ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

ভারতে চলছে ১৮ তম লোকসভা নির্বাচন। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে দুই ধাপের ভোট গ্রহণ। সাত দফায় ভোট গ্রহণের তৃতীয় ধাপে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ৭ মে। ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো জয়ের আশা করছে। ভোটার টানতে ফের উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রচারকেই হাতিয়ার করেছেন নরেন্দ্র মোদি। ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ এই মন্ত্র ভুলে নির্বাচনের মাঠে মুসলিমদেরই প্রধান প্রতিপক্ষ সাব্যস্ত করেছেন তিনি। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসকে ঘায়েল করতে এই ‘মুসলিম বিদ্বেষের’ অস্ত্রেই ভরসা করছেন সাবেক আরএসএস কর্মী নরেন্দ্র মোদি। বারবার মুসলিমদের ‘অনুপ্রবেশকারী’র তকমা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এই করতে গিয়ে তিনি তথ্যের সত্যাসত্যের ধার ধারছেন না।
এসব কারণে নির্বাচন কমিশনে তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ দিয়েছে কংগ্রেসসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল। নির্বাচন কমিশন অবশ্য বরাবরের মতো নীরব। ফলে নরেন্দ্র মোদিকে রুখতে পারে এমন কোনো শক্তি এই মুহূর্তে ভারতে নেই। পাঁচ দিনের নির্বাচনী প্রচারণায় একদিন বিরতি দিয়ে সমানে ছড়িয়ে যাচ্ছেন মিথ্যা তথ্য, ঘৃণা আর হিংসা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম স্ক্রল গত ২১ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল নির্বাচনী প্রচারণায় নরেন্দ্র মোদির এমন বক্তব্যের ফ্যাক্টচেক নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো।
২১ এপ্রিল, বাঁশওয়াড়া (রাজস্থান)
রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় মোদি দাবি করেন, কংগ্রেসের ইশতেহারে বলা হয়েছে, বিবাহিত হিন্দু নারীদের মঙ্গলসূত্রসহ ব্যক্তিগত সম্পদ জরিপ করে বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং এগুলো পুনঃবণ্টন করা হবে। মোদি বলেন, ‘আমার মা ও বোনদের সোনার গয়না শুধু একটি শোপিস নয়, এটি তাঁদের আত্মসম্মানের সঙ্গে জড়িত। তাঁদের মঙ্গলসূত্র তাঁদের জীবনের সঙ্গে জড়িত। আর আপনি ইশতেহারে এটি কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন?’
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে ব্যক্তিগত সম্পদ এমনকি বিবাহিত নারীদের মঙ্গলসূত্র বাজেয়াপ্ত করার ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই।
নরেন্দ্র মোদি আরও দাবি করেন, বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে কংগ্রেস সরকার ‘দেশের সম্পদের প্রথম অধিকার মুসলমানদের’ এমন ঘোষণা দিয়েছিল।
ফ্যাক্ট: এটি ২০০৬ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন মনমোহন সিংয়ের দেওয়া একটি বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন। মনমোহন সিং তাঁর বক্তব্যে শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘু নয়, তফসিলি সম্প্রদায়সহ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি, নারী এবং শিশুসহ ভারতের সব সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণির উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন।
একই দিনে ভারতীয় মুসলমানদের ইঙ্গিত করে মোদি দাবি করেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ব্যক্তিগত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে ‘অনুপ্রবেশকারী’ এবং ‘যাদের একাধিক সন্তান’ আছে তাদের মধ্যে বিতরণ করে দেবে।
ফ্যাক্ট: ভারতীয় মুসলমানেরা ‘অনুপ্রবেশকারী’, এই দাবির কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। খোদ মোদি সরকার বারবার সংসদকে বলেছে, তাদের কাছে অবৈধ অভিবাসীদের কোনো তথ্য নেই। ভারতীয় মুসলমানদের প্রজনন হার হিন্দুদের তুলনায় বেশি, তবে অন্য সব সম্প্রদায়ের তুলনায় এ হার দ্রুত কমছে। এ ছাড়া প্রজননের সঙ্গে অর্থনৈতিক অবস্থা জড়িত, ধর্ম নয়। ভারতের অধিক উন্নত অঞ্চল তামিলনাড়ুতে মুসলমানদের প্রজনন হার অপেক্ষাকৃত দরিদ্র অঞ্চল বিহারের হিন্দুদের তুলনায় কম।
২২ এপ্রিল, আলিগড়
এদিনও কংগ্রেসের ইশতেহারে ব্যক্তিগত সম্পদ জরিপ ও বাজেয়াপ্ত করার হুমকি সম্পর্কিত দাবির পুনরাবৃত্তি করেন মোদি। এদিন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে ‘কংগ্রেসের শেহজাদা’ উল্লেখ করে মোদি বলেন, ‘তিনি (রাহুল গান্ধী) বলেছেন, দল ক্ষমতায় এলে আপনার আয়, সম্পদ, বাড়ি সম্পর্কে জানতে একটি সমীক্ষা চালানো হবে...এরপর সেসব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত এবং পুনর্বণ্টন করা হবে, তাদের ইশতেহারে এটাই বলা হয়েছে।’
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে এমন কিছুর উল্লেখই নেই। গত ৬ এপ্রিল নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশের সময় রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, ‘আমরা দেশের “এক্স–রে” করব। অনগ্রসর শ্রেণি, দলিত, আদিবাসী, সাধারণ দরিদ্র মানুষ এবং সংখ্যালঘুরা জানতে পারবে, দেশে তাদের অংশ কী।’ কংগ্রেস ব্যক্তিগত সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং পুনর্বণ্টন করবে এমন কিছু তিনি বলেননি।
নরেন্দ্র মোদির দাবি: কারও যদি গ্রামে পৈতৃক বাড়ি থাকে এবং একই ব্যক্তি তাঁর সন্তানদের জন্য শহরে ছোট ফ্ল্যাট কিনে থাকেন, তবে কংগ্রেস কোনো একটির মালিকানা বাজেয়াপ্ত করবে। মোদি বলেন, ‘এটা কী মাওবাদী চিন্তা নয়? কংগ্রেস আপনার কষ্টার্জিত সম্পদ ছিনিয়ে নিতে চায়, নারীদের সম্পত্তি লুট করতে চায়।’
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে সম্পত্তি পুনর্বণ্টনের একমাত্র উল্লেখটি হলো, ক্ষমতায় এলে তারা এর জন্য একটি যথাযথ কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগ নেবে। যার মাধ্যমে সরকারি জমি এবং সর্বোচ্চ ভূসম্পত্তির মালিকানা সম্পর্কিত আইনের (ভূমি সিলিং আইন) অধীনে উদ্বৃত্ত জমি দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টনের বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে। কংগ্রেসের এই উদ্যোগ নতুন কিছু নয়। কারণ, এরই মধ্যে ভারতের ২১টি রাজ্যে ভূমি সিলিং আইন রয়েছে, যা ১৯৬০–এর দশকে দেশটিতে জমির মালিকানা বৈষম্য দূর করার জন্য প্রণয়ন করা হয়।
২৩ এপ্রিল, টঙ্ক–সাওয়াই মধুপুর (রাজস্থান)
নরেন্দ্র মোদির দাবি: কংগ্রেসের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার পর রাহুল গান্ধীর বক্তৃতায় দেশকে ‘এক্স–রে’ করার প্রসঙ্গ টেনে মোদি বলেন, ‘এর মানে হলো, আপনার বাড়িতে যদি এমন একটি গোলা থাকে, যেখানে আপনি খেতের শস্য সংরক্ষণ করেন সেটিরও “এক্স–রে” করা হবে। আপনার সমস্ত সম্পত্তি, যা আপনার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি, তা বাজেয়াপ্ত করে বিতরণ করে দেওয়া হবে। যদি আপনার দুটি বাড়ি থাকে এবং তাদের এক্স–রে–তে ধরা পড়ে, তাহলে একটি বাড়ি সরকার দখল করবে। এটা কি আপনি মেনে নেবেন?’
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে বা দলের নেতাদের বক্তৃতায় ‘সরকারে গেলে জনগণের বাড়ি দখল এবং পুনর্বণ্টনের উদ্যোগ’ বিষয়ে কোনো কথা বলা হয়নি।
একই বক্তৃতায় মোদি আবারও দাবি করেন, দেশের সম্পদের ওপর মুসলমানদের প্রথম অধিকার রয়েছে, এটি মনমোহন জি বলেছেন।
ফ্যাক্ট: মনমোহন সিংয়ের বক্তৃতার লিখিত রূপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আর্কাইভে পাওয়া যায়। সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মনমোহন সিংয়ের বক্তব্য স্পষ্ট করে বিবৃতিও দেওয়া হয়। মনমোহন সিংয়ের বক্তব্যে ‘সম্পদের প্রথম অধিকার’–এর উল্লেখটি শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘু নয়, তফসিলি সম্প্রদায়সহ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি, নারী এবং শিশুসহ ভারতের সব সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণির জন্যই বলা হয়। মনমোহন সিং এই বক্তব্য দিয়েছিলেন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজিন্দর সাচারের নেতৃত্বে একটি কমিটি ভারতে মুসলিমরা শিক্ষা, আয় এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অন্যান্য সম্প্রদায়ের চেয়ে কীভাবে পিছিয়ে রয়েছে সে সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার এক মাস পর।
২৪ এপ্রিল, সাগর (মধ্য প্রদেশ)
এদিন মোদি দাবি করেন, কর্ণাটকে কংগ্রেস ধর্মের ভিত্তিতে অবৈধভাবে ওবিসি কোটায় বা অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের জন্য রাখা কোটায় মুসলিম সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করে অন্যদের জন্য কোটা কমিয়ে ফেলেছে।
ফ্যাক্ট: ঘটনাটি ১৯৬২ সালের। ওই সময় কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার ধর্মের ভিত্তিতে নয়, বরং নাগানা গৌড়া কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু অংশকে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শ্রেণিবিন্যাস এবং এটি সংরক্ষণের মানদণ্ড নির্ধারণের জন্য ওই সময় একটি প্যানেলও গঠন করা হয়। এ ছাড়া কংগ্রেসেরও অনেক আগে মহীশূরের মহারাজা ১৯২১ সালে মুসলিম কোটা সংরক্ষণ নীতি প্রবর্তন করেন। পরে ১৯৯৪ সালে এইচডি দেবগৌড়ার নেতৃত্বাধীন জনতা দল (ধর্মনিরপেক্ষ) সরকার কর্ণাটকের পুরো মুসলিম সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকার অধীনে নিয়ে আসে এবং তাদের জন্য ৪ শতাংশ উপকোটা তৈরি করে। জনতা দল (ধর্মনিরপেক্ষ) বর্তমানে বিজেপির মিত্র।
প্রসঙ্গত, কর্ণাটক হলো ভারতের ১৪টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে মুসলিম সম্প্রদায়কে শতভাগ সামাজিক ও অর্থনৈতিক অনগ্রসরতার ভিত্তিতে ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া গুজরাট, যেখানে মোদি ১২ বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, সেখানেও ওবিসি কোটায় মুসলিম সম্প্রদায়ের নাম রয়েছে। দুই বছর আগে বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোদি গর্ব করে বলেছিলেন যে, তাঁর রাজ্যে প্রায় ৭০টি মুসলিম পরিবার এই সুবিধা পেয়ে উন্নতি করেছে।
২৪ এপ্রিল, সুরগুজা (ছত্রিশগড়)
মোদি দাবি করেন, কংগ্রেস প্রথম অন্ধ্র প্রদেশে ধর্মের ভিত্তিতে কোটা বাস্তবায়ন এবং সারা দেশে একই কোটা প্রয়োগ করার পরিকল্পনা করেছিল। তারা ধর্মের ভিত্তিতে ১৫ শতাংশ কোটার প্রস্তাব করেছিল। মোদি আরও দাবি করেন, ‘কংগ্রেস আরও প্রস্তাব করেছিল, কিছু মানুষকে তফসিলি সম্প্রদায় এবং অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের জন্য রাখা কোটা কমিয়ে ধর্মের ভিত্তিতে কোটার সুযোগ দেওয়া উচিত। কংগ্রেস ২০০৯ সালে ইশতেহারে এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিল। ২০১৪ সালের ইশতেহারেও তারা স্পষ্টভাবে এটি বাস্তবায়নের কথা বলেছিল।
ফ্যাক্ট: অন্ধ্র প্রদেশের কংগ্রেস সরকার ২০০৫ সালে একটি আইন পাস করে, যেখানে মুসলিমদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। হাইকোর্ট আইনটিকে অসাংবিধানিক বলে বাতিল করে দেয়। ওই সময় হাইকোর্টের যুক্তি ছিল, ধর্ম ‘সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া নাগরিকদের শ্রেণি নির্ধারণের একমাত্র ভিত্তি’ হতে পারে না। ২০০৯ সালের ইশতেহারে কংগ্রেস সতর্কতা অবলম্বন করে বলেছিল, তারা সংখ্যালঘুদের জন্য ‘তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অনগ্রসরতার ভিত্তিতে’ কোটা রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
একই বক্তৃতায় মোদি পুনরায় দাবি করেছিলেন, কংগ্রেস কর্ণাটকে ধর্মের ভিত্তিতে কোটা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু যখন বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলো, আমরা কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিয়েছিলাম। যা সংবিধান এবং বাবাসাহেব আম্বেদকরের আদর্শের বিরুদ্ধে ছিল এবং দলিত ও আদিবাসীদের তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।
ফ্যাক্ট: ২০২৩ সালের মার্চে, কর্ণাটকের বিজেপি সরকার মুসলিম অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য ৪ শতাংশ উপকোটা বাতিল করে। কিন্তু দলিত ও আদিবাসীদের জন্য কোটা পুনর্বণ্টন করা হয়নি।
একইদিনে মোদি আরেকটি দাবি করে বলেন, ‘কংগ্রেস বলছে, তারা উত্তরাধিকার কর আরোপ করবে, এমনকি পিতামাতার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদের ওপরও কর আরোপ করবে। আপনার জমানো সম্পদ আপনার সন্তানেরা পাবে না এবং কংগ্রেস আপনার কাছ থেকে তা কেড়ে নেবে।’
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে উত্তরাধিকার করের কোনো উল্লেখ নেই।
২৪ এপ্রিল, বেতুল (মধ্য প্রদেশ)
মোদি দাবি করেছেন, কংগ্রেস তফসিলি সম্প্রদায়, ওবিসি গোষ্ঠীগুলোর কোটা কেড়ে নিতে চায় এবং দলটি নিজেদের ভোট ব্যাংক শক্তিশালী করতে ব্যক্তিগত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার এবং পুনরায় বিতরণ করার ষড়যন্ত্র করছে।
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে ধর্মভিত্তিক কোটা বা সম্পদের পুনর্বণ্টনের কোনো উল্লেখ নেই।
২৫ এপ্রিল, আগ্রা
মোদি দাবি করেছেন, কংগ্রেস ধর্মের ভিত্তিতে কোটা দেওয়ার জন্য ওবিসি বা অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত ২৭ শতাংশ কোটার একটি অংশ ‘চুরি’ করার পরিকল্পনা করেছে।
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে ধর্মভিত্তিক কোটা সংরক্ষণের কোনো উল্লেখ নেই।
২৫ এপ্রিল, আওনলা (উত্তর প্রদেশ)
কংগ্রেসের জরিপ এবং নাগরিকদের সম্পত্তি কেড়ে নেওয়ার মিথ্যা দাবির পর মোদি নতুন করে আবার দাবি করেন, ‘শুধু অর্থনৈতিক সমীক্ষা নয়, কংগ্রেসের লক্ষ্য সব প্রতিষ্ঠান ও অফিস জরিপ করা। যদি কোথাও অনগ্রসর শ্রেণি বা দলিত পরিবারের দুজন সদস্যকে চাকরিরত পাওয়া যায়, তাহলে কংগ্রেস একজনের চাকরি কেড়ে নেবে এবং যাদের তারা মনে করে “দেশের সম্পদের প্রথম দাবিদার” তাদের দেবে।’ স্পষ্টত ‘দেশের সম্পদের প্রথম দাবিদার’ বলতে মোদি ভারতের মুসলিমদের বুঝিয়েছেন।
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে বা দলটির নেতাদের বক্তৃতায় অনগ্রসর শ্রেণি বা দলিত পরিবারের সদস্যদের চাকরি কেড়ে নেওয়ার কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি। দলটির ইশতেহারে বলা হয়েছে, ‘কংগ্রেস জাতি ও উপজাতি এবং তাদের আর্থসামাজিক অবস্থা বোঝার জন্য দেশব্যাপী একটি আর্থসামাজিক এবং বর্ণ শুমারি করবে। এই জরিপের তথ্যের ভিত্তিতে ইতিবাচক পদক্ষেপের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

ভারতে চলছে ১৮ তম লোকসভা নির্বাচন। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে দুই ধাপের ভোট গ্রহণ। সাত দফায় ভোট গ্রহণের তৃতীয় ধাপে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ৭ মে। ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো জয়ের আশা করছে। ভোটার টানতে ফের উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রচারকেই হাতিয়ার করেছেন নরেন্দ্র মোদি। ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ এই মন্ত্র ভুলে নির্বাচনের মাঠে মুসলিমদেরই প্রধান প্রতিপক্ষ সাব্যস্ত করেছেন তিনি। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসকে ঘায়েল করতে এই ‘মুসলিম বিদ্বেষের’ অস্ত্রেই ভরসা করছেন সাবেক আরএসএস কর্মী নরেন্দ্র মোদি। বারবার মুসলিমদের ‘অনুপ্রবেশকারী’র তকমা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এই করতে গিয়ে তিনি তথ্যের সত্যাসত্যের ধার ধারছেন না।
এসব কারণে নির্বাচন কমিশনে তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ দিয়েছে কংগ্রেসসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল। নির্বাচন কমিশন অবশ্য বরাবরের মতো নীরব। ফলে নরেন্দ্র মোদিকে রুখতে পারে এমন কোনো শক্তি এই মুহূর্তে ভারতে নেই। পাঁচ দিনের নির্বাচনী প্রচারণায় একদিন বিরতি দিয়ে সমানে ছড়িয়ে যাচ্ছেন মিথ্যা তথ্য, ঘৃণা আর হিংসা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম স্ক্রল গত ২১ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল নির্বাচনী প্রচারণায় নরেন্দ্র মোদির এমন বক্তব্যের ফ্যাক্টচেক নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো।
২১ এপ্রিল, বাঁশওয়াড়া (রাজস্থান)
রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় মোদি দাবি করেন, কংগ্রেসের ইশতেহারে বলা হয়েছে, বিবাহিত হিন্দু নারীদের মঙ্গলসূত্রসহ ব্যক্তিগত সম্পদ জরিপ করে বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং এগুলো পুনঃবণ্টন করা হবে। মোদি বলেন, ‘আমার মা ও বোনদের সোনার গয়না শুধু একটি শোপিস নয়, এটি তাঁদের আত্মসম্মানের সঙ্গে জড়িত। তাঁদের মঙ্গলসূত্র তাঁদের জীবনের সঙ্গে জড়িত। আর আপনি ইশতেহারে এটি কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন?’
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে ব্যক্তিগত সম্পদ এমনকি বিবাহিত নারীদের মঙ্গলসূত্র বাজেয়াপ্ত করার ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই।
নরেন্দ্র মোদি আরও দাবি করেন, বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে কংগ্রেস সরকার ‘দেশের সম্পদের প্রথম অধিকার মুসলমানদের’ এমন ঘোষণা দিয়েছিল।
ফ্যাক্ট: এটি ২০০৬ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন মনমোহন সিংয়ের দেওয়া একটি বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন। মনমোহন সিং তাঁর বক্তব্যে শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘু নয়, তফসিলি সম্প্রদায়সহ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি, নারী এবং শিশুসহ ভারতের সব সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণির উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন।
একই দিনে ভারতীয় মুসলমানদের ইঙ্গিত করে মোদি দাবি করেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ব্যক্তিগত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে ‘অনুপ্রবেশকারী’ এবং ‘যাদের একাধিক সন্তান’ আছে তাদের মধ্যে বিতরণ করে দেবে।
ফ্যাক্ট: ভারতীয় মুসলমানেরা ‘অনুপ্রবেশকারী’, এই দাবির কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। খোদ মোদি সরকার বারবার সংসদকে বলেছে, তাদের কাছে অবৈধ অভিবাসীদের কোনো তথ্য নেই। ভারতীয় মুসলমানদের প্রজনন হার হিন্দুদের তুলনায় বেশি, তবে অন্য সব সম্প্রদায়ের তুলনায় এ হার দ্রুত কমছে। এ ছাড়া প্রজননের সঙ্গে অর্থনৈতিক অবস্থা জড়িত, ধর্ম নয়। ভারতের অধিক উন্নত অঞ্চল তামিলনাড়ুতে মুসলমানদের প্রজনন হার অপেক্ষাকৃত দরিদ্র অঞ্চল বিহারের হিন্দুদের তুলনায় কম।
২২ এপ্রিল, আলিগড়
এদিনও কংগ্রেসের ইশতেহারে ব্যক্তিগত সম্পদ জরিপ ও বাজেয়াপ্ত করার হুমকি সম্পর্কিত দাবির পুনরাবৃত্তি করেন মোদি। এদিন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে ‘কংগ্রেসের শেহজাদা’ উল্লেখ করে মোদি বলেন, ‘তিনি (রাহুল গান্ধী) বলেছেন, দল ক্ষমতায় এলে আপনার আয়, সম্পদ, বাড়ি সম্পর্কে জানতে একটি সমীক্ষা চালানো হবে...এরপর সেসব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত এবং পুনর্বণ্টন করা হবে, তাদের ইশতেহারে এটাই বলা হয়েছে।’
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে এমন কিছুর উল্লেখই নেই। গত ৬ এপ্রিল নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশের সময় রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, ‘আমরা দেশের “এক্স–রে” করব। অনগ্রসর শ্রেণি, দলিত, আদিবাসী, সাধারণ দরিদ্র মানুষ এবং সংখ্যালঘুরা জানতে পারবে, দেশে তাদের অংশ কী।’ কংগ্রেস ব্যক্তিগত সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং পুনর্বণ্টন করবে এমন কিছু তিনি বলেননি।
নরেন্দ্র মোদির দাবি: কারও যদি গ্রামে পৈতৃক বাড়ি থাকে এবং একই ব্যক্তি তাঁর সন্তানদের জন্য শহরে ছোট ফ্ল্যাট কিনে থাকেন, তবে কংগ্রেস কোনো একটির মালিকানা বাজেয়াপ্ত করবে। মোদি বলেন, ‘এটা কী মাওবাদী চিন্তা নয়? কংগ্রেস আপনার কষ্টার্জিত সম্পদ ছিনিয়ে নিতে চায়, নারীদের সম্পত্তি লুট করতে চায়।’
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে সম্পত্তি পুনর্বণ্টনের একমাত্র উল্লেখটি হলো, ক্ষমতায় এলে তারা এর জন্য একটি যথাযথ কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগ নেবে। যার মাধ্যমে সরকারি জমি এবং সর্বোচ্চ ভূসম্পত্তির মালিকানা সম্পর্কিত আইনের (ভূমি সিলিং আইন) অধীনে উদ্বৃত্ত জমি দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টনের বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে। কংগ্রেসের এই উদ্যোগ নতুন কিছু নয়। কারণ, এরই মধ্যে ভারতের ২১টি রাজ্যে ভূমি সিলিং আইন রয়েছে, যা ১৯৬০–এর দশকে দেশটিতে জমির মালিকানা বৈষম্য দূর করার জন্য প্রণয়ন করা হয়।
২৩ এপ্রিল, টঙ্ক–সাওয়াই মধুপুর (রাজস্থান)
নরেন্দ্র মোদির দাবি: কংগ্রেসের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার পর রাহুল গান্ধীর বক্তৃতায় দেশকে ‘এক্স–রে’ করার প্রসঙ্গ টেনে মোদি বলেন, ‘এর মানে হলো, আপনার বাড়িতে যদি এমন একটি গোলা থাকে, যেখানে আপনি খেতের শস্য সংরক্ষণ করেন সেটিরও “এক্স–রে” করা হবে। আপনার সমস্ত সম্পত্তি, যা আপনার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি, তা বাজেয়াপ্ত করে বিতরণ করে দেওয়া হবে। যদি আপনার দুটি বাড়ি থাকে এবং তাদের এক্স–রে–তে ধরা পড়ে, তাহলে একটি বাড়ি সরকার দখল করবে। এটা কি আপনি মেনে নেবেন?’
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে বা দলের নেতাদের বক্তৃতায় ‘সরকারে গেলে জনগণের বাড়ি দখল এবং পুনর্বণ্টনের উদ্যোগ’ বিষয়ে কোনো কথা বলা হয়নি।
একই বক্তৃতায় মোদি আবারও দাবি করেন, দেশের সম্পদের ওপর মুসলমানদের প্রথম অধিকার রয়েছে, এটি মনমোহন জি বলেছেন।
ফ্যাক্ট: মনমোহন সিংয়ের বক্তৃতার লিখিত রূপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আর্কাইভে পাওয়া যায়। সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মনমোহন সিংয়ের বক্তব্য স্পষ্ট করে বিবৃতিও দেওয়া হয়। মনমোহন সিংয়ের বক্তব্যে ‘সম্পদের প্রথম অধিকার’–এর উল্লেখটি শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘু নয়, তফসিলি সম্প্রদায়সহ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি, নারী এবং শিশুসহ ভারতের সব সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণির জন্যই বলা হয়। মনমোহন সিং এই বক্তব্য দিয়েছিলেন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজিন্দর সাচারের নেতৃত্বে একটি কমিটি ভারতে মুসলিমরা শিক্ষা, আয় এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অন্যান্য সম্প্রদায়ের চেয়ে কীভাবে পিছিয়ে রয়েছে সে সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার এক মাস পর।
২৪ এপ্রিল, সাগর (মধ্য প্রদেশ)
এদিন মোদি দাবি করেন, কর্ণাটকে কংগ্রেস ধর্মের ভিত্তিতে অবৈধভাবে ওবিসি কোটায় বা অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের জন্য রাখা কোটায় মুসলিম সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করে অন্যদের জন্য কোটা কমিয়ে ফেলেছে।
ফ্যাক্ট: ঘটনাটি ১৯৬২ সালের। ওই সময় কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার ধর্মের ভিত্তিতে নয়, বরং নাগানা গৌড়া কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু অংশকে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শ্রেণিবিন্যাস এবং এটি সংরক্ষণের মানদণ্ড নির্ধারণের জন্য ওই সময় একটি প্যানেলও গঠন করা হয়। এ ছাড়া কংগ্রেসেরও অনেক আগে মহীশূরের মহারাজা ১৯২১ সালে মুসলিম কোটা সংরক্ষণ নীতি প্রবর্তন করেন। পরে ১৯৯৪ সালে এইচডি দেবগৌড়ার নেতৃত্বাধীন জনতা দল (ধর্মনিরপেক্ষ) সরকার কর্ণাটকের পুরো মুসলিম সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকার অধীনে নিয়ে আসে এবং তাদের জন্য ৪ শতাংশ উপকোটা তৈরি করে। জনতা দল (ধর্মনিরপেক্ষ) বর্তমানে বিজেপির মিত্র।
প্রসঙ্গত, কর্ণাটক হলো ভারতের ১৪টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে মুসলিম সম্প্রদায়কে শতভাগ সামাজিক ও অর্থনৈতিক অনগ্রসরতার ভিত্তিতে ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া গুজরাট, যেখানে মোদি ১২ বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, সেখানেও ওবিসি কোটায় মুসলিম সম্প্রদায়ের নাম রয়েছে। দুই বছর আগে বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোদি গর্ব করে বলেছিলেন যে, তাঁর রাজ্যে প্রায় ৭০টি মুসলিম পরিবার এই সুবিধা পেয়ে উন্নতি করেছে।
২৪ এপ্রিল, সুরগুজা (ছত্রিশগড়)
মোদি দাবি করেন, কংগ্রেস প্রথম অন্ধ্র প্রদেশে ধর্মের ভিত্তিতে কোটা বাস্তবায়ন এবং সারা দেশে একই কোটা প্রয়োগ করার পরিকল্পনা করেছিল। তারা ধর্মের ভিত্তিতে ১৫ শতাংশ কোটার প্রস্তাব করেছিল। মোদি আরও দাবি করেন, ‘কংগ্রেস আরও প্রস্তাব করেছিল, কিছু মানুষকে তফসিলি সম্প্রদায় এবং অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের জন্য রাখা কোটা কমিয়ে ধর্মের ভিত্তিতে কোটার সুযোগ দেওয়া উচিত। কংগ্রেস ২০০৯ সালে ইশতেহারে এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিল। ২০১৪ সালের ইশতেহারেও তারা স্পষ্টভাবে এটি বাস্তবায়নের কথা বলেছিল।
ফ্যাক্ট: অন্ধ্র প্রদেশের কংগ্রেস সরকার ২০০৫ সালে একটি আইন পাস করে, যেখানে মুসলিমদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। হাইকোর্ট আইনটিকে অসাংবিধানিক বলে বাতিল করে দেয়। ওই সময় হাইকোর্টের যুক্তি ছিল, ধর্ম ‘সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া নাগরিকদের শ্রেণি নির্ধারণের একমাত্র ভিত্তি’ হতে পারে না। ২০০৯ সালের ইশতেহারে কংগ্রেস সতর্কতা অবলম্বন করে বলেছিল, তারা সংখ্যালঘুদের জন্য ‘তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অনগ্রসরতার ভিত্তিতে’ কোটা রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
একই বক্তৃতায় মোদি পুনরায় দাবি করেছিলেন, কংগ্রেস কর্ণাটকে ধর্মের ভিত্তিতে কোটা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু যখন বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলো, আমরা কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিয়েছিলাম। যা সংবিধান এবং বাবাসাহেব আম্বেদকরের আদর্শের বিরুদ্ধে ছিল এবং দলিত ও আদিবাসীদের তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।
ফ্যাক্ট: ২০২৩ সালের মার্চে, কর্ণাটকের বিজেপি সরকার মুসলিম অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য ৪ শতাংশ উপকোটা বাতিল করে। কিন্তু দলিত ও আদিবাসীদের জন্য কোটা পুনর্বণ্টন করা হয়নি।
একইদিনে মোদি আরেকটি দাবি করে বলেন, ‘কংগ্রেস বলছে, তারা উত্তরাধিকার কর আরোপ করবে, এমনকি পিতামাতার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদের ওপরও কর আরোপ করবে। আপনার জমানো সম্পদ আপনার সন্তানেরা পাবে না এবং কংগ্রেস আপনার কাছ থেকে তা কেড়ে নেবে।’
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে উত্তরাধিকার করের কোনো উল্লেখ নেই।
২৪ এপ্রিল, বেতুল (মধ্য প্রদেশ)
মোদি দাবি করেছেন, কংগ্রেস তফসিলি সম্প্রদায়, ওবিসি গোষ্ঠীগুলোর কোটা কেড়ে নিতে চায় এবং দলটি নিজেদের ভোট ব্যাংক শক্তিশালী করতে ব্যক্তিগত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার এবং পুনরায় বিতরণ করার ষড়যন্ত্র করছে।
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে ধর্মভিত্তিক কোটা বা সম্পদের পুনর্বণ্টনের কোনো উল্লেখ নেই।
২৫ এপ্রিল, আগ্রা
মোদি দাবি করেছেন, কংগ্রেস ধর্মের ভিত্তিতে কোটা দেওয়ার জন্য ওবিসি বা অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত ২৭ শতাংশ কোটার একটি অংশ ‘চুরি’ করার পরিকল্পনা করেছে।
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে ধর্মভিত্তিক কোটা সংরক্ষণের কোনো উল্লেখ নেই।
২৫ এপ্রিল, আওনলা (উত্তর প্রদেশ)
কংগ্রেসের জরিপ এবং নাগরিকদের সম্পত্তি কেড়ে নেওয়ার মিথ্যা দাবির পর মোদি নতুন করে আবার দাবি করেন, ‘শুধু অর্থনৈতিক সমীক্ষা নয়, কংগ্রেসের লক্ষ্য সব প্রতিষ্ঠান ও অফিস জরিপ করা। যদি কোথাও অনগ্রসর শ্রেণি বা দলিত পরিবারের দুজন সদস্যকে চাকরিরত পাওয়া যায়, তাহলে কংগ্রেস একজনের চাকরি কেড়ে নেবে এবং যাদের তারা মনে করে “দেশের সম্পদের প্রথম দাবিদার” তাদের দেবে।’ স্পষ্টত ‘দেশের সম্পদের প্রথম দাবিদার’ বলতে মোদি ভারতের মুসলিমদের বুঝিয়েছেন।
ফ্যাক্ট: কংগ্রেসের ইশতেহারে বা দলটির নেতাদের বক্তৃতায় অনগ্রসর শ্রেণি বা দলিত পরিবারের সদস্যদের চাকরি কেড়ে নেওয়ার কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি। দলটির ইশতেহারে বলা হয়েছে, ‘কংগ্রেস জাতি ও উপজাতি এবং তাদের আর্থসামাজিক অবস্থা বোঝার জন্য দেশব্যাপী একটি আর্থসামাজিক এবং বর্ণ শুমারি করবে। এই জরিপের তথ্যের ভিত্তিতে ইতিবাচক পদক্ষেপের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৬ ঘণ্টা আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

ভারতে চলছে ১৮ তম লোকসভা নির্বাচন। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে দুই ধাপের ভোটগ্রহণ। সাত দফায় ভোট গ্রহণের তৃতীয় ধাপে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ৭ মে। ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো জয়ের আশা করছে। ভোটার টানতে ফের উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রচারকেই হাতিয়ার করেছেন নরেন্দ্র মোদী।
২৮ এপ্রিল ২০২৪
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

ভারতে চলছে ১৮ তম লোকসভা নির্বাচন। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে দুই ধাপের ভোটগ্রহণ। সাত দফায় ভোট গ্রহণের তৃতীয় ধাপে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ৭ মে। ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো জয়ের আশা করছে। ভোটার টানতে ফের উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রচারকেই হাতিয়ার করেছেন নরেন্দ্র মোদী।
২৮ এপ্রিল ২০২৪
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৬ ঘণ্টা আগে
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫বাসস

গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গতকাল বুধবার সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৬ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে নানা পোস্ট ছড়ানো হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল এ দিনের সহিংস ঘটনার মনগড়া বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি সংগঠিত প্রোপাগান্ডা অভিযানের অংশ হিসেবে প্রভাবশালী আ. লীগপন্থীরা পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন একাধিক ছবি শেয়ার করেছেন, যা এদিনের সহিংসতার দৃশ্য বলে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এসএম জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন ব্যক্তি ছবি পোস্ট করে দাবি করেন, ‘ইউনূস গ্যাং’ এবং বিরোধীদলীয় কর্মীরা সাধারণ মানুষকে হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করছে।
একটি ছবিতে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন এক আহত কিশোরকে বহন করছে, পেছনে আগুন জ্বলছে এবং উত্তেজিত জনতা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। ছবিটি গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া সহিংসতার নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরা হয়। অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে-এই ছবিটি ২০২৪ সালের ১০ আগস্টের একটি ভিন্ন ঘটনার।
আরেকটি বহুল প্রচারিত পোস্টে দেখা যায়, জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়ছেন।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এসব পোস্টে ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পোস্টে তাঁরা উল্লেখ করেন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন এবং এনসিপি নেতা-কর্মীদের উসকানিতে এই সহিংসতা শুরু হয়। এতে বলা হয়, ‘বাস্তবতা হলো, ছবিটি ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপি সমাবেশের সময়ের, যেখানে ডিবি কর্মকর্তা কনককে জনতার দিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।’
জাকির হোসেন আরেকটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। তিনিও দাবি করেন, এটি গোপালগঞ্জের আজকের সংঘর্ষের ফলাফল। তবে প্রেস উইং বলেছে, ‘তবে এই ছবিটিও ভিন্ন ঘটনার। ছবিটি ২০২৩ সালের ২০ মার্চ এক সম্পূর্ণ আলাদা ঘটনার সময় তোলা হয়েছিল।’
একই ভুয়া প্রচারণার অংশ হিসেবে একটি শিশুর ছবি ছড়ানো হয়—যেখানে তাকে লাঠি হাতে দেখা যায়। দাবি করা হয়, ছবিটি ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে তোলা এবং ওই শিশু নাকি সহিংসতায় অংশ নেয়। ছবিটি এই মিথ্যা বার্তা ছড়াতে ব্যবহার করা হয় যে, রাজনৈতিক সহিংসতায় শিশুদের পর্যন্ত জড়ানো হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ছবির একটি ডিজিটালি সম্পাদিত (সম্ভবত এআই-নির্মিত) সংস্করণ শেয়ার করেন নিঝুম মজুমদার, যিনি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ একজন অনলাইন প্রোপাগান্ডিস্ট হিসেবে পরিচিত বলে প্রেস উইং দাবি করেছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে এই বিষয়ে বলা হয়, ‘প্রকৃতপক্ষে, শিশুর এই ছবিটি গোপালগঞ্জে তোলা হয়নি, বরং গাজীপুরের সফিপুর এলাকায় ধারণ করা একটি ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট। মূল ভিডিওটি ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিল।’
এসব বিভ্রান্তিকর ছবির পাশাপাশি, আওয়ামী লীগপন্থী অ্যাকাউন্টগুলো ভিত্তিহীনভাবে দাবি করে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নাকি বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এসব মিথ্যা প্রচারণা জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়। প্রেস উইংয়ের মতে এসব ভুয়া প্রচারণা ও যাচাইকৃত সূত্রভিত্তিক তথ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে।
আজকের সহিংসতা শুরু হয় যখন গোপালগঞ্জ শহরে নির্ধারিত সমাবেশ শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের বহর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা আক্রমণ করে। এই আক্রমণ দ্রুত বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। পুলিশের গাড়ির পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) একটি গাড়িও আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, ১৬ জুলাই রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কঠোর কারফিউ জারি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয় ‘মাঠের বাস্তব ঘটনার বিপরীতে, আওয়ামী লীগপন্থী সামাজিক মাধ্যম চক্র ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর, প্রাসঙ্গিকতা-বর্জিত ও মনগড়া ছবি ছড়িয়ে টাইমলাইন ভরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে।’

গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গতকাল বুধবার সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৬ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে নানা পোস্ট ছড়ানো হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল এ দিনের সহিংস ঘটনার মনগড়া বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি সংগঠিত প্রোপাগান্ডা অভিযানের অংশ হিসেবে প্রভাবশালী আ. লীগপন্থীরা পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন একাধিক ছবি শেয়ার করেছেন, যা এদিনের সহিংসতার দৃশ্য বলে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এসএম জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন ব্যক্তি ছবি পোস্ট করে দাবি করেন, ‘ইউনূস গ্যাং’ এবং বিরোধীদলীয় কর্মীরা সাধারণ মানুষকে হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করছে।
একটি ছবিতে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন এক আহত কিশোরকে বহন করছে, পেছনে আগুন জ্বলছে এবং উত্তেজিত জনতা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। ছবিটি গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া সহিংসতার নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরা হয়। অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে-এই ছবিটি ২০২৪ সালের ১০ আগস্টের একটি ভিন্ন ঘটনার।
আরেকটি বহুল প্রচারিত পোস্টে দেখা যায়, জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়ছেন।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এসব পোস্টে ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পোস্টে তাঁরা উল্লেখ করেন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন এবং এনসিপি নেতা-কর্মীদের উসকানিতে এই সহিংসতা শুরু হয়। এতে বলা হয়, ‘বাস্তবতা হলো, ছবিটি ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপি সমাবেশের সময়ের, যেখানে ডিবি কর্মকর্তা কনককে জনতার দিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।’
জাকির হোসেন আরেকটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। তিনিও দাবি করেন, এটি গোপালগঞ্জের আজকের সংঘর্ষের ফলাফল। তবে প্রেস উইং বলেছে, ‘তবে এই ছবিটিও ভিন্ন ঘটনার। ছবিটি ২০২৩ সালের ২০ মার্চ এক সম্পূর্ণ আলাদা ঘটনার সময় তোলা হয়েছিল।’
একই ভুয়া প্রচারণার অংশ হিসেবে একটি শিশুর ছবি ছড়ানো হয়—যেখানে তাকে লাঠি হাতে দেখা যায়। দাবি করা হয়, ছবিটি ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে তোলা এবং ওই শিশু নাকি সহিংসতায় অংশ নেয়। ছবিটি এই মিথ্যা বার্তা ছড়াতে ব্যবহার করা হয় যে, রাজনৈতিক সহিংসতায় শিশুদের পর্যন্ত জড়ানো হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ছবির একটি ডিজিটালি সম্পাদিত (সম্ভবত এআই-নির্মিত) সংস্করণ শেয়ার করেন নিঝুম মজুমদার, যিনি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ একজন অনলাইন প্রোপাগান্ডিস্ট হিসেবে পরিচিত বলে প্রেস উইং দাবি করেছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে এই বিষয়ে বলা হয়, ‘প্রকৃতপক্ষে, শিশুর এই ছবিটি গোপালগঞ্জে তোলা হয়নি, বরং গাজীপুরের সফিপুর এলাকায় ধারণ করা একটি ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট। মূল ভিডিওটি ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিল।’
এসব বিভ্রান্তিকর ছবির পাশাপাশি, আওয়ামী লীগপন্থী অ্যাকাউন্টগুলো ভিত্তিহীনভাবে দাবি করে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নাকি বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এসব মিথ্যা প্রচারণা জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়। প্রেস উইংয়ের মতে এসব ভুয়া প্রচারণা ও যাচাইকৃত সূত্রভিত্তিক তথ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে।
আজকের সহিংসতা শুরু হয় যখন গোপালগঞ্জ শহরে নির্ধারিত সমাবেশ শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের বহর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা আক্রমণ করে। এই আক্রমণ দ্রুত বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। পুলিশের গাড়ির পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) একটি গাড়িও আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, ১৬ জুলাই রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কঠোর কারফিউ জারি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয় ‘মাঠের বাস্তব ঘটনার বিপরীতে, আওয়ামী লীগপন্থী সামাজিক মাধ্যম চক্র ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর, প্রাসঙ্গিকতা-বর্জিত ও মনগড়া ছবি ছড়িয়ে টাইমলাইন ভরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে।’

ভারতে চলছে ১৮ তম লোকসভা নির্বাচন। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে দুই ধাপের ভোটগ্রহণ। সাত দফায় ভোট গ্রহণের তৃতীয় ধাপে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ৭ মে। ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো জয়ের আশা করছে। ভোটার টানতে ফের উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রচারকেই হাতিয়ার করেছেন নরেন্দ্র মোদী।
২৮ এপ্রিল ২০২৪
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৬ ঘণ্টা আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেক ইউনিট সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গতকাল রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং জানিয়েছে, এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে এবং ইওনসহ ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন বলে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সোহাগের বাবার নাম মো. আয়ুব আলী এবং মায়ের নাম আলেয়া বেগম। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী লাকি বেগম, বোন ফাতেমা এবং একমাত্র ছেলে সোহানকে রেখে গেছেন।
গত ৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর নিথর দেহেও বোল্ডার ছুড়ে মারা হয়। নৃশংস এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার জানাজা শেষে সোহাগকে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ গ্রাম বন্দরগাছিয়ায় তাঁর মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।
ভারতের যেসব সংবাদমাধ্যম সোহাগকে হিন্দু বলে উল্লেখ করেছে, তারা তাদের প্রতিবেদনে তার ধর্ম বা পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য উপস্থাপন করেনি। বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম নিয়মিত ভিত্তিহীন ও ভুল তথ্য প্রচার করে আসছে।

রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেক ইউনিট সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গতকাল রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং জানিয়েছে, এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে এবং ইওনসহ ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন বলে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সোহাগের বাবার নাম মো. আয়ুব আলী এবং মায়ের নাম আলেয়া বেগম। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী লাকি বেগম, বোন ফাতেমা এবং একমাত্র ছেলে সোহানকে রেখে গেছেন।
গত ৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর নিথর দেহেও বোল্ডার ছুড়ে মারা হয়। নৃশংস এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার জানাজা শেষে সোহাগকে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ গ্রাম বন্দরগাছিয়ায় তাঁর মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।
ভারতের যেসব সংবাদমাধ্যম সোহাগকে হিন্দু বলে উল্লেখ করেছে, তারা তাদের প্রতিবেদনে তার ধর্ম বা পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য উপস্থাপন করেনি। বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম নিয়মিত ভিত্তিহীন ও ভুল তথ্য প্রচার করে আসছে।

ভারতে চলছে ১৮ তম লোকসভা নির্বাচন। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে দুই ধাপের ভোটগ্রহণ। সাত দফায় ভোট গ্রহণের তৃতীয় ধাপে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ৭ মে। ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো জয়ের আশা করছে। ভোটার টানতে ফের উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রচারকেই হাতিয়ার করেছেন নরেন্দ্র মোদী।
২৮ এপ্রিল ২০২৪
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৬ ঘণ্টা আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫