জুবায়ের ইবনে কামাল
মন্দার নিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘ম্লান হয়ে এল কণ্ঠে মন্দারমালিকা’। মন্দার অর্থ— স্বর্গের গাছ। পবিত্র ভূমির যে গাছের ফল হয়ে উঠেছিল অভিশপ্ত। রবীন্দ্রনাথও তাঁর লেখার নাম দিয়েছিলেন— ‘স্বর্গ হইতে বিদায়’।
আজ থেকে প্রায় ৪১৫ বছর আগে ষোলো শতকের শুরুতে লেখা হয়েছিল ম্যাকবেথ। বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসে অন্যতম সেরা এক ট্রাজেডি। ম্যাকবেথ নিয়ে সারা দুনিয়ায় কম চর্চা হয়নি। ভিন্ন মোড়কে ভিন্ন বেশে নানা রূপান্তরের মধ্য দিয়ে বারবার ফিরে এসেছে ম্যাকবেথের ট্রাজেডি।
এবার বাংলা ওয়েব সিরিজে ম্যাকবেথ ফিরে এল মন্দার হয়ে, কলকাতার অভিনেতা ও নির্মাতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের হাত ধরে।
শেক্সপিয়ারের বিখ্যাত নাটক ‘ম্যাকবেথ’ অবলম্বনে অনির্বাণ তৈরি তাঁর প্রথম ওয়েব সিরিজ ‘মন্দার’।
এ ওয়েব সিরিজের গল্প গেইলপুর নামের এক অঞ্চলকে ঘিরে। যেখানে মাছ মারা ও মাছের ব্যবসা সবার জীবিকার অংশ। কিন্তু ক্ষমতা ও আধিপত্যে পুরো অঞ্চলের দখল ধরে রেখেছেন একজন। যার কথার বিপরীতে হয় না কিছুই। এমনকি কেউ প্রতিবাদ করার সাহস দেখালে তার শেষ ফলাফল নির্ধারণ করে দেয়া হয়— মৃত্যু।
কিন্তু সেখানেও একসময় ভোর হয়। কেউ কেউ ভাবে— রাজা তো আমিও হতে পারি। এই ওয়েব সিরিজে থাকা বুড়ি চরিত্রের ফিসফিসে ও রহস্যময় সংলাপের মতো, ‘কালের কোলে কপাল ফেরে। কেউ রাজা, কেউ রাজার বাপ’।
এই গেইলপুরের রাজা ডাবলু ভাইয়ের হাতে পুরো মাছের ভেড়ির মালিকানা। তার দুই বিশ্বস্ত অনুচরের মধ্যে রয়েছে বঙ্কা ও মন্দার। হ্যাঁ, এই সেই মন্দার যে কিনা পুরো গল্পের মোড় পাল্টে দিতে চলেছে।
ম্যাকবেথ যারা পড়েছেন তারা জানেন, রাজমুকুট হাতিয়ে নিতে ম্যাকবেথকে খুন করেছিল ডানকান। এখানেও একইভাবে ডাবলু ভাইকে খুন করে সে দখল নিতে চায় মাছের ভেড়ির রাজপাট। তারপর?
কীভাবে ফুলের মুকুট হয়ে ওঠে কাঁটার মুকুট, কিংবা কোন অন্ধকার ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে সবার জন্য অথবা রক্ত-ক্লদ-ঘামে জর্জরিত মন্দারের ভাগ্য বদলের কোন দিকটি উন্মোচিত হবে— তা শেক্সপিয়ারের পাঠকরা জানবেন। কিন্তু অনির্বাণের ‘মন্দার’-এর স্বতন্ত্র গল্প বলার ভঙ্গি ও মুল গল্প থেকে বেরিয়ে খানিকটা নতুনত্ব যে কাউকে চমকে দেবে। গল্পের অনেক কিছুর সঙ্গে বদলে গেছে শেষটাও। যেটা হয়তো আপনি আশা করেননি।
‘মন্দার’ ওয়েব সিরিজের ভাষা ছিল মেদিনীপুর অঞ্চলের মতো। গেইলপুরের ভাষায়, ‘খেয়ে নেবে’ তার উচ্চারণে ‘খাই নিবি’। ‘সে যেই হোক’ হয়েছে ‘সো যেউ হউক’। ‘দিয়ে দিয়েছি’ কথা বদলে ‘দিয়ে দিটি’। ‘থাকলি না কেন?’-র রূপান্তর ‘রইলোনি কেনি’! ‘রাখছি’ হয়ে গেছে ‘রাখিটি’।
সিরিজের অন্যতম প্রধান অভিনেত্রী সোহিনী সরকার বলেছেন, ‘আমাদের টিমে উজান নামে এক ছেলে ছিল। সে মেদিনীপুরে গিয়ে পুরো চিত্রনাট্য স্থানীয় একজনকে দিয়ে বলিয়ে রেকর্ড করে এনেছিল। আমরা সবাই সেটা শুনে শুনে অভ্যাস করতাম। তারপর অনির্বাণকে পাঠাতাম। ও আবার যা যা বদলাতে হবে বলে দিত, মতামত দিত। এভাবেই চর্চা চলেছে অনেক দিন ধরে। তারপর তো একসঙ্গে বসে রিহার্সেল করেছি।’
অনির্বাণ ভট্টাচার্য ম্যাকবেথের বাংলারূপ দিতে গিয়ে অসামান্য বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। লেডি ম্যাকবেথ হয়েছে লাইলি, ডানকানের অনুচর ব্যাঙ্কো হয়েছে বঙ্কা, ম্যাকডাফ হয়েছে মদন, ডানকানের বড় ছেলে ম্যালকম হয়েছে মোঞ্চা, ব্যাঙ্কোর ছেলে ফ্লিয়ান্স এখানে ফন্টুস।
পাশাপাশি মূল নাটকে ডানকানের স্ত্রীর সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও এই ওয়েব সিরিজে সেই চরিত্রটি রাখা হয়েছে। আবার ম্যাকডাফের স্ত্রীকে দেখানো হয়েছে তার বোন হিসেবে।
নির্মাতা সবথেকে বড় খেলাটা খেলেছেন বিখ্যাত ‘থ্রি উইচেস’-এর রূপান্তর করে। এখানে তারা মা, ছেলে ও পোষ্য বিড়াল। কালো বিড়ালের জ্বলজ্বলে চোখ, মা ও ছেলের অদ্ভুত মেকআপ। আর তাদের সংলাপ বলার ভঙ্গি, এমনকি চালচলনও গা ছমছমে, যা পুরো ওয়েব সিরিজে এনে দিয়েছে অস্বস্তিকর উপস্থিতি।
পুরো সিরিজেই মঞ্চ নাটকের এক অদৃশ্য উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। আবহ সঙ্গীত থেকে শুরু করে সংলাপ ও থিয়েটারের বেশ কিছু নান্দনিক দিকও দেখতে পাওয়া যায় এই সিরিজে।
অভিনয়ের কথা আলাদা করে বলবার কিছু নেই। অনির্বাণ ভট্টাচার্য নিজেও অভিনয় করেছেন পুলিশ কর্মকর্তার ছোট একটি চরিত্রে। তাছাড়া অন্যদের মধ্যে সোহিনীকে আলাদা করে চোখে পড়েছে।
সঙ্গে বারবার ড্রোন দিয়ে চিত্রগ্রহন ও সম্পাদনার ক্ষেত্রে কিছু বাহুল্য দৃশ্য ও ক্লোজআপ কিছুটা অদ্ভুত মনে হলেও সবমিলে প্রথম নির্মাণ হিসেবে অনির্বাণ ভট্টাচার্য ‘মন্দার’-এ সাহসী পদক্ষেপ রেখেছেন— এটা হলফ করে বলা যায়।
মন্দার নিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘ম্লান হয়ে এল কণ্ঠে মন্দারমালিকা’। মন্দার অর্থ— স্বর্গের গাছ। পবিত্র ভূমির যে গাছের ফল হয়ে উঠেছিল অভিশপ্ত। রবীন্দ্রনাথও তাঁর লেখার নাম দিয়েছিলেন— ‘স্বর্গ হইতে বিদায়’।
আজ থেকে প্রায় ৪১৫ বছর আগে ষোলো শতকের শুরুতে লেখা হয়েছিল ম্যাকবেথ। বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসে অন্যতম সেরা এক ট্রাজেডি। ম্যাকবেথ নিয়ে সারা দুনিয়ায় কম চর্চা হয়নি। ভিন্ন মোড়কে ভিন্ন বেশে নানা রূপান্তরের মধ্য দিয়ে বারবার ফিরে এসেছে ম্যাকবেথের ট্রাজেডি।
এবার বাংলা ওয়েব সিরিজে ম্যাকবেথ ফিরে এল মন্দার হয়ে, কলকাতার অভিনেতা ও নির্মাতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের হাত ধরে।
শেক্সপিয়ারের বিখ্যাত নাটক ‘ম্যাকবেথ’ অবলম্বনে অনির্বাণ তৈরি তাঁর প্রথম ওয়েব সিরিজ ‘মন্দার’।
এ ওয়েব সিরিজের গল্প গেইলপুর নামের এক অঞ্চলকে ঘিরে। যেখানে মাছ মারা ও মাছের ব্যবসা সবার জীবিকার অংশ। কিন্তু ক্ষমতা ও আধিপত্যে পুরো অঞ্চলের দখল ধরে রেখেছেন একজন। যার কথার বিপরীতে হয় না কিছুই। এমনকি কেউ প্রতিবাদ করার সাহস দেখালে তার শেষ ফলাফল নির্ধারণ করে দেয়া হয়— মৃত্যু।
কিন্তু সেখানেও একসময় ভোর হয়। কেউ কেউ ভাবে— রাজা তো আমিও হতে পারি। এই ওয়েব সিরিজে থাকা বুড়ি চরিত্রের ফিসফিসে ও রহস্যময় সংলাপের মতো, ‘কালের কোলে কপাল ফেরে। কেউ রাজা, কেউ রাজার বাপ’।
এই গেইলপুরের রাজা ডাবলু ভাইয়ের হাতে পুরো মাছের ভেড়ির মালিকানা। তার দুই বিশ্বস্ত অনুচরের মধ্যে রয়েছে বঙ্কা ও মন্দার। হ্যাঁ, এই সেই মন্দার যে কিনা পুরো গল্পের মোড় পাল্টে দিতে চলেছে।
ম্যাকবেথ যারা পড়েছেন তারা জানেন, রাজমুকুট হাতিয়ে নিতে ম্যাকবেথকে খুন করেছিল ডানকান। এখানেও একইভাবে ডাবলু ভাইকে খুন করে সে দখল নিতে চায় মাছের ভেড়ির রাজপাট। তারপর?
কীভাবে ফুলের মুকুট হয়ে ওঠে কাঁটার মুকুট, কিংবা কোন অন্ধকার ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে সবার জন্য অথবা রক্ত-ক্লদ-ঘামে জর্জরিত মন্দারের ভাগ্য বদলের কোন দিকটি উন্মোচিত হবে— তা শেক্সপিয়ারের পাঠকরা জানবেন। কিন্তু অনির্বাণের ‘মন্দার’-এর স্বতন্ত্র গল্প বলার ভঙ্গি ও মুল গল্প থেকে বেরিয়ে খানিকটা নতুনত্ব যে কাউকে চমকে দেবে। গল্পের অনেক কিছুর সঙ্গে বদলে গেছে শেষটাও। যেটা হয়তো আপনি আশা করেননি।
‘মন্দার’ ওয়েব সিরিজের ভাষা ছিল মেদিনীপুর অঞ্চলের মতো। গেইলপুরের ভাষায়, ‘খেয়ে নেবে’ তার উচ্চারণে ‘খাই নিবি’। ‘সে যেই হোক’ হয়েছে ‘সো যেউ হউক’। ‘দিয়ে দিয়েছি’ কথা বদলে ‘দিয়ে দিটি’। ‘থাকলি না কেন?’-র রূপান্তর ‘রইলোনি কেনি’! ‘রাখছি’ হয়ে গেছে ‘রাখিটি’।
সিরিজের অন্যতম প্রধান অভিনেত্রী সোহিনী সরকার বলেছেন, ‘আমাদের টিমে উজান নামে এক ছেলে ছিল। সে মেদিনীপুরে গিয়ে পুরো চিত্রনাট্য স্থানীয় একজনকে দিয়ে বলিয়ে রেকর্ড করে এনেছিল। আমরা সবাই সেটা শুনে শুনে অভ্যাস করতাম। তারপর অনির্বাণকে পাঠাতাম। ও আবার যা যা বদলাতে হবে বলে দিত, মতামত দিত। এভাবেই চর্চা চলেছে অনেক দিন ধরে। তারপর তো একসঙ্গে বসে রিহার্সেল করেছি।’
অনির্বাণ ভট্টাচার্য ম্যাকবেথের বাংলারূপ দিতে গিয়ে অসামান্য বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। লেডি ম্যাকবেথ হয়েছে লাইলি, ডানকানের অনুচর ব্যাঙ্কো হয়েছে বঙ্কা, ম্যাকডাফ হয়েছে মদন, ডানকানের বড় ছেলে ম্যালকম হয়েছে মোঞ্চা, ব্যাঙ্কোর ছেলে ফ্লিয়ান্স এখানে ফন্টুস।
পাশাপাশি মূল নাটকে ডানকানের স্ত্রীর সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও এই ওয়েব সিরিজে সেই চরিত্রটি রাখা হয়েছে। আবার ম্যাকডাফের স্ত্রীকে দেখানো হয়েছে তার বোন হিসেবে।
নির্মাতা সবথেকে বড় খেলাটা খেলেছেন বিখ্যাত ‘থ্রি উইচেস’-এর রূপান্তর করে। এখানে তারা মা, ছেলে ও পোষ্য বিড়াল। কালো বিড়ালের জ্বলজ্বলে চোখ, মা ও ছেলের অদ্ভুত মেকআপ। আর তাদের সংলাপ বলার ভঙ্গি, এমনকি চালচলনও গা ছমছমে, যা পুরো ওয়েব সিরিজে এনে দিয়েছে অস্বস্তিকর উপস্থিতি।
পুরো সিরিজেই মঞ্চ নাটকের এক অদৃশ্য উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। আবহ সঙ্গীত থেকে শুরু করে সংলাপ ও থিয়েটারের বেশ কিছু নান্দনিক দিকও দেখতে পাওয়া যায় এই সিরিজে।
অভিনয়ের কথা আলাদা করে বলবার কিছু নেই। অনির্বাণ ভট্টাচার্য নিজেও অভিনয় করেছেন পুলিশ কর্মকর্তার ছোট একটি চরিত্রে। তাছাড়া অন্যদের মধ্যে সোহিনীকে আলাদা করে চোখে পড়েছে।
সঙ্গে বারবার ড্রোন দিয়ে চিত্রগ্রহন ও সম্পাদনার ক্ষেত্রে কিছু বাহুল্য দৃশ্য ও ক্লোজআপ কিছুটা অদ্ভুত মনে হলেও সবমিলে প্রথম নির্মাণ হিসেবে অনির্বাণ ভট্টাচার্য ‘মন্দার’-এ সাহসী পদক্ষেপ রেখেছেন— এটা হলফ করে বলা যায়।
দোহায় ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫’-এ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ব্রিটিশ অভিনেতা ইদ্রিস এলবার সাক্ষাৎ হয়েছে। সম্মেলনের ফাঁকে হাসিমুখে একে অপরের সঙ্গে সময় কাটান তাঁরা। জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন ও যুবসম্পৃক্ততা নিয়ে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন দুজনেই।
২ ঘণ্টা আগেবরবাদ দিয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছেন শাকিব খান। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও ভালো সাড়া ফেলেছে মেহেদি হাসান হৃদয় পরিচালিত সিনেমাটি। তবে শাকিব এবার আরও বড় স্বপ্ন দেখছেন। এবার তাঁর স্বপ্ন ১০০ কোটির। বলিউডের মতো তাঁর সিনেমাও ভবিষ্যতে শতকোটির ক্লাবে নাম লেখাবে, আশা শাকিবের।
৪ ঘণ্টা আগেগত সোমবার হঠাৎ ছড়িয়ে পড়ে গুজব—ববিতা অসুস্থ! ফরিদা আক্তার ববিতা নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয় হাতে ক্যানুলা লাগানো একটি ছবি। সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সে খবর। তবে ববিতা গণমাধ্যমকে জানালেন, তিনি সুস্থ আছেন। অসুস্থতার ভুয়া খবর ছড়ানোয় বিব্রত অভিনেত্রী।
৪ ঘণ্টা আগেখ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক শহীদুল জহিরের ছোটগল্পের অনুপ্রেরণায় তৈরি হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘দাঁড়কাক’। বানিয়েছেন জায়েদ সিদ্দিকী। তোরাব শেখ নামের একজন বয়স্ক মানুষকে নিয়ে এ সিনেমার গল্প। তার উপার্জন নেই, ফলে এই সংসারে নিজেকে অপ্রয়োজনীয় বোধ করে সে। তার অজান্তে মেয়ের বিয়ে দেওয়ায় সে ক্ষুব্ধ হয়।
১৬ ঘণ্টা আগে