Ajker Patrika

গত নির্বাচনে ওসিকে পেটানোর দাবি নৌকার প্রার্থীর

বরিশাল প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ০১
গত নির্বাচনে ওসিকে পেটানোর দাবি নৌকার প্রার্থীর

বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমাতপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মৃধা মুহাম্মদ আক্তার-উজ-জামান মিলন গত নির্বাচনে থানায় ঢুকে তখনকার ওসি মাহবুবর রহমানকে মারধরের দাবি করেছেন এক পথসভায়। এ সময় তিনি গতবারের নির্বাচনে হারার পেছনে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে দায়ী করেন। মিলন সভায় জানান, বিএনপিও তাঁর সঙ্গে আছে।

গত বুধবার রাতে উপজেলার মীরগঞ্জ বাজারের রাজগুরু প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সভায় ভোটারদের সামনে নৌকার প্রার্থী এবং বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তার-উজ-জামান মিলনের এমন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। উল্লেখ্য, রহমতপুর ইউনিয়নে আগামীকাল ২৮ নভেম্বর ইভিএমে ভোট হবে।

পথসভায় নৌকার প্রার্থী মিলন বলেন, ‘আমি মুজিব কোট খুলে ওসির (তৎকালীন ওসি মাহবুবর রহমান) চেম্বারে গিয়ে তারে চেয়ারে বসিয়ে ৪ থেকে ৫টা কেনু দিছি ভাই। যে শালা তুই (ওসি) কীভাবে আমার ভোটটা ঘুরাও। সব কনস্টেবল আমার পক্ষে ছিল। তারা বলছে, স্যার আগেই বলছিলাম মিলন মেয়া কি জিনিস। সে থানায় আইয়া গুতাইবে। এহন গুতা খাইছেন?’

নৌকার প্রার্থীর এমন বক্তব্যে গোটা নির্বাচনী এলাকায় তোলপাড় ঘটছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা বলছেন, ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্যই নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ওসিকে মারধরের কথা এভাবে প্রচার করেছেন। এটি নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন বলে জানিয়েছে উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে রহমতপুরের নৌকার প্রার্থী মিলনকে বলেন, ‘এর আগের নির্বাচনে আমার ভোট রাশেদ খান মেনন চুরি করে নিয়ে গেছে। বাবুগঞ্জের তৎকালীন ওসি মাহাবুব, সে গৌরনদীর জামাই ছিল। আমার ভোট ঘোরানোর জন্য ওসি নির্দেশ দিয়েছে। সে (ওসি) গত নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী সরোয়ার মাহমুদের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন সেন্টারে আমার ভোট কেটেছে। সেন্টারে সেন্টারে গুলি করেছে।’

রহমতপুরে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীন মিয়া বলেন, নৌকার প্রার্থী ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন যেন ভোটাররা নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে না যান। তিনি শুধু ওসিকে মারধরের বক্তব্য দিয়েছেন এমন নয়, অন্যান্য উপজেলার চেয়ারম্যান, বহিরাগতদের এনে জড়ো করেছেন। সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নষ্ট করতেই তার এ চেষ্টা। ওই ভিডিও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে পাঠিয়েছি।

তবে নৌকার প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিলন সাংবাদিকদের জানান, গত নির্বাচনের সময় বাবুগঞ্জের তৎকালীন ওসি মাহাবুব তার তিনটি কেন্দ্রে গুলি করেছে। সেই তিনটি কেন্দ্রে তিনি বিজয়ী হতেন। তিনি বলেন, বক্তব্য আর বাস্তবতা এক না। থানার ওসিকে মারধরের ঘটনা সত্য নয়। তবে নির্বাচনে পক্ষপাতিত্ব নিয়ে তার কথা-কাটাকাটি হয়েছিল।

বাবুগঞ্জ থানার বর্তমান ওসি মাহাবুবুর রহমান বলেন, গতবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী মিলন থানায় ঢুকে ওসিকে মারধর করেছেন এমন বক্তব্য শুনেছেন। তৎকালীন বাবুগঞ্জ থানার ওসি মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে তর্ক হয়েছিল।

ওসি আরও বলেন নৌকার প্রার্থী মিলন বেফাঁস কথা বলেন। নিজের ক্ষমতা জাহির করার জন্যই এমনটা করছেন। তারা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন।’

বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ওসিকে মারধর করার বক্তব্য নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন। তবে এটি পুলিশের বিষয়। কোনো প্রার্থী অভিযোগ করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত