Ajker Patrika

তিন ধরনের ব্যাকটেরিয়া হাতিরঝিলের পানিতে

মাহমুদ সোহেল, ঢাকা
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২১, ১৭: ২২
তিন ধরনের ব্যাকটেরিয়া  হাতিরঝিলের পানিতে

‘হাতিরঝিলের দূষিত পানিতে লোহাও গলে যাবে।’ সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে হাতিরঝিল নিয়ে এমন মন্তব্য করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তবে তিনি ভুল কিছু বলেননি। সম্প্রতি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণাও বলছে, হাতিরঝিলের পানিতে তিন রকমের ক্ষতিকর পদার্থ রয়েছে, যেগুলো বাতাসেও রোগের জীবাণু ছড়াতে সক্ষম।

গবেষকদের দাবি, ঢাকার অধিকাংশ এলাকার বর্জ্য ও নোংরা পানি ১১টি ড্রেনের মাধ্যমে হাতিরঝিলে আসছে, যা দূষণের অন্যতম কারণ। আবার শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সেসব জীবাণু মানবদেহে প্রবেশ করে পেটের পীড়াসহ নানা রোগ সৃষ্টি করছে। তা ছাড়া হাতিরঝিলের নৌকা ভ্রমণ ও খাবার হোটেলগুলোও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।

হাতিরঝিল নিয়ে করা এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও দূষণ গবেষক ড. মাহবুবুল হাসান সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি এমন তিন রকম ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান মিলেছে হাতিরঝিলের পানিতে। যার মধ্যে চার রকম ক্ষতিকর জিনও রয়েছে। যেকোনো জাতীয় দিবসে হাতিরঝিলে বিশেষ রঙের পানির ঝরনা চালানো হয়। দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় মানুষ আনন্দে তা উপভোগ করেন। কিন্তু ভয়ের কারণ হচ্ছে ওই পানির মধ্যেও ক্ষতিকর জীবাণু আছে, যা কারও চোখে-মুখে লাগলে সেখানে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। ঝরনা চলাকালে আশপাশের বাতাসের মাধ্যমেও পানিতে থাকা দূষণ ছড়াতে পারে।’

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষক আরও জানান, পান্থপথ, ধানমন্ডি এবং কলাবাগান থেকে আসা বর্জ্য সোনারগাঁও হোটেলের পেছনের ড্রেন দিয়ে পরিশোধন ছাড়াই হাতিরঝিলে ঢুকছে। ভয়ের কারণ হলো কিছু হাসপাতাল ও ক্লিনিকের ডাক্তার নার্স, কর্মীসহ রোগীদের কাপড়ও এই লেকে ধোয়া হচ্ছে। ফলে পোশাকের সঙ্গে এই জীবাণুগুলো হাসপাতালে পৌঁছে যাচ্ছে।

গবেষণায় দাবি করা হয়, বিরূপ পরিবেশেও বেঁচে থাকার ক্ষমতা রয়েছে রোগ সৃষ্টিকারী এসব জিনের। তা ছাড়া হাতিরঝিলের পানিতে ফিকাল স্ট্রেপটোকক্কি, কলিফর্ম ও ফিকাল কলিফর্ম-এর মতো ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে, যা অন্যান্য রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির জানান দেয়। ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে ক্ষতিকর যে চার ধরনের জিনের সন্ধান মিলেছে সেগুলো হলো, এন্টিগ্রন, কনস, টক্সিক শক সিন্ড্রম ও প্যান্টন ভ্যালেন্টাইন লিউকোসিডিন (পি ভি এল) নামক জিন।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, হাতিরঝিলের বয়স এক যুগ পার হয়েছে। এত দিনেও পানি দূষণমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে পারেনি রাজউক। এটা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। এমন অবহেলা ক্ষমার অযোগ্য। পৃথিবীর কোনো আধুনিক দেশেই শহরের বর্জ্য এভাবে পরিশোধন ছাড়া খালে বা ঝিলে ফেলা হয় না। ঢাকার বর্তমান ও সাবেক মেয়ররা এর দায় এড়াতে পারেন না।

রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকার চারপাশের নদী দূষণ বন্ধ করতে না পারলে হাতিরঝিলের পানি নিয়ে কথা বলে লাভ হবে না। হাতিরঝিলে পানি কমে আসলে কেমিক্যাল দিয়ে পানিকে দূষণমুক্ত করার চেষ্টা করা হবে। এ জন্য একটি প্রজেক্ট তৈরির কাজ চলছে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হোলি আর্টিজানের ঘটনায় ‘জঙ্গি সন্দেহে’ আটক ছিলেন অনিন্দ্য, রাজশাহীর সাবেক মেয়র লিটনের চাচাতো ভাই তিনি

‘তেলের ক্রেতা’ হিসেবে ভারতকে আর পাবে না রাশিয়া, জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান: ভারতীয় দুই কোম্পানির ব্যাংক গ্যারান্টি প্রত্যাহার করল বাংলাদেশ

রাবির অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

মহিলা মাদ্রাসা থেকে দুই শিশু শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত