নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা থেকে শেখ হাসিনার বিদায়ের পর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও শাসনব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনার মাধ্যমে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। এই পুনর্গঠন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার জন্য ভূরাজনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়েছে, সহায়তা করতে তারা প্রস্তুত।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বাংলাদেশ সফরে এসেছে মার্কিন প্রতিনিধিদলটি। যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের সহকারী মন্ত্রী ব্রেন্ট নেইম্যান ও পররাষ্ট্র দপ্তরের সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লুর নেতৃত্বাধীন দলের সঙ্গে গতকাল রোববার বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। সেই বৈঠকে সহায়তার বিষয়ে কথা বলে দুই পক্ষ। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে গতকাল আরও ছয়টি বৈঠক করে প্রতিনিধিদলটি।
নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার মাসখানেক পরই অনুষ্ঠিত এ বৈঠকগুলো যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতার ভিত্তি হিসেবে দেখছেন স্থানীয় কূটনীতিকেরা।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন যমুনায় বৈঠক করে মার্কিন প্রতিনিধিদলটি। এ সময় সরকারের নেওয়া সংস্কারের রূপরেখা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, দ্রুততার সঙ্গে ঝুঁকির মুখে থাকা অর্থনীতি পুনর্গঠন, আর্থিক খাত, নির্বাচনী ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও পুলিশে সংস্কারের পাশাপাশি সংবিধান তৈরির প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা দরকার।
ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিদলের ভাষ্য তুলে ধরে ঢাকায় দেশটির দূতাবাস তাদের ফেসবুক পেজে বলেছে, ‘বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, প্রতিষ্ঠান গঠন ও উন্নয়ন সহযোগিতার বিষয়ে নিশ্চিত করেছে আমাদের প্রতিনিধিদল। যেহেতু বাংলাদেশ আরও ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে চাইছে, যুক্তরাষ্ট্র সে প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে প্রস্তুত।’
বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত জুলাই ও আগস্ট মাসে আঁকা গ্রাফিতির ছবিসংবলিত একটি আর্টবুক মার্কিন প্রতিনিধিদলকে উপহার দেন ড. ইউনূস।
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায়। পরে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে মার্কিন সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেশে আর্থিক খাত ও কর কাঠামোয় সংস্কার, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, রপ্তানি বহুমুখী করা ও বাজার উন্নয়নসহ সার্বিক ক্ষেত্রে কারিগরি সহায়তা নিয়ে কথা হয়েছে। তাদের কাছে অর্থসহায়তাও চাওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রতিনিধিরা এসব বিষয়ে একটি কর্মপরিকল্পনা চেয়েছেন।
আর এই বৈঠকের পর প্রতিনিধিদলের তরফ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের নতুন উদ্যমে প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র পৃষ্ঠপোষকতা করবে। আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও টেকসই উন্নয়নকে ঘিরে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে সহায়তার বিষয়গুলো আলোচনায় গুরুত্ব পায়।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনও। এ বৈঠকের পর বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অংশীদার’ হিসেবে বর্ণনা করে প্রতিনিধিদল বলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণের পাশাপাশি এখানে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর তাঁর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
এ ছাড়া পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত দুটি আলাদা বৈঠকে নেতৃত্ব দেন ব্রেন্ট নেইম্যান ও ডোনাল্ড লু। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাণিজ্য ও শ্রমসচিবসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা মার্কিন প্রতিনিধিদলের সদস্যদের সঙ্গে আরও দুটি বৈঠকে অংশ নেন।
পররাষ্ট্রসচিব মনে করেন, দেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থবহ যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য এসব বৈঠকের মাধ্যমে ক্ষেত্র প্রস্তুত হলো। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতে বিভিন্ন স্তরে এই আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যাব। এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটি একটি ভালো ভিত্তি।’ শ্রমের পরিবেশ, মানবাধিকার সুরক্ষা ও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে মার্কিন সহায়তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠকে কথা হয় বলে সচিব জানান।
পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কী কথা হয়েছে, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, এ ক্ষেত্রে মার্কিন দক্ষতা ব্যবহার করা যেতে পারে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। আর ডোনাল্ড লু এবার ঢাকায় এসেছেন দিল্লি হয়ে। এমন প্রেক্ষাপটে ভারতের তোলা কোনো বিষয় নিয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন ও দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন আছে। ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিষয় আলোচনার জন্য এ মিশনগুলো ভালো মাধ্যম।
প্রতিবেশী একটি দেশ বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ সহযোগিতা চেয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, বাংলাদেশ এ ধরনের কোনো আলোচনায় কখনো যায়নি।
গতকালের আলোচনা এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে, এমন প্রশ্নে স্থানীয় একজন কূটনীতিক বলেছেন, দেশটি এরপর বিভিন্ন নির্দিষ্ট বিষয়ে কথা বলতে কারিগরি দল পাঠাতে পারে।
কিছু সংস্কার অত্যন্ত কঠিন: ব্রেন্ট
মার্কিন সহকারী মন্ত্রী ব্রেন্ট নেইম্যান গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ইএমকে সেন্টারে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে বাংলাদেশ যে সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত। এই সংস্কারের কিছু কিছু অত্যন্ত কঠিন, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে এমন যেকোনো সহায়তা দিতে চায় তাঁর দেশ।
একই আলোচনায় উপস্থিত ইউএসএআইডির উপসহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কাউর বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ঐতিহাসিক বিচারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। এখানে সরকারের বর্তমান অগ্রাধিকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে মানিয়ে নিতে পারে, সেদিকগুলো তাঁরা বোঝার চেষ্টা করছেন।
দিনভর একের পর এক বৈঠক শেষে ডোনাল্ড লুসহ কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা ত্যাগ করেছেন। অন্যদের আজ সোমবার ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা থেকে শেখ হাসিনার বিদায়ের পর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও শাসনব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনার মাধ্যমে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। এই পুনর্গঠন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার জন্য ভূরাজনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়েছে, সহায়তা করতে তারা প্রস্তুত।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বাংলাদেশ সফরে এসেছে মার্কিন প্রতিনিধিদলটি। যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের সহকারী মন্ত্রী ব্রেন্ট নেইম্যান ও পররাষ্ট্র দপ্তরের সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লুর নেতৃত্বাধীন দলের সঙ্গে গতকাল রোববার বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। সেই বৈঠকে সহায়তার বিষয়ে কথা বলে দুই পক্ষ। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে গতকাল আরও ছয়টি বৈঠক করে প্রতিনিধিদলটি।
নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার মাসখানেক পরই অনুষ্ঠিত এ বৈঠকগুলো যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতার ভিত্তি হিসেবে দেখছেন স্থানীয় কূটনীতিকেরা।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন যমুনায় বৈঠক করে মার্কিন প্রতিনিধিদলটি। এ সময় সরকারের নেওয়া সংস্কারের রূপরেখা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, দ্রুততার সঙ্গে ঝুঁকির মুখে থাকা অর্থনীতি পুনর্গঠন, আর্থিক খাত, নির্বাচনী ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও পুলিশে সংস্কারের পাশাপাশি সংবিধান তৈরির প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা দরকার।
ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিদলের ভাষ্য তুলে ধরে ঢাকায় দেশটির দূতাবাস তাদের ফেসবুক পেজে বলেছে, ‘বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, প্রতিষ্ঠান গঠন ও উন্নয়ন সহযোগিতার বিষয়ে নিশ্চিত করেছে আমাদের প্রতিনিধিদল। যেহেতু বাংলাদেশ আরও ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে চাইছে, যুক্তরাষ্ট্র সে প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে প্রস্তুত।’
বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত জুলাই ও আগস্ট মাসে আঁকা গ্রাফিতির ছবিসংবলিত একটি আর্টবুক মার্কিন প্রতিনিধিদলকে উপহার দেন ড. ইউনূস।
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায়। পরে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে মার্কিন সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেশে আর্থিক খাত ও কর কাঠামোয় সংস্কার, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, রপ্তানি বহুমুখী করা ও বাজার উন্নয়নসহ সার্বিক ক্ষেত্রে কারিগরি সহায়তা নিয়ে কথা হয়েছে। তাদের কাছে অর্থসহায়তাও চাওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রতিনিধিরা এসব বিষয়ে একটি কর্মপরিকল্পনা চেয়েছেন।
আর এই বৈঠকের পর প্রতিনিধিদলের তরফ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের নতুন উদ্যমে প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র পৃষ্ঠপোষকতা করবে। আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও টেকসই উন্নয়নকে ঘিরে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে সহায়তার বিষয়গুলো আলোচনায় গুরুত্ব পায়।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনও। এ বৈঠকের পর বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অংশীদার’ হিসেবে বর্ণনা করে প্রতিনিধিদল বলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণের পাশাপাশি এখানে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর তাঁর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
এ ছাড়া পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত দুটি আলাদা বৈঠকে নেতৃত্ব দেন ব্রেন্ট নেইম্যান ও ডোনাল্ড লু। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাণিজ্য ও শ্রমসচিবসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা মার্কিন প্রতিনিধিদলের সদস্যদের সঙ্গে আরও দুটি বৈঠকে অংশ নেন।
পররাষ্ট্রসচিব মনে করেন, দেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থবহ যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য এসব বৈঠকের মাধ্যমে ক্ষেত্র প্রস্তুত হলো। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতে বিভিন্ন স্তরে এই আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যাব। এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটি একটি ভালো ভিত্তি।’ শ্রমের পরিবেশ, মানবাধিকার সুরক্ষা ও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে মার্কিন সহায়তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠকে কথা হয় বলে সচিব জানান।
পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কী কথা হয়েছে, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, এ ক্ষেত্রে মার্কিন দক্ষতা ব্যবহার করা যেতে পারে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। আর ডোনাল্ড লু এবার ঢাকায় এসেছেন দিল্লি হয়ে। এমন প্রেক্ষাপটে ভারতের তোলা কোনো বিষয় নিয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন ও দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন আছে। ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিষয় আলোচনার জন্য এ মিশনগুলো ভালো মাধ্যম।
প্রতিবেশী একটি দেশ বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ সহযোগিতা চেয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, বাংলাদেশ এ ধরনের কোনো আলোচনায় কখনো যায়নি।
গতকালের আলোচনা এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে, এমন প্রশ্নে স্থানীয় একজন কূটনীতিক বলেছেন, দেশটি এরপর বিভিন্ন নির্দিষ্ট বিষয়ে কথা বলতে কারিগরি দল পাঠাতে পারে।
কিছু সংস্কার অত্যন্ত কঠিন: ব্রেন্ট
মার্কিন সহকারী মন্ত্রী ব্রেন্ট নেইম্যান গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ইএমকে সেন্টারে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে বাংলাদেশ যে সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত। এই সংস্কারের কিছু কিছু অত্যন্ত কঠিন, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে এমন যেকোনো সহায়তা দিতে চায় তাঁর দেশ।
একই আলোচনায় উপস্থিত ইউএসএআইডির উপসহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কাউর বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ঐতিহাসিক বিচারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। এখানে সরকারের বর্তমান অগ্রাধিকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে মানিয়ে নিতে পারে, সেদিকগুলো তাঁরা বোঝার চেষ্টা করছেন।
দিনভর একের পর এক বৈঠক শেষে ডোনাল্ড লুসহ কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা ত্যাগ করেছেন। অন্যদের আজ সোমবার ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
২০ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫