Ajker Patrika

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে টেকনাফে বৃষ্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক, টেকনাফ থেকে
আপডেট : ১৩ মে ২০২৩, ১২: ০৪
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে টেকনাফে বৃষ্টি

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় টেকনাফের তাপমাত্রা ৩৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। তবে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে আসতে থাকে তাপমাত্রা। রাত ১০টায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়, এরপর মধ্যরাত থেকে শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। 

আজ শনিবার সকালে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে উপকূলীয় এই উপজেলার আবহাওয়া হয়ে আছে মেঘাচ্ছন্ন। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও হচ্ছে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ সন্ধ্যা থেকে কক্সবাজার ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে। এর ফলে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, শাহপরীর দ্বীপ, সেন্ট মার্টিন, চকরিয়া এলাকায় শুরু হতে পারে তীব্র বাতাস ও বৃষ্টিপাত।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঘূর্ণিঝড় নিয়ে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি বলেছে, মোখা পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানকালে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। 

এটি গত মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। 

এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে আগামীকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার ও উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। 

এদিকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

টেকনাফে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে

টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, উপজেলায় ১০১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে, যার মধ্যে ৩৭টি সেন্ট মার্টিনের জন্য। এছাড়া শাহপরীর দ্বীপের জন্য আলাদাভাবে কাজ করবে বিভিন্ন সংস্থা। 

বিভিন্ন সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকেরা প্রস্তুত আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁরা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন, যাতে মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের আগে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারে। এ ছাড়া আমরা পরিকল্পনা করেছি, যেসব জায়গায় শুকনা খাবার লাগবে এবং যেসব জায়গায় রান্না করা খাবার লাগবে, সেগুলো সময়মতো পৌঁছে দেওয়ার। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও সংসদ সদস্যসহ সবাই এ বিষয়ে সচেষ্ট আছেন।’ 

এদিকে মহা বিপৎসংকেত হওয়ায় রাতে মাইকিং করা হয় সেন্ট মার্টিনে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সেন্ট মার্টিনে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত শুরু হয়। কয়েক শ লোক আশ্রয়কেন্দ্রে গেলেও সকালে ফিরে আসেন তাঁরা। হাজার দেড়েক লোক সেন্ট মার্টিন থেকে টেকনাফে চলে আসে। বাকি লোকজন সরিয়ে নেওয়ার আকুতি জানিয়েছে। সেন্ট মার্টিনে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো যথাযথ নয় বলেও দাবি দ্বীপবাসীর। 

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘এখন সাগর উত্তাল, পারাপারের কোনো সুযোগ নেই। আমরা সেন্টমার্টিনকে বিশেষ নজরেই রেখেছি।’ 

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘এখন এখানে বৃষ্টি নেই। তবে রাতে বৃষ্টি ছিল। বাতাস নেই এখন। মেঘ আছে। আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করছি।’

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত