Ajker Patrika

কোরআন পোড়ানো সালওয়ানের মৃত্যুর গুজব যেভাবে ছড়াল

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪: ৫২
কোরআন পোড়ানো সালওয়ানের মৃত্যুর গুজব যেভাবে ছড়াল

সুইডেনে একাধিকবার কোরআন পোড়ানো যুবক সালওয়ান মোমিকা মারা গেছেন দাবিতে একটি তথ্য দেশীয় একাধিক সংবাদ মাধ্যম সময় টিভি, দেশ টিভি, নয়া দিগন্ত, যায়যায়দিন, ঢাকা প্রকাশসহ স্থানীয় কতিপয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে গত মঙ্গল ও বুধবার (২ ও ৩ এপ্রিল। প্রতিবেদনে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস ও ইন্ডিয়া টুডেকে। 

তবে সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি যে সত্য নয়, তা ইতিমধ্যেই নরওয়ে ও সুইডেনের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বর্তমানে নরওয়ের পুলিশের হাতে বন্দী। কিন্তু কীভাবে সংবাদ মাধ্যমে উঠে এল তাঁর মৃত্যুর গুজব? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ। 

দাবিটির সম্ভাব্য সূত্রপাত অনুসন্ধানে দেখা যায়, সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি গত সোমবার (১ এপ্রিল) থেকেই ফেসবুকে পাওয়া যায়। ওইদিন বিকেল ৪টা ২৭ মিনিটে ‘Vasıf Ay’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সালওয়ানের মৃত্যুর দাবি নিয়ে একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টে দাবি করা হয়, সালওয়ান মোমিকা নরওয়েতে একজন কুর্দির হাতে নিহত হয়েছেন।

তাঁর মৃত্যুর এই দাবি ব্যাপকতা পায় পরের দিন মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) থেকে। ওইদিন ‘রেডিও জেনোয়া (Radio Genoa)’ নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টের টুইটের বরাত দিয়ে সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এবং দ্য ইকোনমিক টাইমস। 

সালওয়ান মোমিকা মারা যাওয়ার দাবিটি ছড়িয়েছে একটি ভুয়া ভেরিফায়েড এক্স হ্যান্ডল থেকে। ছবি: রেডিও জেনোয়ারেডিও জেনোয়া (Radio Genoa)’ সম্পর্কে অনুসন্ধানে এক্স অ্যাকাউন্টটির পরিচয় সম্পর্কে বলা হয়েছে, ইতালির লিগুরিয়ার রাজধানী জেনোয়া থেকে পরিচালিত হয়। এক্স অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছে ২০২১ সালের আগস্টে। ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টটির ফলোয়ার ৫ লাখ ৯২ হাজার। অ্যাকাউন্টটির প্রোফাইলে রেডিওটির কোনো ওয়েবসাইটের উল্লেখ নেই। একটি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টের লিংক রয়েছে। 

পরে রেডিও জেনোয়া নিয়ে গুগল অনুসন্ধানে ইউরোপিয়ান ডিজিটাল মিডিয়া অবজারভেটরির (ইডিএমও) ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ইডিএমও হলো, ইতালির ফ্লোরেন্সে অবস্থিত ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের নেতৃত্বে পরিচালিত অপতথ্য মোকাবিলায় কাজ করা একটি প্রকল্প। ইডিএমওর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২১ জুন প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে রেডিও জেনোয়া সম্পর্কে বলা হয়েছে, এই এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে ইতালীয় রাজনীতি, ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অপতথ্য প্রচার হতে দেখেছে বিভিন্ন ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান। 

ওই বছরের জুনে এক্স অ্যাকাউন্টটি থেকে টুইট করে দাবি করা হয়, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মিলানি দেশটিতে সমকামিতার সমর্থনে ‘ফ্যামিলি প্রাইড মান্থ’ ঘোষণা দিয়েছেন। তবে ইডিএমও, এপিসহ একাধিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান ও সংবাদ সংস্থার যাচাইয়ে দাবিটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ইতালিতে এমন কোনো রেডিও স্টেশন আছে কি না তা নিয়ে অনুসন্ধানেও ‘রেডিও জেনোয়া (Radio Genoa)’ নামে কোনো রেডিও স্টেশনের নাম পাওয়া যায়নি। এসব তথ্য ‘রেডিও জেনোয়া’ বিশ্বস্ততাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করে। 

অপরদিকে রেডিও জেনোয়া থেকে মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি ভাইরাল হওয়ার পর ওইদিনই নরওয়ের ডকুমেন্ট নামের একটি সংবাদমাধ্যম দাবিটি সত্য নয় উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। রেডিও জেনোয়ার এ সম্পর্কিত টুইটটিতে কমিউনিটি নোট হিসেবে এ তথ্য যুক্ত করে দেওয়া হয়, যা এক্স ব্যবহারকারীদের কাছে দৃশ্যমান। এই প্রতিবেদনে ডকুমেন্ট সংবাদ মাধ্যমটি নরওয়ে পুলিশের ইমিগ্রেশন ইউনিটের বরাত দিয়ে জানায়, সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি গুজব।

সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) স্বীকৃত তুরস্কের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান dogrulukpay। dogrulukpay প্রতিবেদনে সালওয়ানের মৃত্যুর দাবিটি কীভাবে ছড়িয়েছে তার বর্ণনা তুলে ধরেছে। 

প্রতিষ্ঠানটির মতে, সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি ছড়িয়েছে তাঁর উইকিপিডিয়া পেজ সংশোধনের মাধ্যমে। গত সোমবার (১ এপ্রিল) তাঁর উইকিপিডিয়া পেজ সংশোধন করে দাবি করা হয় তিনি ওইদিন মারা গেছেন। তবে ওই সময় এই সংশোধনের বিপরীতে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র ছিল না। পরে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমসকে সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে মিথ্যা খবর শেয়ারের অভিযোগে দ্য ইকোনমিক টাইমসকে পরে সূত্র থেকে সরিয়ে ফেলা হয় এবং তাঁর উইকিপিডিয়া পেজ পুনরায় সংশোধন করে মৃত্যুর তথ্য মুছে ফেলা হয়।

সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর খবর ছড়িয়েছে উইকিপিডিয়া সংশোধনের মাধ্যমে।প্রসঙ্গত, উইকিপিডিয়ায় যে তথ্য পাওয়া যায়, তা সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবী প্রদায়কেরা যুক্ত করেন। শুধু কিছু নীতিমালা অনুসরণ করে যে কোনো পেশার ব্যক্তি উইকিপিডিয়ায় অবদান রাখতে পারেন। উইকিপিডিয়ায় কোনো বিষয়ের ওপর লেখা একটি নিবন্ধ একাধিক প্রদায়ক মিলে সম্পূর্ণ করেন। অর্থাৎ অনেকের কাছে থাকা তথ্য সংকলিত হয়ে একটি সম্পূর্ণ নিবন্ধ তৈরি হয়। তাই উইকিপিডিয়াকে শতভাগ নির্ভরযোগ্য সূত্র হিসেবে ব্যবহার না করাই উত্তম। 

তবে সুইডেনে প্রকাশ্যে কোরআন পুড়িয়ে আলোচনায় আসা ইরাকি শরণার্থী সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর দাবিটি সম্পর্কিত প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ‘রেডিও জেনোয়া’কেই উৎস হিসেবে ব্যবহার করেছে। 

বিভিন্ন সময়ে ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানের কাছে অপতথ্য ছড়ানোর জন্য চিহ্নিত ‘রেডিও জেনোয়া’ এক্স অ্যাকাউন্ট থেকেই সেটি ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো যাচাই না করেই এই টুইটের বরাত দিয়ে সালওয়ান মোমিকার মৃত্যুর খবর প্রচার করে। পরে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যা পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। 

তবে এক্স থেকে মৃত্যুর সংবাদ ভাইরাল হওয়ার এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও ভুয়া এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন খ্যাতিমান আলোচিত ব্যক্তির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে পরে সরিয়ে ফেলতে হয়েছে সংবাদমাধ্যমকে। যেমন, ২০২৩ সালের অক্টোবরে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে ভারতীয় ও দেশীয় সংবাদ মাধ্যমে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ক্লডিয়া গোলডিনের নামে খোলা একটি ভুয়া এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে এ খবর দেওয়া হয়। 

সেই টুইটের বরাত দিয়েই অমর্ত্য সেনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে ভারতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। ডেকান হেরাল্ড, ডেকান ক্রনিকল, জি–নিউজ এবং বিজনেস টুডের মতো সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে ওই টুইটের বরাত দিয়ে খবরটি প্রকাশ করা হয়। এরপর বাংলাদেশের প্রথম সারির কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যদিও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত এমন ভুল বা ভুয়া তথ্য থেকে বাঁচতে তাই সূত্র যাচাই করে নেওয়া, একক সূত্রের ওপর নির্ভর না করে একাধিক সূত্রের মাধ্যমে যাচাই করে নেওয়া, তথ্য প্রদানকারী সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়ার মতো বিষয়গুলোর ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ২১
আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।

আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৪
মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত
বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।

বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’

ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি

বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।

বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ

এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত
এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।

এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।

একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৩
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।

ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।

গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৮
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।

ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।

ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে

ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।

ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই

ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র‍্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত

ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।

সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল

এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।

কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।

কথিত জেসিকা র‍্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত