খায়রুল বাসার নির্ঝর, ঢাকা
সিনেমার গল্প এগিয়েছে ডায়েরির পাতার মতো করে। যেভাবে টুকরো টুকরো ঘটনার সম্মিলনে লিখে রাখা হয় দিনপঞ্জি, ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ সিনেমার বয়ানশৈলী অনেকটা তেমন। কিছুক্ষণ পরপরই পর্দার এক কোণে ভেসে ওঠে দিন-মাস-সাল। আর ভয়েসওভারে ঘটনার বর্ণনা। ১৯৭১-এর মার্চ থেকে গল্পের শুরু। স্বাধীনতার দাবিতে শহর উত্তাল। প্রতিদিনই মিছিল বেরোচ্ছে। ট্রাকে করে সংস্কৃতিকর্মীরা পরিবেশন করছেন গান-নাটক। ঘরোয়া আলোচনায় একটাই টপিক—কোন দিকে গড়াচ্ছে পরিস্থিতি! চোখে সবার নতুন পতাকার স্বপ্ন। এই স্বপ্নের পাখায় ভর করে উদ্বেগ, আশা, কিছুটা খুনসুটি, বন্ধন আর প্রেমের ভেতর দিয়ে এগিয়ে চলে গল্প।
ঢাকা শহরের শান্তিবাগ এলাকার দুটি পরিবারের চোখ দিয়ে ওই সময়ের পরিস্থিতি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন নির্মাতা হৃদি হক। এক পরিবারের কর্তা আলম সাহেব। বৃদ্ধ মা, স্ত্রী, তিন ছেলে, দুই বউমা আর নাতিকে নিয়ে তার ভরা সংসার। এই যৌথ পরিবারের বড় ছেলে লিটু ও তার স্ত্রী তারিনের মানসিকতা অন্যদের চেয়ে আলাদা। সবাই যখন স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর, তখন এই আলোচনা নিতান্তই শিশুসুলভ তাদের কাছে। মুখোমুখি বাড়িতে অন্য পরিবারের বসবাস। সানজিদা প্রীতি সেই পরিবারের বড় মেয়ে। সজলের সঙ্গে তার ভাব। প্রায়ই চলে চিরকুট চালাচালি, সাইকেলে ঘোরাঘুরি। এই পারিবারিক আবহের ভেতরে আসে ২৫ মার্চ। কালরাতের ভয়াবহতা হৃদি হক তুলে এনেছেন সম্পূর্ণ অন্যভাবে। শহরজুড়ে প্রচণ্ড গুলির শব্দের ভেতরে দুই পরিবারের যে অসহায়তা, আর্তনাদ—এসবের মধ্য দিয়ে মূর্ত হয়ে ওঠে পুরো দেশের চিত্র।
‘১৯৭১ সেই সব দিন’ পিরিওডিক্যাল সিনেমা। এ সময়ে দাঁড়িয়ে ৫২ বছর আগেকার দৃশ্য ক্যামেরায় তুলে আনা সহজ কাজ নয়। এই দীর্ঘ সময়ে তো শুধু শহরের আদলই বদলায়নি, মানুষের নিত্য অনুষঙ্গ, ফ্যাশন—বদলেছে সবই। শুটিংয়ে খুটিনাটি কোনো কিছু একটু এদিক-সেদিক হলেই বিপত্তি। তবে হৃদি হক এই কঠিন চ্যালেঞ্জ ভালোভাবেই মোকাবিলা করতে পেরেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার চিত্র এত নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যে মনেই হয় না এটা নির্মাতার প্রথম সিনেমা।
জনপ্রিয় অনেক অভিনয়শিল্পীর সম্মিলন ঘটেছে সিনেমায়। তবে ফেরদৌসের কথা আলাদাভাবে বলতে হয়। সঞ্জু চরিত্রে সিনেমার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে অনবদ্য অভিনয় করলেন তিনি, তা দর্শকের চোখে লেগে থাকবে বহু বছর। উল্লেখ করতে হয় সজল, প্রীতি ও লিটু আনামের কথাও। নির্মাতা হৃদি হক একই সঙ্গে পরিচালনা আর অভিনয় করতে গিয়ে খানিকটা খেই হারিয়ে ফেললেন কি? প্রশ্ন থেকেই গেল।
অনেক চরিত্র আর অনেক অভিনয়শিল্পী যেমন এ সিনেমার শক্তিশালী দিক, তেমনি বড় দুর্বল দিকও বটে। গল্প শুরু হয়েছিল পারিবারিক আবহের মধ্য দিয়ে। পথ চলতে চলতে গণ্ডি বড় হয়। ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে। আসে অনেক সাবপ্লট, অনেক চরিত্র। তবে সব প্লট আর চরিত্রের সঙ্গে সুবিচার করতে পারেননি নির্মাতা। অনেক চরিত্র পরিণতি পায়নি, উঁকি দিয়েই হারিয়ে গেছে। তাতে মূল গল্পের বিশেষ ক্ষতি হয়নি যদিও, কিন্তু আবুল হায়াত-মামুনুর রশীদের মতো গুণী শিল্পীকে একটি-দুটি অগুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যে এনে বসিয়ে রাখলে সেটা দৃষ্টিকটুই লাগে।
১৯৭১ সেই সব দিন
অভিনয়: ফেরদৌস, সজল, লিটু আনাম, মিলন, তারিন, সানজিদা প্রীতি, সাজু খাদেম প্রমুখ।
পরিচালক: হৃদি হক
সংগীত: দেবজ্যোতি মিশ্র
মুক্তি: ১৮ আগস্ট, ২০২৩
সিনেমার গল্প এগিয়েছে ডায়েরির পাতার মতো করে। যেভাবে টুকরো টুকরো ঘটনার সম্মিলনে লিখে রাখা হয় দিনপঞ্জি, ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ সিনেমার বয়ানশৈলী অনেকটা তেমন। কিছুক্ষণ পরপরই পর্দার এক কোণে ভেসে ওঠে দিন-মাস-সাল। আর ভয়েসওভারে ঘটনার বর্ণনা। ১৯৭১-এর মার্চ থেকে গল্পের শুরু। স্বাধীনতার দাবিতে শহর উত্তাল। প্রতিদিনই মিছিল বেরোচ্ছে। ট্রাকে করে সংস্কৃতিকর্মীরা পরিবেশন করছেন গান-নাটক। ঘরোয়া আলোচনায় একটাই টপিক—কোন দিকে গড়াচ্ছে পরিস্থিতি! চোখে সবার নতুন পতাকার স্বপ্ন। এই স্বপ্নের পাখায় ভর করে উদ্বেগ, আশা, কিছুটা খুনসুটি, বন্ধন আর প্রেমের ভেতর দিয়ে এগিয়ে চলে গল্প।
ঢাকা শহরের শান্তিবাগ এলাকার দুটি পরিবারের চোখ দিয়ে ওই সময়ের পরিস্থিতি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন নির্মাতা হৃদি হক। এক পরিবারের কর্তা আলম সাহেব। বৃদ্ধ মা, স্ত্রী, তিন ছেলে, দুই বউমা আর নাতিকে নিয়ে তার ভরা সংসার। এই যৌথ পরিবারের বড় ছেলে লিটু ও তার স্ত্রী তারিনের মানসিকতা অন্যদের চেয়ে আলাদা। সবাই যখন স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর, তখন এই আলোচনা নিতান্তই শিশুসুলভ তাদের কাছে। মুখোমুখি বাড়িতে অন্য পরিবারের বসবাস। সানজিদা প্রীতি সেই পরিবারের বড় মেয়ে। সজলের সঙ্গে তার ভাব। প্রায়ই চলে চিরকুট চালাচালি, সাইকেলে ঘোরাঘুরি। এই পারিবারিক আবহের ভেতরে আসে ২৫ মার্চ। কালরাতের ভয়াবহতা হৃদি হক তুলে এনেছেন সম্পূর্ণ অন্যভাবে। শহরজুড়ে প্রচণ্ড গুলির শব্দের ভেতরে দুই পরিবারের যে অসহায়তা, আর্তনাদ—এসবের মধ্য দিয়ে মূর্ত হয়ে ওঠে পুরো দেশের চিত্র।
‘১৯৭১ সেই সব দিন’ পিরিওডিক্যাল সিনেমা। এ সময়ে দাঁড়িয়ে ৫২ বছর আগেকার দৃশ্য ক্যামেরায় তুলে আনা সহজ কাজ নয়। এই দীর্ঘ সময়ে তো শুধু শহরের আদলই বদলায়নি, মানুষের নিত্য অনুষঙ্গ, ফ্যাশন—বদলেছে সবই। শুটিংয়ে খুটিনাটি কোনো কিছু একটু এদিক-সেদিক হলেই বিপত্তি। তবে হৃদি হক এই কঠিন চ্যালেঞ্জ ভালোভাবেই মোকাবিলা করতে পেরেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার চিত্র এত নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যে মনেই হয় না এটা নির্মাতার প্রথম সিনেমা।
জনপ্রিয় অনেক অভিনয়শিল্পীর সম্মিলন ঘটেছে সিনেমায়। তবে ফেরদৌসের কথা আলাদাভাবে বলতে হয়। সঞ্জু চরিত্রে সিনেমার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে অনবদ্য অভিনয় করলেন তিনি, তা দর্শকের চোখে লেগে থাকবে বহু বছর। উল্লেখ করতে হয় সজল, প্রীতি ও লিটু আনামের কথাও। নির্মাতা হৃদি হক একই সঙ্গে পরিচালনা আর অভিনয় করতে গিয়ে খানিকটা খেই হারিয়ে ফেললেন কি? প্রশ্ন থেকেই গেল।
অনেক চরিত্র আর অনেক অভিনয়শিল্পী যেমন এ সিনেমার শক্তিশালী দিক, তেমনি বড় দুর্বল দিকও বটে। গল্প শুরু হয়েছিল পারিবারিক আবহের মধ্য দিয়ে। পথ চলতে চলতে গণ্ডি বড় হয়। ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে। আসে অনেক সাবপ্লট, অনেক চরিত্র। তবে সব প্লট আর চরিত্রের সঙ্গে সুবিচার করতে পারেননি নির্মাতা। অনেক চরিত্র পরিণতি পায়নি, উঁকি দিয়েই হারিয়ে গেছে। তাতে মূল গল্পের বিশেষ ক্ষতি হয়নি যদিও, কিন্তু আবুল হায়াত-মামুনুর রশীদের মতো গুণী শিল্পীকে একটি-দুটি অগুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যে এনে বসিয়ে রাখলে সেটা দৃষ্টিকটুই লাগে।
১৯৭১ সেই সব দিন
অভিনয়: ফেরদৌস, সজল, লিটু আনাম, মিলন, তারিন, সানজিদা প্রীতি, সাজু খাদেম প্রমুখ।
পরিচালক: হৃদি হক
সংগীত: দেবজ্যোতি মিশ্র
মুক্তি: ১৮ আগস্ট, ২০২৩
নতুন গান প্রকাশ করল ব্যান্ড মেঘদল। শিরোনাম ‘গোলাপের নাম’। এটি মেঘদলের নতুন অ্যালবাম ‘অ্যালুমিনিয়ামের ডানা’র ৭ম গান। গানটি লিখেছেন ও সুর করেছেন শিবু কুমার শীল। ভিডিও নির্মাণ করেছেন সৌরভ সরকার।
২১ ঘণ্টা আগেএত দিনে ২০২৩ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ীদের ঘরে থাকার কথা ছিল। তবে বাস্তবতা হলো, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে সময়মতো আসেনি জাতীয় পুরস্কারের ঘোষণা, আয়োজন করা যায়নি অনুষ্ঠানের। শোনা যাচ্ছে, আগামী মাসেই ২০২৩ সালের বিজয়ীদের হাতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। গত আগস্টের আগেও সবার...
২১ ঘণ্টা আগেসংস্কৃতি খাতে জাতীয় বাজেটে ন্যূনতম ১ শতাংশ বরাদ্দের দাবি করেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। তাঁরা বলছেন, বিগত এক যুগে জাতীয় বাজেটের আকার বাড়লেও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি সংস্কৃতি খাতের বরাদ্দ। গত এক দশকে বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ শূন্য দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশের ওপরে ওঠেনি...
২১ ঘণ্টা আগেবিশ্বের কাছে নতুন বিস্ময় এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি। এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নানা কণ্ঠের মিথস্ক্রিয়ায় নতুন গান তৈরি হচ্ছে দেদার। সেলিব্রিটিদের কণ্ঠ নকল করে ইউটিউব ও টিকটকে এসব মিউজিক ছাড়া হচ্ছে। তবে অনেক সংগীতশিল্পী এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে বিরক্ত। রীতিমতো অস্তিত্ব সংকটে...
২১ ঘণ্টা আগে