বিনোদন প্রতিবেদক
ফটোগ্রাফার হওয়ার কথাই ছিল না তাঁর। কিন্তু একটা কুড়িয়ে পাওয়া ক্যামেরা বদলে দিল জীবন। ১৯৬৮ সাল। খবর পেলেন ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ সিনেমার শুটিং চলছে রামপুরহাটে। শুটিং দেখতে গেলেন। অভিনেতাদের নির্দেশ দিচ্ছেন সত্যজিৎ রায়। হাতের কাছে তাঁকে পেয়ে নিমাই ঘোষ কয়েকটি ছবি তুলে ফেললেন। দেখে প্রশংসা করলেন সত্যজিৎ রায়, ‘আপনি তো আমার অ্যাঙ্গেল মেরে দিয়েছেন!’ সেই থেকে যাত্রা শুরু। এরপর সঙ্গী ছিলেন শেষ ছবি ‘আগন্তুক’ পর্যন্ত। আজ আমরা সত্যজিৎ রায়ের সিনেমার যেসব স্থিরচিত্র দেখতে পাই তা নিমাই ঘোষের ক্যামেরার ম্যাজিকেই। মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক, গৌতম ঘোষ, তপন সিনহাদের সঙ্গেও পরবর্তী সময়ে কাজ করেছেন নিমাই ঘোষ।
‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবিতে ‘ভালো রাজা’ আর ‘দুষ্টু রাজা’র চরিত্রে সন্তোষ দত্তের দ্বৈত অভিনয় মনে পড়ে? মেকআপে সেই দ্বৈত সত্তার রূপ ফুটিয়ে তুলেছিলেন অনন্ত দাশ। ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’–এ অর্জুনের চরিত্রে কামু মুখোপাধ্যায়ের সেই মেকআপ, মছলিবাবার ছদ্মবেশে ফেলুদা, ‘অশনি সংকেত’–এ যদুর পোড়া মুখ– সবকিছুর পেছনে আছে মেকআপ আর্টিস্ট অনন্তের হাত। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজের সুবাদে নিছক মেকআপম্যান নন, ‘মেকআপ আর্টিস্ট’–এর সম্মান আদায় করে নিয়েছিলেন তিনি। ‘নিধিরাম সর্দার’, ‘নীল আকাশের নিচে’র মতো সিনেমার রূপসজ্জায়ও স্মরণীয় হয়ে আছে অনন্ত দাসের কাজ।
‘নায়ক’ সিনেমার ট্রেনের কামরার সেট, কাশীতে হরিহরের বাসার ভেতরের অংশ আর উঠোন, চারুলতার ভেতরটা এসবের পেছনে আছে বংশী চন্দ্রগুপ্তর হাতের ছোঁয়া। ইউনিটে তিনিই একমাত্র মানুষ, যিনি ‘মানিক’ বলে ডাকতেন সত্যজিৎ রায়কে। পথের পাঁচালীর সময় কাজ করতে করতে সত্যজিৎ ভুলে গেলে বংশীকেই মনে করাতে হতো- ‘মানিক, কাট বলো, কাট বলো।’ বংশী মগ্ন হয়ে সেট বানাচ্ছেন দেখে ১০ দিন শুটিং পিছিয়ে দিয়েছেন সত্যজিৎ রায়। শিল্পীকে তাড়া দিয়ে বিরক্ত করেননি, এমন ঘটনাও ঘটেছে। ‘পথের পাঁচালী’ থেকে শুরু করে ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’ পর্যন্ত টানা দুই দশক একসঙ্গে কাজ করেছেন তাঁরা।
জঁ রেনোয়া ‘দ্য রিভার’ সিনেমার শুটিং করতে এসেছিলেন কলকাতায়। তাঁর চিত্রগ্রাহক ক্লদ রেনোয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় সুব্রত মিত্রর। পান স্থানীয় পর্যবেক্ষকের কাজ। তাঁর পর্যবেক্ষণের খুঁটিনাটি মুগ্ধ করেছিল জঁ রেনোয়াকেও। সেই সময় রেনোয়ার সেটের কাজ করছিলেন বংশী চন্দ্রগুপ্ত। আর শুটিং দেখতে আসতেন তরুণ সত্যজিৎ। সেই আলাপের সূত্র ধরে এই ত্রয়ীর একসঙ্গে পথ চলা শুরু ১৯৫২ সালে ‘পথের পাঁচালী’ দিয়ে। চোখের সমস্যার কারণে খুব বেশি দিন ক্যামেরার কাজ করতে পারেননি সুব্রত।
‘পথের পাঁচালী’ সম্পাদনার জন্য নামমাত্র পারিশ্রমিক পাবেন জেনেও কাজ করতে রাজি হয়েছিলেন দুলাল দত্ত। রেলগাড়ি দেখতে অপু–দুর্গার সেই কাশবনের মাঝ দিয়ে ছোটার দৃশ্যের জন্য প্রয়োজনের তুলনায় কম শট নিয়েছিলেন সত্যজিৎ। উদ্ধার করতে এগিয়ে এলেন দুলাল। ওই শটগুলোকেই এমনভাবে এডিট করলেন তিনি, তাতেই তৈরি হলো গতিচিত্রের এক নতুন ভাষা। ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ ছবিতে ‘মেমোরি গেম’–এর দৃশ্যে, অথবা ‘নায়ক’-এ যখন অরিন্দমের ইন্টারভিউ থেকে কাট করে, লং শটের পর ট্রেনের প্যান্ট্রি থেকে দেখা যায় অরিন্দম স্যুটকেসটা টানতে টানতে ঢুকছেন, সেই জায়গায় এডিটিং-এর কাজ তো বিশ্বমানের। ‘মানিকবাবু’কে ছেড়ে যাবেন না বলে একসময় ‘মার্চেন্ট আইভরি’ প্রোডাকশনের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করার লোভনীয় সুযোগ ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি।
ফটোগ্রাফার হওয়ার কথাই ছিল না তাঁর। কিন্তু একটা কুড়িয়ে পাওয়া ক্যামেরা বদলে দিল জীবন। ১৯৬৮ সাল। খবর পেলেন ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ সিনেমার শুটিং চলছে রামপুরহাটে। শুটিং দেখতে গেলেন। অভিনেতাদের নির্দেশ দিচ্ছেন সত্যজিৎ রায়। হাতের কাছে তাঁকে পেয়ে নিমাই ঘোষ কয়েকটি ছবি তুলে ফেললেন। দেখে প্রশংসা করলেন সত্যজিৎ রায়, ‘আপনি তো আমার অ্যাঙ্গেল মেরে দিয়েছেন!’ সেই থেকে যাত্রা শুরু। এরপর সঙ্গী ছিলেন শেষ ছবি ‘আগন্তুক’ পর্যন্ত। আজ আমরা সত্যজিৎ রায়ের সিনেমার যেসব স্থিরচিত্র দেখতে পাই তা নিমাই ঘোষের ক্যামেরার ম্যাজিকেই। মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক, গৌতম ঘোষ, তপন সিনহাদের সঙ্গেও পরবর্তী সময়ে কাজ করেছেন নিমাই ঘোষ।
‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবিতে ‘ভালো রাজা’ আর ‘দুষ্টু রাজা’র চরিত্রে সন্তোষ দত্তের দ্বৈত অভিনয় মনে পড়ে? মেকআপে সেই দ্বৈত সত্তার রূপ ফুটিয়ে তুলেছিলেন অনন্ত দাশ। ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’–এ অর্জুনের চরিত্রে কামু মুখোপাধ্যায়ের সেই মেকআপ, মছলিবাবার ছদ্মবেশে ফেলুদা, ‘অশনি সংকেত’–এ যদুর পোড়া মুখ– সবকিছুর পেছনে আছে মেকআপ আর্টিস্ট অনন্তের হাত। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজের সুবাদে নিছক মেকআপম্যান নন, ‘মেকআপ আর্টিস্ট’–এর সম্মান আদায় করে নিয়েছিলেন তিনি। ‘নিধিরাম সর্দার’, ‘নীল আকাশের নিচে’র মতো সিনেমার রূপসজ্জায়ও স্মরণীয় হয়ে আছে অনন্ত দাসের কাজ।
‘নায়ক’ সিনেমার ট্রেনের কামরার সেট, কাশীতে হরিহরের বাসার ভেতরের অংশ আর উঠোন, চারুলতার ভেতরটা এসবের পেছনে আছে বংশী চন্দ্রগুপ্তর হাতের ছোঁয়া। ইউনিটে তিনিই একমাত্র মানুষ, যিনি ‘মানিক’ বলে ডাকতেন সত্যজিৎ রায়কে। পথের পাঁচালীর সময় কাজ করতে করতে সত্যজিৎ ভুলে গেলে বংশীকেই মনে করাতে হতো- ‘মানিক, কাট বলো, কাট বলো।’ বংশী মগ্ন হয়ে সেট বানাচ্ছেন দেখে ১০ দিন শুটিং পিছিয়ে দিয়েছেন সত্যজিৎ রায়। শিল্পীকে তাড়া দিয়ে বিরক্ত করেননি, এমন ঘটনাও ঘটেছে। ‘পথের পাঁচালী’ থেকে শুরু করে ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’ পর্যন্ত টানা দুই দশক একসঙ্গে কাজ করেছেন তাঁরা।
জঁ রেনোয়া ‘দ্য রিভার’ সিনেমার শুটিং করতে এসেছিলেন কলকাতায়। তাঁর চিত্রগ্রাহক ক্লদ রেনোয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় সুব্রত মিত্রর। পান স্থানীয় পর্যবেক্ষকের কাজ। তাঁর পর্যবেক্ষণের খুঁটিনাটি মুগ্ধ করেছিল জঁ রেনোয়াকেও। সেই সময় রেনোয়ার সেটের কাজ করছিলেন বংশী চন্দ্রগুপ্ত। আর শুটিং দেখতে আসতেন তরুণ সত্যজিৎ। সেই আলাপের সূত্র ধরে এই ত্রয়ীর একসঙ্গে পথ চলা শুরু ১৯৫২ সালে ‘পথের পাঁচালী’ দিয়ে। চোখের সমস্যার কারণে খুব বেশি দিন ক্যামেরার কাজ করতে পারেননি সুব্রত।
‘পথের পাঁচালী’ সম্পাদনার জন্য নামমাত্র পারিশ্রমিক পাবেন জেনেও কাজ করতে রাজি হয়েছিলেন দুলাল দত্ত। রেলগাড়ি দেখতে অপু–দুর্গার সেই কাশবনের মাঝ দিয়ে ছোটার দৃশ্যের জন্য প্রয়োজনের তুলনায় কম শট নিয়েছিলেন সত্যজিৎ। উদ্ধার করতে এগিয়ে এলেন দুলাল। ওই শটগুলোকেই এমনভাবে এডিট করলেন তিনি, তাতেই তৈরি হলো গতিচিত্রের এক নতুন ভাষা। ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ ছবিতে ‘মেমোরি গেম’–এর দৃশ্যে, অথবা ‘নায়ক’-এ যখন অরিন্দমের ইন্টারভিউ থেকে কাট করে, লং শটের পর ট্রেনের প্যান্ট্রি থেকে দেখা যায় অরিন্দম স্যুটকেসটা টানতে টানতে ঢুকছেন, সেই জায়গায় এডিটিং-এর কাজ তো বিশ্বমানের। ‘মানিকবাবু’কে ছেড়ে যাবেন না বলে একসময় ‘মার্চেন্ট আইভরি’ প্রোডাকশনের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করার লোভনীয় সুযোগ ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি।
সিনেমা অনবদ্য অভিনয়, নির্মাণ, প্রযোজনার পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবন ও সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অন্যরকম জনপ্রিয়তা রয়েছে মিস্টার পারফেকশনিস্ট খ্যাত বলিউড তারকা আমীর খান। প্রাক্তন দুই স্ত্রীর সঙ্গে এখনো বন্ধুত্বপূর্ণ ও শ্রদ্ধাশীল সম্পর্ক রয়েছে তাঁর। সম্প্রতি তাঁর মায়ের জন্মদিনে অন্য স্বজন...
৩ মিনিট আগেআজ শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা। নতুন বইয়ের গন্ধে বইপ্রেমীরা মেতে উঠবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। প্রতিবছরই মেলায় খ্যাতিমান লেখকদের বই যেমন প্রকাশিত হয়, তেমনি তরুণ লেখকদের বইও আসে। পাশাপাশি শোবিজ তারকারাও উপহার দেন তাঁদের লেখা বই। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছরও আসছে বেশ কজন তারকার নতুন..
৩২ মিনিট আগেঅভিনেতা হিসেবে তিনি যে দুর্দান্ত, তা বলা বাহুল্য। বলিউডে দুই যুগের বেশি সময় ধরে রাজত্ব করছেন তিনি। সেই বোমান ইরানি এবার দাঁড়ালেন ক্যামেরার পেছনে। প্রথমবারের মতো হাজির হলেন পরিচালক হিসেবে। বানিয়েছেন ‘দ্য মেহতা বয়েজ’। ৭ ফেব্রুয়ারি আমাজন প্রাইম ভিডিওতে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে...
৪২ মিনিট আগেনব্বইয়ের দশকে ঢাকার মঞ্চের কয়েকজন তরুণ নাট্যপ্রেমী গড়ে তোলেন ‘প্রাচ্যনাট’ নামের নতুন নাট্যদল। নামটি দিয়েছিলেন প্রখ্যাত নাট্যকার ও গবেষক সেলিম আল দীন। ১৯৯৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দলটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। সেই থেকে দলটি যেমন নতুন নতুন নাটক উপহার দিয়েছে, তেমনি নাট্যকর্মী সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ...
১ ঘণ্টা আগে