Ajker Patrika

ডিসি পার্ক ঘিরে নানা পরিকল্পনা

মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৫৭
Thumbnail image

খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় সবুজ অরণ্যঘেরা অপরূপ সৌন্দর্যের পর্যটনকেন্দ্র ‘ডিসি পার্ক’। সম্প্রতি এই পার্ক ঘিরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নানা পরিকল্পনা। পর্যটকবান্ধব করতে ১৪০ একর বেদখল ভূমি উদ্ধার করে কটেজ, হর্টিকালচার পার্ক, পিকনিক স্পট নির্মাণ, আশ্রয়ণ প্রকল্প, সড়ক উন্নয়নসহ বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আর এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বদলে যাবে এলাকার মানুষের জীবনমান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ২১৪ নম্বর ডলু মৌজার অন্দরে প্রায় ৪০০ একর টিলার ভূমির মধ্যে দীর্ঘ তিন যুগের অধিক সময় বেদখলে থাকা ১৪০ দশমিক ২০ একর সরকারি ভূমি সম্প্রতি উদ্ধার করেছে জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। সবুজ অরণ্যঘেরা বনভূমি আর নীল জলরাশির আচ্ছাদিত অপরূপ সৌন্দর্যে নয়নাভিরাম এই ভূমিকে নামকরণ করা হয়েছে ‘ডিসি পার্ক’ নামে। সেখানে পর্যটকদের অবাধ আনাগোনা ও মনোরম পরিবেশ সৃষ্টিতে নেওয়া হয়েছে নানা পরিকল্পনা। ইতিমধ্যে সেখানে কলেজ, হর্টিকালচার পার্ক ও পিকনিক স্পট নির্মাণ, আশ্রয়ণ প্রকল্প স্থাপন, বিদ্যুৎ-সংযোগ ও সড়ক উন্নয়নে মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুত করে কর্মযজ্ঞ শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। এতে করে লোকালয়ে সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান, বদলে যাবে জনপদ।

উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন ও ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মোহন বলেন, দীর্ঘদিন বেদখলে থাকা সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারের মধ্য দিয়ে জেলা প্রশাসক যুগোপযোগী সিদ্ধান্তে নিয়েছেন। এতে এই অবহেলিত জনপদে উন্নয়নের আশার আলো দেখা যাচ্ছে।

মানিকছড়ি বন বিভাগ রেঞ্জ কর্মকর্তা উহ্লামং চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদকে অপরিবর্তিত রেখে বিশ্বমানের ইকো ট্যুরিজম জোন হিসেবে এই ডিসি পার্ককে গড়ে তোলা গেলে নিঃসন্দেহে এটি হবে পার্বত্য জেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র। এ বিষয়ে বন বিভাগ প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে বলেন, উপজেলার এই প্রত্যন্ত জনপদে বেদখলে থাকা বিশাল সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার ও এটিকে রাষ্ট্রীয় সম্পদে পরিণত করে পর্যটকবান্ধব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় উপজেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে নানামুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। প্রায় ৫ কিলোমিটার আধা পাকা সড়কে কার্পেটিং, বিদ্যুৎ-সংযোগ, কটেজ, হর্টিকালচার পার্ক ও পিকনিক স্পট নির্মাণে পরিকল্পনা অনুযায়ী মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুত করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র আরও বলেন, ডিসি পার্কের প্রবেশদ্বারে গেট, লেকের পাড়ে ইতিমধ্যে বিশ্রামাগার করা হয়েছে। আরও দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকার প্রাক্কলন অনুমোদনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এই পর্যটনশিল্পকে ঘিরে পরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হলে খাগড়াছড়ির পর্যটনশিল্পে এটি নতুন চমক হিসেবে ভ্রমণপিপাসু মানুষের নজর কাড়বে।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশবিদ ও সুরক্ষা খাগড়াছড়ির সাধারণ সম্পাদক মো. আবু দাউদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকৃতি ঘিরে পাহাড়ে পর্যটন শিল্পে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও অনেক সময় পাহাড় কেটে প্রকৃতির রুপ পাল্টে ফেলা হয়। যা মোটেও শুভকর নয়। তাই আমরা (সুরক্ষা খাগড়াছড়ি) চাই প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষত রেখে ডিসি পার্ককে বিশ্বমানের ইকোটোরিজান গড়তে তুলতে প্রশাসন এগিয়ে আসুক। এতে পরিবেশ যেমন বাচঁবে, তেমনটি জনপদে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ এই খাগড়াছড়ির সবুজ প্রকৃতি দেশকে বিশ্বদরবারে ফুটিয়ে তুলবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত