Ajker Patrika

চিকিৎসককে বীরের মতো তুলে ধরা হয়েছে

মীর রাকিব হাসান
চিকিৎসককে বীরের মতো তুলে ধরা হয়েছে

সিনেমাটিতে যুক্ত হওয়া কীভাবে?
করোনার প্রকোপে সবাই যখন ঘরবন্দী, আমিও অপেক্ষায় কবে আবার শুটিংয়ে ফিরতে পারব। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে সময় গেল প্রায় ছয় মাস। এমন সময় এই সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব দেন পরিচালক।

কী কী ভেবে এই সিনেমায় অভিনয়ে সম্মতি জানালেন?
করোনার ওই সময়টায় আমি তো সিনেমার অফার এলেই চোখ-কান বুজে সম্মতি জানিয়ে দেওয়ার মতো অবস্থায় ছিলাম। তারপরও পরিচালকের কাছে গল্প শুনতে চাইলাম। গল্প শুনে মনে হলো ঠিকঠাকভাবে করতে পারলে দারুণ কিছু হবে। আমি সম্মতি দিলাম। স্ক্রিপ্ট পাঠাতে বললাম। স্ক্রিপ্ট পড়ে বুঝতে পারলাম ভুল করিনি। শুটিং করতে গিয়ে আরও ভালো লেগে গেল। আমি সন্তুষ্ট হয়েছি বলেই দর্শকদের ডাকছি সিনেমা দেখার জন্য।

শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
এই সিনেমায় সবাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুটিং করেছেন। করোনা তখনো পুরোপুরি যায়নি। ঢাকার বাইরে গিয়ে শুটিং করা পরিবার থেকেও নিষেধ ছিল। তারপরও একটা ভালো সিনেমার তাগিদে আমরা ছুটে গিয়েছি। ফরিদপুর, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী, দৌলতদিয়ায় হয়েছে পুরো সিনেমার শুটিং। সিনেমার একটা বড় অংশের শুটিং হয়েছে দৌলতদিয়ার যৌনপল্লিতে। পদ্মার তাজা ইলিশ খাওয়া হতো নিয়মিত। ফরিদপুরে এক ভাইয়ের বাসায় ছিলাম। তাঁরা খুব যত্ন নিয়েছেন আমাদের। এভাবেই আমাদের সিনেমার শুটিং হয়েছে।

যৌনপল্লিতে শুটিং অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
যৌনপল্লিতে প্রথমবার শুটিং করেছি। অভিজ্ঞতা ভালো। বাংলা সিনেমার প্রতি যৌনকর্মীদের বেশ আগ্রহ আছে। মান্না ভাই, শাকিব ভাই এমনকি আমাদের সিনেমাও তাঁরা দেখেন। তাঁদের প্রত্যেকের জীবনের গল্প নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন সিনেমা তৈরি করা যাবে। আমাদের বেশ যত্ন নিয়েছেন, সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। 

সিনেমায় চিকিৎসক চরিত্রে অভিনয় করেছেন...
ডা. রাজু চরিত্রে অভিনয় করেছি। মফস্বলের একজন চিকিৎসক। একটা এনজিওর নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক হিসেবে সপ্তাহে দুই দিন যৌনপল্লিতে যাই চিকিৎসা করতে। সেখানকার মেয়েরা চিকিৎসককে খুব পছন্দ করেন। মফস্বল পলিটিকস, ড্রাগস আদান-প্রদান, নারী পাচারসহ নানা অনিয়ম ধরা পড়ে রাজুর চোখে। প্রতিবাদ জানায় সে। সামান্য এক চিকিৎসক হয়ে সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে রাজু। এই সমাজের এক প্রতিবাদী চেহারা হয়ে ওঠে সে। 

চিকিৎসকেরা সিনেমাটি দেখলে কীভাবে নেবে বলে মনে করেন?
পুলিশদের নিয়ে সিনেমা হয়েছে, র‍্যাব-আর্মিদের নিয়ে সিনেমা হয়েছে। এই সিনেমাটি হয়েছে চিকিৎসকদের নিয়ে। সিনেমার হিরো একজন চিকিৎসক। করোনাকালীন চিকিৎসকদের অবদান আরও বেশি চোখে পড়েছে। জীবন বাজি রেখে আমাদের সেবা দিয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসকের মতো মহান পেশার মানুষদের নিয়ে দর্শক এখনো তেমন ভালো সিনেমা দেখেনি। এই সিনেমায় একজন চিকিৎসককে বীরের মতো তুলে ধরা হয়েছে। তাই চিকিৎসকদের কাছে যাচ্ছি। তাঁদের সিনেমাটি সম্পর্কে জানাচ্ছি। ট্রেলার প্রকাশের পর অনেক সাড়া পেয়েছি।

চিকিৎসক হয়ে ওঠার প্রস্তুতি কেমন ছিল? 
লুকটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ওই সময় আমার চুল, দাঁড়ি বড় ছিল। সেটা কেটেছেঁটে মায়াবী চেহারা করা হলো। এই সিনেমার প্রত্যেক শিল্পীর লুক নিয়ে পরিচালক বেশ তৎপর ছিলেন। উনিই আমাকে দিনের পর দিন পরামর্শ দিয়েছেন, চিকিৎসক হিসেবে আমাকে কেমন দেখতে চান বলেছেন। সেভাবেই আমাকে প্রস্তুত করেছেন। কিছু সিনেমা থাকে, যা অভিনেতার ক্যারিয়ারে প্লাস পয়েন্ট হয়। বীরত্ব আমার ক্যারিয়ারে তেমনই এক সিনেমা। এখন দর্শকের ভালো লাগলেই আমাদের সবার কষ্ট সার্থক হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত