Ajker Patrika

আবারও কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্ব

তাসনীম হাসান, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২২, ১১: ০১
আবারও কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্ব

চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আবারও প্রকাশ্যে এসেছে। এবারের দ্বন্দ্বের সূত্রপাত এইচএসসি পরীক্ষার ফলবিভ্রাট নিয়ে। এই দ্বন্দ্ব নিয়ে একপক্ষ আরেক পক্ষকে জড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছে। পাল্টাপাল্টি চিঠি দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামসহ সারা দেশে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। এতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে বেশকিছু অসংগতি ধরা পড়ে। দুপুরের নম্বরফর্দ বদলে যায় সন্ধ্যায়। অনেকের অস্বাভাবিকভাবে নম্বর বেড়ে যায়। যদিও দ্রুত ভুল সংশোধন করে নেয় শিক্ষা বোর্ড। ফল নিয়ে উদ্বেগ-শঙ্কা কাটতে না কাটতে আবারও দুশ্চিন্তায় পড়ে শিক্ষার্থীরা। এবার পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন তাঁরা।

ফলবিভ্রাট নিয়ে তদন্তের জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল আলীম। পাশাপাশি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। একই সঙ্গে এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথের কাছে ব্যাখ্যা চান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

এর মধ্যেই প্রচার হয়, তদন্ত কমিটির সদস্যরা পেনড্রাইভে করে ফলাফল বোর্ডের কম্পিউটার শাখা থেকে নিয়ে গেছেন। বিষয়টি আইনের পরিপন্থী জানিয়ে শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক লিখিতভাবে চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন।

এ বিষয়ে গতকাল বুধবার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ বলেন, ‘বোর্ডের নথির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে আমার অনুমোদন নেওয়া উচিত ছিল। বোর্ডের নথি বাইরে নেওয়া যাবে না। তদন্তের কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা আইনের পরিপন্থী।’

তবে বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল আলীম বলেন, ‘স্পর্শকাতর কোনো বিষয় তদন্ত কমিটির সদস্যরা বাইরে নিয়ে যাননি। নথির একটি সিডি নিয়েছেন বলে জেনেছি। এই সিডিতে থাকা তথ্যগুলো আগে থেকেই ওয়েবসাইটে আছে।’ যেটি প্রকাশিত, সেটি গোপনীয় হয় কীভাবে?

আবদুল আলীম আরও বলেন, ‘আর তদন্ত কমিটির সদস্যরা যদি এ রকম তথ্য নিয়েও যান, তাহলে দেওয়ার সময় আমাকে কেন বলা হয়নি?

এদিকে গত মঙ্গলবার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে আরেকটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। চিঠিতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে ফলবিভ্রাটের বিষয়ে চাওয়া ব্যাখ্যা সন্তোষজনক হয়নি বলে জানানো হয়। বিষয়টি কেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করা হবে না, সেটি বলা হয়। এ বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে পুনরায় ব্যাখ্যা দেবেন বলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে জানান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।

গতকাল বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আরও একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেই চিঠিতে ফলবিভ্রাটের বিষয়ে গড়া কমিটির সদস্যদের পরিবর্তন করার জন্য বলা হয়। কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে জামায়াত-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলা হয় চিঠিতে।

বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বলেন, ‘কমিটির সদস্য পরিবর্তনের বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সই করা একটি চিঠি আমাকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, এত দিন কোনো অভিযোগ তোলা হয়নি কেন। এখন তদন্তের শেষ পর্যায়ে এসে এই অভিযোগ তোলার অর্থ কী? যাঁরা চিঠি দিয়েছেন, তাঁরা কি আঁচ করতে পেরেছেন, তদন্তে তাঁরা দোষী প্রমাণিত হবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত