Ajker Patrika

উন্নয়নের নামে পান্থকুঞ্জ পার্কের ৪০ প্রজাতির ২ হাজার উদ্ভিদ ধ্বংস করা হয়েছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারওয়ান বাজার থেকে পলাশী পর্যন্ত অংশ নির্মাণের প্রকল্প বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। আজ শুক্রবার বিকেলে কারওয়ান বাজারের পান্থকুঞ্জ পার্কে। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারওয়ান বাজার থেকে পলাশী পর্যন্ত অংশ নির্মাণের প্রকল্প বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। আজ শুক্রবার বিকেলে কারওয়ান বাজারের পান্থকুঞ্জ পার্কে। ছবি: সংগৃহীত

উন্নয়ন প্রকল্পের নামে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে র‍্যাম্প নির্মাণ করতে গিয়ে পান্থকুঞ্জ পার্কের প্রায় ৪০ প্রজাতির ২ হাজার উদ্ভিদ ধ্বংস করা হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ের একটি র‍্যাম্প পান্থকুঞ্জ পার্কের বুক চিরে কারওয়ান বাজার গোল চত্বরের দিকে নামানো হবে, যেখানে কারওয়ান বাজার মোড়ে বর্তমান পরিস্থিতিতেই অসহনীয় যানজটের মুখোমুখি হতে হয়। আরেকটি সংযোগ সড়ক পান্থকুঞ্জ পার্ক হয়ে পলাশী পর্যন্ত যাবে। এই সড়ক কারওয়ান বাজার থেকে পলাশী পর্যন্ত বিদ্যমান রাস্তার উপযোগিতাও নষ্ট করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিবেশ নষ্ট করার পাশাপাশি এ প্রকল্প তার আশপাশের এলাকায় যানজট বাড়াবে।

আজ শুক্রবার রাজধানীর পান্থকুঞ্জ পার্কে অনুষ্ঠিত ‘পান্থকুঞ্জ রক্ষায় সাংস্কৃতিক সমাবেশে’ বক্তারা এসব কথা বলেন। সমাবেশে হাতিরঝিল জলাধার ও পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংস করে পলাশী পর্যন্ত চলমান এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে র‍্যাম্প নির্মাণ প্রকল্পের কাজ বাতিল ও পার্কে অবস্থানরত আন্দোলনকারীদের ওপর নৃশংস হামলার প্রতিবাদ জানানো হয়।

‘বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন’ এ সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার বিধ্বংসী উন্নয়নের বিরুদ্ধে আমাদের বারবার কথা বলতে হয়েছে। ২০১৫-১৬ সালের দিকে যখন সুন্দরবনের রামপালবিরোধী আন্দোলন হচ্ছিল, তখন সরকার কোনো ধরনের কর্ণপাত করেনি। নানা ধরনের কুযুক্তি দিয়ে তাঁরা ওই প্রকল্পকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করেছিল। খুবই দুঃখজনক, আজ যখন গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটা অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে আমাদের এভাবে দাঁড়াতে হয়। তাঁরা কেন এ বিষয়গুলো বোঝে না? যাঁরা গণ-অভ্যুত্থানের শক্তি হয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন, সে মানুষগুলোই সবচেয়ে বেশি অ্যান্টি পিপল (জনবিরোধী) আচরণ করছেন।

অভ্যুত্থান একশ্রেণির মানুষকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, আরেক শ্রেণির মানুষকে কোথাও জায়গা দিচ্ছে না জানিয়ে উমামা ফাতেমা বলেন, ‘আমাদেরই যাঁরা বন্ধুবান্ধব, আমাদেরই যাঁরা ভাই-ব্রাদার তাঁরাও ক্ষমতায় আছেন। আবার আমাদেরই যাঁরা সহযোদ্ধা, যাঁরা এই অভ্যুত্থানে নানা পেরিফেরির মানুষদের এনগেজ করেছেন, এই অভ্যুত্থানে অংশীদার করিয়েছেন, মিছিল নামিয়েছেন, তাঁদের আজ রাস্তায় বসে আন্দোলন করতে হচ্ছে। এটা কি আয়রনি অব ফেট (ভাগ্যের নির্মম পরিহাস)? কীভাবে একটি অভ্যুত্থান একশ্রেণির মানুষকে আকাশের চূড়ায় নিয়ে যায়, আর আরেক শ্রেণির মানুষকে সে কোথাও জায়গা দেয় না। তাহলে আসলে অভ্যুত্থান সফল হলো কোথায়? আজকে সামান্য একটা পার্ক বাঁচানোর জন্য আমাদের দাঁড়াতে হচ্ছে।’

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারওয়ান বাজার থেকে পলাশী পর্যন্ত অংশ নির্মাণের প্রকল্প বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। আজ শুক্রবার বিকেলে কারওয়ান বাজারের পান্থকুঞ্জ পার্কে। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারওয়ান বাজার থেকে পলাশী পর্যন্ত অংশ নির্মাণের প্রকল্প বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। আজ শুক্রবার বিকেলে কারওয়ান বাজারের পান্থকুঞ্জ পার্কে। ছবি: সংগৃহীত

উমামা ফাতেমা আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে হলে তো বোঝা যেত, কারণ শেখ হাসিনা একজন স্বৈরশাসক ছিল। সে কারও কথাই শুনত না। তার কাজই ছিল, দমনপীড়ন করে পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে, ছাত্রলীগ দিয়ে পিটিয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে অপমান করে মব চালিয়ে দিয়ে নানাভাবে আন্দোলনগুলোকে অবদমন করা। কিন্তু যখন একটি অন্তর্বর্তী সরকার একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, গত ১৫ বছরে যত ধরনের অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, সেগুলো সরকারের রিভিউ করা দরকার ছিল। কিন্তু আগের যত ধরনের অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্প আছে, সেগুলো বেশির ভাগই বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং নানা ধরনের আপস হয়ে গেছে। তাহলে কীভাবে বুঝতে পারব, এটা একটা অভ্যুত্থানের সরকার।’

উমামা ফাতেমা আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি, সরকার আন্দোলনগুলোকে সাবোটাজ করার চেষ্টা না করে আন্দোলনগুলোকে যুক্তি দিয়ে কনভিন্স করবে, জনগণের সঙ্গে কমিউনিকেট করবে। এই অভ্যুত্থানের পেছনে একটা বড় কারণ ছিল, ঢাকা শহরের বাসযোগ্যতা সংকুচিত হয়ে মানুষের মধ্যে চূড়ান্ত বিতৃষ্ণা তৈরি হওয়া। কিন্তু সরকার এ প্রশ্নগুলোকে অ্যাড্রেস করেনি। তাঁরা খুবই গায়েবি কথাবার্তা যেমন মুজিববাদিতা—এসব কথাবার্তা দিয়ে অভ্যুত্থানটাকে জাস্টিফাই করতে চান। কিন্তু অভ্যুত্থানের শরীর যেভাবে করে তৈরি হয়েছে, দিনের পর দিন ঢাকা শহরের মানুষের জীবনটা সংকুচিত হয়ে এসেছে। সেই কথাগুলো অন্তর্বর্তী সরকার অ্যাড্রেস করতে চায় না। দিনের পর দিন মুখে কুলুপ এঁটে রেখে পেছন থেকে সাবোটাজ করার কাজ শেখ হাসিনা করেছে এবং তাকে ভুগতে হয়েছে। আমরা ভবিষ্যতের বাংলাদেশ সাবোটাজের বাংলাদেশ চাই না। আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চাই।’

জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২৩ প্রাপ্ত আব্দুল ওয়াহিদ সরদার এই সাংস্কৃতিক সমাবেশের উদ্বোধন করেন। সমাবেশে ‘বৃক্ষ সখা’ শীর্ষক নাটক পরিবেশন করেন বটতলার সদস্যরা। গান পরিবেশন করে সমগীত, হাফ হার্টেডস্যুডোস, বেতাল, মায়ানগর। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজীব, তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলনের সংগঠক সৈয়দা রত্না, শিল্পী অমল আকাশ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খনিজের সন্ধানে গভীর সমুদ্রে খনন, দুর্লভ জীববৈচিত্র্য বিলুপ্তির শঙ্কা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গভীর সমুদ্রে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ থাকতে পারে এই সম্ভাবনা থেকে ক্রমেই সমুদ্রের গভীরে খনন বাড়ছে। ছবি: সংগৃহীত
গভীর সমুদ্রে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ থাকতে পারে এই সম্ভাবনা থেকে ক্রমেই সমুদ্রের গভীরে খনন বাড়ছে। ছবি: সংগৃহীত

খনিজের খোঁজে সমুদ্রের গভীর থেকে গভীরতর তলদেশে ছুটে বেড়াচ্ছে হাজারো আধুনিক যন্ত্রপাতি। এদিকে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, খনিজ উত্তোলনে ব্যবহৃত এসব যন্ত্রপাতি সমুদ্রতলের জীববৈচিত্র্যের বেশ বড় রকমের ক্ষতি সাধন করছে। এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

সায়েন্স জার্নাল ন্যাচার ইকোলজি অ্যান্ড এভুলেশনে এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।

প্রশান্ত মহাসাগরের একটি দূরবর্তী অঞ্চলের সমুদ্রতলে ৪ হাজারের বেশি প্রাণী চিহ্নিত করেছেন গবেষকেরা, যার ৯০ শতাংশই নতুন প্রজাতি। কিন্তু গবেষকেরা দেখেছেন, যেসব এলাকায় এসব যন্ত্রপাতির কাজ চলছে, সেসব এলাকায় অন্যান্য এলাকার চেয়ে প্রাণীর সংখ্যা ৩৭ শতাংশ কমে গেছে।

‘গ্রিন ইলেকট্রনিকস’ তৈরিতে ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ বিপুল পরিমাণে গভীর সমুদ্রে থাকতে পারে এই সম্ভাবনা থেকে ক্রমেই সমুদ্রের গভীরে খনন বাড়ছে। তবে আন্তর্জাতিক জলসীমায় গভীর সমুদ্র খনন অত্যন্ত বিতর্কিত এবং পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে আরও তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত এটি অনুনমোদিত।

ডিপ-সি মাইনিং কোম্পানি ‘দ্য মেটালস কোম্পানি’র উদ্যোগে লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফি সেন্টার এবং গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণা পরিচালনা করেন।

সমুদ্রতলের ওপর ৮০ কিলোমিটার জুড়ে চালানো পরীক্ষামূলক খননকাজের দুই বছর আগে এবং দুই মাস পরে জীববৈচিত্র্যের তুলনা করেন গবেষক দলটি।

গভীর সমুদ্রে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ থাকতে পারে এই সম্ভাবনা থেকে ক্রমেই সমুদ্রের গভীরে খনন বাড়ছে। ছবি: সংগৃহীত
গভীর সমুদ্রে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ থাকতে পারে এই সম্ভাবনা থেকে ক্রমেই সমুদ্রের গভীরে খনন বাড়ছে। ছবি: সংগৃহীত

তারা বিশেষভাবে ০.৩ মিলিমিটার থেকে ২ সেন্টিমিটার আকারের কীট, সি স্পাইডার, শামুক ও ক্ল্যামের মতো প্রাণীগুলোর দিকে নজর দেন।

গবেষণায় দেখা যায়, যানবাহনের তৈরি করা খননের দাগে প্রাণীর সংখ্যা ৩৭ শতাংশ কমে যায় এবং প্রজাতির বৈচিত্র্য ৩২ শতাংশ হ্রাস পায়।

ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম এবং ইউনিভার্সিটি অব সাউদাম্পটনের পিএইচডি গবেষক প্রধান গবেষক ইভা স্টুয়ার্ট বলেন, ‘একটা মেশিন প্রায় পাঁচ সেন্টিমিটার পলিমাটি সরিয়ে দেয়। এই স্তরেই বেশিরভাগ প্রাণী থাকে। তাই আপনি যদি সেই পলি সরিয়ে ফেলেন, অবশ্যই তার সঙ্গে ওই প্রাণীরাও সরিয়ে যাচ্ছে।’

ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফি সেন্টারের ড. গুয়াদালুপ ব্রিবিয়েসকা-কনত্রেরাস বলেন, ‘সরাসরি মেশিনের আঘাতে মারা না-ও যেতে পারে, কিন্তু খনন কার্যক্রমের দূষণ ধীরে ধীরে অপেক্ষাকৃত কম সহনশীল কিছু প্রজাতিকে মেরে ফেলতে পারে। কিছু প্রাণী হয়তো সরে যেতে পারে কিন্তু পরে তারা ওই স্থানে আবার ফিরে আসবে কি না সন্দেহ।’

সমুদ্রের গভীরে খনন বাড়তে থাকায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে দুর্লভ প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণী। ছবি: ওসেন সার্ভে
সমুদ্রের গভীরে খনন বাড়তে থাকায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে দুর্লভ প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণী। ছবি: ওসেন সার্ভে

তবে খনন এলাকার আশপাশের অংশগুলোতে প্রাণীর সংখ্যা কমেনি বলে জানান তিনি।

ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের গবেষক ড. অ্যাড্রিয়ান গ্লোভার বিবিসি নিউজকে বলেন, ‘আমরা হয়তো আরও বেশি প্রভাব আশা করেছিলাম, কিন্তু তেমন কিছু দেখা যায়নি। বরং শুধু কোন প্রজাতি অন্যদের তুলনায় বেশি আধিপত্য বিস্তার করছে সেটিতে সামান্য পরিবর্তন দেখা গেছে।’

এদিকে এ গবেষণার তথ্য দেখে দ্য মেটালস কোম্পানির একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এই তথ্য দেখে উৎসাহিত। বছরের পর বছর ধরে কর্মীরা সতর্ক করে আসছিলেন যে আমাদের কার্যক্রমের প্রভাব খনির এলাকা থেকে হাজার কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু তথ্য বলছে, জীববৈচিত্র্যের ওপর যে কোনো প্রভাব শুধুমাত্র সরাসরি খনন করা এলাকাতেই সীমাবদ্ধ।’

তবে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এটি খনি কোম্পানিগুলোর জন্য ভালো খবর নয়।

গভীর সমুদ্রে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ থাকতে পারে এই সম্ভাবনা থেকে ক্রমেই সমুদ্রের গভীরে খনন বাড়ছে। ছবি: সংগৃহীত
গভীর সমুদ্রে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ থাকতে পারে এই সম্ভাবনা থেকে ক্রমেই সমুদ্রের গভীরে খনন বাড়ছে। ছবি: সংগৃহীত

থিঙ্কট্যাঙ্ক চাথাম হাউসের এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোসাইটি সেন্টারের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. প্যাট্রিক শ্রোডার বলেন, ‘আমার মনে হয়, গবেষণাটি দেখায় যে বর্তমান খনন প্রযুক্তিগুলো এতটাই ক্ষতিকর যে বৃহৎ পরিসরে বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। এগুলো ছিল পরীক্ষামূলক খনন, আর তাতেই প্রভাব ছিল উল্লেখযোগ্য। যদি এটি বড় পরিসরে করা হয়, ক্ষতি আরও ভয়াবহ হবে।’

গভীর সমুদ্র খনন নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই তীব্র বিতর্ক চলছে। এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে এক কঠিন দোটানা।

সম্প্রতি প্রশান্ত মহাসাগরের ক্ল্যারিয়ন-ক্লিপারটন জোনে প্রায় ৬ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার জুড়ে পরীক্ষা চালানো হয়েছে। বিস্তৃত এই এলাকায় রয়েছে নিকেল, কোবল্ট ও তামা সমৃদ্ধ প্রায় ২১ বিলিয়ন টন বহুধাতব নডিউল।

বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তির জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ খনিজগুলোর প্রয়োজন। সোলার প্যানেল, উইন্ড টারবাইন এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি সব ক্ষেত্রেই এগুলো অপরিহার্য উপাদান।

গভীর সমুদ্রে খনন বন্ধ করতে পরিবেশ রক্ষাকর্মীরা নানাভাবে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। ছবি: গ্রিন পিস।
গভীর সমুদ্রে খনন বন্ধ করতে পরিবেশ রক্ষাকর্মীরা নানাভাবে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। ছবি: গ্রিন পিস।

২০৪০ সালের মধ্যে এসব খনিজের চাহিদা অন্তত দ্বিগুণ হতে পারে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইএ)।

অনেক বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদ এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, এই খনিজগুলো কোথাও না কোথাও থেকে সংগ্রহ করতেই হবে। গভীর সমুদ্র খনন প্রকৃতির ওপর অকল্পনীয় ক্ষতি ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

গবেষকেরা বলছেন, গভীর সমুদ্রের অজানা জীববৈচিত্র্য পুরোপুরি অন্বেষণ করার আগেই সেগুলো বিপন্ন হয়ে পড়তে পারে। সাগরগুলো গ্রহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, অথচ ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে সেগুলো আগেই গুরুতর ঝুঁকিতে রয়েছে।

আন্তর্জাতিক জলসীমায় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল সিবেড অথরিটি (আইএসএ) এখনো বাণিজ্যিক খননের অনুমোদন না দিলেও অনুসন্ধানের জন্য ইতিমধ্যে ৩১টি লাইসেন্স দিয়েছে। যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সসহ মোট ৩৭টি দেশ গভীর সমুদ্র খননে সাময়িক নিষেধাজ্ঞার পক্ষে রয়েছে। এই সপ্তাহে নরওয়ে আর্কটিকসহ নিজেদের জলসীমায় খনন পরিকল্পনা স্থগিত করেছে।

তবে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক খনন প্রকল্পগুলো দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত এপ্রিল মাসে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় অস্ত্র তৈরিতে প্রয়োজনীয় খনিজের সরবরাহ নিশ্চিত করতে।

যদি সিবেড অথরিটি সিদ্ধান্ত নেয় যে বর্তমান প্রযুক্তি দিয়ে খনন পরিবেশের জন্য অতিমাত্রায় ক্ষতিকর, তবে কোম্পানিগুলোকে কম ক্ষতিকর পদ্ধতি আবিষ্কারে কাজ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বায়ুদূষণে শীর্ষে লাহোর, ঢাকার বাতাস সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ১১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণের সংকটে ভুগছে রাজধানী শহর ঢাকা। বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় প্রায়ই দশের মধ্যে অবস্থান করছে বাংলাদেশের রাজধানী। এর মধ্যে আজ বুধবার তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে শহরটি।

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১৯৭। যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

আজ বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে পাকিস্তানের লাহোর। শহরটির বায়ুমান ২৪৮, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো ভারতের কলকাতা (২৪৭), ভিয়েতনামের হ্যানয় (২৩৬), পাকিস্তানের করাচি (২২৮) ও ভারতের দিল্লি (২১০)।

আজ ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি—ইস্টার্ন হাউজিং, দক্ষিণ পল্লবী, বেচারাম দেউরি, গোড়ান, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, কল্যাণপুর, পেয়ারাবাগ রেললাইন, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, শান্তা ফোরাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম বিল্ডিং।

ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্‌রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্‌যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলা এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়

অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্‌রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।

সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।

যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।

ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার তাপমাত্রা আজ ১৬ ডিগ্রির ঘরে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ সোমবার সকালে ছিল ১৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯১ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সাধারণত অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১২ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ৩০ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বায়ুদূষণের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ঢাকা, খুব অস্বাস্থ্যকর বেচারাম দেউরির বাতাস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ২৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণের সংকটে ভুগছে রাজধানী শহর ঢাকা। বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় প্রায়ই দশের মধ্যে অবস্থান করছে শহরটি। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার তালিকায় আছে দ্বিতীয় স্থানে।

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৯টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ২৫০, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি—বেচারাম দেউরি, গোড়ান, কল্যাণপুর, পল্লবী দক্ষিণ, ইস্টার্ন হাউজিং, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, শান্তা ফোরাম, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, পেয়ারাবাগ রেল লাইন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম বিল্ডিং।

ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্‌রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্‌যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।

বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষে থাকা ভারতের কলকাতার বায়ুমান আজ ২৬২, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের বাতাসের নির্দেশক। শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো মিসরের কায়রো (২৩৯), ভারতের দিল্লি (২৩২) ও কুয়েতের কুয়েত সিটি (১৯৮)।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়

অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্‌রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।

সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।

যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।

ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত