Ajker Patrika

হাটভর্তি গরু, দেখা কম ক্রেতার

তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২২, ১৪: ২৭
Thumbnail image

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রংপুরের তারাগঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে কোরবানির পশুর হাট। চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে কৃষক ও খামারিরা হাটভর্তি গরু আনলেও ক্রেতার তেমন দেখা মিলছে না।

পশুপালনকারী ও খামারিরা জানান, বন্যার কারণে বাইরের ব্যবসায়ীরা আসেননি। তাই হাটে ক্রেতার অভাবে লোকসান করে অনেকে গরু বিক্রি করছেন। কেউ কেউ সারা দিন অপেক্ষার পর গরু বাড়িতে ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তারাগঞ্জে কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৯ হাজার। কিন্তু উপজেলায় ১ হাজার ২৩১ জন কৃষক ও খামারি প্রায় ১৫ হাজার ৩০০টি গরু প্রস্তুত করেছেন; যা চাহিদার তুলনায় বেশি।

রংপুরের মধ্যে সবচেয়ে বড় হাট তারাগঞ্জ পশুর হাট। বন্যার কারণে নীলফামারীসহ আশপাশের জেলা-উপজেলার মানুষও এখানে গরু বিক্রি করতে আসছেন। গতকাল শুক্রবার হাটে গিয়ে দেখা গেছে, চারদিকে গরু আর ছাগল। একেকজনের হাতে দু-তিনটি করে গরুর রশি। কিন্তু ক্রেতা কম। ফলে বিক্রেতারা খুব একটা দামাদামি করছেন না।

হাটের দক্ষিণে দুই হাতে চারটি আর ছেলের হাতে দুটি গরু দিয়ে ক্রেতার আশায় দাঁড়িয়েছিলেন বুড়িরহাট গ্রামের আকমাল হোসেন। তিনি জানান, এক বছর আগে ছয়টি গরু তিনি ৩ লাখ টাকায় কেনেন। খড়, ভুসি, ঘাস সবই কিনে খাইয়েছেন। অনেক আশা ছিল গরুগুলোতে তাঁর ১ লাখ টাকা লাভ থাকবে। কিন্তু ক্রেতারা এখন প্রতিটি গরুর দাম ৬০-৬৫ হাজার টাকা হাঁকছেন। এ দামে বিক্রি করলে অনেক লোকসান যাবে।

বাহাগিলি গ্রামের আব্দুর রহিম হাটে পাঁচ থেকে ছয় মণ ওজনের পাঁচটি গরু বিক্রি করতে এসেছিলেন। সারা দিন ক্রেতার আশায় বসে থেকে বিকেলের দিকে পাঁচ মণ ওজনের একটি গরু ৮২ হাজার টাকায় এবং ছয় মণ ওজনের একটি গরু ১ লাখ ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।

আব্দুর রহিম বলেন, ‘সাড়ে ৭ লাখ টাকায় বিক্রির আশায় গরু পাঁচটি হাটে তুলেছিলাম। ক্রেতা নেই। আবার খামারে গরুগুলো রেখে দিলেও লোকসান গুনতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে দুটি গরু ৩৫ হাজার টাকা লোকসানে বিক্রি করলাম।’

প্রতিবছর কোরবানিতে বিক্রির জন্য গরু পালন করেন শেরমস্ত গ্রামের সাইদার রহমান। গতকাল তিনি হাটে গরু নিয়ে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘গত বছর গরু পুষি করোনার জন্যে লোকসান খাছি। এবার গরু পুষি বন্যার জন্যে লোকসান খাওছি। বাইরের পাইকার না আইলে এটে কার গরু কায় নেয়। যত দিন ঢাকা, সিলেটের বড় পাইকার না আসবে, ততদিন গরুর দাম হবার নেয়।’

কথা হয় হাটের ইজারাদার স্বপন চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি জানান, হাটে যথেষ্ট গরু উঠেছে। কিন্তু বিক্রি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক কম। বন্যার কারণে বাইরের ব্যবসায়ীরা না আসায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মাত্র ৭০টি গরু কেনাবেচা হয়েছে। অথচ গত বছর এই সময়ে ৫০০ গরু কেনাবেচা হয়েছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফরহাদ নোমান বলেন, উপজেলায় কোরবানি উপলক্ষে চাহিদার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ পশু পালন হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির কারণে বাইরের ব্যবসায়ীরা আসতে না পারায় বাজারে দাম কমে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত