Ajker Patrika

কাজ না করেই শেষের গল্প

চাউচিং মারমা, রাজস্থলী (রাঙামাটি)
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২১, ১১: ০৬
কাজ না করেই শেষের গল্প

কাগজ-কলমের হিসাবে রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলায় দুটি রাস্তা বদলে দিয়েছে পাহাড়িদের ভাগ্য। এতে সরকারের বরাদ্দ ছিল ৪ কোটি টাকা।

এদিকে বাস্তবে এই কাজ শেষ না হওয়ায় উন্নয়নের ওই প্রচার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। বিব্রত উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, রাস্তাটি নির্মাণকাজ চলমান আছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ১ নভেম্বর রাস্তার কাজের জন্য টেন্ডার বিজ্ঞাপন দেয় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। এর ১ নম্বরে ছিল রাবার বাগান থেকে পাইন্দং পাড়া, শ্মশানঘাট যাত্রী ছাউনি হয়ে তরগুমুখপাড়া পর্যন্ত সড়ক।

তালিকার ২ নম্বরে ছিল ইসলামপুর বালুমুড়া থেকে কেচিপাড়া-কমলছড়িপাড়া পর্যন্ত পাকা রাস্তা নির্মাণ। প্রায় ২ কোটি করে দুটি রাস্তার বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪ কোটি টাকা। রাস্তা দুটি নির্মাণকাজ পায় রফিকুল আলম লিটনের মালিকানাধীন লিটন এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

এ দিকে সরেজমিন পরিদর্শনে রাবার বাগান থেকে পাইন্দং পাড়া, শ্মশান ঘাট যাত্রী ছাউনি হয়ে তরগুমুখপাড়া সড়কে কাজের কোনো নজির পাওয়া যায়নি।

তরগুমুখপাড়া বাসিন্দা ইসলামপুর বাজারে ফার্মেসি ব্যবসায়ী ক্রইচিংমং মারমা জানান, ‘রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করার জন্য দামি মোটরসাইকেল নিয়ে অনেকজন আসা-যাওয়া করছে। কিন্তু এখনো কোথাও কাজ শুরু করেনি।’

পাইন্দংপাড়া কার্বারি মংচখয় মারমা বলেন, ‘আমাদের গ্রামের রাস্তা তরগু ছড়ার ওপর কালভার্ট পর্যন্ত কোথাও সলিং, কোথাও পাকা রাস্তা ৩ বছরের আগে নির্মাণ করা হয়েছে। এই রাস্তাটি পাকা করার জন্য রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অনেক লোকজন ঘুরে গেছে। এখনো নতুন কোনো রাস্তা নির্মাণকাজ হয়নি।’

ইসলামপুর বালুমুড়া থেকে কেচিপাড়া হয়ে কমলছড়ি রাস্তা পাকা নির্মাণ বিষয়ে আওয়ামী লীগ দলের সাধারণ সম্পাদক পুচিংমং মারমা বলেন, ‘আমার গ্রামের বাড়ি কমলছড়িপাড়া। এই ধরনের রাস্তা নির্মাণ হয়ে থাকলে আমি অবশ্যই জানব।’ এই রাস্তা নির্মাণ বিষয়ে তিনি কিছুই জানে না।

ইসলামপুর বাজার এলাকা বাঙ্গালহালিয়া ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মো. মোতালেব হোসেন জানান, গত কয়েক বছর আগে রাস্তা নির্মাণকাজ হয়েছিল। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কারণে লকডাউন আগে থেকে এখনো পর্যন্ত উন্নয়নকাজ হয়নি।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এ বিষয়টি কথা বলতে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. এরশাদুল হক মণ্ডল, নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি। পরে মেসেজ পাঠিয়েও তাঁদের সাড়া পাওয়া যায়নি।

এদিকে ওই দুই কর্মকর্তাসহ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক লিটন এর আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, রাস্তা দুটি নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। আবার রাস্তাগুলো পাকা হওয়ায় স্থানীয় ৭-৮টি গ্রাম সুফল হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবিও করছেন।

নাম প্রকাশ না শর্তে উপজেলায় আওয়ামী লীগের একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, হাজারো প্রশ্নবিদ্ধ রাস্তা নির্মাণকাজ নিয়ে বিব্রত অবস্থা মধ্যে আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত