Ajker Patrika

মাহফুজের ক্যামেরায় জাদু

শাহ বিলিয়া জুলফিকার
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ছবির মাধ্যমে গল্প বলা, আবেগের ছোঁয়ায় জীবনকে তুলে ধরা—এটাই যেন আবদুল্লাহ আল মাহফুজের মনের খোরাক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। ফটোগ্রাফি তাঁর কাছে শুধু একটি সৃজনশীল চর্চা নয়, বরং তাঁর চিন্তা প্রকাশের একটি উপায়, একটি ভাষা। মাহফুজ মনে করেন, ফটোগ্রাফি মানে শুধুই দৃশ্য ধারণ করা নয়, এটি দেশের সংস্কৃতি, প্রকৃতি আর মানুষের জীবনধারার নিঃশব্দ প্রকাশ। তাঁর লক্ষ্য কেবল সাফল্যের তালিকা দীর্ঘ করা নয়; বরং দেশকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরা।

শুরুর গল্প

ফটোগ্রাফির প্রতি আবদুল্লাহ আল মাহফুজের খুব আগ্রহ ছিল ছোটবেলা থেকে। নিজ পরিবারের ছবি তোলা, অনুষ্ঠানগুলোয় ক্যামেরা হাতে দায়িত্ব পাওয়া—এসব অভিজ্ঞতা তাঁকে ফটোগ্রাফির প্রতি দারুণভাবে আকৃষ্ট করে। পরিবারের উৎসাহ ও প্রশংসা তাঁকে টেনে নিয়ে যায় প্রকৃতির দিকে, যেখানে প্রতিটি দৃশ্যের ভেতর তিনি খুঁজে পান অন্য রকম এক অনুভূতি, একটি গল্প। আবদুল্লাহ আল মাহফুজের কথায়, ‘পৃথিবীকে দেখতে চাই একটু আলাদা করে, যেখানে একজন শুধু দেখে—একটি পাখি উড়ছে। কিন্তু আমি সেখানে খুঁজে পাই একটি মুহূর্ত, একটি ভাবনা।’

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পদচারণ

২০১৯ সালে ইউনেসকো আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় রানারআপ হয়ে মাহফুজের আন্তর্জাতিক যাত্রা শুরু হয়। এরপর বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি পেয়েছেন সম্মানজনক স্বীকৃতি। সময় টেলিভিশনের ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতাসহ দেশের নানা আয়োজনে তিনি পুরস্কৃত হয়েছেন। তাঁর ছবি স্থান পেয়েছে জাতিসংঘ, ইউনেসকো, শারজাসহ বিভিন্ন দেশের প্রদর্শনীতে। ‘ফটোগ্রাফি ফর হিউম্যানিটি’ প্রতিযোগিতায় জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সম্মাননাপ্রাপ্তি কিংবা ‘এক্সপোজার ইন্টারন্যাশনাল ফটোগ্রাফি ও ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড’-এ চূড়ান্ত তালিকায় থাকা তাঁর কাজের পরিচয় বহন করে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ‘উইজডেন ফটোগ্রাফ অব দ্য ইয়ার’-এ রানারআপ হয়ে তিনি নিজের অবস্থানকে করেছেন আরও দৃঢ়।

ফটোগ্রাফি নিয়ে ভাবনা

মাহফুজ বিশ্বাস করেন, জীবনকে সবার চেনা পথে না দেখে একটু ভিন্ন দৃষ্টিকোণে দেখাই তাঁর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় সমাজ আমাদের নির্দিষ্ট একটা ছাঁচে ফেলার চেষ্টা করে। তবে আমি চাই প্রকৃতি, মানুষ আর সংস্কৃতির ভেতর থেকে জীবনের রূপটা উপলব্ধি করতে।’ তাঁর মতে, ক্যামেরার লেন্সে যখন আবেগ, পরিবেশ ও সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ধরা পড়ে, তখন তা হয়ে ওঠে গভীর এক অনুভব, যা সহজে ছুঁয়ে যায় হৃদয়কে।

আগামীর পথে

নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি দেশকে বিশ্বদরবারে উপস্থাপন করাই মাহফুজের বড় চাওয়া। তাঁর কাছে ফটোগ্রাফি কেবল একটি কাজ নয়, এটি তাঁর অনুভব, চিন্তা আর ভালোবাসার প্রকাশ। ছবির মধ্য দিয়ে তিনি তুলে ধরতে চান বাংলাদেশের রং, সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত