Ajker Patrika

নদী ও খালে বাঁধ কেন

সম্পাদকীয়
নদী ও খালে বাঁধ কেন

দেশের দক্ষিণাঞ্চলে শক্তিশালী বাঁধ না থাকার কারণে সেখানকার মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। আবার পূর্বাঞ্চলে নদী ও খালে বাঁধ দেওয়ার কারণে এখন সেখানকার মানুষের বন্যার ভোগান্তি নিয়ে টিকে থাকতে হচ্ছে। কিছুদিন আগে দেশের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল। মূলত অতি বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে পানি আসার কারণে এ বছর সে অঞ্চলে বন্যা হয়েছিল। এখন অনেক জেলায় পানি নেমে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে।

কিন্তু লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীতে পানি খুব ধীরে ধীরে নামছে। মূলত দুই জেলায় অধিকাংশ খাল-নদী দখল হয়ে গেছে। কোনো কোনো নদী ও খালে অপরিকল্পিতভাবে দেওয়া হয়েছে বাঁধ। এতে করে পানি নেমে যেতে পারছে না। এ নিয়ে মঙ্গলবার আজকের পত্রিকায় একটা সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

বন্যা এখন আর শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়। এটা এখন মানুষ-সৃষ্ট দুর্যোগও। যেকোনো এলাকায় বন্যার পর পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ব্যাপারটি নির্ভর করে সেখানকার নদী ও খালের পানি কত সহজে নেমে যাবে, তার ওপর।

নদী ও খাল দখল করে বাঁধ নির্মাণ করলে পানির স্বাভাবিক গতিপ্রবাহে বিঘ্ন ঘটে। একটি নদীর মোহনা ধীরে ধীরে চরাঞ্চলে পরিণত হয়।এতে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পথে বাধার সৃষ্টি হয়। জানা যায়, নোয়াখালী জেলার বেশির ভাগ খাল দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে দোকানপাট। খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় বন্ধ হয়েছে পানির গতিপথ। লক্ষ্মীপুরে ছোট-বড় প্রায় ১১০টি খাল রয়েছে। এসব খালে প্রায় আড়াই হাজার অবৈধ বাঁধ রয়েছে। খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন প্রভাবশালীরা। প্রায় ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ডাকাতিয়া ও ভুলুয়া নদী এবং রহমতখালী ও বিরেন্দ্র খাল। এসব নদী ও খাল গিয়ে মিশেছে মেঘনা নদীতে। কিন্তু নদী ও খালে পানি সহজে না যেতে পারার কারণে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না।

নদীমাতৃক দেশ হওয়া সত্ত্বেও আমরা নদী ও খাল নিয়ে সচেতন নই। বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের সময় আমরা নদীর নাব্যতা, গতিপথ, পানি নিষ্কাশন নিয়ে সচেতন নই। আমরা এখনো নদীশাসনের নামে দুঃশাসন করে চলেছি।

নদী ও খাল কোনো ব্যক্তিমালিকের হয় না, এর মালিক জনসাধারণ। নদী ও খালের ওপর কোনো একক ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর একচ্ছত্র অধিকার থাকতে পারে না। আর সাম্প্রতিক বন্যার কারণে দুই জেলার পানি সহজে নেমে না যাওয়ার জন্য কিছু লুটেরা মানুষের কর্মকাণ্ড দায়ী।

নদ-নদী ও খালের স্বাভাবিক প্রবাহ যেন বাধাগ্রস্ত না হয় এবং এগুলো দখলমুক্ত করে যথাযথভাবে খনন করতে হবে। যেন ভবিষ্যতে বন্যা হলে স্বাভাবিকভাবে পানি নেমে যেতে পারে। এ জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি নদী ও খালের দখলদার ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে কঠোরভাবে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

বগুড়ায় ইফতারের পর ডেকে নিয়ে যুবককে হত্যা

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত