Ajker Patrika

ইউটিউবে প্রথম বিলিয়ন ভিউয়ের রেকর্ড, কোথায় হারিয়ে গেলেন গ্যাংনাম স্টাইলের সাই

ইউটিউবে প্রথম বিলিয়ন ভিউয়ের রেকর্ড, কোথায় হারিয়ে গেলেন গ্যাংনাম স্টাইলের সাই

২০১২ সালে ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ মুক্তির পর রাতারাতি আন্তর্জাতিক খ্যাতি পান দক্ষিণ কোরিয়ার গায়ক সাই। সুপারস্টার হয়ে ওঠেন তিনি। ইউটিউবে আপলোড করার পর গানটির অদ্ভুত মিউজিক ভিডিওটি ভাইরাল হয়। ইউটিউবের প্রথম বিলিয়ন (১০০ কোটি) ভিউ অর্জন করে এই গান।

গ্যাংনাম স্টাইলের ঘোড়সওয়ারের মতো ট্রেডমার্ক নাচটি দর্শকেরা হাজার হাজার বার অনুকরণ করেছে। এই গান দিয়ে রাতারাতি তারকা বনে যান সাই। কিন্তু এরপর আর তেমন একটা নাম শোনা যায়নি তাঁর। সাই তাহলে এখন কী করছেন?

সাই ওরফে পার্ক জায়ে–সাং–এর ষষ্ঠ স্টুডিও অ্যালবাম সাই ৬–এ গ্যাংনাম স্টাইল গানটি ছিল। অ্যালবামটির লক্ষাধিক কপি বিক্রি হয়েছে। সাই–এর ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ শুধু একাধিক ইউটিউব রেকর্ড ভাঙেনি, এটি ইউটিউব প্ল্যাটফর্মকেও বদলে দেয়। মিউজিক ভিডিওটি প্রথম কোনো কনটেন্ট হিসেবে ইউটিউবে এক বিলিয়ন ভিউয়ের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ আপলোড হওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর ইউটিউবের ব্যাকএন্ড কোডে পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয় গুগল।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে, ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ দ্রুতই সবচেয়ে বেশি পছন্দ করা ভিডিও হয়ে ওঠে, সেই সঙ্গে সবচেয়ে বেশিবার দেখা হয়েছে। তবে সাই এখন আর ইউটিউবের রাজা নন। প্রয়াত অভিনেতা পল ওয়াকারকে নিয়ে ২০১৭ সালে উইজ খলিফা ও চার্লি পুথের ‘সি ইউ অ্যাগেইন’ গানটি গ্যাংনাম স্টাইলকে সিংহাসনচ্যুত করে।

গানটি যখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে, সাইকে নিয়ে নিয়ে আলোচনাও তখন তুঙ্গে। যুক্তরাষ্ট্রের পপ সম্রাজ্ঞী ম্যাডোনার সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করেন তিনি। এমনকি আইফেল টাওয়ারের সামনে বিশাল একটি ফ্ল্যাশ মবের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সামনেও তিনি পারফর্ম করেন।

যদিও সাই স্পটলাইট ও খ্যাতির সঙ্গে পাওয়া সমস্ত সুযোগ–সুবিধা উপভোগ করেছেন। তবে তিনি অন্ধকার সময়ের সঙ্গেও লড়াই করেছেন।

২০১৩ সানডে টাইমসের কাছে অতিরিক্ত মদ পানের কথা স্বীকার করেন সাই। সেসময় তিনি বলেন, ‘আমি খুশির সময় মদ খাই, দুঃখের সময়ও খাই!’ তবে সাই তাঁর এই আসক্তি নিরাময়ে বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়েছিলেন কিনা তা জানা যায়নি।

সিএনএনের প্রতিবেদন অনুসারে, দক্ষিণ কোরিয়াকে আন্তর্জাতিক স্পটলাইটে রাখার পর ২০১৩ সালে দেশটি মোটা বেতনের পরিবর্তে সাইকে পর্যটন দূত হিসেবে নিয়োগ দেয়। তবে সংগীত তারকা ন্যূনতম অর্থ গ্রহণ করেন। এর আগেও এই ধরনের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তাঁর নিয়োগ অন্যান্য ব্যবসায়িক চুক্তির দরজাও খুলে দিয়েছিল। ২০১৩ সালের জন্য এশিয়ান এয়ারলাইনসের দূত হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।

২০১৪ সালে, সাই ও মার্কিন র‍্যাপার স্নুপ ডগ ‘হ্যাংওভার’ শিরোনামের একটি গান করেন। এটি জিমি কিমেল লাইভ শোতে প্রথম প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে মিউজিক ভিডিওটি অনলাইনে অনেক জনপ্রিয়তা পায়।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সাই তাঁর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সপ্তম স্টুডিও অ্যালবাম চিলজিপ সাই–দা প্রকাশ করেন। আগের রেকর্ড ভাঙা যে প্রায় অসম্ভব সে ব্যাপারে তিনি সচেতন ছিলেন। সংগীতশিল্পী হিসেবে আরও সফল হওয়ার জন্য তিনি প্রচুর চাপ অনুভব করেছিলেন, একপর্যায়ে বিষণ্নতায় ডুবে গিয়েছিলেন।

সে সময়ে এন্টারটেইনমেন্ট উইকলিকে সাই বলেন, ‘আমি অ্যাডিলে (ব্রিটিশ সংগীতশিল্পী) নই। গ্যাংনাম স্টাইলের পরে আমি সত্যিই খুশি ছিলাম। কিন্তু কখনো কখনো আমি অখুশিও ছিলাম। কারণ এটি আমার জীবনের সবচেয়ে জনপ্রিয় গান ও আমি সেই গানটির রেকর্ড ভেঙে শীর্ষ অবস্থানে যেতে পারব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সেসময় আমি চাপ অনুভব করেছি। আমি কীভাবে এই রেকর্ড টপকে যেতে পারি তা ভাবছিলাম। তাই আমি গ্যাংনাম লোকটিকে নয়, নিজেকে খুঁজে পাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করেছি।’

২০১৫ সালে সাইয়ের ‘ড্যাডি’ গানটিও ইউটিউবে লাখ লাখ ভিউ পায় এবং যুক্তরাষ্ট্রে টপ চার্টে উঠে আসে।

সাই যুক্তরাষ্ট্রে ও ইউরোপের বাজারে বেশি সক্রিয় না হলেও অন্যান্য দেশে এখনো পারফর্ম করেন। ২০১৫ সালে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি পশ্চিমাদের কাছ থেকে যে আয় (প্রায় ৫৫ কোটি ডলার) করেন, এখন তিনি চীনের বাজার থেকে একই পরিমাণ আয় করেন। চীনের জনপ্রিয় পিয়ানোবাদক ল্যাং ল্যাংয়ের সঙ্গেও তিনি বেশ কয়েকটি গান তৈরি করেছেন।

নিজের গান ছাড়াও অন্যদের গান এবং ভিডিও পরিচালনা ও প্রযোজনার কাজও করেন এই গায়ক। আট বছর পর ২০১৮ সালে ওয়াইজে এন্টারটেইনমেন্ট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি শেষ করেন সাই। তিনি নিজেই একটি রেকর্ডিং কোম্পানি খোলেন। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে নিজস্ব রেকর্ডিং কোম্পানি পি নেশন তৈরি করেন।

এই সময় দক্ষিণ কোরিয়ার কে–পপ ব্যান্ড বিটিএস জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসে। তাই সাইয়ের জন্য নতুন কোম্পানি শুরু করার এটিই সবচেয়ে ভালো সময় ছিল। সেসময় সাই বলেন, তিনি যা শিখেছেন তা পরবর্তী প্রজন্মের কে–পপ তারকাদের সঙ্গে শেয়ার করতে প্রস্তুত ছিলেন।

২০২২ সালে বিটিএসের সদস্য র‍্যাপার সুগার সঙ্গেও ‘দ্যাট দ্যাট’ শিরোনামের গান প্রকাশ করেন। এটিও অনেক জনপ্রিয়তা পায়। যুক্তরাষ্ট্রের দর্শকদের আকর্ষণ করতে মার্কিন বংশোদ্ভূত দক্ষিণ কোরীয় নারী র‍্যাপার জেসির সঙ্গে নতুন গান করার চুক্তি করে সাইয়ের পি নেশন।

জেসির সঙ্গে সাই আরও জনপ্রিয় কে–পপ শিল্পী নিয়োগের দিকে মনোযোগ দেন। তিনি গায়ক, র‍্যাপার ও গীতিকার হিউনার সঙ্গে চুক্তিও করেন। ২০০৭ সালে মেয়েদের গানের দল ওয়ান্ডার গার্লস–এর একজন সদস্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। পরে তাঁকে গ্যাংনাম স্টাইলের ভিডিওতেও দেখা যায়। এইভাবে তিনি তরুণ তারকাদের সঙ্গে দর্শকদের নতুন নতুন গান উপহার দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

গ্যাংনাম স্টাইল শুধু সাই-এর ক্যারিয়ারকেই নয়, সংগীত শিল্পকেও বদলে দিয়েছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, ইংরেজি ভাষার গান ছাড়াও একজন শিল্পী ইন্টারনেটের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শ্রোতাদের কাছে পৌঁছাতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতীয় টিভি সিরিয়ালে কেন অভিনয় করলেন বিল গেটস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সিরিয়ালটির প্রধান চরিত্র তুলসীর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলছেন বিল গেটস। ছবি: জিওস্টার
সিরিয়ালটির প্রধান চরিত্র তুলসীর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলছেন বিল গেটস। ছবি: জিওস্টার

২০০০ সাল জুলাই থেকে টানা সাড়ে ৮ বছর ধরে টিভি চ্যানেল স্টার প্লাসে চলেছিল জনপ্রিয় ভারতীয় সিরিয়াল ‘কিউকি সাঁস ভি কাভি বহু থি’। দেশ-বিদেশে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এই সিরিয়ালটি। এক নববধূর শাশুড়ির সঙ্গে জটিল সম্পর্ক এবং সবকিছু দায়িত্বের সঙ্গে সামলে নেওয়ার এই গল্প সবার মন ছুঁয়ে গিয়েছিল। দর্শকেরা নিজেদের দৈনন্দিন রুটিনই পাল্টে ফেলেছিলেন যাতে কোনো পর্ব মিস না হয়। এই সিরিয়ালে নববধূ তুলসীর চরিত্রটিতে অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী এবং ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।

চলতি বছরের জুলাই মাসে ২৫ বছর আগের এই সিরিয়াল আবারও ফিরে এসেছে পর্দায়। ভিরানি পরিবারের বৌ তুলসী এখন মধ্যবয়সী। সন্তানেরা বড় হয়েছে। এখন তিনি শাশুড়ি হতে চলেছেন।

জনপ্রিয় এই সিরিয়ালের দ্বিতীয় ভার্সন যতটা না মনোযোগ কেড়েছে তার চেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে এই সিরিয়ালে বিল গেটসের উপস্থিতি। গত বৃহস্পতিবার রাতে ধারাবাহিকটির একটি পর্বের একটি অংশে দেখা গেছে মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা ও সমাজসেবক বিল গেটসকে। দেখা যায়, এই সিরিয়ালের মূল চরিত্র তুলসী অর্থাৎ স্মৃতি ইরানির সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলছেন তিনি।

মাতৃ ও শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলেন বিল গেটস। উল্লেখ্য, বহু বছর ধরে গেটস ফাউন্ডেশন ভারতের জনবহুল দুই রাজ্য উত্তর প্রদেশ ও বিহারে সরকারের সঙ্গে মিলিতভাবে শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যু কমানোর উদ্যোগে কাজ করছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে ভারতের ওই রাজ্যগুলোতে মাতৃ ও শিশুর স্বাস্থ্যের সূচকে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। তবে গভীরভাবে প্রোথিত পিতৃতান্ত্রিক সমাজে এখনো বহু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সচেতনতা তৈরির বার্তা পৌঁছে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি, যাতে সমাজের ধারা পরিবর্তনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে এবং মানুষ আরও বেশি করে বুঝতে পারে মেয়েশিশু ও মায়েদের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা। আর এই লক্ষ্য পূরণের জন্য, ‘কিউকি সাঁস ভি কাভি বহু থি’ সিরিয়ালের চেয়ে বিল গেটসের জন্য উপযুক্ত কোনো প্ল্যাটফর্ম সম্ভবত আর হতে পারত না।

নতুন সিরিয়ালটি নিয়ে কলামনিস্ট ও দ্য প্রিন্ট অনলাইন সংবাদমাধ্যমের রিডার্স এডিটর শৈলজা বাজপাই বলেন, ২৫ বছর আগের মতো তুলসী এখনো লড়ছেন। ঈর্ষান্বিত ও ভুলপথে চলা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাঁর লড়াই এখনো শেষ হয়নি। আগের মতোই গল্পে রয়ে গেছে প্রচুর নাটকীয়তা, এমনকি মেলোড্রামাও।

তিনি আরও বলেন, ‘যদি আপনি গ্যাজেট, মোবাইল ফোন আর ল্যাপটপগুলো সরিয়ে দেন, অর্থাৎ বাহ্যিক সাজসজ্জা বাদ দেন তাহলে মূলত গল্পটা একই রয়ে গেছে। কেবল এটাকে নতুন সময়ের সঙ্গে মানিয়ে আপডেট করা হয়েছে।’

শৈলজা বাজপাই যোগ করেন, তবে এখনকার ধারাবাহিকের একটি বড় পরিবর্তন হলো সামাজিক বার্তা (social messaging) অনেক বেশি বেড়েছে।

সিরিয়ালটির প্রধান চরিত্র তুলসীর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলছেন বিল গেটস। ছবি: জিওস্টার
সিরিয়ালটির প্রধান চরিত্র তুলসীর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলছেন বিল গেটস। ছবি: জিওস্টার

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, এটা স্মৃতি ইরানির বর্তমান পরিচয়ের সঙ্গেও মানানসই। তিনি একসময় নারী ও শিশু উন্নয়নমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাই এখন ধারাবাহিকটি বিবাহবিচ্ছেদ, শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য এবং অন্যান্য সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েও কথা বলছে।’

চার মিনিটের দৃশ্যটির শুরুতে দেখা যায়, আমেরিকান উচ্চারণে হিন্দি বলে তুলসীকে সম্ভাষণ জানান বিল গেটস, ‘নমস্তে তুলসীজি।’ সঙ্গে এটাও জিজ্ঞেস করেন, ‘ঠিক বলেছি তো?’

তুলসী হাসিমুখে জবাব দেন, ‘হ্যাঁ, একদম!’

তুলসীকে একটি শিশুর জন্মের আগে ‘গোধ-ভারাই’ অনুষ্ঠানে গর্ভবতী মাকে স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ দিতে দেখা যায়। এরপর এই বিল গেটসের কাছ থেকে কল আসে তাঁর কাছে।

তুলসীর ছেলে তাঁর মায়ের স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়ার সময়টি ভিডিওতে ধারণ করেছিলেন এবং সেটি পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে বিল গেটসকে ট্যাগ করেছিলেন। আর তাঁর মায়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলার আমন্ত্রণ জানান।

তুলসীর ছেলে মাকে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে জানান, ‘তিনি রাজি হয়েছেন!’

তুলসী কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে বলেন, ‘ওনার সঙ্গে আমি কী বলব? আমি তো শুধু তোমাদের সঙ্গেই বা তোমার বাবার সঙ্গে ভিডিও কল করি, সেটাও বাজার-সদাই নিয়ে!’

কিন্তু একবার ল্যাপটপে কল সংযুক্ত হয়ে বিল গেটস পর্দায় আসতেই তুলসী নিজের স্বাভাবিক আত্মবিশ্বাসে ফিরে আসেন। তারপর কুশল বিনিময় শেষে ঐতিহ্যবাহী ‘গোধ-ভারাই’ আচারটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে থাকেন।

তুলসী চরিত্রে স্মৃতি ইরানি বলেন, ‘এই আয়োজনে সবাই মিলে গর্ভবতী মাকে আশীর্বাদ দিতে এবং তাঁর সুস্বাস্থ্য কামনায় একত্রিত হই। আমরা নারীদের বলি, নিজের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও খাদ্যের যত্ন নেওয়া কতটা জরুরি। আমরা তাদের পরামর্শ দিই চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে চলতে এবং সন্তান জন্মের জন্য হাসপাতালে যেতে।’

গেটস ও তুলসী দুজনেই এই কথায় একমত হন যে, ‘যখন মায়েরা সুস্থ থাকেন, তখন শিশুরা ভালোভাবে বেড়ে ওঠে, আর তখনই আসলে বিশ্ব এগিয়ে যায়।’

বিবিসিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ধারাবাহিকটির প্রযোজনা সংস্থা জিওস্টার এন্টারটেইনমেন্ট জানায়, মাতৃ ও শিশুর স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করতে তারা গল্প বলার মাধ্যম ব্যবহার করছে।

জিওস্টারের সুমন্ত বোস বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, গল্প বলা শুধু বিনোদনের জন্য নয়। এটি মানুষকে তথ্য দিতে পারে, অনুপ্রাণিত করতে পারে এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে পারে।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা কাহিনীর বুননে সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো যুক্ত করে এমন প্রভাব সৃষ্টি করতে চাই, যা পর্দার বাইরে গিয়ে মানুষের জীবনে বাস্তব পরিবর্তন আনে।’

বিল গেটস ধারাবাহিকটির তিনটি পর্বে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছে জিওস্টার।

কলামিস্ট শৈলজা বলেন, দ্বিতীয় যাত্রায় ধারাবাহিকটিকে এখন ওটিটি প্ল্যাটফর্মের অসংখ্য নতুন কনটেন্টের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে এবং এটি আগের মতো দর্শকদের মনে সেই সাড়া তুলতে পারেনি। তবে গেটসের এই অপ্রত্যাশিত উপস্থিতি ধারাবাহিকটিকে সাময়িক সময়ের জন্য হলেও আবারও আলোচনায় ফিরিয়ে এনেছে।

পর্বটির চার মিনিটের এই প্রোমো এক দিনেরও কম সময়ে ইনস্টাগ্রামে ছয় মিলিয়নের বেশি ভিউ পেয়েছে। মন্তব্যের ঘরে নিজেদের বিস্ময় প্রকাশ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হাজার হাজার নেটিজেন।

একটি মন্তব্যে লেখা ছিল, ‘এটা কোন মাল্টিভার্স!’ এই মন্তব্যে ১৭ হাজারেরও বেশি লাইক পড়ে।

আরেকজন লিখেছেন, “এটা একদমই ‘ক্রিঞ্জ’, কিন্তু একই সঙ্গে দারুণও লাগছে! ”

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কোক স্টুডিও বাংলায় তুহীন গাইলেন মহীনের ঘোড়াগুলির গান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘ক্যাফে’ গানের দৃশ্যে লিভিয়া মাতোস, তানযীর তুহীন ও গৌরব চ্যাটার্জি। ছবি: কোক স্টুডিও বাংলার সৌজন্যে
‘ক্যাফে’ গানের দৃশ্যে লিভিয়া মাতোস, তানযীর তুহীন ও গৌরব চ্যাটার্জি। ছবি: কোক স্টুডিও বাংলার সৌজন্যে

ভারতের প্রথম বাংলা রক ব্যান্ড মহীনের ঘোড়াগুলি। ১৯৭৬ সালে একদল তরুণ সিদ্ধান্ত নেন, নিজেরা গান লিখবেন, গাইবেন, সুর করবেন, বাজাবেন। পরবর্তী সময়ে আধুনিক বাংলা গানের সংজ্ঞা বদলে দিয়েছিল মহীনের ঘোড়াগুলি। অনেক কালজয়ী গান উপহার দিয়েছে ব্যান্ডটি। এ ব্যান্ডের অন্যতম জনপ্রিয় গান ‘আমার প্রিয়া ক্যাফে’।

১৯৯৬ সালে প্রকাশিত ব্যান্ডটির ‘ঝরা সময়ের গান’ অ্যালবামে ছিল এই গান। পরবর্তী সময়ে ‘কিছু সংলাপ কিছু প্রলাপ’ সিনেমাতেও ব্যবহৃত হয়েছিল গানটি। এবার কোক স্টুডিও বাংলায় মহীনের ঘোড়াগুলি ব্যান্ডের জনপ্রিয় এই গান কণ্ঠে তুললেন তানযীর তুহীন। গতকাল কোক স্টুডিও বাংলায় প্রকাশ পেয়েছে ‘ক্যাফে’ গানটি।

একটি সাধারণ ক্যাফে নিয়েই এই গান। ক্যাফে এমন একটি জায়গা যেখানে মানুষের অতি সাধারণ দিনটিও গল্পে পরিণত হয়। সময় যেন থমকে যায়, কণ্ঠস্বর নিচু হয়ে আসে আর প্রতিটি টেবিল বলতে থাকে নিজেদের গল্প। কারও প্রথম দেখা, কারও শেষ বিদায়। মানুষ আসে, আবার চলেও যায়, তবু কী যেন সব সময় থেকে যায়। এই অনন্ত নীরবতার মাঝেই জন্ম নিয়েছিল আমার প্রিয়া ক্যাফে। কথা ও সুর করার পাশাপাশি গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন মহীনের ঘোড়াগুলি ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম চট্টোপাধ্যায়। আমেরিকান লাতিন জাজ মিউজিক কম্পোজার এডি পামিয়েরির ‘ক্যাফে’ গানটি অবলম্বনে এই গান লিখেছিলেন তিনি।

নতুন করে গানটির সংগীত আয়োজন করেছেন শুভেন্দু দাস। নতুন সংগীতায়োজনে স্থান পেয়েছে আফ্রো-কিউবান জ্যাজ, লাতিন সালসা ও বাংলা পঙক্তি। গানটিতে তানযীর তুহীনের সঙ্গী হয়েছেন ব্রাজিলিয়ান শিল্পী লিভিয়া মাতোস এবং পশ্চিমবঙ্গের গৌরব চ্যাটার্জি। একাধিক সংস্কৃতির মিশ্রণে তাঁরা সবাই মিলে সৃষ্টি করেছেন প্রাণবন্ত এক সংগীত, যেখানে উদ্‌যাপিত হয়েছে ঐতিহ্য, আবেগ ও বৈশ্বিক সুরের মেলবন্ধন।

কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় সিজনের সপ্তম গান হিসেবে মুক্তি পেয়েছে ‘ক্যাফে’। শিরোনামহীন ও পরবর্তী সময়ে আভাস ব্যান্ডের গায়ক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া তানযীর তুহীনকে এবারই প্রথম পাওয়া গেল কোক স্টুডিও বাংলায়। এ মঞ্চে তাঁকে পেয়ে শ্রোতারা যে কতটা খুশি, তা বোঝা গেছে গানটির ঘোষণা দেওয়ার পরপরই। এ প্ল্যাটফর্মে সবশেষ গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশ পেয়েছিল হাবিব ওয়াহিদের গাওয়া ‘মহা জাদু’ গানটি। এতে হাবিবের সঙ্গে একটি অংশে গেয়েছেন তাজিকিস্তানের গায়িকা মেহেরনিগর রুস্তম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
সাফা কবির। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
সাফা কবির। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

টিভি নাটকে জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর সবার লক্ষ্য থাকে সিনেমায় অভিনয়। সাম্প্রতিক সময়ে ছোট পর্দার কয়েকজন অভিনেত্রী নাম লিখিয়েছেন সিনেমায়। নাটকে প্রমাণ করার পর বড় পর্দায় নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিচ্ছেন মেহজাবীন চৌধুরী, সাবিলা নূর, তাসনিয়া ফারিণরা। এ মাসের শুরুতে প্রথম সিনেমার শুটিং শুরু করেছেন তানজিন তিশা। বিষয়টি অনেকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও কেউ কেউ আবার টিপ্পনী কাটছেন। নাটকের শিল্পী বলে হেয় করছেন। এমন নেতিবাচক মন্তব্যে অনেক শিল্পী সাহস হারাচ্ছেন বলে জানালেন সাফা কবির। নেতিবাচক মন্তব্যের কারণে তিনি নিজেও সিনেমায় অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পাচ্ছেন।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে সাফা কবির জানান, তিনিও সিনেমায় অভিনয় করতে চান। তবে নেতিবাচক মন্তব্যে ভয় কাজ করছে তাঁর মধ্যে। সাফা বলেন, ‘বড় পর্দায় কবে আমাকে দেখা যাবে, এই প্রশ্নটা অনেক দিন ধরে শুনছি। আমিও নিজেকে সিনেমায় দেখতে চাই। কিন্তু এখন একটু ভয় হয়। সাম্প্রতিক সময়ে নাটকের অনেক ভালো ভালো অভিনেত্রী সিনেমা করছে। তবে তাদের কিছু মানুষ নাটকের নায়িকা বলে কটাক্ষ করছে। এই ধরনের মন্তব্য আমাকে নিরুৎসাহিত করছে। আমি এখন পর্যন্ত বড় পর্দায় আসিনি, কিন্তু এ ধরনের নেগেটিভ মন্তব্যের কারণে ভয় পেয়ে যাচ্ছি।’

গত কোরবানির ঈদে ‘তাণ্ডব’ সিনেমায় শাকিব খানের নায়িকা হয়েছিলেন সাবিলা নূর। এ সিনেমায় ছোট পর্দার অনেক শিল্পী অভিনয় করেছেন। সে সময় শাকিব খান বলেছিলেন, শিল্পীদের ছোট ও বড় পর্দা বলে ভেদাভেদ না করতে। সেই প্রসঙ্গে টেনে সাফা বলেন, ‘শাকিব খানের মতো তারকা এই ভেদাভেদ করতে না করেছেন। কিন্তু বাকিরা কেন করছেন? এটা আমার প্রশ্ন। ভেদাভেদের কথা শুনলে ভয় লাগে, খারাপ লাগে। এটা করা উচিত না। আমরা শিল্পীরা কিন্তু একটা পর্যায় থেকে আরেকটি পর্যায়ে যেতে চাই। তার জন্য প্রয়োজন সবার উৎসাহ ও ভালোবাসা।’

ইদানীং নাটকেও কম দেখা যাচ্ছে সাফা কবিরকে। কারণ হিসেবে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি কিছুদিন বিরতিতে ছিলাম। ক্যারিয়ারের ১১ বছর জার্নির পর এখন মনে হচ্ছে, নতুন কোনো গল্প ও চরিত্র পাচ্ছি না। পেলেও সেটা খুব কম। এই কারণেই কাজের পরিমাণটা কমে গেছে। তবে আশা করছি, আগামী মাসে সবাইকে একটা ভালো খবর দিতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘বনলতা এক্সপ্রেস’ নিয়ে আশাবাদী মোশাররফ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাস অবলম্বনে তানিম নূর বানাচ্ছেন ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ নামের সিনেমা। এতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করবেন মোশাররফ করিম। এত দিন বিষয়টি নিয়ে চুপ ছিলেন অভিনেতা। অবশেষে নতুন সিনেমা নিয়ে কথা বললেন মোশাররফ। জানালেন, সিনেমাটি নিয়ে আশাবাদী তিনি।

বনলতা এক্সপ্রেস সিনেমায় অভিনয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে মোশাররফ বলেন, ‘বনলতা এক্সপ্রেস নিয়ে তানিম নূরের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করছি একটি চমৎকার কাজ হবে।’ নির্মাতার ভাবনা পছন্দ হওয়ায় এ সিনেমায় যুক্ত হয়েছেন বলে জানালেন তিনি। অভিনেতা বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে। গল্পটা আমার পড়া। দারুণ গল্প। এই সিনেমায় যুক্ত হওয়ার এটিও একটি কারণ। তবে পরিচালক যদি সঠিকভাবে নির্দেশনা দিতে না পারেন, তাহলে ভালো গল্পও অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। যখন আমি সিনেমা করি, তখন পরিচালকের দিকে নজর দিই। তানিম নূরের সঙ্গে কথা বলার পর তাঁর ভাবনা দেখেই মূলত রাজি হওয়া।’

বনলতা এক্সপ্রেস নিয়ে এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে চাইলেন না মোশাররফ। শুধু বললেন, ‘সিনেমা তো কোনো ফ্যাক্টরির কাজ নয়। গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায় কাজটি কেমন হবে। সিনেমার পুরো খেলাটি একেবারে মনস্তাত্ত্বিক। সেটা পরিচালক, চিত্রগ্রাহক, অভিনয়শিল্পীসহ সবার দিক থেকেই। কাজ শেষ হওয়ার আগে এর বেশি বলতে চাই না। তবে আমি খুব আশাবাদী।’

বনলতা এক্সপ্রেস সিনেমার মাধ্যমে অনেক দিন পর আবার একসঙ্গে পর্দায় দেখা যাবে মোশাররফ ও চঞ্চল চৌধুরীকে। মোশাররফ বলেন, ‘দর্শক আমাদের একসঙ্গে দেখতে ভালোবাসে। সে জন্য দর্শকের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করছি এবারও ভালো কিছু হবে।’

‘মহানগর’ ওয়েব সিরিজের নতুন সিজন নিয়েও কথা বলেন মোশাররফ করিম। ইঙ্গিত দিলেন এ সিরিজের তৃতীয় সিজন নিয়ে কাজ চলছে। তিনি বলেন, ‘ওসি হারুনকে আবার কবে দেখা যাবে, এটা ভালো বলতে পারবে পরিচালক আশফাক নিপুন। তবে মহানগর-৩ নিয়ে একধরনের চিন্তাভাবনা হয়তো চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত