Ajker Patrika

ভূমিহীন বুনো বাগদীদের গাদাগাদি বাস বস্তিতে

গোপালপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২১, ১৮: ১৭
Thumbnail image

অন্ত্যজ শ্রেণির বুনো বাগদীদের নিত্যসঙ্গী অভাব-অনটন, অশিক্ষা ও দারিদ্র্য। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও বুনোদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটেনি। এই বুনোরা হলো মূল বাগদীদের উপগোত্র।

জানা যায়, দেশের সমতলের ৪৫টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে বাগদীরা। গোপালপুর উপজেলার বুনো বাগদীদের সবাই ভূমিহীন। উপজেলার নন্দনপুর, হেমনগর, ঝাওয়াইল ও ভেঙ্গুলা গ্রামে ১০৬ ঘর বুনো বাগদীর বাস। নিজ মাতৃভাষা হারিয়ে এখন তাঁরা বাংলায় কথা বলে। বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও প্রথা হারিয়ে মিশ্র সংস্কৃতি আঁকড়ে বেঁচে আছেন এই বাগদীরা।

ঝাওয়াইল গ্রামের আরতী বাগদী জানান, সাতচল্লিশ ও একাত্তরে বাগদীরা দেশছাড়া হয়। এরশাদ আমলে তাঁদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে উচ্ছেদ করা হয়। ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো বাজারের খাসজমির বস্তিতে গাদাগাদি করে বাস করছেন। গোপালপুর পৌরশহরের নন্দনপুর মহল্লার বাগদী বস্তির প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে স্বাস্থ্যহানির শিকার হচ্ছেন তাঁরা।

ভেঙ্গুলার অনিল বাগদী জানান, ১০ বছর আগে এখানকার খাসজমিতে ২৪ বাগদী পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়। দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে গবাদিপশু দেওয়া হয়। নির্মিত হয় আধা পাকা দুটি গোশালা। কিন্তু পশুসম্পদ বিভাগ ফলোআপ না দেওয়া সবক’টি গরু মড়কে মারা যায়। গৃহহীন ১০ বুনো পরিবার এখন ওই গোশালায় বাস করে।

ভেঙ্গুলার নিমাই বাগদী জানান, অভাব-অনটনে অধিকাংশ বাগদী শিশু স্কুলবিমুখ। সামাজিক বৈষম্যের শিকার হয় তাঁরা। উপবৃত্তিও সবাই পায় না। তা ছাড়া হোটেল-রেস্তোরাঁয় মুচি ও বাগদীর জন্য কাপপিরিচ, থাল বাসন আলাদা।

ভেঙ্গুলা গ্রামের বাসিন্দা এবং বাগদী নেতা ভজনচন্দ্র জানান, জন্মনিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাগদীদের ধারণা নেই। স্বাস্থ্যকর্মীরা সহজে বাগদী পল্লিতে পা মাড়ান না। আশ্রয়ণ প্রকল্পে তাই তাঁদের জনসংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নানা সরকারি সুবিধা থেকে তাঁরা তুলনামূলকভাবে বঞ্চিত।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. পারভেজ মল্লিক জানান, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঘর দেওয়া হচ্ছে। ১০টি পরিবার ইতিমধ্যে ঘর পেয়েছে। বাগদীরাও পর্যায়ক্রমে ঘর পাবেন। শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও পুষ্টির জন্য প্রতিবছর বাগদীদের অনুদান দেওয়া হয়। সরকারি ত্রাণও তাঁরা পেয়ে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত