Ajker Patrika

বয়স কমানোর ওষুধের কারণেই কি শেফালি জরিওয়ালার মৃত্যু, যা বলছেন বিশেষজ্ঞ

অনলাইন ডেস্ক
শেফালি জরিওয়ালা। ছবি: সংগৃহীত
শেফালি জরিওয়ালা। ছবি: সংগৃহীত

‘কাঁটা লাগা’ খ্যাত শেফালি জারিওয়ালা গত সপ্তাহে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণে মারা গেছেন। তাঁর মৃত্যু আবারও ভারতে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ক্রমবর্ধমান ঘটনাগুলোর ওপর আলোকপাত করেছে। আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ থাকার পরও হৃদ্‌রোগের উদ্বেগজনক বৃদ্ধি উদ্বেগের কারণ কী এবং ফিটনেস থেরাপি এবং ব্যায়ামের পরও কেন এমনটা হচ্ছে?

শেফালির মৃত্যু ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে যশোদা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের কৌসাম্বির ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজির প্রধান পরামর্শক ড. ধীরেন্দ্র সিংহানিয়া এনডিটিভির সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, হার্ট অ্যাটাকের প্রধান ঝুঁকির কারণগুলো হলো—স্টেরয়েড, ঘুমের অভাব এবং হরমোন থেরাপি (বিশেষত নারীদের ক্ষেত্রে)।

তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকেরই—সেলিব্রেটি হোক বা সাধারণ মানুষ—যদি তারা শরীরের নিয়ম না মেনে চলে, তবে সমস্যা হবে। সেলিব্রিটিদের মধ্যে, তারা সকলেই ফিট থাকার জন্য তাদের শরীর বজায় রাখার চেষ্টা করে। অনেক সময়, আমরা জানি না, তারা সেটি অর্জনের জন্য কী করে। ঘুমের অভাব একটি কার্ডিয়াক ঝুঁকির কারণ হিসাবে পরিচিত। অনেক সেলিব্রিটি রাতের প্রায় পুরো সময় জেগে থাকেন।’

ড. সিংহানিয়া আরও বলেন, ‘স্টেরয়েড, ড্রাগের অতিরিক্ত মাত্রা এবং মহিলাদের জন্য হরমোন থেরাপি, যেমন—হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (মেনোপজের জন্য এইচআরটি) এবং ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে অবদান রাখতে পারে।’ এই কার্ডিওলজিস্ট আরও বলেন, এ ছাড়া স্ট্রেস এবং সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি রক্তচাপ এবং কর্টিসলের মাত্রা বৃদ্ধিতে অবদান রাখে, যা শেষ পর্যন্ত হৃদ্‌রোগের দিকে ধাবিত করে।

ড. সিংহানিয়া সম্প্রতি হার্ট অ্যাটাক থেকে বেঁচে যাওয়া ৩৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তির করোনারি এনজিওগ্রাফিও দেখিয়েছেন। এই কার্ডিওলজিস্টের মতে, এই ব্যক্তির ধূমপান বা মদ্যপানের কোনো ইতিহাস ছিল না বা কোনো অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যগত সমস্যাও ছিল না। তবুও তিনি এই মারাত্মক রোগের শিকার হয়েছিলেন।

অভিনেত্রী কাম মডেল শেফালি জরিওয়ালা ৪২ বছর বয়সে শুক্রবার রাতে মারা যান, প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণে মারা গেছেন। তবে, তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। মুম্বাইয়ের কুপার হাসপাতালে এই অভিনেত্রীর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে এবং তা ভিডিওতে রেকর্ড করা হয়েছে।

পুলিশ ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জরিওয়ালার বাসভবন পরিদর্শন করেছেন, যেখানে তারা গ্লুটাথিয়ন (ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি এবং ডিটক্সিফিকেশনের জন্য ব্যবহৃত হয়), ভিটামিন সি ইনজেকশন এবং অ্যাসিডিটির ওষুধ খুঁজে পেয়েছেন। এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ, তত্ত্বাবধানবিহীন অ্যান্টি-এজিং চিকিৎসার ইঙ্গিত দেয়। এই বিষয়ে ড. সিংহানিয়া বলেন—অ্যান্টি-এজিং থেরাপিতে গ্লুটাথিয়ন এবং ভিটামিন সি-এর দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার সরাসরি কার্ডিওটক্সিক নয় এবং এটি কার্ডিওভাসকুলার স্ট্রেসে অবদান রাখে না।

তিনি বলেন, ‘অ্যান্টি-এজিং থেরাপির গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, তবে যদি তিনি কোনো হরমোন থেরাপিও নিয়ে থাকেন তবে তার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে।’

উল্লেখ্য, ‘কাঁটা লাগা’ খ্যাত এই অভিনেত্রী-মডেল ১৫ বছর বয়সে মৃগীরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ড. সিংহানিয়া বলেন, ‘মৃগীরোগের ক্ষেত্রে, এটি মূলত ব্যবহৃত ওষুধের ওপর নির্ভর করে, তবে সাধারণত সেগুলি হার্ট অ্যাটাকের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয়।’

শেফালি জরিওয়ালা ২০০২ সালে ‘কাঁটা লাগা’ গানের রিমিক্স মিউজিক ভিডিওর মাধ্যমে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি ২০০৪ সালের চলচ্চিত্র ‘মুঝসে শাদি করোগি’-তে একটি ছোট চরিত্রেও অভিনয় করেছিলেন। এই অভিনেত্রী তাঁর স্বামী পরাগ ত্যাগীর সাথে ‘নাচ বলিয়ে-৫’ এবং ‘নাচ বলিয়ে-৭’ রিয়্যালিটি টিভি শোতেও অংশ নিয়েছিলেন। তাঁকে ‘বিগ বস-১৩’ রিয়্যালিটি টিভি শোতেও প্রতিযোগী হিসাবে দেখা গিয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত