Ajker Patrika

আইন পড়া রামিম এখন কৃষক

বাপ্পী শাহরিয়ার, চকরিয়া (কক্সবাজার)
আইন পড়া রামিম এখন কৃষক

এক পাশে পাহাড়, অন্য পাশে সুবজ ধানখেত। এর মধ্যে বড় বড় চারটি পুকুর। পুকুরপাড়ে সারি সারি পেঁপেগাছ, সবজির খেত। এর পাশে ছাগল ও মুরগির খামার। প্রকৃতির সঙ্গে সমন্বয় করে এসব সাজিয়েছেন আদনান রামিম নামের ৩৪ বছর বয়সী এক তরুণ। আর এ সমন্বিত খামারের নাম দিয়েছেন জাফ-নীল অ্যাগ্রো ফার্ম। বাবা আবু জাফর চৌধুরীর নামে এ খামার গড়েছেন তিনি। 

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে বাদশারটেক গ্রামে রামিমদের বাড়ি। তবে শিক্ষানুরাগী বাবা আবু জাফর চৌধুরী পাশের আলীকদম উপজেলায় আলীকদম উচ্চবিদ্যালয় ও আলীকদম বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ছিলেন বিদ্যালয় দুটির প্রধান শিক্ষকও। মাতামুহুরী ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতাদেরও একজন তিনি। পরে আলীকদম উচ্চবিদ্যালয় সরকারি হয়।

সব মিলিয়ে সেখানে তিনি সবার মনের মণিকোঠায় স্থান করে নেন। সেখানকার মানুষ তাঁকে দুই দুই বার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। পরে অবশ্য তিনি ফেরেন নিজ জন্মভিটায়। 

আবু জাফর ২০১১ সালে মারা যান। তখন রামিমের বয়স প্রায় ২০ বছর। তিনি চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি করছিলেন। বাবার মৃত্যুতে অনেকটা খেই হারিয়ে ফেলেন। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। হঠাৎই মনে হয়, বাবা সময় পেলেই খেতে হাত লাগাতেন। ফলাতেন ফসল। তিনিও মনস্থির করলেন খামারি হয়ে উঠবেন। অবশ্য এর মধ্যে আইন বিষয়ে পড়া শেষ করে ছয় মাস শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজও করেছেন; কিন্তু লক্ষ্য থেকে সরেননি একবিন্দুও। 

২০১৯ সালের শেষের দিকে কৃষি অধিদপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অফিস ঘুরে ঘুরে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন রামিম। বিভিন্ন খামার পরিদর্শন করে কৃষি, মৎস্য ও গরু-ছাগল পালন সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা নেন। 

উদ্যোক্তা আদনান রামিম বলেন, ‘কৃষি পরিবারে আমার জন্ম। আমার বাবা জীবনের সবটুকু সময় সমাজের কল্যাণে ব্যয় করেছেন। বাবা ও চাচারা সবাই উচ্চশিক্ষিত। আমি দেখতাম, তাঁরা সময় পেলেই নিজের জমিতে কৃষি কাজ করতেন। ২০১৯ সালে ভাবলাম, উর্বর জমিতে সবজির চাষই উত্তম। তা ছাড়া কৃষির প্রতি বেশি আগ্রহ ও বর্তমান সময়ে কৃষিবিপ্লবের চিন্তা থেকেই কৃষিতে আসা।’ 

রামিম জানান, ২০২০-২১ সালে ৭ একর জমিতে চারটি পুকুর খনন করেন। পুকুরে ছয় জাতের মাছ চাষ করছেন। দেশি-বিদেশি ৩৪ জাতের ফলদ ও ঔষধি গাছ লাগিয়েছেন। ১৮ প্রজাতির বিষমুক্ত সবজির চাষ করেছেন। দেশি-বিদেশি ছাগল ও বিলুপ্তপ্রায় ১২ জাতের মুরগি-পাখির খামার গড়েছেন। আদনান রামিম বলেন, এখন খামারের সবজি বিক্রি করে মাসে খরচ বাদ দিয়ে লক্ষাধিক টাকা রোজগার হয়। আগামী রমজানে ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকার পেঁপে ও মাছ বিক্রি হবে। কোরবানির ঈদে ৩০-৪০টি ছাগল বিক্রির উপযুক্ত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত