Ajker Patrika

দরিদ্রদের ঠকিয়ে শত কোটি টাকা লোপাট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১৭: ৩৯
দরিদ্রদের ঠকিয়ে শত কোটি টাকা লোপাট

নামে সমবায় সমিতি হলেও অবৈধভাবে চলত ব্যাকিং কার্যক্রম। ছিল চেক বই, এফডিআর, ডিপিএসসহ নানা রকমের সুবিধা। টাকা জমা রাখলেই বেশি লাভ দেওয়া হবে বলে চলত প্রচারণা। আর এতেই হুমড়ি খেয়ে পড়তেন নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। নানা অজুহাতে গ্রাহকদের জরিমানাও করত তারা। এভাবে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক এসব তথ্য জানান। মোজাম্মেল হক বলেন, গত সোমবার পল্লবী থেকে কর্ণফুলীর প্রকল্প পরিচালক শাকিল আহমেদসহ ১০ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানের মালিক জসিম উদ্দিনসহ মালিকপক্ষের সবাই পলাতক রয়েছেন।

মোজাম্মেল বলেন, এক লাখ টাকা জমা রাখলে প্রতি মাসে পাওয়া যাবে দুই হাজার টাকা—এমন লোভ দেখিয়ে অন্তত ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। মাল্টিপারপাসের মালিক জসিম অন্তত ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। রাজধানীসহ বহু জায়গায় তাঁর একাধিক সম্পত্তি রয়েছে। তাঁর প্রতিষ্ঠান কিছু হতদরিদ্র মানুষ যেমন রিকশাওয়ালা, পোশাককর্মীদের প্রলুব্ধ করেছে।

র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক আরও জানান, সমিতিটি মূলত নিম্নবিত্ত মানুষদের লক্ষ্য করত। এটি সমবায় অধিদপ্তর থেকে ২০০৬ সালে নিবন্ধন পায়। এরপর অধিদপ্তর থেকে অডিট হওয়ার পরও কেন এর অনিয়ম ধরা যায়নি সেটিও খতিয়ে দেখবে র‍্যাব।

পলাতক জসিম উদ্দিনের বর্তমান অবস্থান নিয়ে মোজাম্মেল বলেন, তাঁর সর্বশেষ অবস্থান গ্রিন রোডে ছিল। সুতরাং তিনি বাংলাদেশে আছেন এটা বলা যেতে পারে। এখন আমরা চেষ্টা করব তিনি যেন পালাতে না পারেন, সেটা নিশ্চিত করতে।

মোজাম্মেল বলেন, জসিম উদ্দিন একটি ভৌতিক চরিত্র। গ্রাহকদের কেউ এখন পর্যন্ত তাঁর দেখা পাননি। তিনি অত্যন্ত ধূর্ত, অধিকাংশ সময়েই সমিতির অফিসে আসেন না। তবে সমিতির ব্যাংকে টাকা জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা উত্তোলন করে অন্যত্র সরিয়ে নেন। পরে সেটা দিয়ে জমি ও ফ্ল্যাট কিনে টাকা লেয়ারিং করতেন।

মোজাম্মেল হক বলেন, যেই সমিতির মাধ্যমে তাঁর উত্থান, সেই সমিতির সভাপতি তিনি নিজেই, সহসভাপতি তাঁর শ্বশুর মোতালেব সরকার, সাধারণ সম্পাদক তাঁর প্রথম স্ত্রী লাকী আক্তার, কোষাধ্যক্ষ তাঁর শ্যালিকা শাহেলা নাজনীন, যুগ্ম সম্পাদক তাঁর নিকট আত্মীয় লাভলী আক্তার।

সমিতির প্রকল্প পরিচালক শাকিল আহমেদসহ (৩৩) গ্রেপ্তাররা হলেন চাঁন মিয়া (৩৮), এ কে আজাদ (৩৫), রেজাউল (২২), তাজুল ইসলাম (৩১), শাহাবুদ্দিন খান (২৮), আব্দুস ছাত্তার (৩৭), মাসুম বিল্লা (২৯), টিটু মিয়া (২৮) ও আতিকুর রহমান (২৮)। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ১৭টি মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব বই, ২৬টি চেক বই, ২টি ডিপোজিট বই, ৩টি সিল, ১২০টি ডিপিএস বই, একটি রেজিস্টার বই, একটি নোটবুক, একটি স্যালারি শিট, ৩০টি জীবন-বৃত্তান্ত, ৫টি ক্যালেন্ডার, ৮ পাতা ডিপিএসের মাসিক হিসাব বিবরণী, ৩টি পাসপোর্ট ও ৪ লাখ ২২ হাজার ৮০ টাকা জব্দ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তেলের ক্রেতা’ হিসেবে ভারতকে আর পাবে না রাশিয়া, জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

শাস্তি পাচ্ছেন বিটিআরসির মহাপরিচালকসহ ৩০ জনের বেশি কর্মকর্তা

বরখাস্ত সৈনিককে অস্ত্র দিয়েছেন বিএনপি নেতা, অডিও নিয়ে তোলপাড়

ভূমি অফিসের কাণ্ড: এসি ল্যান্ড দপ্তরের নামে দেড় কোটি টাকা আদায়

হোলি আর্টিজানের ঘটনায় ‘জঙ্গি সন্দেহে’ আটক ছিলেন অনিন্দ্য, রাজশাহীর সাবেক মেয়র লিটনের চাচাতো ভাই তিনি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত