সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
একাত্তরের যুদ্ধে দুটো স্বপ্নই ছিল। একদিকে ব্যক্তিগত দুঃস্বপ্ন, অপরদিকে সমষ্টিগত মুক্তির আশা। দুইয়ের মধ্যে কোনো বিরোধ ছিল না। সে অবস্থায় সেটা থাকার কথাও নয়; বরং ব্যক্তিগত দুঃস্বপ্ন সমষ্টিগত মুক্তির স্বপ্নকে সংহত ও দৃঢ় করেছে। আমরা বুঝে নিয়েছি, ব্যক্তির মুক্তি নিহিত রয়েছে সমষ্টির মুক্তির ভেতর। হত্যা, নিপীড়ন, ধর্ষণ, উচ্ছেদ, আতঙ্ক—সব মিলিয়ে এমন ব্যাপক দুঃসময় বাঙালির জীবনে আগে কখনো এসেছে কি না, সন্দেহ। না, আসেনি। তবু ওই ভীষণ অন্ধকারও মুক্তির সমষ্টিগত আশাটিকে নির্বাপিত করে দিতে পারেনি; বরং অত্যাচার যত বেড়েছে, মানুষের মনোবল তত দৃঢ়তা পেয়েছে। অস্পষ্টভাবে হলেও মানুষ এমন একটি সমাজ গড়ে তুলবে বলে আশা করেছে, যেখানে সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার প্রতিষ্ঠা ঘটবে।
হানাদারেরা পরাজিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তারা বাধ্য হয়েছে তাদের জন্য সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত আত্মসমর্পণে। অপ্রত্যাশিত এই জন্য যে তাদের তো কোনো কিছুর অভাব ছিল না। অস্ত্র প্রশিক্ষণ, যোগাযোগ, সরবরাহ, পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোর অকুণ্ঠ সমর্থন, যা ইচ্ছা তা করার অবাধ স্বাধীনতা—সবকিছুই পর্যাপ্ত পরিমাণেই পেয়েছে। তাহলে হারল কেন? হারল কার কাছে? হারল সমষ্টিগত স্বপ্নের কাছে। যত আঘাত করেছে, ততই তারা টের পেয়েছে ওই স্বপ্ন শক্তিশালী ও অপরাজেয় হয়ে উঠছে। হারল এই স্বপ্নের কাছেই। বাইরে তারা আত্মসমর্পণ করেছে ভারতীয় ও বাংলাদেশি যৌথবাহিনীর কাছে, কিন্তু ভেতরে তাদের আত্মসমর্পণ বাঙালির সমষ্টিগত মুক্তির যে স্বপ্ন, তার কাছেই।
মুক্তিযুদ্ধের জন্য আমরা মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। প্রশিক্ষণ তো ছিলই না; অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ–অভাব ছিল সবকিছুরই। যুদ্ধ যে করতে হবে, এ ধারণাটিও ছিল অনুপস্থিত। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের মতো মানুষ এসেছে যোগ দিতে, এসেছে কৃষক, শ্রমিক, সেনাবাহিনীর সদস্য, ইপিআর, পুলিশ, ছাত্র, নারী—কে আসেনি? এসেছে স্বপ্নের ডাকে, এসেছে দুঃস্বপ্নের দ্বারা তাড়িত হয়ে।
কিন্তু জয়ের পরেই সূত্রপাত ঘটল আমাদের ঐতিহাসিক পরাজয়ের। অন্য কারও কাছে নয়, পরাজয় ঘটল আমাদেরই ব্যক্তিগত স্বপ্নগুলোর কাছে। হানাদারেরা যা পারেনি, না পেরে লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গেছে, আমরা তা করলাম। আমরা সমষ্টিগত স্বপ্নটাকে ভেঙে খান খান করে দিলাম ব্যক্তিগত স্বপ্নগুলোর আঘাতে। ব্যক্তিগত সম্পত্তি বৃদ্ধিকেই মনে করা হলো মুক্তির পথ। লোভ, লালসা, দখলদারি উগ্র হয়ে উঠল। বিদেশি হানাদারদের হাঁকিয়ে দিয়ে আমরা নিজেরাই হানাদার হয়ে উঠলাম। লুণ্ঠন, ছিনতাই, ভেজাল, ঘুষ, চোরাচালান, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট সংগ্রহ, পরিত্যক্ত এবং সামাজিক সম্পত্তিকে ব্যক্তিগত করা, জাতীয়করণের নামে কলকারখানা দখলে নেওয়া, পরীক্ষায় নকল, চাকরিতে অবৈধ উন্নতি, সম্পদ পাচার—কোনটা বাদ রইল? বাঙালি বাঙালির সঙ্গে এমন ব্যাপক শত্রুতা আর কখনো করেনি।
এমনকি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়েও ইতর রকমের টানাটানি শুরু হয়ে গেল। ব্যক্তি বড় হয়ে উঠতে চাইল সমষ্টিকে পেছনে ফেলে। তাই আমার একাত্তর, একাত্তরের আমি, মুক্তিযুদ্ধে আমি, আমার এলাকায় যুদ্ধ—এসব কাহিনি সরব হয়ে উঠল, লাখ লাখ সাধারণ মানুষের ভূমিকাকে দমিত করে দিয়ে। অসংখ্য ‘আমি’কে পাওয়া গেল, ‘আমাদের’ জায়গায়। গৌরব ছিনতাইয়ের উন্মাদ প্রতিযোগিতায় স্বভাবতই বিপন্ন হলো গৌরব নিজে। একাত্তরে আমরা সমাজতন্ত্রী ছিলাম, তার পর থেকে আমরা ক্রমাগত পুঁজিবাদী হচ্ছি এবং পুঁজিবাদের যত রকম গ্লানি, বিচ্ছিন্নতা, অপরাধ সব প্রবল হয়ে উঠেছে।
এটা তো খুবই স্বাভাবিক ছিল যে পুঁজিবাদী বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করবে এবং সেটা তারা করেছেও। কিন্তু কেন? তাদের আপত্তিটা ছিল কোথায়? আপত্তি নয়, আসলে ছিল শঙ্কা। বাংলাদেশ স্বাধীন হোক কিংবা তাদের ভাষায় বিচ্ছিন্ন হোক, এটা নিয়ে তাদের ততটা দুশ্চিন্তা ছিল না, যতটা ছিল এই যে সামাজিক বিপ্লব ঘটার আশঙ্কা, তা নিয়ে। বাংলাদেশ একটি সমাজতন্ত্রী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে, এটা তখনকার পরিবেশে ওই রাষ্ট্রগুলোর জন্য মোটেই উৎসাহিত হওয়ার মতো ব্যাপার ছিল না। তারা বরং চিন্তিতই হয়েছে এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারল না। সমষ্টিগত স্বপ্নের জয় হলো, বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটল।
কিন্তু তাদের দিক থেকে বাংলাদেশ বিরোধিতা তথা সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে নির্মূল করার কাজটা চলতেই থাকল। তারা সাহায্য, ঋণ ইত্যাদি নিয়ে এগিয়ে এল এবং দেশের নতুন যে জাতীয়তাবাদী নেতৃত্ব, তাকে পুঁজিবাদের দিকে টেনে ধরল। এই নেতৃত্বের ভেতরে পুঁজিবাদী আকাঙ্ক্ষাটা পুরোপুরি ছিল। তারা ক্ষমতার হস্তান্তর চেয়েছে, বৈপ্লবিক রূপান্তর চায়নি। জাতীয়তাবাদীরা যে সমাজতন্ত্রী হতে পারবে না, এমন কোনো বিধান নিশ্চয়ই নেই, কিন্তু তার জন্য যে অঙ্গীকার দরকার ছিল, আমাদের জাতীয়তাবাদী নেতৃত্ব তার ধারেকাছে ছিল না, দূরেই ছিল। সমাজতন্ত্রের কথা এই নেতৃত্ব বলেছে, কিন্তু বলেছে বাধ্য হয়ে, অন্তর থেকে নয়। নতুন শাসকশ্রেণির কাছে সমষ্টিগত স্বপ্ন নয়, ব্যক্তিগত স্বপ্নই হয়ে দাঁড়াল নিয়ামক শক্তি। সাতচল্লিশের জাতীয়তাবাদীরা এমনকি ধর্মনিরপেক্ষও ছিল না, যে ধর্মনিরপেক্ষতা হলো গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত; একাত্তরের জাতীয়তাবাদীরা ধর্মনিরপেক্ষতা চেয়েছে, কিন্তু তাকে প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেয়নি এবং তাদের মুখ্য চেষ্টা ছিল নিজেদের স্বার্থকে বিকশিত করার প্রয়োজনে সমাজবিপ্লবের সম্ভাবনাকে বিনষ্ট করে দেওয়া। পুঁজিবাদীরা তাদের ধর্মে দীক্ষিত শাসকদের হাতে পেয়ে খুশি হলো এবং তাদের আরও বেশি বেশি করে ব্যক্তিগত মুনাফা লাভের ব্যাপারে লোভী করে তুলতে থাকল।
ওদিকে সংগতভাবেই সমষ্টিগত মুক্তির স্বপ্নকে যারা লালন করে, তারা পরিণত হলো শত্রুতে। এ ঘটনা পাকিস্তানের কালেও ঘটেছে। তখনো পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করেছে যে রাজনৈতিক দল, সেই কংগ্রেস নিষিদ্ধ হয়নি, নিষিদ্ধ হয়েছে কমিউনিস্ট পার্টি। কেবল নিষিদ্ধ করে সন্তুষ্ট হয়নি, কমিউনিস্টদের যতভাবে পারা যায় নির্যাতন করা হয়েছে এবং তাদের অনেককে বাধ্য করা হয়েছে দেশত্যাগ করতে।
বাংলাদেশের বামপন্থীরা নানা রকম বিভ্রান্তির ভেতর ছিল। তাদের মধ্যে পিকিংপন্থী বলে যারা চিহ্নিত, তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারেনি এবং না পারার গ্লানিতে পরবর্তীকালে পীড়িত ও জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের ওপর রাষ্ট্রীয় নির্যাতনও চলেছে প্রচণ্ড রকমের।
অন্যদিকে মস্কোপন্থী বলে পরিচিতরা যে জাতীয়তাবাদী শাসকদের মূল থেকে নিজেদের আলাদা করে নিয়ে স্বতন্ত্র একটি রাজনৈতিক ধারা গড়ে তুলবে, সেটা পারেনি। ফলে বামের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য হলো না এবং সমাজবিপ্লবের কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হলো না। এই শূন্যতায় জাতীয়তাবাদীদের ভেতর থেকেই একটি দল বের হয়ে এল, যারা জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্রকে একত্র করার কথা বলে জনগণের ভেতর বিদ্যমান সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বৈপ্লবিক আকাঙ্ক্ষাকে ছিনতাই করে নিয়ে গেল।
খুবই তাৎপর্যপূর্ণ, কিন্তু মোটেই অপ্রত্যাশিত নয়। এমন ঘটনাও ঘটল যে রাজাকার-আলবদররা ক্ষমা পেয়ে গেল। কেবল ক্ষমা পেল না, একসময় রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদারই হয়ে বসল। পাকিস্তানি শাসকেরা যেমন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় যারা বিরোধিতা করেছে তাদের শত্রু মনে করেনি, শত্রু ভেবেছে সমষ্টিগত মুক্তির স্বপ্নের পক্ষের মানুষের। বাংলাদেশের শাসকেরাও তেমনি এবং একই নিয়মে, রাজাকার-আলবদরদের কাছে টেনে নিয়েছে, যন্ত্রণা যা দেওয়ার দিয়েছে বামপন্থীদের; যেমন বিরোধিতা করে, তেমনি কাউকে কাউকে আদর দিয়েও। ফলে বামপন্থীরা তেমন সুবিধা করতে না পারলেও পোয়াবারো হয়েছে ধর্ম ব্যবসায়ীদের। তারা ফুলেফেঁপে উঠেছে। দেশে অভাব, সুবিচারের অনিশ্চয়তা এবং জাতীয়তাবাদীদের ব্যর্থতা যে হতাশা তৈরি করেছে তা তথাকথিত ইসলামি জঙ্গিবাদের জন্য উর্বর লালনভূমিতে পরিণত হয়েছে। ধর্ম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পুঁজিবাদীদের আপাত-পার্থক্যের অভ্যন্তরে চমৎকার আত্মীয়তা রয়েছে। উভয় পক্ষই ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও মুনাফায় বিশ্বাসী। ইসলামি জঙ্গি বলে যারা পরিচিত, তাদের স্বপ্নটাও ব্যক্তিগত পুণ্য সঞ্চয়ই। পুণ্যের সঙ্গে মুনাফার মূল ব্যবধানটা নামেরই। নইলে পুণ্য সঞ্চয়ী যেমন মুনাফালোভীও তেমনি, ব্যক্তিগত লাভের কথাই ভাবে, সমষ্টিগত অর্জনকে লাঞ্ছিত করে।
মাদ্রাসাশিক্ষাকে উৎসাহিত করার ব্যাপারে আমাদের শাসকশ্রেণির ক্রমবর্ধমান তৎপরতা সমষ্টিগত স্বপ্নকে পর্যুদস্ত করার আগ্রহেরই বহিঃপ্রকাশ বৈকি। অনুপ্রেরণাটা থাকে ব্যক্তিগত সম্মান ও পুণ্য সঞ্চয়ের। প্রচ্ছন্ন থাকে আরেকটি অভিসন্ধি, সেটা গরিব মানুষের ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসায় ঠেলে দিয়ে ইংরেজি-মাধ্যমে পড়ুয়া নিজেদের সন্তানদের উন্নতির পথটাকে প্রশস্ত করা। গরিব মানুষ মাদ্রাসাশিক্ষায় আটকা পড়ে থাকুক, আমরা এগিয়ে যাই—মনোভাবটা এ রকমের।
একাত্তরের পরে দেশে যে নতুন প্রজন্ম এসেছে তারা পাকিস্তান দেখেনি, মুক্তিযুদ্ধও দেখেনি, তাদের সামনে দেশপ্রেমের ও আত্মত্যাগের কোনো দৃষ্টান্ত নেই এবং অন্যদিকে তারা সঠিক ইতিহাসও জানে না, সুযোগ পায় না জানার। শাসকশ্রেণি তাদের সেই সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করে রাখে। তরুণ প্রজন্ম মনে করে, এ দেশের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দেওয়াটা যে সম্মানজনক, এটাও তারা বোধ করে না। তাদের স্বপ্ন ব্যক্তিগত।
কিন্তু ব্যক্তিগত স্বপ্নের লালন-পালন যা করে এবং করতে পারে, তা তো আমরা দেখছি। ওই সব স্বপ্নের পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সার্বক্ষণিক দৌরাত্ম্যে বাংলাদেশ এখন নৈরাজ্যের দিকে এগোচ্ছে। এ থেকে মুক্তির পথ আমাদের অবশ্যই জানা আছে। সেটা হলো সমষ্টিগত স্বপ্নের কাছে ফিরে যাওয়া। সেই স্বপ্নকে চালিকা শক্তি করে তোলা। কারা করবেন? করবেন তাঁরা, যাঁরা দেশপ্রেমিক ও গণতান্ত্রিক, যাঁরা মনে করেন ব্যক্তিগত স্বপ্নকে মুখ্য করে আমরা উন্নতি নয়, অধঃপতনের রাস্তা ধরেছি। মুক্তির স্বপ্নকে সামনে রেখে তাঁরা সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হবেন। যে যুদ্ধ শেষ হয়নি, তাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। নইলে আমরা নামতেই থাকব, উঠতে পারব না।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
একাত্তরের যুদ্ধে দুটো স্বপ্নই ছিল। একদিকে ব্যক্তিগত দুঃস্বপ্ন, অপরদিকে সমষ্টিগত মুক্তির আশা। দুইয়ের মধ্যে কোনো বিরোধ ছিল না। সে অবস্থায় সেটা থাকার কথাও নয়; বরং ব্যক্তিগত দুঃস্বপ্ন সমষ্টিগত মুক্তির স্বপ্নকে সংহত ও দৃঢ় করেছে। আমরা বুঝে নিয়েছি, ব্যক্তির মুক্তি নিহিত রয়েছে সমষ্টির মুক্তির ভেতর। হত্যা, নিপীড়ন, ধর্ষণ, উচ্ছেদ, আতঙ্ক—সব মিলিয়ে এমন ব্যাপক দুঃসময় বাঙালির জীবনে আগে কখনো এসেছে কি না, সন্দেহ। না, আসেনি। তবু ওই ভীষণ অন্ধকারও মুক্তির সমষ্টিগত আশাটিকে নির্বাপিত করে দিতে পারেনি; বরং অত্যাচার যত বেড়েছে, মানুষের মনোবল তত দৃঢ়তা পেয়েছে। অস্পষ্টভাবে হলেও মানুষ এমন একটি সমাজ গড়ে তুলবে বলে আশা করেছে, যেখানে সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার প্রতিষ্ঠা ঘটবে।
হানাদারেরা পরাজিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তারা বাধ্য হয়েছে তাদের জন্য সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত আত্মসমর্পণে। অপ্রত্যাশিত এই জন্য যে তাদের তো কোনো কিছুর অভাব ছিল না। অস্ত্র প্রশিক্ষণ, যোগাযোগ, সরবরাহ, পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোর অকুণ্ঠ সমর্থন, যা ইচ্ছা তা করার অবাধ স্বাধীনতা—সবকিছুই পর্যাপ্ত পরিমাণেই পেয়েছে। তাহলে হারল কেন? হারল কার কাছে? হারল সমষ্টিগত স্বপ্নের কাছে। যত আঘাত করেছে, ততই তারা টের পেয়েছে ওই স্বপ্ন শক্তিশালী ও অপরাজেয় হয়ে উঠছে। হারল এই স্বপ্নের কাছেই। বাইরে তারা আত্মসমর্পণ করেছে ভারতীয় ও বাংলাদেশি যৌথবাহিনীর কাছে, কিন্তু ভেতরে তাদের আত্মসমর্পণ বাঙালির সমষ্টিগত মুক্তির যে স্বপ্ন, তার কাছেই।
মুক্তিযুদ্ধের জন্য আমরা মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। প্রশিক্ষণ তো ছিলই না; অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ–অভাব ছিল সবকিছুরই। যুদ্ধ যে করতে হবে, এ ধারণাটিও ছিল অনুপস্থিত। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের মতো মানুষ এসেছে যোগ দিতে, এসেছে কৃষক, শ্রমিক, সেনাবাহিনীর সদস্য, ইপিআর, পুলিশ, ছাত্র, নারী—কে আসেনি? এসেছে স্বপ্নের ডাকে, এসেছে দুঃস্বপ্নের দ্বারা তাড়িত হয়ে।
কিন্তু জয়ের পরেই সূত্রপাত ঘটল আমাদের ঐতিহাসিক পরাজয়ের। অন্য কারও কাছে নয়, পরাজয় ঘটল আমাদেরই ব্যক্তিগত স্বপ্নগুলোর কাছে। হানাদারেরা যা পারেনি, না পেরে লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গেছে, আমরা তা করলাম। আমরা সমষ্টিগত স্বপ্নটাকে ভেঙে খান খান করে দিলাম ব্যক্তিগত স্বপ্নগুলোর আঘাতে। ব্যক্তিগত সম্পত্তি বৃদ্ধিকেই মনে করা হলো মুক্তির পথ। লোভ, লালসা, দখলদারি উগ্র হয়ে উঠল। বিদেশি হানাদারদের হাঁকিয়ে দিয়ে আমরা নিজেরাই হানাদার হয়ে উঠলাম। লুণ্ঠন, ছিনতাই, ভেজাল, ঘুষ, চোরাচালান, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট সংগ্রহ, পরিত্যক্ত এবং সামাজিক সম্পত্তিকে ব্যক্তিগত করা, জাতীয়করণের নামে কলকারখানা দখলে নেওয়া, পরীক্ষায় নকল, চাকরিতে অবৈধ উন্নতি, সম্পদ পাচার—কোনটা বাদ রইল? বাঙালি বাঙালির সঙ্গে এমন ব্যাপক শত্রুতা আর কখনো করেনি।
এমনকি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়েও ইতর রকমের টানাটানি শুরু হয়ে গেল। ব্যক্তি বড় হয়ে উঠতে চাইল সমষ্টিকে পেছনে ফেলে। তাই আমার একাত্তর, একাত্তরের আমি, মুক্তিযুদ্ধে আমি, আমার এলাকায় যুদ্ধ—এসব কাহিনি সরব হয়ে উঠল, লাখ লাখ সাধারণ মানুষের ভূমিকাকে দমিত করে দিয়ে। অসংখ্য ‘আমি’কে পাওয়া গেল, ‘আমাদের’ জায়গায়। গৌরব ছিনতাইয়ের উন্মাদ প্রতিযোগিতায় স্বভাবতই বিপন্ন হলো গৌরব নিজে। একাত্তরে আমরা সমাজতন্ত্রী ছিলাম, তার পর থেকে আমরা ক্রমাগত পুঁজিবাদী হচ্ছি এবং পুঁজিবাদের যত রকম গ্লানি, বিচ্ছিন্নতা, অপরাধ সব প্রবল হয়ে উঠেছে।
এটা তো খুবই স্বাভাবিক ছিল যে পুঁজিবাদী বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করবে এবং সেটা তারা করেছেও। কিন্তু কেন? তাদের আপত্তিটা ছিল কোথায়? আপত্তি নয়, আসলে ছিল শঙ্কা। বাংলাদেশ স্বাধীন হোক কিংবা তাদের ভাষায় বিচ্ছিন্ন হোক, এটা নিয়ে তাদের ততটা দুশ্চিন্তা ছিল না, যতটা ছিল এই যে সামাজিক বিপ্লব ঘটার আশঙ্কা, তা নিয়ে। বাংলাদেশ একটি সমাজতন্ত্রী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে, এটা তখনকার পরিবেশে ওই রাষ্ট্রগুলোর জন্য মোটেই উৎসাহিত হওয়ার মতো ব্যাপার ছিল না। তারা বরং চিন্তিতই হয়েছে এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারল না। সমষ্টিগত স্বপ্নের জয় হলো, বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটল।
কিন্তু তাদের দিক থেকে বাংলাদেশ বিরোধিতা তথা সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে নির্মূল করার কাজটা চলতেই থাকল। তারা সাহায্য, ঋণ ইত্যাদি নিয়ে এগিয়ে এল এবং দেশের নতুন যে জাতীয়তাবাদী নেতৃত্ব, তাকে পুঁজিবাদের দিকে টেনে ধরল। এই নেতৃত্বের ভেতরে পুঁজিবাদী আকাঙ্ক্ষাটা পুরোপুরি ছিল। তারা ক্ষমতার হস্তান্তর চেয়েছে, বৈপ্লবিক রূপান্তর চায়নি। জাতীয়তাবাদীরা যে সমাজতন্ত্রী হতে পারবে না, এমন কোনো বিধান নিশ্চয়ই নেই, কিন্তু তার জন্য যে অঙ্গীকার দরকার ছিল, আমাদের জাতীয়তাবাদী নেতৃত্ব তার ধারেকাছে ছিল না, দূরেই ছিল। সমাজতন্ত্রের কথা এই নেতৃত্ব বলেছে, কিন্তু বলেছে বাধ্য হয়ে, অন্তর থেকে নয়। নতুন শাসকশ্রেণির কাছে সমষ্টিগত স্বপ্ন নয়, ব্যক্তিগত স্বপ্নই হয়ে দাঁড়াল নিয়ামক শক্তি। সাতচল্লিশের জাতীয়তাবাদীরা এমনকি ধর্মনিরপেক্ষও ছিল না, যে ধর্মনিরপেক্ষতা হলো গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত; একাত্তরের জাতীয়তাবাদীরা ধর্মনিরপেক্ষতা চেয়েছে, কিন্তু তাকে প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেয়নি এবং তাদের মুখ্য চেষ্টা ছিল নিজেদের স্বার্থকে বিকশিত করার প্রয়োজনে সমাজবিপ্লবের সম্ভাবনাকে বিনষ্ট করে দেওয়া। পুঁজিবাদীরা তাদের ধর্মে দীক্ষিত শাসকদের হাতে পেয়ে খুশি হলো এবং তাদের আরও বেশি বেশি করে ব্যক্তিগত মুনাফা লাভের ব্যাপারে লোভী করে তুলতে থাকল।
ওদিকে সংগতভাবেই সমষ্টিগত মুক্তির স্বপ্নকে যারা লালন করে, তারা পরিণত হলো শত্রুতে। এ ঘটনা পাকিস্তানের কালেও ঘটেছে। তখনো পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করেছে যে রাজনৈতিক দল, সেই কংগ্রেস নিষিদ্ধ হয়নি, নিষিদ্ধ হয়েছে কমিউনিস্ট পার্টি। কেবল নিষিদ্ধ করে সন্তুষ্ট হয়নি, কমিউনিস্টদের যতভাবে পারা যায় নির্যাতন করা হয়েছে এবং তাদের অনেককে বাধ্য করা হয়েছে দেশত্যাগ করতে।
বাংলাদেশের বামপন্থীরা নানা রকম বিভ্রান্তির ভেতর ছিল। তাদের মধ্যে পিকিংপন্থী বলে যারা চিহ্নিত, তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারেনি এবং না পারার গ্লানিতে পরবর্তীকালে পীড়িত ও জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের ওপর রাষ্ট্রীয় নির্যাতনও চলেছে প্রচণ্ড রকমের।
অন্যদিকে মস্কোপন্থী বলে পরিচিতরা যে জাতীয়তাবাদী শাসকদের মূল থেকে নিজেদের আলাদা করে নিয়ে স্বতন্ত্র একটি রাজনৈতিক ধারা গড়ে তুলবে, সেটা পারেনি। ফলে বামের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য হলো না এবং সমাজবিপ্লবের কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হলো না। এই শূন্যতায় জাতীয়তাবাদীদের ভেতর থেকেই একটি দল বের হয়ে এল, যারা জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্রকে একত্র করার কথা বলে জনগণের ভেতর বিদ্যমান সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বৈপ্লবিক আকাঙ্ক্ষাকে ছিনতাই করে নিয়ে গেল।
খুবই তাৎপর্যপূর্ণ, কিন্তু মোটেই অপ্রত্যাশিত নয়। এমন ঘটনাও ঘটল যে রাজাকার-আলবদররা ক্ষমা পেয়ে গেল। কেবল ক্ষমা পেল না, একসময় রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদারই হয়ে বসল। পাকিস্তানি শাসকেরা যেমন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় যারা বিরোধিতা করেছে তাদের শত্রু মনে করেনি, শত্রু ভেবেছে সমষ্টিগত মুক্তির স্বপ্নের পক্ষের মানুষের। বাংলাদেশের শাসকেরাও তেমনি এবং একই নিয়মে, রাজাকার-আলবদরদের কাছে টেনে নিয়েছে, যন্ত্রণা যা দেওয়ার দিয়েছে বামপন্থীদের; যেমন বিরোধিতা করে, তেমনি কাউকে কাউকে আদর দিয়েও। ফলে বামপন্থীরা তেমন সুবিধা করতে না পারলেও পোয়াবারো হয়েছে ধর্ম ব্যবসায়ীদের। তারা ফুলেফেঁপে উঠেছে। দেশে অভাব, সুবিচারের অনিশ্চয়তা এবং জাতীয়তাবাদীদের ব্যর্থতা যে হতাশা তৈরি করেছে তা তথাকথিত ইসলামি জঙ্গিবাদের জন্য উর্বর লালনভূমিতে পরিণত হয়েছে। ধর্ম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পুঁজিবাদীদের আপাত-পার্থক্যের অভ্যন্তরে চমৎকার আত্মীয়তা রয়েছে। উভয় পক্ষই ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও মুনাফায় বিশ্বাসী। ইসলামি জঙ্গি বলে যারা পরিচিত, তাদের স্বপ্নটাও ব্যক্তিগত পুণ্য সঞ্চয়ই। পুণ্যের সঙ্গে মুনাফার মূল ব্যবধানটা নামেরই। নইলে পুণ্য সঞ্চয়ী যেমন মুনাফালোভীও তেমনি, ব্যক্তিগত লাভের কথাই ভাবে, সমষ্টিগত অর্জনকে লাঞ্ছিত করে।
মাদ্রাসাশিক্ষাকে উৎসাহিত করার ব্যাপারে আমাদের শাসকশ্রেণির ক্রমবর্ধমান তৎপরতা সমষ্টিগত স্বপ্নকে পর্যুদস্ত করার আগ্রহেরই বহিঃপ্রকাশ বৈকি। অনুপ্রেরণাটা থাকে ব্যক্তিগত সম্মান ও পুণ্য সঞ্চয়ের। প্রচ্ছন্ন থাকে আরেকটি অভিসন্ধি, সেটা গরিব মানুষের ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসায় ঠেলে দিয়ে ইংরেজি-মাধ্যমে পড়ুয়া নিজেদের সন্তানদের উন্নতির পথটাকে প্রশস্ত করা। গরিব মানুষ মাদ্রাসাশিক্ষায় আটকা পড়ে থাকুক, আমরা এগিয়ে যাই—মনোভাবটা এ রকমের।
একাত্তরের পরে দেশে যে নতুন প্রজন্ম এসেছে তারা পাকিস্তান দেখেনি, মুক্তিযুদ্ধও দেখেনি, তাদের সামনে দেশপ্রেমের ও আত্মত্যাগের কোনো দৃষ্টান্ত নেই এবং অন্যদিকে তারা সঠিক ইতিহাসও জানে না, সুযোগ পায় না জানার। শাসকশ্রেণি তাদের সেই সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করে রাখে। তরুণ প্রজন্ম মনে করে, এ দেশের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দেওয়াটা যে সম্মানজনক, এটাও তারা বোধ করে না। তাদের স্বপ্ন ব্যক্তিগত।
কিন্তু ব্যক্তিগত স্বপ্নের লালন-পালন যা করে এবং করতে পারে, তা তো আমরা দেখছি। ওই সব স্বপ্নের পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সার্বক্ষণিক দৌরাত্ম্যে বাংলাদেশ এখন নৈরাজ্যের দিকে এগোচ্ছে। এ থেকে মুক্তির পথ আমাদের অবশ্যই জানা আছে। সেটা হলো সমষ্টিগত স্বপ্নের কাছে ফিরে যাওয়া। সেই স্বপ্নকে চালিকা শক্তি করে তোলা। কারা করবেন? করবেন তাঁরা, যাঁরা দেশপ্রেমিক ও গণতান্ত্রিক, যাঁরা মনে করেন ব্যক্তিগত স্বপ্নকে মুখ্য করে আমরা উন্নতি নয়, অধঃপতনের রাস্তা ধরেছি। মুক্তির স্বপ্নকে সামনে রেখে তাঁরা সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হবেন। যে যুদ্ধ শেষ হয়নি, তাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। নইলে আমরা নামতেই থাকব, উঠতে পারব না।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫