Ajker Patrika

মুখের স্বাস্থ্য নিয়ে প্রয়োজন জরুরি সচেতনতা

ফিচার ডেস্ক
মুখের স্বাস্থ্য নিয়ে প্রয়োজন জরুরি সচেতনতা

আমরা যখন স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার কথা ভাবি, তখন সাধারণত পুষ্টিকর খাবার, ব্যায়াম, মানসিক স্বাস্থ্য বা রোগ প্রতিরোধের দিকেই মনোযোগ দিই। কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রায়ই আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়, সেটি হলো মুখের স্বাস্থ্য।

শুধু দাঁতের ক্ষয় অথবা ক্যাভিটি রোধ করাই মুখের স্বাস্থ্য রক্ষার উদ্দেশ্য নয়। মুখের সঠিক যত্ন নেওয়া আমাদের পুরো শরীরের সুস্থতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

মুখের স্বাস্থ্য ও শরীরের সম্পর্ক

আমাদের মুখে রয়েছে কোটি কোটি ব্যাকটেরিয়া, যাদের বেশির ভাগই ক্ষতিকর নয়। যদি মুখের যত্ন ঠিকমতো না নেওয়া হয়, তাহলে এই ব্যাকটেরিয়া বেড়ে গিয়ে শরীরে নানা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যেমন মাড়ির রোগ শুধু মুখে সীমাবদ্ধ থাকে না, এটি হৃৎপিণ্ডসহ শরীরের অন্যান্য অংশকেও প্রভাবিত করতে পারে।

ডায়াবেটিস ও মুখের স্বাস্থ্য

ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে মাড়ির রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। আবার যদি মুখে গুরুতর মাড়ির সমস্যা থাকে, তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন হয়ে পড়ে। অর্থাৎ, একদিকে ডায়াবেটিস মুখের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, আবার মুখের অসুখ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করে; এটি একটি দ্বিমুখী সম্পর্ক।

হৃদ্‌রোগের সঙ্গে সম্পর্ক

গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা মাড়ির রোগে ভুগছেন, তাঁদের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বা ধমনিতে ব্লক হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। কারণ, মাড়ির ইনফেকশন থেকে সৃষ্টি হওয়া ব্যাকটেরিয়া রক্তনালির মাধ্যমে হৃৎপিণ্ডে পৌঁছে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।

শ্বাসতন্ত্রের রোগ

মুখের ব্যাকটেরিয়া কখনো কখনো ফুসফুসে পৌঁছে যায়; বিশেষ করে প্রবীণ ব্যক্তি বা দুর্বল রোগ প্রতিরোধক্ষমতাসম্পন্ন মানুষের মধ্যে। এতে নিউমোনিয়া বা অন্যান্য শ্বাসজনিত সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

গর্ভাবস্থায় জটিলতা

গর্ভবতী নারীদের মুখের অসুস্থতা; যেমন মাড়ির প্রদাহ, তাঁদের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। এটি সময়ের আগে সন্তান জন্ম, কম ওজনের শিশু, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে গর্ভাবস্থায় মুখের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

মুখের স্বাস্থ্য ও সামাজিক জীবনে প্রভাব

মুখের সৌন্দর্য এবং স্বাস্থ্যের প্রভাব শুধু শারীরিক রোগে সীমাবদ্ধ নয়, এটি মানসিক এবং সামাজিক জীবনেও প্রভাব ফেলে। দাঁতের পচন, দুর্গন্ধ অথবা দাঁত পড়ে যাওয়া মানুষের আত্মবিশ্বাস নষ্ট করতে পারে। অনেকে এ কারণে খোলামেলা হাসতে পারেন না, সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে সংকোচ বোধ করেন। অন্যদিকে, দাঁতের ব্যথা বা মাড়ির ফোলা ঘুম, খাওয়া-দাওয়া এবং কথা বলায়ও সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অর্থাৎ, মুখের অসুস্থতা আপনার জীবনযাত্রা পুরোপুরি ব্যাহত করতে পারে।

নিয়মিত মুখের যত্নে যা করবেন

  • দিনে অন্তত দুবার দাঁত ব্রাশ করুন (বিশেষ করে ঘুমানোর আগে)।
  • ফ্লস বা টুথপিক দিয়ে দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাবার পরিষ্কার করুন।
  • খুব ঠান্ডা বা গরম খাবার পরিমাণে কম খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • চিনিজাতীয় খাবার কম খান।
  • বছরে অন্তত একবার দাঁতের ডাক্তার দেখান।
  • ধূমপান ও তামাকজাতীয় দ্রব্য এড়িয়ে চলুন।

মুখের যত্ন নেওয়া মানেই শুধু দাঁতের সৌন্দর্য রক্ষা নয়; এটি হলো সার্বিক শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতার অপরিহার্য অংশ। মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে আপনি অনেক জটিল রোগ থেকে বেঁচে যেতে পারেন। তাই সময় থাকতে সচেতন হোন, নিয়মিত মুখের যত্ন নিন এবং প্রয়োজনে দেরি না করে দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সূত্র: হেলথলাইন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা মামলার আসামি দুই ভাই নেত্রকোনায় গ্রেপ্তার

‘নৌকা আউট, শাপলা ইন’, সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে এনসিপির চাওয়া

পারটেক্স এমডি রুবেল আজিজের ১১৬ কোটি টাকার সম্পত্তি নিলামে তুলছে ব্যাংক এশিয়া

যশোরে কেন্দ্রের ভুলে বিজ্ঞানের ৪৮ জন ফেল, সংশোধনে জিপিএ-৫ পেল সবাই

জরুরি অবস্থা ঘোষণায় লাগবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন, প্রস্তাবে একমত রাজনৈতিক দলগুলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত