Ajker Patrika

মার্কিন কৃষিতে রাসায়নিক সারের বিকল্প হয়ে উঠছে মানবমূত্র, বাড়ছে উৎপাদন

আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৫, ১২: ২১
নিজের কৃষি খামারে মানুষের মূত্র থেকে তৈরি সার নিয়ে কাজ করছেন বেটসি উইলিয়ামস। ছবি: রিচ আর্থ ইনস্টিটিউট
নিজের কৃষি খামারে মানুষের মূত্র থেকে তৈরি সার নিয়ে কাজ করছেন বেটসি উইলিয়ামস। ছবি: রিচ আর্থ ইনস্টিটিউট

প্রাচীন রোম ও চীনে মূত্রকে প্রাকৃতিক সার হিসেবে ব্যবহার করা হতো। সম্প্রতি চীনা বিজ্ঞানীরাও মূত্র ব্যবহার করে সার উৎপাদনের চেষ্টা করছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যের কৃষকেরা ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি টেকসই কৃষির লক্ষ্যে প্রাচীন চীনা ও রোমক পদ্ধতি আবারও গ্রহণ করছেন।

মানুষের মূত্র থেকে সার উৎপাদনের প্রকল্প নিয়ে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিচ আর্থ ইনস্টিটিউট (আরইআই) পরিচালিত ইউরিন নিউট্রিয়েন্ট রিক্লেমেশন প্রোগ্রামে (ইউএনআরপি) অংশগ্রহণকারী বেটসি উইলিয়ামস ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিজের প্রস্রাব সংগ্রহ ও দান করছেন।

উইন্ডহ্যাম কাউন্টিতে বেটসির ২৫০ জন প্রতিবেশী প্রতিবছর প্রায় ১২ হাজার গ্যালন (৪৫ হাজার ৪০০ লিটার) প্রস্রাব সরবরাহ করেন, যা পুনর্ব্যবহৃত বা ‘পি-সাইকেলড’ হয়ে কৃষিজমিতে সার হিসেবে প্রয়োগ করা হয়।

বেটসি উইলিয়ামস বলেন, ‘আমরা এমন অনেক কিছু খাই, যাতে পুষ্টি উপাদান থাকে এবং সেই উপাদানগুলোর একটি বড় অংশ আমাদের শরীরের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর আবারও পুনর্ব্যবহারযোগ্য হয়ে খাদ্য উৎপাদনে সহায়তা করতে পারে—আমাদের ও পশুপাখির জন্য। তাই আমার কাছে এটি সম্পূর্ণ যৌক্তিক মনে হয়।’

সংগ্রহ করা প্রস্রাবকে ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১৭৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় ৯০ সেকেন্ড ধরে পাস্তুরিত করা হয় এবং পরে ট্যাংকে সংরক্ষণ করা হয়, যতক্ষণ না এটি জমিতে ছিটানোর উপযোগী হয়। এই চর্চার শিকড় প্রাচীন সভ্যতাগুলোতে থাকলেও আধুনিক বিজ্ঞানও এর পক্ষে সমর্থন দিচ্ছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রস্রাব সার হিসেবে ব্যবহৃত হলে এমনকি কম উর্বর মাটিতেও কেল ও পালং শাকের উৎপাদন দ্বিগুণের বেশি বাড়তে পারে। প্রস্রাব নাইট্রোজেন ও ফসফরাসে সমৃদ্ধ, যা ঠিক সেই একই পুষ্টি উপাদান, যা রাসায়নিক সারে পাওয়া যায়। রাসায়নিক সারের যে পরিবেশগত ক্ষতি তা প্রস্রাবে নেই। রাসায়নিক সার উৎপাদনে উচ্চ মাত্রায় জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর হ্যাবার-বস পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় এবং ফসফরাস আহরণের ফলে বিষাক্ত বর্জ্য উৎপন্ন হয়। বিপরীতে, প্রস্রাব হলো একটি সহজলভ্য সম্পদ। উইলিয়ামসের ভাষায়, ‘প্রত্যেকেই প্রস্রাব করে। এটি একপ্রকার অব্যবহৃত সম্পদ।’

আরইআইয়ের সঙ্গে কাজ করা মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ন্যান্সি লাভ প্রস্রাব পুনর্ব্যবহারের পরিবেশগত সুবিধাগুলোর ওপর জোর দেন। প্রস্রাবকে রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করলে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমে এবং পানি ব্যবহার প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। ২০১২ সাল থেকে ইউএনআরপি শৌচাগারের ফ্লাশিং কমিয়ে প্রায় ২ দশমিক ৭ মিলিয়ন গ্যালন (১০ দশমিক ২ মিলিয়ন লিটার) পানি সাশ্রয় করেছে।

ন্যান্সি লাভ বলেন, ‘আমরা এখন যা করি, তা হলো প্রস্রাবকে প্রচুর পরিমাণে পানির সঙ্গে মিশিয়ে পাইপ দিয়ে শোধনাগারে পাঠাই, সেখানে প্রচুর শক্তি ব্যয় করে এটিকে আবার পরিবেশে ফেরত পাঠাই—তাও একটি সক্রিয় অবস্থায়।’

একটি খেতে মূত্র থেকে সার ছিটানোর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি। ছবি: রিচ আর্থ ইনস্টিটিউট
একটি খেতে মূত্র থেকে সার ছিটানোর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি। ছবি: রিচ আর্থ ইনস্টিটিউট

যখন প্রস্রাব সরাসরি জলাশয়ে প্রবাহিত হয়, তখন এতে থাকা নাইট্রোজেন ও ফসফরাস শৈবাল বিস্তার ঘটিয়ে জলজ পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটায়। আরইআই-এর নির্বাহী পরিচালক জামিনা শুপ্যাক বলেন, ‘আমাদের দেহ প্রচুর পুষ্টি উপাদান উৎপাদন করে, কিন্তু বর্তমানে সেগুলো শুধু অপচয়ই হচ্ছে না, বরং এগুলো পরিবেশে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করছে।’

প্রস্রাবকে কৃষিজমিতে ব্যবহারের মাধ্যমে এই পুষ্টি উপাদানগুলো জলাশয় দূষিত না করে ফসল উৎপাদনে ব্যবহৃত হতে পারে। আরইআই এবং কৃষকেরা মাটির আর্দ্রতা পর্যবেক্ষণ করে এবং প্রস্রাব প্রয়োগের সময় নির্ধারণ করে যাতে গাছপালা সর্বাধিক পুষ্টি শোষণ করতে পারে এবং দূষণ কম হয়। তবে শুপ্যাক স্বীকার করেন, ‘এর মানে এই নয় যে, একেবারেই কোনো প্রবাহ হবে না।’

এই চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, ‘পি-সাইকেলিং’ বা প্রস্রাবের পুনর্ব্যবহার জলাশয়ে পুষ্টি দূষণের মাত্রা কমায়। বর্তমানে, রাসায়নিক সার ও অপরিশোধিত প্রস্রাব উভয়ই পানিদূষণের জন্য দায়ী। কিন্তু প্রস্রাব পুনর্ব্যবহার করলে কেবল কৃষিজমি থেকে অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদান নদী ও হ্রদে প্রবাহিত হতে পারে।

কেবল ভারমন্ট নয়, বিশ্বের অন্যান্য স্থানেও অনুরূপ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্যারিসে স্বেচ্ছাসেবকেরা প্রস্রাব সংগ্রহ করে গম চাষের জন্য সার তৈরি করছেন। সুইডেনে কিছু উদ্যোক্তা প্রস্রাব থেকে সার তৈরি করে গোতল্যান্ড অঞ্চলের শৈবাল বিস্তার প্রতিরোধ করছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা, নেপাল ও নাইজারেও পরীক্ষামূলক প্রকল্প পরিচালিত হয়েছে।

এভাবে বিভিন্ন ছোট ছোট ট্যাংকের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়ি থেকে মূত্র সংগ্রহ করা হয় বেটসির নিজের কাউন্টি থেকে। ছবি: রিচ আর্থ ইনস্টিটিউট
এভাবে বিভিন্ন ছোট ছোট ট্যাংকের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়ি থেকে মূত্র সংগ্রহ করা হয় বেটসির নিজের কাউন্টি থেকে। ছবি: রিচ আর্থ ইনস্টিটিউট

তবে বৃহৎ পরিসরে ‘পি-সাইকেলিং’ বাস্তবায়নে বেশ কিছু বাধা আছে। ভারমন্টে প্রস্রাবের চাহিদা সরবরাহের তুলনায় বেশি, কিন্তু সংগ্রহ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ করা কঠিন। কারণ, আইনগতভাবে বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা আছে। শুপ্যাক ব্যাখ্যা করেন, ‘অনেক সময় আপনি যখন কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে যান, তারা বলেন—প্রস্রাবের জন্য আমাদের কোনো নির্দিষ্ট ফরম নেই—এটি বায়োসলিডস বা পয়ঃশোধন ব্যবস্থার মধ্যে পড়ে। ফলে এটি এমনভাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়নি, যাতে আমাদের কাজটি সহজ হয়।’

এই সমস্যার সমাধানে আরইআই বিদ্যমান অনুমোদিত সংস্থাগুলো, যেমন সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কারকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করছে। ভারমন্টের পরিবেশ সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা ইমন টুয়োহিগ বলেন, আরইআই প্রস্রাব পুনর্ব্যবহারে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করছে এবং একটি কার্যকর নিয়মকানুন তৈরি করেছে।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আরইআই-এর কাছে প্রয়োজনীয় সব অনুমতি আছে। যার মধ্যে আছে—পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার অনুমতি এবং প্রস্রাব পরিবহনের জন্য বর্জ্য পরিবহন লাইসেন্স। সংগঠনটি ম্যাসাচুসেটস ও মিশিগানে নীতিগত অগ্রগতির জন্য কাজ করছে।’

শুপ্যাক বলেন, ‘আমরা বিষয়টি এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে নতুন পরিবেশগত বিধিবিধান হালনাগাদ করা সব সময় সহজ নয়।’ একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো, পৃথকভাবে সংগ্রহ করা মানব বর্জ্য ও পয়ঃশোধনাগারের একত্রিত বর্জ্যের মধ্যে কোনো আইনগত পার্থক্য না থাকা, যা নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ সৃষ্টি করে।

আরেকটি সীমাবদ্ধতা হলো প্রস্রাবের ওজন ও পরিবহনের কার্বন নিঃসরণ। এই সমস্যা সমাধানে আরইআই-এর সহযোগী সংস্থা একটি ‘ফ্রিজ কনসেন্ট্রেশন’ পদ্ধতি তৈরি করেছে, যা প্রস্রাবের আয়তন ছয় ভাগের এক ভাগে কমিয়ে আনে। এটি বর্তমানে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে।

এসব চ্যালেঞ্জ থাকার পরও ‘পি-সাইকেলিং’ রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমানো, পানি সংরক্ষণ এবং দূষণ প্রতিরোধের একটি সম্ভাবনাময় সমাধান হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা টেকসই কৃষির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর, দূষণে শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে আছে। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সোমবার সকাল ১০টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১৫২। গতকাল রোববার সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটেও বায়ুমান একই ছিল।

বায়ুদূষণের শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় আজ ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা। গতকালও একই অবস্থানে ছিল এই রাজধানী শহরটি।

আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে আছে ভারতের দিল্লি। শহরটির বায়ুমান আজ ৩০৩, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— পাকিস্তানের লাহোর, ভারতের মুম্বাই, উজবেকিস্তানের তাসখন্দ ও ভারতের কলকাতা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৯৭, ১৭৭, ১৫৮ ও ১৫৬।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে নিম্নচাপ, গতিপথ কোন দিকে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ১৪
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে নিম্নচাপ,
গতিপথ কোন দিকে

বর্ষাকাল বিদায় নিয়েছে। প্রকৃতিতে চলছে এখন হেমন্তকাল। কিন্তু আবহাওয়ার আচরণ অনেকটাই গ্রীষ্মকালের মতো। কয়েক দিন ধরে সকালে সূর্যের তাপ কিছুটা কম থাকলেও বেলা গড়িয়ে দুপুর থেকে বিকেলের আগপর্যন্ত এর তীব্রতা বেড়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এটি শক্তিশালী হয়ে পরিণত হতে পারে নিম্নচাপে।

নিম্নচাপ সম্পর্কে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ২১ অক্টোবর একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। পরবর্তীতে এটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান, মধ্য অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে মৌসুমি বায়ু বিদায়ের পর বৃষ্টি কমে গেছে। লঘুচাপ বা নিম্নচাপের প্রভাব কেটে গেলে তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীতের আমেজ পড়বে সারা দেশে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজ সোমবার সকাল ৭টার পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকায় সকালে তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গতকাল রোববার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৫, আর সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টাঙ্গাইলে ৩৫ দশমিক ৭ সেলসিয়াস। সারা দেশে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

কার্তিক মাসে এই তাপমাত্রা স্বাভাবিক কিনা জানতে চাইলে আজ সোমবার সকালে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যে ধরনের গরম পড়ছে সেটি বৃষ্টি কমে যাওয়ার জন্য হয়েছে। সাধারণত অক্টোবর মাসের এই সময় মৌসুমি বায়ু বিদায়ের পর বৃষ্টি কম হয়। তখন তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যায়।

লঘুচাপ বা নিম্নচাপ সৃষ্টির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আগে সাগরে বা উপকূলীয় এলাকায় অনেক সময় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যায়। তবে বর্তমানে যে গরম পড়েছে, এর সঙ্গে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়া না-হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। আপাতত মনে হচ্ছে কালকের (২১ অক্টোবর) মধ্যে উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এটি পরে নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের তামিলনাড়ু উপকূলের দিকে যেতে পারে। তবে লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নেওয়ার আগপর্যন্ত এর গতিপথ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না। আর নিম্নচাপের প্রভাব কেটে গেলে দেশের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমে শীতের আমেজ পড়বে।

হাফিজুর রহমান আরও বলেন, সূর্যের দক্ষিণায়ন (দক্ষিণ দিকে হেলে পড়া) এখনো পুরোপুরি হয়নি। এই দক্ষিণায়ন হলে দিনের ব্যাপ্তি আরও কমবে, তাপমাত্রা তখন কমে শীতও বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার বায়ুমান অস্বাস্থ্যকর, দূষণে শীর্ষে লাহোর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকার শীর্ষ দশের মধ্যে দেখা যাচ্ছে তিন প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের রাজধানী শহর ঢাকা, পাকিস্তান ও দিল্লি। আজ রোববারও ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে আছে।

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ রোববার সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১৫২। যা গতকাল শনিবার ৯টা ১৫ মিনিটে ছিল ১৭২। সে অনুযায়ী বলা যায় আজ দূষণ কিছুটা কমতির দিকে।

বায়ুদূষণের শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় আজ ঢাকা রয়েছে ৭ম স্থানে। গতকাল ছিল ৪র্থ স্থানে।

টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বায়ুদূষণের শীর্ষে আছে পাকিস্তানের লাহোর। শহরটির বায়ুমান আজ ৩১১, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের দিল্লি ও কলকাতা, পাকিস্তানের করাচি ও ভিয়েতনামের হ্যানয়। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৪১, ১৯০, ১৭৭ ও ১৫৯।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা ও আশপাশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ১৮
ঢাকা ও আশপাশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে

কার্তিক মাস চলে এলেও বেশ ভ্যাপসা গরম পড়েছে সারা দেশে। গতকাল শনিবার সিলেটে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাজধানী ঢাকায় যা ছিল ৩৫ দশমিক ৭। আজ রোববারও আবহাওয়ার তেমন পরিবর্তন হবে না।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৭টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া থাকবে শুষ্ক।

আজ সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।

তবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশের আজকের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৪ হাজার এএসআই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত