Ajker Patrika

‘বিপাকে’ সিডিএর কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২২, ১২: ২০
‘বিপাকে’ সিডিএর কর্মকর্তারা

কোর্ট হিলে ‘অবৈধভাবে’ একের পর এক ভবন তুলেছে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতি। গত ৪০ বছরে পাঁচটি ভবন তোলা হয়েছে। এখন তুলতে চায় আরও দুটি। তাতে বাধ সাধে জেলা প্রশাসন। গত ছয় মাসে দুই পক্ষের সেই দ্বন্দ্ব বহুদূর গড়িয়েছে। সরকারের অন্তত ২৫টি দপ্তর থেকে কোর্ট হিলের অবৈধ স্থাপনা অপসারণে চিঠি দেওয়া হয়েছে আগেই। এবার সেই পাঁচ ভবন নির্মাণে নকশা অনুমোদন দেওয়া চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের খুঁজছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

অবৈধভাবে কোর্ট হিলে সরকারি খাস জমিতে আইনজীবী সমিতির ভবনের নকশা অনুমোদন দেওয়ার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের তথ্য চেয়ে সিডিএর চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

গত ৭ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মাহমুদুর রহমান হাবিব সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষকে এই চিঠি দেন। প্রায় ১০ দিন আগে চিঠি দিলেও বিষয়টি জানাজানি হয় গতকাল সোমবার। চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রামের পরীর পাহাড়ে ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারি খাস জমিতে আইনজীবীদের পাঁচটি বহুতল ভবন অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত সিডিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম, পদবি, পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা (স্থায়ী/বর্তমান ঠিকানা), মোবাইল নম্বর উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করতে হবে। একই চিঠিতে অনুমোদন দেওয়ার সভার কার্যবিবরণী, অনুমোদনের কপিসহ আরও বিভিন্ন তথ্য চাওয়া হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে জড়িত কর্মকর্তাদের তালিকা ও নথিপত্র পাঠাতে বলা হয়।

কতজন কর্মকর্তা জড়িত সেই তথ্য দিতে চায়নি সিডিএ। নাম প্রকাশ না করে সিডিএর একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রয়োজনীয় সবই পাঠানো হয়েছে।

তবে সিডিএর সচিব মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সিডিএ চেয়ারম্যানের কাছ থেকেই জানুন। আমি কর্তৃপক্ষ না।’

এ বিষয়ে জানতে সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষকে ফোন করা হলে ‘আমি একটি সভায় আছি’ বলে সংযোগ কেটে দেন।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ২০০৩-২০০৪, ২০০৪-২০০৫, ২০০৮-২০০৯ এবং ২০১৪-২০১৫ সালে পরীর পাহাড়ে ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারি খাস জমিতে বিধি-বহির্ভূতভাবে আইনজীবীদের পাঁচটি ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন করে সিডিএর কিছু কর্মকর্তা। সমিতির সদস্য বেড়েছে এমন কারণ দেখিয়ে গত বছরের আগস্টে আইনজীবী সমিতি আরও দুটি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। তখন তাতে বাধা দেয় জেলা প্রশাসন। এরপর থেকে জেলা প্রশাসন ও আইনজীবী সমিতির মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। পরে সরকারের ২৫টি দপ্তর থেকে চিঠি দিয়ে কোর্ট হিলের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে বলা হয়। যদিও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এবার সিডিএর জড়িত কর্মকর্তাদের তালিকা চেয়ে চিঠি দিল গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। পরবর্তী সময়ে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আইনজীবী ভবনের কিছু অংশ পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে। এতে ব্যাংকটির কার্যালয়ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ জন্য পাশে গড়ে ওঠা ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ স্থাপনা অপসারণের জন্য জেলা প্রশাসনকে পুনরায় চিঠি দিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ব্যাংকের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নূরুল আমিন ১১ এপ্রিল জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের কাছে এই চিঠি দেন।

অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয় একটি ১ (ক) শ্রেণিভুক্ত কেপিআই প্রতিষ্ঠান। সে জন্য অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত