ডা. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম
দেশের ১০ থেকে ১২ শতাংশ, অর্থাৎ দেড় কোটির বেশি মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। দেশে আনুমানিক ৭০ হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু-কিশোর রয়েছে। প্রতিবছর ৭ থেকে ১০ হাজার শিশু এই রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। বিশ্বে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহকসংখ্যা প্রায় ২৫০ মিলিয়ন এবং প্রতিবছর ১ লাখ শিশু এই রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।
থ্যালাসেমিয়া হলো উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া রক্তজনিত রোগ। এটি রোগীর দেহে হিমোগ্লোবিনের অপর্যাপ্ত পরিমাণ অথবা অস্বাভাবিক গঠন তৈরির জন্য দায়ী। লোহিত রক্তকণিকার মধ্যস্থিত হিমোগ্লোবিন শরীরের মধ্য দিয়ে অক্সিজেন পরিবহন করে। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির লোহিত রক্তকণিকা বিপুলসংখ্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা রোগীর রক্তাল্পতা
তৈরি করে।
থ্যালাসেমিয়ার প্রকারভেদ
রোগীর রক্ত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে থ্যালাসেমিয়াকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলো হলো থ্যালাসেমিয়া মেজর (অতিমাত্রা), মাইনর (অল্প মাত্রা) এবং ইন্টারমিডিয়া (মধ্যম মাত্রা)। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির হিমোগ্লোবিনের গঠন অনেক ধরনের হতে পারে। সেগুলোর মধ্যে আছে বিটা থ্যালাসেমিয়া, ই বিটা থ্যালাসেমিয়া, হিমোগ্লোবিন ই ডিজিজ, আলফা থ্যালাসেমিয়া, এস বিটা থ্যালাসেমিয়া, হিমোগ্লোবিন এস ডিজিজ, হিমোগ্লোবিন ডি পাঞ্জাব, হিমোগ্লোবিন ডি আরব ইত্যাদি।
রোগের কারণ ত্রুটিপূর্ণ হিমোগ্লোবিন জিনের কারণে থ্যালাসেমিয়া হয়। মা অথবা বাবা, কিংবা মা-বাবা উভয়েরই থ্যালাসেমিয়ার জিন থাকলে বংশানুক্রমে এটি সন্তানদের আক্রান্ত করে। মা ও বাবা উভয়ে থ্যালাসেমিয়া জিনের বাহক হলে ভূমিষ্ঠ শিশুর ২৫ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত হয়।
থ্যালাসেমিয়ার পরীক্ষা
রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া নির্ধারণ করা সম্ভব। এ জন্য কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট ও হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস নামের দুটি পরীক্ষা করানো হয়।
রক্ত পরীক্ষায় সাধারণত যে পরিবর্তনগুলো দেখা যায়
লক্ষণ ও উপসর্গ
প্রতিরোধের উপায়
শুধু বংশানুক্রমিকভাবে যোগসূত্র থাকা ব্যক্তিই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়; অর্থাৎ আক্রান্ত শিশু এ রোগ নিয়েই জন্ম নেয়। ফলে জিনগত এই ব্যাধি থেকে দূরে থাকা সম্ভব নয়। তবে এর জটিলতাগুলো প্রতিরোধ করার জন্য নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
স্বামী বা স্ত্রী—যে কারও এই রোগ থাকলে সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে জেনেটিকস কাউন্সেলরের শরণাপন্ন হতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যঝুঁকির সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনায় মা ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ঝুঁকির মাত্রা কমিয়ে আনাটাই মূল উদ্দেশ্য।
একজন থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর জীবনধারণ পদ্ধতি মেনে চলতে হয়। এখানে প্রথমেই নজর দিতে হয় খাবারের দিকে। এ সময় সহায়ক খাবারের তালিকায় যুক্ত করতে হবে ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল ও সবজি। যেমন কমলা, আঙুর, সবুজ ও লাল মিষ্টি মরিচ, স্ট্রবেরি, কিউইফল, ফুলকপি, টমেটো ইত্যাদি।
তবে এড়িয়ে চলতে হবে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার। এই তালিকায় রয়েছে মাছ, মাংস ও পালংশাক। খাদ্যাভ্যাস গঠনের পাশাপাশি মনোনিবেশ করতে হবে শরীরচর্চার প্রতিও। মূলত খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চা পরিপূর্ণভাবে থ্যালাসেমিয়া নিরাময় করতে পারে না, তবে এতে ঝুঁকির তীব্রতা অনেকটা উপশম হয়।
পরামর্শ দিয়েছেন:
ডা. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, এমবিবিএস (ডিএমসি), এফসিপিএস (হেমাটোলজি), রক্তরোগ ও ব্লাড ক্যানসার বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক, হেমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
দেশের ১০ থেকে ১২ শতাংশ, অর্থাৎ দেড় কোটির বেশি মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। দেশে আনুমানিক ৭০ হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু-কিশোর রয়েছে। প্রতিবছর ৭ থেকে ১০ হাজার শিশু এই রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। বিশ্বে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহকসংখ্যা প্রায় ২৫০ মিলিয়ন এবং প্রতিবছর ১ লাখ শিশু এই রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।
থ্যালাসেমিয়া হলো উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া রক্তজনিত রোগ। এটি রোগীর দেহে হিমোগ্লোবিনের অপর্যাপ্ত পরিমাণ অথবা অস্বাভাবিক গঠন তৈরির জন্য দায়ী। লোহিত রক্তকণিকার মধ্যস্থিত হিমোগ্লোবিন শরীরের মধ্য দিয়ে অক্সিজেন পরিবহন করে। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির লোহিত রক্তকণিকা বিপুলসংখ্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা রোগীর রক্তাল্পতা
তৈরি করে।
থ্যালাসেমিয়ার প্রকারভেদ
রোগীর রক্ত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে থ্যালাসেমিয়াকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলো হলো থ্যালাসেমিয়া মেজর (অতিমাত্রা), মাইনর (অল্প মাত্রা) এবং ইন্টারমিডিয়া (মধ্যম মাত্রা)। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির হিমোগ্লোবিনের গঠন অনেক ধরনের হতে পারে। সেগুলোর মধ্যে আছে বিটা থ্যালাসেমিয়া, ই বিটা থ্যালাসেমিয়া, হিমোগ্লোবিন ই ডিজিজ, আলফা থ্যালাসেমিয়া, এস বিটা থ্যালাসেমিয়া, হিমোগ্লোবিন এস ডিজিজ, হিমোগ্লোবিন ডি পাঞ্জাব, হিমোগ্লোবিন ডি আরব ইত্যাদি।
রোগের কারণ ত্রুটিপূর্ণ হিমোগ্লোবিন জিনের কারণে থ্যালাসেমিয়া হয়। মা অথবা বাবা, কিংবা মা-বাবা উভয়েরই থ্যালাসেমিয়ার জিন থাকলে বংশানুক্রমে এটি সন্তানদের আক্রান্ত করে। মা ও বাবা উভয়ে থ্যালাসেমিয়া জিনের বাহক হলে ভূমিষ্ঠ শিশুর ২৫ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত হয়।
থ্যালাসেমিয়ার পরীক্ষা
রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া নির্ধারণ করা সম্ভব। এ জন্য কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট ও হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস নামের দুটি পরীক্ষা করানো হয়।
রক্ত পরীক্ষায় সাধারণত যে পরিবর্তনগুলো দেখা যায়
লক্ষণ ও উপসর্গ
প্রতিরোধের উপায়
শুধু বংশানুক্রমিকভাবে যোগসূত্র থাকা ব্যক্তিই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়; অর্থাৎ আক্রান্ত শিশু এ রোগ নিয়েই জন্ম নেয়। ফলে জিনগত এই ব্যাধি থেকে দূরে থাকা সম্ভব নয়। তবে এর জটিলতাগুলো প্রতিরোধ করার জন্য নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
স্বামী বা স্ত্রী—যে কারও এই রোগ থাকলে সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে জেনেটিকস কাউন্সেলরের শরণাপন্ন হতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যঝুঁকির সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনায় মা ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ঝুঁকির মাত্রা কমিয়ে আনাটাই মূল উদ্দেশ্য।
একজন থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর জীবনধারণ পদ্ধতি মেনে চলতে হয়। এখানে প্রথমেই নজর দিতে হয় খাবারের দিকে। এ সময় সহায়ক খাবারের তালিকায় যুক্ত করতে হবে ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল ও সবজি। যেমন কমলা, আঙুর, সবুজ ও লাল মিষ্টি মরিচ, স্ট্রবেরি, কিউইফল, ফুলকপি, টমেটো ইত্যাদি।
তবে এড়িয়ে চলতে হবে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার। এই তালিকায় রয়েছে মাছ, মাংস ও পালংশাক। খাদ্যাভ্যাস গঠনের পাশাপাশি মনোনিবেশ করতে হবে শরীরচর্চার প্রতিও। মূলত খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চা পরিপূর্ণভাবে থ্যালাসেমিয়া নিরাময় করতে পারে না, তবে এতে ঝুঁকির তীব্রতা অনেকটা উপশম হয়।
পরামর্শ দিয়েছেন:
ডা. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, এমবিবিএস (ডিএমসি), এফসিপিএস (হেমাটোলজি), রক্তরোগ ও ব্লাড ক্যানসার বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক, হেমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
নানা কারণে ঘুম নেই, মেজাজ খিটখিটে, অতিরিক্ত রাগ আর কোনো কিছুতেই প্রশান্তি নেই। এসব কারণে ইদানীং মানসিক সমস্যার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। মানসিক সমস্যা মানুষেরই হয়। বিশেষ করে যুবসমাজ এ সমস্যায় ভুগছে মারাত্মকভাবে। যে কারণেই হোক না কেন, মানসিক সমস্যা রোগী নিজে বুঝতে পারে না। তাকে বলাও যায় না...
১ দিন আগেঅফিসে বারবার ঘুম পেলে তা কাজের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। ডেডলাইন মিস করা, কাজ জমে যাওয়া, এমনকি চাকরিও ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ঘুমের সমস্যা থাকলে চিকিৎসা জরুরি। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে কাজের সময় ঘুম পাওয়া থেকে রেহাই পেতে পারেন।
১ দিন আগেবাতরোগ সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের সমস্যা বলে বিবেচিত। কিন্তু শিশুরাও এতে আক্রান্ত হতে পারে। অনেক সময় অভিভাবকেরা ভাবেন, এই বয়সে এমন ব্যথা বা অস্বস্তি সাময়িক। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক শিশু দীর্ঘস্থায়ী বাতরোগে ভোগে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগকে বলা হয় জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থ্রারাইটিস...
১ দিন আগেশরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে তাকে জ্বর বলা হয়। জ্বর আসলে কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ। ফলে জ্বর হওয়াকে শরীরের ভেতরের কোনো রোগের সতর্কবার্তা বলা যেতে পারে।
১ দিন আগে