটিস আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে নাক বন্ধ ভাব দূর করার ওষুধ বা ডিকনজাস্ট্যান্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে
সতর্ক থাকতে হবে।
চোখের অ্যালার্জির পরিণতি
লেখক: সাবেক ফ্যাকাল্টি ও প্রশিক্ষক, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং কনসালট্যান্ট, আঞ্জুমান ভিশন কেয়ার, চট্টগ্রাম
এই সম্পর্কিত পড়ুন:
নানা কারণে ঘুম নেই, মেজাজ খিটখিটে, অতিরিক্ত রাগ আর কোনো কিছুতেই প্রশান্তি নেই। এসব কারণে ইদানীং মানসিক সমস্যার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। মানসিক সমস্যা মানুষেরই হয়। বিশেষ করে যুবসমাজ এ সমস্যায় ভুগছে মারাত্মকভাবে। যে কারণেই হোক না কেন, মানসিক সমস্যা রোগী নিজে বুঝতে পারে না। তাকে বলাও যায় না...
১০ ঘণ্টা আগেঅফিসে বারবার ঘুম পেলে তা কাজের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। ডেডলাইন মিস করা, কাজ জমে যাওয়া, এমনকি চাকরিও ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ঘুমের সমস্যা থাকলে চিকিৎসা জরুরি। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে কাজের সময় ঘুম পাওয়া থেকে রেহাই পেতে পারেন।
১০ ঘণ্টা আগেবাতরোগ সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের সমস্যা বলে বিবেচিত। কিন্তু শিশুরাও এতে আক্রান্ত হতে পারে। অনেক সময় অভিভাবকেরা ভাবেন, এই বয়সে এমন ব্যথা বা অস্বস্তি সাময়িক। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক শিশু দীর্ঘস্থায়ী বাতরোগে ভোগে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগকে বলা হয় জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থ্রারাইটিস...
১১ ঘণ্টা আগেশরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে তাকে জ্বর বলা হয়। জ্বর আসলে কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ। ফলে জ্বর হওয়াকে শরীরের ভেতরের কোনো রোগের সতর্কবার্তা বলা যেতে পারে।
১১ ঘণ্টা আগে