Ajker Patrika

টিকটক–রিলস মাতাচ্ছেন ‘ম্যাকেইবা’, কে তিনি

কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৩, ১৩: ২৪
টিকটক–রিলস মাতাচ্ছেন ‘ম্যাকেইবা’, কে তিনি

ইউটিউবের শর্টস, ফেসবুকের রিলস এবং টিকটকের মতো শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্মগুলো এখন মেতে আছে ‘ম্যাকেইবা’ নিয়ে। জেন নামে পরিচিত ফ্রান্সের সংগীতশিল্পী ও গীতিকার জেন লুই গ্যালিসের গাওয়া ‘ম্যাকেইবা’ গানটি এখন রীতিমতো ট্রেন্ড। ইউটিউবে জেনের মূল গানের ভিউ এখন ২০ কোটির বেশি! আর এই গানটিকে নিয়ে বানানো বিচিত্র ভিডিওগুলোর ভিউও মিলিয়নের ঘরে। 

গানটির কিছু লাইনে ম্যাকেইবাকে উদ্দেশ করে বলা হয়েছে, ‘আই ওয়ান্ট টু হেয়ার ইওর ব্রেথ জাস্ট নেক্সট টু মাই সোল/আই ওয়ান্ট টু ফিল অপ্রেস উইদাউট এনি রেস্ট/আই ওয়ান্ট টু সি ইউ সিং, আই ওয়ান্ট টু সি ইউ ফাইট/বিকজ ইউ আর দ্য রিয়েল বিউটি অব হিউম্যান রাইট। …’ 

স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন জাগে, কে এই ম্যাকেইবা? মজার বিষয় হলো, ম্যাকেইবা নিজেও একজন সংগীতশিল্পী।

বর্ণবৈষম্য বা জাতিবিদ্বেষের মতো ঘটনাগুলোতে থাকে বিচ্ছিন্নতা ও নৃশংসতার কদর্য রূপ। ১৯৪৮ সাল থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকে ‘কালোদের’ এই অবস্থা সম্পর্কে জানানোর জন্য নিজের কণ্ঠ ব্যবহার করেছিলেন মিরিয়াম ম্যাকেইবা। তাঁর পুরো নাম জেনজিল মিরিয়াম ম্যাকেইবা আর ডাকনাম ‘মামা ম্যাকেইবা’। 

জেনজিল মিরিয়াম ম্যাকেইবা, ১ ডিসেম্বর, ১৯৫৯ম্যাকেইবা সম্পর্কে বলা হয়, আফ্রিকান সংগীতশিল্পীদের মধ্যে তিনিই প্রথম বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। ম্যাকেইবা পশ্চিমা শ্রোতাদের সামনে আফ্রিকান সংগীত নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি বিশ্বসংগীতের ভুবনে আফ্রোপপ ঘরানার সংগীতের জন্য জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ম্যাকেইবা শুধু সংগীতশিল্পী ছিলেন না; ছিলেন একজন মানবাধিকারকর্মী। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকার সময় দক্ষিণ আফ্রিকা ও পশ্চিমা বিশ্বে তাঁকে স্টাইল আইকন হিসেবে দেখা হতো। ম্যাকেইবা তাঁর বর্ণবৈষম্যবিরোধী গানের কারণে আফ্রিকায় বৈষম্য বিরোধিতার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। 

জোহানেসবার্গের কাছের একটি ছোট শহরে ১৯৩২ সালের ৪ মার্চ জন্মেছিলেন মিরিয়াম ম্যাকেইবা। জন্মের পর প্রথম ছয় মাস তিনি মায়ের সঙ্গে জেলে কাটিয়েছেন! বেআইনিভাবে বিয়ার বিক্রির অপরাধে তাঁর মা ক্রিস্টিনা ম্যাকেইবাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। বাবা ক্যাসওয়েল ম্যাকেইবা পেশায় ছিলেন শিক্ষক। নিজের ছয় বছর বয়সে বাবাকে হারান মিরিয়াম। ফলে ছোটবেলা থেকে আর্থিক কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁর পরিবারকে। 

‘আমি গান গেয়ে যাব, সত্যও বলব।’ —মিরিয়াম ম্যাকেইবাতবে মিরিয়ামকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল তাঁর গানের গলা। সেই প্রতিভাবলে ছোটবেলা থেকে মিরিয়াম বিভিন্ন গানের দলে গাওয়া শুরু করেন। কোয়ালা ও মারাবির মতো আফ্রিকান সংগীত এবং বিগ ব্যান্ড, গসপেল ও জ্যাজের মতো পশ্চিমা শৈলীর সংগীতে পূর্ণ একটি জনপদে বেড়ে উঠেছিলেন তিনি। ১৩ বছর বয়সে একটি গানের প্রতিযোগিতায় জিতে যান মিরিয়াম। এরপর থেকে বিয়ের অনুষ্ঠানে গান গাওয়া শুরু করেন।

গানের ক্ষেত্রে মিরিয়াম পেয়েছিলেন তাঁর পরিবারের সংগীত রুচি। তাঁর মা বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন। তাঁর বাবা পিয়ানো বাজাতেন এবং দ্য মিসিসিপি ১২ নামে একটি দলে গান গাইতেন। বিখ্যাত সংগীতশিল্পী ডিউক এলিংটন ও এল্লা ফিটজেরাল্ডসহ অনেকের গানের রেকর্ড সংগ্রহ করে দিতেন ম্যাকেইবার বড় ভাই। সেসব রেকর্ড শুনে শুনেই তিনি গান শিখেছিলেন। 

৯০ এর দশকে নেলসন ম্যান্ডেলার আহ্বান দেশে ফিরলে সাধারণ মানুষ তাঁকে বরণ করে নেয় ‘মামা আফ্রিকা’ বলেবিভিন্ন গানের দলের সঙ্গে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন মিরিয়াম ম্যাকেইবা। তাঁর পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয় কিউবান ব্রাদার্স নামে একটি ব্যান্ডে। এই ব্যান্ডটি বিভিন্ন ইংরেজি গানের কভার করত। মজার বিষয় হলো, এই দলের একমাত্র নারী সদস্য ছিলেন মিরিয়াম। এরপর একে একে তাঁর প্রায় ৩০টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। বিভিন্ন দেশের বরেণ্য শিল্পীদের সঙ্গেও যৌথ ভাবে গান করেছেন ম্যাকেইবা।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ জীবনে নিজের সংগীতের ধারা বদল হয়েছিল তাঁর, বদল এসেছিল বাদ্যযন্ত্রেও। মিরিয়ামের গানের কথা ছিল আবেগময়, সুর ও গায়কিতে ছিল অন্য রকম এক আবেদন। তাঁর কণ্ঠের দৃঢ়তা মানুষকে স্পর্শ করত। গানের মধ্য দিয়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ‘কালো মানুষ’দের রাজনৈতিক বক্তব্য তুলে ধরতেন তাঁর দর্শকদের সামনে। ম্যাকেইবা বলেছিলেন, তিনি রাজনৈতিক সংগীত পরিবেশন করেননি। তিনি বলেন, ‘লোকে বলে, আমি রাজনীতি করি। কিন্তু আমি যা গাই, তা রাজনীতি নয়, সত্য।’ 

ফ্রান্সের সংগীতশিল্পী ও গীতিকার জেন লুই গ্যালিসের গাওয়া ‘ম্যাকেইবা’ শিরোনামের গানের বিলবোর্ড১৯৫৯ সালে একটি বর্ণবাদবিরোধী চলচ্চিত্রের ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করে পুরস্কার জিতেছিলেন মিরিয়াম ম্যাকেইবা। পুরস্কার গ্রহণ করতে ইতালির ভেনিসে গেলে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হয়। দেশে ফেরার সময় মিরিয়াম জানতে পারেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার তাঁর পাসপোর্ট বাতিল করেছে। তাঁর আর ফেরা হয়নি নিজ জন্মভূমিতে। দীর্ঘ সময় প্রবাসে থাকতে হয় তাঁকে। কিন্তু সে সময়েও সংগীত পরিবেশনকালে নিজের সংস্কৃতির কথা বিবেচনা করে পোশাক বেছে নিতেন। মিরিয়াম একবার জাতিসংঘে বলেছিলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার নারী এবং শিশুদের বিরুদ্ধে বন্দুক ও গুলি ব্যবহার করা হচ্ছে।’ বর্ণবাদ সম্পর্কে তাঁর এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় তাঁর গান নিষিদ্ধ করা হয়। বাতিল করে দেওয়া হয় তাঁর নাগরিকত্ব।

১৯৯০ সাল। কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা। মুক্তি পেয়ে তিনি মিরিয়ামকে নিজ দেশে ফেরার আহ্বান জানান। মিরিয়াম ফিরলেন জন্মভূমিতে। সাধারণ মানুষ তাঁকে বরণ করে নিল ‘মামা আফ্রিকা’ বলে। দেশে ফেরার পর ১৮ বছর বেঁচে ছিলেন তিনি। এ সময় বিভিন্ন দেশে কনসার্টে অংশ নিয়েছেন। বলে গেছেন মানুষের মুক্তির কথা, বৈষম্যহীন সমাজের কথা। প্রায় ৭৬ বছর বয়সে ২০০৮ সালের ১০ নভেম্বর ইতালিতে মারা যান ‘মামা আফ্রিকা’ মিরিয়াম ম্যাকেইবা। তাঁর মৃত্যুতে ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, ‘মিরিয়ামের সংগীত আমাদের সবার মধ্যে আশার অনুভূতি জাগিয়েছিল।’

জেন লুই গ্যালিস, সংগীতশিল্পী ও গীতিকার, ফ্রান্সবছরের পর বছর বর্ণবৈষম্য বিরোধী আলোচনায় ‘মামা আফ্রিকা’ ঘুরেফিরে আসবেন, এটাই স্বাভাবিক। এই একুশ শতকে বিশ্বে যখন বিভিন্ন ভাবে বাড়ছে বৈষম্য, নারীদের ওপর বহুবিচিত্র্য উপায়ে নেমে আসছে নিপীড়ন, সেই সময় ফ্রান্সের শিল্পী জেন বেছে নেন ম্যাকেইবার মতো এক শক্তিশালী চরিত্রকে, নিজের গানের বিষয় হিসেবে। এ যেন এক অদ্ভুত সমাপতন। 

মিরিয়াম ম্যাকেইবা যেসব পুরস্কার পেয়েছিলেন:
গ্র্যামি, ১৯৬৬ 
অটো হ্যান্স পিস স্বর্ণপদক, ২০০১ 
পোলার মিউজিক প্রাইজ, ২০০২ 
এমটিভি আফ্রিকা মিউজিক লিজেন্ড অ্যাওয়ার্ড, ২০১০ (মরণোত্তর)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কী কারণে অদৃশ্য হয়ে গেলেন জিম ক্যারি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রেমিকা ক্যাথরিওনা হোয়াইটের সঙ্গে জিম ক্যারি। ছবি: ডেইলি মেইল
প্রেমিকা ক্যাথরিওনা হোয়াইটের সঙ্গে জিম ক্যারি। ছবি: ডেইলি মেইল

এক সময় হলিউডের সবচেয়ে জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা জিম ক্যারি যেন আজ রহস্যময় এক নিঃসঙ্গ জীবনের প্রতীক। ‘দ্য মাস্ক’ ও ‘ডাম্ব অ্যান্ড ডাম্বার’-এর এই তারকা একসময় প্রতি সিনেমা থেকে ২ কোটি ডলার পারিশ্রমিক পেতেন। আর এখন তিনি প্রায় হারিয়ে গেছেন পর্দা থেকে।

বুধবার (২২ অক্টোবর) ডেইলি মেইল জানিয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে (২০২৬) ফ্রান্সের মর্যাদাপূর্ণ সিজার অ্যাওয়ার্ডস-এর মঞ্চে জিম ক্যারিকে দেওয়া হবে ফরাসি চলচ্চিত্র জগতের সর্বোচ্চ সম্মানগুলোর একটি। ফরাসিরা বিশ্বখ্যাত এই অভিনেতাকে ‘আধুনিক সিনেমার অন্যতম মৌলিক কণ্ঠ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আর বলেছে, ‘তিনি আমাদের মনে করিয়ে দেন—সিনেমা শুধু বিনোদন নয়, এটি শিল্পের সাহসী ভাষাও হতে পারে।’

অথচ এই প্রশংসা শুনে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—সত্যিই কি জিম ক্যারির কর্মজীবন এতটা সাহসী ছিল?

কানাডীয় বংশোদ্ভূত এই অভিনেতা মাঝেমধ্যেই নিজেকে ফরাসি দস্যুর বংশধর বলে দাবি করতেন। ২০১০ সালে তিনি ফ্রান্সের ‘শেভালিয়ার অব দ্য অর্ডার অব আর্টস অ্যান্ড লেটারস’ উপাধি পান। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়—তিনি কখনো অস্কারের মনোনয়ন পাননি।

গত এক দশকে তাঁর উল্লেখযোগ্য কোনো চলচ্চিত্র নেই। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তাঁকে শুধু ‘সোনিক দ্য হেজহগ’ ফ্র্যাঞ্চাইজিতে দেখা গেছে, যেখানে তাঁর সহ অভিনেতারা মূলত কম্পিউটার-নির্মিত চরিত্র। ২০২৭ সালে আসছে সিরিজটির চতুর্থ পর্ব। এটি হয়তো অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে, কিন্তু এটি তাঁর শিল্পজীবনে তেমন কিছু যোগ করবে না।

২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া তাঁর শেষ দুটি সিনেমা ‘ডার্ক ক্রাইম’ ও ‘দ্য বেড ব্যাচ’ ছিল ভয়াবহ ব্যর্থতা। দুটি সিনেমাই সমালোচক ও দর্শকদের কাছে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। একসময় হলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া এই অভিনেতা তখন থেকে প্রায় কর্মহীন, যেন তিনি অদৃশ্য হয়ে গেছেন।

জানা যায়, লস অ্যাঞ্জেলেসের ব্রেন্টউডে ১২ হাজার ৭০০ বর্গফুটের বিলাসবহুল বাড়ি বিক্রি করাও তাঁর জন্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছিল। ১৯৯৪ সালে ৩.৮ মিলিয়ন ডলারে কেনা সেই বাড়ি ২০২৩ সালে ২৮.৯ মিলিয়নে বিক্রির জন্য তোলা হয়। কিন্তু ক্রেতা না পেয়ে বারবার দাম কমিয়ে অবশেষে ১৭ মিলিয়নে বিক্রি করতে হয়।

২০১৭ সাল থেকে তিনি হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে বসবাস করছেন। সেখানে তিনি মূলত ছবি আঁকেন আর নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করেন। ২০১৮ সালে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি একা থাকতে ভালোবাসি। তাই একা থাকা আমার কাছে কষ্ট নয়।’

তবে ক্যারি পুরোপুরি অবসর নেননি। সূত্র বলছে, তিনি নতুন কয়েকটি প্রকল্পে কাজ করছেন। এর মধ্যে ‘দ্য জেটসোন্স’ নামে ১৯৬০-এর দশকের একটি ক্ল্যাসিক কার্টুন সিরিজের লাইভ-অ্যাকশন রূপান্তরে অভিনয় করবেন তিনি।

২০২২ সালে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘আমি শান্ত জীবন ভালোবাসি। আমি যা করেছি, যথেষ্ট করেছি। আমি পরিপূর্ণ।’ এরপর যখন তিনি ‘সোনিক-৩’ ফ্র্যাঞ্চাইজিতে যুক্ত হন, তখন মজার ছলে বলেছিলেন, ‘আমি অনেক কিছু কিনেছি, তাই টাকার দরকার।’

কিন্তু জিম ক্যারির পতনের পেছনে কেবল ব্যর্থ সিনেমা নয়, ব্যক্তিজীবনের নানা অন্ধকার অধ্যায়ও কাজ করেছে।

২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত অভিনেত্রী ও মডেল জেনি ম্যাককার্থির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। ম্যাককার্থি দাবি করেছিলেন, তাঁর ছেলের অটিজম নাকি ভ্যাকসিনের কারণে হয়েছিল। এমন একটি অগ্রহণযোগ্য ও ভ্রান্ত দাবিকে সে সময় ক্যারিও সমর্থন করেছিলেন। এই অবস্থান পরে তাঁকে অনেক ভক্ত ও সহকর্মীর বিরাগভাজন করে তোলে।

আরও ভয়াবহ ছিল ২০১২ সালে শুরু হওয়া তাঁর প্রেমিকা ক্যাথরিওনা হোয়াইটের সঙ্গে সম্পর্ক। বিবাহিত এই আইরিশ মেকআপ আর্টিস্ট ২০১৫ সালে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার মাত্র চার দিন আগেই ক্যারির সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছিল তাঁর। আত্মহত্যার নোটে হোয়াইট লিখে গেছেন, ‘তুমি আমাকে ভেঙে দিয়েছ।’

এরপর হোয়াইটের স্বামী ও মা দুজনই ক্যারির বিরুদ্ধে মামলা করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, তিনি অবৈধভাবে প্রেসক্রিপশন ওষুধ জোগাড় করেছিলেন এবং হোয়াইটকে যৌনরোগে সংক্রমিত করেছিলেন। ২০১৮ সালে এই মামলাগুলো খারিজ হয়ে গেলেও তত দিনে ভক্তদের কাছে ক্যারির ভাবমূর্তি চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নিজ জীবনের বেদনা ও বিষণ্নতা সম্পর্কে ক্যারি নিজেও বহুবার খোলাখুলি কথা বলেছেন। তাঁর সাবেক স্ত্রী মেলিসা ওমর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘ওর হাসিটাই ওর সবচেয়ে বড় মুখোশ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পাচ্ছে ইংরেজি ভাষার সিনেমা ‘ডট’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘ডট’ সিনেমার পোস্টর
‘ডট’ সিনেমার পোস্টর

গত ৫ সেপ্টেম্বর দেশের হলে মুক্তি পায় ইংরেজি ভাষায় নির্মিত সিনেমা ‘ডট’। এবার সিনেমাটি দেখা যাবে যুক্তরাষ্ট্রে। পরিচালক বড়ুয়া সুনন্দা কাঁকন জানান, আগামী ৭ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের এএমসি ইউনিভার্সাল স্টুডিওতে মুক্তি পাবে ডট।

ক্যালিফোর্নিয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ১৫টি অঙ্গরাজ্য সিনেমাটি প্রদর্শিত হবে বলে জানিয়েছেন নির্মাতা।নদীপাড়ের মানুষের প্রেম-ভালোবাসা আর টানাপোড়েনের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ডট। প্রযোজনা করেছেন বড়ুয়া মনোজিত ধীমন।

কাঁকন বলেন, ‘ডট সিনেমাটি তৈরি হয়েছে নারী পাচার এবং নারী সংগ্রামের গল্প নিয়ে। বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এর চিত্রনাট্য। তাই দীর্ঘ গবেষণার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আমাদের। সিনেমাটির দৈর্ঘ্য ২ ঘণ্টা ৮ মিনিট। দেশের দর্শকের পাশাপাশি বিদেশি দর্শকের কথা মাথায় রেখে সিনেমার সংলাপ ইংরেজিতে রাখা হয়েছে।’

ডট সিনেমায় অভিনয় করেছেন গ্রুপ থিয়েটারের একঝাঁক অভিনয়শিল্পী। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন বড়ুয়া মনোজিত ধীমন, মিষ্টি আক্তার, পরী, রাজিবুল ইসলাম, সোনিয়া পারভীন শাপলা, মামুন, মোস্তাফিজুর রহমান, কামরুল ইসলাম, মাসুদ চৌধুরী, তারিকুল ইসলাম তারেক, আব্দুল বারিক মুকুল, সেন্ডি কুমার প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তানজিন তিশাকে আইনি নোটিশ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
তানজিন তিশা। ছবি: সংগৃহীত
তানজিন তিশা। ছবি: সংগৃহীত

অভিনেত্রী তানজিন তিশার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন ঝিনুক নামের এক নারী উদ্যোক্তা। তিশার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এ্যাপোনিয়া নামের একটি অনলাইন ফ্যাশন হাউস থেকে শাড়ি নিয়ে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রচার করেননি। তবে তিশা জানান, শাড়িটি তিনি পেয়েছেন উপহার হিসেবে। এ্যাপোনিয়া ফ্যাশন পেজের এক্সিকিউটিভ মো. আমিনুল ইসলামের পক্ষে তিশাকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সলিমুল্লাহ সরকার

নোটিশে বলা হয়েছে, ‘শাড়িটি তিশার বাসায় পৌঁছে দেওয়ার পর তিনি একাধিকবার প্রমোশনের আশ্বাস দিলেও ১০ মাসেও তা করেননি; বরং ছয় মাস ধরে কোনো যোগাযোগও রাখেননি। উদ্যোক্তার দাবি, বিশ্বাস ভঙ্গ করে তিশা প্রতারণা করেছেন। উক্ত বিষয়টি বিভিন্ন অনলাইনসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে আপনি আপনার নামীয় ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে লেখেন, ‘গিফট নিয়ে হয়ে গেলাম প্রতারক’, যা আপনার মতো দেশের পরিচিত অভিনেত্রীদের কাছ থেকে কাম্য নয় এবং বক্তব্যটি একাধারে মানহানিকর, কুরুচিপূর্ণ, বানোয়াট এবং সত্য গোপন করার ছলচাতুরী মাত্র।’

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ৭ দিনের মধ্যে ২৮ হাজার ৮০০ টাকা শাড়ির মূল্য এবং ১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং প্রকাশ্যে মাফ চাইতে হবে তানজিন তিশাকে। অন্যথায়, তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধি অনুযায়ী মামলা করা হবে।

তানজিন তিশার বাসার ঠিকানায় ডাকযোগে এবং তিশার হোয়াটসঅ্যাপে আইনি নোটিশটি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে এ্যাপোনিয়া কর্তৃপক্ষ। তবে এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেননি তানজিন তিশা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ০২
স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে জেমস। ছবি: সংগৃহীত
স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে জেমস। ছবি: সংগৃহীত

১১ বছর আগে দ্বিতীয় স্ত্রী বেনজির সাজ্জাদের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে ব্যান্ড তারকা নগরবাউল জেমসের। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী নামিয়া আমিনকে বিয়ে করেছেন তিনি। বিচ্ছেদের মতো নতুন বিয়ের খবরও এত দিন গোপন রেখেছিলেন জেমস। এ বছর জুনে নতুন সংসারে জন্ম নেয় পুত্রসন্তান। সন্তান জন্মের চার মাস পর নতুন বিয়ের খবর জানালেন জেমস।

নামিয়ার বাবা নুরুল আমিন আর মা নাহিদ আমিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। পারিবারিক সূত্রে যুক্তরাষ্ট্রেই বেড়ে উঠেছেন নামিয়া। সেখানে নৃত্যশিল্পী হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তাঁর। জেমস-নামিয়ার পরিচয় ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে। জেমস তখন যুক্তরাষ্ট্রে সংগীত সফর করছিলেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের শোতে নামিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয়। সেই পরিচয় থেকে বাড়ে ঘনিষ্ঠতা। যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে জেমস ফিরে আসেন বাংলাদেশে। কিছুদিন যেতেই মনের টানে নামিয়া ছুটে আসেন বাংলাদেশে। ২০২৪ সালের ১২ জুন বিয়ে করেন তাঁরা।

স্ত্রী নামিয়া আনামের সঙ্গে জেমস। ছবি: সংগৃহীত
স্ত্রী নামিয়া আনামের সঙ্গে জেমস। ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের পর থেকে জেমসের ঢাকার বনানীর বাসায় বাস করছেন জেমস ও নামিয়া। এ বছরের ৮ জুন নিউইয়র্কের হান্টিং টং হাসপাতালে জন্ম হয় তাঁদের পুত্রসন্তানের। ছেলের নাম রাখা হয়েছে জিবরান আনাম।

নতুন জীবন নিয়ে জেমস বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ কৃপায় ভালো আছি। যত দিন বাঁচি, যেন গান গেয়ে যেতে পারি। দোয়া চাই সবার কাছে। সবাই আমাকে প্রার্থনায় রাখবেন।’

ছেলে জিবরান আনামকে আদর করছেন জেমস। ছবি: সংগৃহীত
ছেলে জিবরান আনামকে আদর করছেন জেমস। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে ১৯৯১ সালে চিত্রনায়িকা রথিকে এবং ২০০২ সালে বেনজিরকে বিয়ে করেন জেমস। রথির সঙ্গে জেমসের বিচ্ছেদ হয় ২০০৩ সালে এবং বেনজিরের সঙ্গে ২০১৪ সালে। রথির ঘরে রয়েছে জেমসের এক ছেলে দানিশ ও এক মেয়ে জান্নাত। বেনজিরের ঘরে এক মেয়ে জাহান।

জেমসের ম্যানেজার রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন জানিয়েছেন, বেনজির তাঁদের একমাত্র মেয়ে জাহানকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর জেমস কোনোভাবেই গান আর দেশ ছাড়বেন না। তাই সমঝোতার ভিত্তিতে জেমস ও বেনজির বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত