Ajker Patrika

স্মৃতিচারণায় মামুনুর রশীদ ও আঁখি আলমগীর

আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪: ৫৫
Thumbnail image

আজ ৬ সেপ্টেম্বর চিত্রনায়ক সালমান শাহর ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। মীর রাকিব হাসানের অনুলিখনে সালমানকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন অভিনেতা মামুনুর রশীদ ও কণ্ঠশিল্পী আঁখি আলমগীর।

মামুনুর রশীদসালমানের ব্যাখ্যা সে নিজেই
মামুনুর রশীদ

ইমনকে নিয়ে আমি প্রথম নাটক নির্মাণ করি। সম্ভবত নাটকটির নাম ‘আকাশ ছোঁয়া’। সেই নাটকে ও শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিল। যতটা মনে পড়ে কুমিল্লার ময়নামতি বিহারে নাটকটির শুটিং হয়েছে। আমরা সবাই খুব স্নেহ করতাম তাকে। পরবর্তী সময়ে আমি যখন ‘ইতিকথা’ ধারাবাহিক করি, সেখানেও সে অন্যতম মুখ্য চরিত্র করেছিল। কিন্তু শেষের দিকে আর সময় দিতে পারেনি। ইমন যখন সালমান হয়ে উঠল, আমি তাকে টিভি নাটকের প্রস্তাব দিলে সে খুব উৎসাহের সঙ্গে কাজটি করে। বলেছিল, ‘আপনার নাটকে আমার টেলিভিশনে অভিনয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল। আমি আপনার এই কাজটাও করতে চাই।’

অভিনয়ে সালমান শাহ তখন এমন একটা ইমপ্রেশন তৈরি করতে পেরেছিল, সহসা যা কেউ ভোলেনি। একজন অভিনেতা হয়ে ওঠা আর একজন তারকা হয়ে ওঠার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। ইমন সবার স্বপ্নের মানুষ হয়ে উঠেছিল। ছবি বলতে যে রঙিন জগৎ, স্বপ্নের দুনিয়া, সেখানে সে রাজত্ব করতে পেরেছিল। আসলে ওকে যারা পর্দায় বা বাস্তবে দেখেছে, তারা জীবনেও ওকে ভুলতে পারবে না। কেন পারবে না তার সহজ তো একটা উত্তর আছেই, জনপ্রিয় ট্রেন্ড সেটার।

ও মারা যাওয়ার পর বেশ কয়েকজন আত্মহত্যা করেছেন। এটা বিশ্বে বিরল। এখনো বিশেষ অনুষ্ঠানমালায় ওর ছবি দেওয়া হয়। সেটা দর্শক দেখেও। এক ছবি হয়তো ২০ বার দেখেছে। তারপরও যদি টিভিতে দেখি অমনি বসে যেতে হয়। সালমানের ব্যাখ্যা আসলে সালমান নিজেই।

আঁখি আলমগীরআম্মুই পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল
আঁখি আলমগীর

সালমান শাহর মা নীলা আন্টি রাজনীতি করতেন। উনি শখ করে টেলিভিশনে গানও গাইতেন। উনি আমার আম্মুর লেখা কয়েকটা গান টিভিতে গেয়েছিলেন। সেই সূত্রে আম্মুর সঙ্গে ওনার পরিচয়। এরপর দুই পরিবারেরও আসা-যাওয়া শুরু হয়। বলছি সেই আশির দশকের শুরুর দিকের কথা। ইমন আমার চেয়ে কিছুটা বড়। কিন্তু আমি, আমার ভাই, ইমন আর ওর ভাই -আমরা প্রায় সবাই পিঠাপিঠি ছিলাম।

আমাদের বন্ধুত্ব হয়ে যায়। আমরা দুজন দুজনকে তুই বলে সম্বোধন করতাম। দোস্ত ডাকতাম। ‍ইমন ছবিতে ব্যস্ত হয়ে গেল, আমিও ব্যস্ত হয়ে পড়ি পড়াশোনা নিয়ে। নিয়মিত দেখা হতো না। কিন্তু ফোনে যোগাযোগ হতো। সোহানুর রহমান সোহান আঙ্কেলকে ইমনের খোঁজ আম্মুই দিয়েছিল। ইমন ফ্যাশনসচেতন ছিল। একবার কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে সুন্দর সুন্দর পোজে ছবি তোলে। ছবিগুলো একটা অ্যালবামে করে আম্মুকে দিয়ে বলে, ‘আন্টি, এটা রাখেন আপনার কাছে।’ একদিন সোহান আঙ্কেল বাসায় আসেন আব্বুর সঙ্গে কথা বলতে। তখন আম্মু তাঁকে বলেন ইমনের কথা। একদিন আম্মুই ইমনকে নিয়ে যায় সোহান আঙ্কেলের কাছে। সোহান আঙ্কেল প্রথম দেখাতেই ভীষণ পছন্দ করে ফেলেন ইমনকে।

ভীষণ আবেগময় ছিল ইমন। আমার মনে আছে, নিজে আয় করে যখন গাড়ি কেনে, বউকে নিয়ে নিজে ড্রাইভ করে গাড়ি দেখাতে এসেছিল আমাদের বাসায়। ওর একটা ছবিতেই আমি গান করেছি। আমার আর আগুনের ডুয়েট ‘সত্যের মৃত্যু নেই’ ছবিতে। দুঃখের বিষয়, এটাই ওর শেষ ছবি ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত