Ajker Patrika

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ইলিয়াস শান্ত, ঢাকা
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৫, ২৩: ০১
বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে অধিভুক্ত সাত কলেজের আনুষ্ঠানিক পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম নতুন কাঠামোর অধীনে হবে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নজরদারিতে তৈরি হবে সমন্বয় কমিটি। যার পরিচালক হবেন সাত কলেজের কোনো একজন অধ্যক্ষ। সঙ্গে থাকবে ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, ভর্তি, রেজিস্ট্রার ও হিসাব বিভাগের প্রতিনিধি। তবে যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বর্তমান ব্যবস্থা চালু রাখবে।

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে নানা জটিলতা তৈরি হতে থাকে। অধিভুক্তির দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও পরীক্ষা, মানসম্মত শিক্ষাসহ অন্য সমস্যা সমাধান পুরোপুরি হয়নি। ফলে বারবার আন্দোলনে নেমেছেন কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ গেল বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের সমন্বয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনে নামেন তাঁরা। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাত কলেজকে ‘সম্মানজনক’ পৃথকীকরণের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এতে সাত কলেজের চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম জটিলতার মুখে পড়ে।

ঢাবি প্রশাসনের সাত কলেজের পৃথকীকরণের সিদ্ধান্তের প্রায় এক মাস পর এবার নতুন পদক্ষেপের কথা জানাল ইউজিসি। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে সাময়িক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। যেখানে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথকীকরণের কথা জানানো হয়।

শিক্ষার্থীরা কী বলছেন

বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী জাফরিন আক্তার বলেন, ‘সাত কলেজের সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের প্রায় দুই মাস শেষ হয়েছে। এ সময়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির বেশ কিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপ আমরা দেখেছি। তারা কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে বসে আলোচনা করেছেন। এখন ক্যাম্পাসগুলো ঘুরে দেখছেন। সম্প্রতি সাত কলেজের পরিচালনায় নতুন পরিচালনা কাঠামোর খবর সামনে এসেছে। শুনেছি, এটা ঢাবি প্রশাসন অনুমোদন দিলে আইনগত বৈধতা পাবে। পবিত্র রমজান মাসের মধ্যেও কাজগুলো চলমান রয়েছে। যা প্রকৃতপক্ষেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভরসার জায়গা তৈরি করছে। আমরা আশাবাদী, অবশিষ্ট কাজগুলোও অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হবে।’

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরে বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিটি পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের প্রাণ ছুঁয়েছে। প্রথম থেকেই শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো তাঁরা যত্নের সঙ্গে শুনেছেন। এখন যতটুকু জানতে পেরেছি, অধিকাংশ কাজই গোছানো হয়ে গেছে। আমাদের প্রত্যাশা, বিশেষজ্ঞ কমিটি দ্রুতই সাত কলেজের চূড়ান্ত মুক্তির অভিপ্রায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঘোষণা করে যাবতীয় কর্মযজ্ঞ সমাপ্ত করবেন। স্বাধীনতার এত বছর পরে সাত কলেজের চূড়ান্ত মুক্তির জন্য যেসব শিক্ষাবিদ নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, শিক্ষার্থীরা তাঁদের আমৃত্যু স্মরণ রাখবে।’

সাত কলেজ পরিচালনায় নতুন পরিচালনা কমিটির প্রস্তাবনা এলেও শিক্ষার্থীদের মূল ফোকাস ‘বিশ্ববিদ্যালয়’। সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী সাবরিনা সুলতানা বলেন, ‘সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা মূলত চূড়ান্ত মুক্তির আন্দোলন শুরু করেছিল। সরকারের নির্দেশনায় ইউজিসি ধাপে ধাপে সেদিকে এগোচ্ছে। এখন বিশেষ পরিস্থিতিতে যে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, সেখানে পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে সাত কলেজের কার্যক্রম চালু রাখার কথা হয়েছে। পরিচালনা কমিটি হোক আর যা-ই হোক, আমাদের শিক্ষার্থীদের মূল দাবি কিন্তু চূড়ান্ত মুক্তি। সে ক্ষেত্রে সাত কলেজের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়কেই আমরা চূড়ান্ত মুক্তি হিসেবে দেখছি।’

ইউজিসির সুপারিশ অনুযায়ী, সাময়িকভাবে সাতটি প্রতিষ্ঠানে একক সমন্বিত কাঠামো থাকবে। একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় বা সমকক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতাভুক্ত হওয়ার আগপর্যন্ত এই সাময়িক কাঠামো সাতটি কলেজের দায়িত্ব পালন করবে। কমিটির পরিচালক হবেন সাত কলেজ থেকে একজন অধ্যক্ষ। এই কাঠামোর অধীনে সাত কলেজের সব হিসাব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পরিচালিত হবে। প্রস্তাবিত এই ব্যবস্থাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ঢাবি থেকে অনুমোদনের পরই তা কার্যকর হবে।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘সাত কলেজ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় সাময়িক ব্যবস্থা সংক্রান্ত’ শিরোনামে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ইউজিসির ওই সুপারিশপত্রে স্বাক্ষর করেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও সাত কলেজ বিষয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। এরপর ২ মার্চ ইউজিসির এই সুপারিশপত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্মতি দেয় দেয়। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যকে ইউজিসির সুপারিশ অনুযায়ী অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানায় মন্ত্রণালয়।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাত কলেজ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আমরা একটি চিঠি রিসিভ করেছি। ঢাবি থেকে সাত কলেজকে পৃথক্‌করণ ঘোষণার পর এসব কলেজের জন্য ইউজিসির পক্ষ থেকে চিঠিতে একটি পরিচালনা কমিটির সুপারিশ করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ সুপারিশের অনুমোদন দিলে নতুন পরিচালনা কমিটি আইনগত বৈধতা পাবে। আমরা সে প্রক্রিয়ার দিকেই যাচ্ছি। এ কমিটি ঢাবি থেকে অনুমোদনের জন্য কিছু ধাপ রয়েছে। এ ধাপগুলো শেষ করতে কিছু সময় লাগতে পারে। এটা আগামী দু-এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে পারব।’

রাজধানীর সাত সরকারি কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এই কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ। শিক্ষক এক হাজারের বেশি।

ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস আজকের পত্রিকাকে বলেন, সাত কলেজ বিষয়ে এবার কিন্তু সময় নিয়ে ও সুচিন্তিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যাতে নতুন করে আর কোনো সমস্যা তৈরির সুযোগ না থাকে। সাত কলেজকে এমন নির্দিষ্ট একটা গন্তব্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে ইউজিসির নেতৃত্বাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করছে। সে আলোকেই কিন্তু এ অন্তর্বর্তী কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।

ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার বলেন, ‘সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার লক্ষ্যে একটা অন্তর্বর্তী কমিটি গঠনের কথা আমরা শুনেছি। সাত কলেজে কোনো এক অধ্যক্ষকে এ কমিটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে। আমরা তো আসলে এখন কোথাও নেই... না আছি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের তো একটা পরিচয় লাগবে। সে অর্থে চিন্তা করলে ইউজিসির এই সুপারিশকে কাজের অগ্রগতি বলাই যায়।’

ইউজিসির নেতৃত্বে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র পরিচয় নিশ্চিত করতে চান সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে নতুন প্রস্তাবনায় যেন কোনো সমন্বয়হীনতা তৈরি না হয়, সে প্রত্যাশাও তাঁদের। কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জাকারিয়া বারী সাগর বলেন, ঢাবির অধীনে থেকেও সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা পরিচয় সংকটের মধ্যে ছিল। ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল ঘোষণার পর থেকে সাত কলেজ এখন অভিভাবকহীন অবস্থায় চলছে। এমন অবস্থায় ইউজিসি সাত কলেজের জন্য একটি পরিচালনা কমিটির সুপারিশ করেছে। এ কমিটির অধীনে যেন সাত কলেজ পরিচালনায় কোনো সমন্বয়হীনতা না থাকে। একই সঙ্গে এ পরিচালনা কমিটি কত দিন দায়িত্ব পালন করবে, সক্ষমতা কতটুকু থাকবে—এসব বিষয়গুলোর পরিষ্কার করতে হবে।

সাত কলেজের স্বতন্ত্র পরিচয় প্রতিষ্ঠায় গত ৩০ ডিসেম্বর ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজকে সভাপতি করে চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটির সদস্যরা হলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ ও ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান। এ কমিটিকে আগামী এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। এ কমিটি তাদের সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় সাময়িক ব্যবস্থার সুপারিশ করে।

প্রস্তাবিত পরিচালনা কমিটির মেয়াদ কতদিন

ইউজিসির প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে, একটি সনদপ্রাপ্ত পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়/সমকক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতাভুক্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই সাময়িক কাঠামো সাতটি কলেজ বিষয়ে দায়িত্ব পালন করবে।

চাইলে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেহেতু সাত কলেজকে পৃথকীকরণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে এ কলেজগুলোর প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম স্থিতিশীল রাখতে একটা পরিচালনা কাঠামোর প্রস্তাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় সেটার অনুমোদন দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছে। এখন এটা ঢাবির সিন্ডিকেট ও কাউন্সিলে পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। ঢাবির অনুমোদনের পর এ কমিটি নতুন সেশনের ভর্তি কার্যক্রমসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এ কমিটি ইউজিসির নজরদারিতে কাজ করবে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো, আইন ও ঘোষণা হওয়া আগপর্যন্ত এ কমিটির কার্যকারিতা বলবৎ থাকবে।

সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, অধিভুক্তি বাতিল করে এসব কলেজগুলোর সমন্বয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার। অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্য সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন। সে অনুযায়ী কাজও চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, আট বছর আগে একটি সরকার বিবেচনাহীনভাবে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে। যার ফলে জটিল সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই সাত কলেজ নিয়ে নতুন একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ কতদূর

ইউজিসি চেয়ারম্যান ও উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ফায়েজ বলেন, সাত কলেজের সমন্বয়ে নতুন যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা কাজ করছি, সেটার বেশ অগ্রগতি হয়েছে। এখন কাজ প্রায় শেষের দিকে রয়েছে। আমরা শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাত কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, সাত কলেজের অধ্যক্ষ, ঢাবি কর্তৃপক্ষ—সবার সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলেছি। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম চেয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। এসবগুলো কাজ এখন আমাদের ফিল্টারিং করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ইউজিসির নেতৃত্বে আমরা প্রায় সবগুলো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেছি। এর মাধ্যমে আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা ও দুর্বলতার দিকগুলো নির্ণয়ের চেষ্টা করছি। কিছু প্রতিষ্ঠানে সন্তোষজনক অবস্থা দেখা গেছে। কয়েকটির অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। আমরা এখন ক্যাম্পাসগুলোর সরেজমিন পর্যবেক্ষণ মূল্যায়নের চেষ্টা করছি। একইসঙ্গে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেলের কাজও দ্রুত গতিতে চলছে। আশা করছি, আমাদের যে সময়সীমা দেওয়া হয়েছে তার আগেই কাজ শেষ করতে পারব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এআইইউবিতে ১০ম সিজেন কনফারেন্স ২০২৫ অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) মিডিয়া অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন (এমএমসি) বিভাগ আয়োজিত ‘১০ম কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম এডুকেটরস নেটওয়ার্ক (সিজেন) কনফারেন্স ২০২৫’ ২৪ ও ২৫ অক্টোবর এআইইউবি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডিডব্লিউ একাডেমির সহযোগিতায় আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া শিক্ষাবিদ, গণমাধ্যম পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘মিডিয়া ট্রান্সফর্মড: বাংলাদেশ অ্যাট এ ক্রসরোড’।

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ড. হাসানুল এ. হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিডব্লিউ একাডেমির প্রজেক্ট ম্যানেজার মিস জিমি আমির। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এআইইউবি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ড. কারমেন জিটা লামাগনা, এআইইউবির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম, প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আব্দুর রহমান, ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের (এফএএসএস) ডিন প্রফেসর ড. তাজুল ইসলাম, এমএমসি বিভাগের উপদেষ্টা ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গণমাধ্যম পেশাজীবীরা।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন এমএমসি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মিস রানি এলেন ভি রামোস। দুই দিনব্যাপী এই কনফারেন্সে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন, প্যানেল আলোচনা এবং একাডেমিক পেপার সেশন অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে ২৪ অক্টোবর কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৫-এর ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছর গড় পাসের হার ৬২ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাবিবুল্যাহ মাহামুদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বছর প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষ মিলিয়ে মোট ৩৮ হাজার ৩৪২ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৩১ হাজার ৪২১ জন শিক্ষার্থী। আর চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেন ১৬ হাজার ৭৮৩ জন, যার মধ্যে ১০ হাজার ৪৬৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫ হাজার ৬৪০ জন ছাত্র ও ৪ হাজার ৮২৩ জন ছাত্রী। পরীক্ষার ফল বাউবির ওয়েবসাইট (result.bou.ac.bd) থেকে জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশ্বের ৫০ তরুণের একজন আমিমুল

আব্দুর রাজ্জাক খান
বিশ্বের ৫০ তরুণের একজন আমিমুল

বিশ্বের নানা প্রান্তের তরুণেরা যখন পরিবর্তনের স্বপ্নে ভবিষ্যৎ গড়ছেন, তখন সেই স্বপ্নবাজদের সারিতে বাংলাদেশের তরুণ আমিমুল এহসান খান যোগ করেছেন এক অনন্য অধ্যায়। সম্প্রতি তিনি নির্বাচিত হয়েছেন ‘গ্লোবাল চেঞ্জমেকার ২০২৫’ হিসেবে। বিশ্বের ৫০ জন তরুণের মধ্য থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি অর্জন করেছেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গ্লোবাল ইয়ুথ সামিট ২০২৫-এ অংশ নেন আমিমুল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৫০ তরুণ নেতাকে নিয়ে আয়োজিত এই সামিটে আলোচনা হয় নেতৃত্ব, টেকসই উন্নয়ন, সামাজিক পরিবর্তন ও বৈশ্বিক সহযোগিতা নিয়ে। এই সম্মেলন ছিল ফুল ফান্ডেড। সামিটে অংশগ্রহণ করা তরুণদের সব ব্যয় বহন করেছে আয়োজক সংস্থা।

টোকিও থেকে বিশ্বমঞ্চে

আমিমুলের উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে জাপানের টোকিও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পেয়েছেন ৮০ শতাংশ স্কলারশিপ, পাশাপাশি জাপান সরকারের এক বছরের বৃত্তিও পেয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি কাজ করছেন অ্যাওয়ারনেস ৩৬০ নামের একটি বৈশ্বিক তরুণ নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট লিড হিসেবে। পাশাপাশি জাপানের এশিয়ান বিজনেস নেটওয়ার্কে তিনি মার্কেটিং ম্যানেজার পদেও কর্মরত।

পরিবর্তনের পথে নেতৃত্ব

নিজের যাত্রা নিয়ে আমিমুল বলেন, ‘আমি এই সুযোগ পেয়েছি যুব ক্ষমতায়নমূলক কাজের জন্য, যা আমি অ্যাওয়ারনেস ৩৬০-এর সঙ্গে করে আসছি। আমি একা পৃথিবী বদলাতে পারব না জানি, তাই আমি অন্যদের অনুপ্রাণিত করছি, যাতে তারাও পরিবর্তনের পথে এগিয়ে আসে।’

39f00df0-২

তাঁর নেতৃত্বে প্রতিবছর আয়োজিত হয় অ্যাওয়ারনেস ৩৬০ ফেলোশিপ প্রোগ্রাম। যেখানে তরুণদের শেখানো হয় নেতৃত্ব, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ও সামাজিক প্রভাব তৈরির দক্ষতা। পাঁচ বছর ধরে প্রতিবছর এই উদ্যোগে যুক্ত হয়েছেন বিশ্বের ৭০টির বেশি দেশের প্রায় ৫০০ তরুণ।

পুরস্কার ও স্বীকৃতি

যুবসমাজের জন্য নিরলস পরিশ্রমের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২২ সালে আমিমুল পেয়েছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘দ্য ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড’। এটি ছিল তরুণ নেতৃত্ব এবং সামাজিক প্রভাব তৈরির অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার।

অনুপ্রেরণার বার্তা

দক্ষিণ আফ্রিকার সামিটে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা তাঁকে আরও দৃঢ় করেছে। তিনি বলেন, ‘এই সম্মেলনে অংশ নিয়ে বুঝেছি, পৃথিবীর প্রত্যেক তরুণই পরিবর্তনের বাহক হতে পারে। আমাদের চিন্তা, কাজ আর সহযোগিতার মাধ্যমে গড়ে উঠতে পারে এক সুন্দর, টেকসই ভবিষ্যৎ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাইবার সুরক্ষায় শিক্ষার্থীদের পাশে আরাফাত চৌধুরী

নওসাদ আল সাইম
আরাফাত চৌধুরী।
আরাফাত চৌধুরী।

দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে সাইবার অপরাধের ঝুঁকি। ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং, ভুয়া আইডি থেকে অপপ্রচার, অনলাইন প্রতারণা কিংবা ডিপফেক ভিডিও—সবকিছু মিলিয়ে এখন সাইবার অপরাধ এক বড় সামাজিক সংকটে পরিণত হয়েছে।

সাইবার এইড বাংলাদেশের সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, ডিপফেক ও এআইনির্ভর অপরাধের হার এখন ২৩ শতাংশের বেশি। সোশ্যাল মিডিয়া হ্যাকিং ২১ শতাংশ, ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে অপপ্রচার ১৫ শতাংশ, ই-কমার্স প্রতারণা ১৫ শতাংশ এবং অনলাইন হুমকি ১১ শতাংশ। ভুক্তভোগীদের প্রায় ৭৯ শতাংশের বয়স ১৮-৩০ বছরের মধ্যে, তাঁদের ৫৯ শতাংশই নারী।

অধিকাংশ ভুক্তভোগী জানেন না, কোথায় অভিযোগ করতে হবে। জরিপে দেখা গেছে, ৪২ শতাংশ অভিযোগ দাখিলের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে অজ্ঞ এবং যাঁরা অভিযোগ করেন, তাঁদের মাত্র ১২ শতাংশ আইনি প্রতিকার পান। ফলে সচেতনতার অভাব ও আইনি কাঠামোর সীমাবদ্ধতায় সাইবার নিরাপত্তা এখন দেশের বড় এক চ্যালেঞ্জ।

এই বাস্তবতায় এগিয়ে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত চৌধুরী। ২০২২ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘সাইবার এইড বাংলাদেশ’, যা সাইবার অপরাধের শিকার মানুষের আইনি সহায়তা এবং মানসিক সাপোর্ট দেয়। মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে সংগঠনটি দেশে সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে।

আরাফাত বলেন, ‘সাইবার অপরাধ শুধু মানসিক যন্ত্রণা নয়, সামাজিক মর্যাদাহানির কারণও। কিন্তু বেশির ভাগ ভুক্তভোগী ভয় বা লজ্জায় মুখ খুলতে চান না।’ সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ১ হাজার ৭৬১ জন এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রায়

৪ হাজার মানুষ সাইবার এইডের সহায়তা পেয়েছেন। সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে ৭৬ শতাংশই নারী। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসে ব্ল্যাকমেল ও ই-কমার্স প্রতারণা-সংক্রান্ত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান সুমনা বলেন, ‘একজন আমার ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেল করতে থাকে। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। তখন সাইবার এইডে যোগাযোগ করি। শুধু আইনি সহায়তাই নয়; মানসিকভাবেও তারা পাশে দাঁড়ায়।’

অন্যদিকে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘অনলাইনে একটি পেজ থেকে আইফোন কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছিলাম। সাইবার এইডের সহায়তায় পুলিশে অভিযোগ করতে পারি। এখন অন্তত জানি, প্রতারণার শিকার হলে চুপ করে না থেকে লড়াই করা যায়।’

শুধু আইনি সহায়তা নয়, সচেতনতা সৃষ্টিতেও কাজ করছে সংগঠনটি। এ পর্যন্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইবার সচেতনতা ক্যাম্পেইন এবং বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৫৬টির বেশি সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছে তারা। অনলাইনে ‘বেসিক সাইবার লিটারেসি’, ‘সাইবার স্পেস সিকিউরিটি’ ও ‘ডিজিটাল ফরেনসিক’ কোর্স চালু করেছে। ভবিষ্যতে চালু হবে একটি মোবাইল অ্যাপ, যেখানে থাকবে লাইভ চ্যাট সাপোর্ট, এআইনির্ভর নিরাপত্তা নির্দেশনা এবং দ্রুত অভিযোগ দাখিলের সুবিধা।

ভুক্তভোগীরা হটলাইন, ফেসবুক পেজ বা গ্রুপের মাধ্যমে অভিযোগ করলে সাইবার এইড বাংলাদেশ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন ও সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।

সাইবার অপরাধ বাড়ার পেছনে আরাফাত দুটি বড় কারণ দেখছেন। সেগুলো হলো সচেতনতার অভাব এবং আইনগত সীমাবদ্ধতা। তাঁর মতে, বেশির ভাগ সাইবার অপরাধ জামিনযোগ্য হওয়ায় অপরাধীদের ভয় কম। আবার ডিজিটাল প্রমাণ সংগ্রহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দক্ষতায়ও ঘাটতি রয়েছে।

আরাফাতের বিশ্বাস, প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সাইবার ঝুঁকিও বাড়ছে। তাই প্রয়োজন আগাম প্রস্তুতি ও সচেতনতা। তাঁর ভাষায়, ‘আমরা চাই তরুণেরা শুধু প্রযুক্তির ব্যবহারকারী নয়, বরং প্রযুক্তির নিরাপত্তা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করুক।’

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট আল মামুন রাসেল বলেন, সাইবার এইড বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে সাইবার ক্রাইম ভিকটিমদের আইনি সহযোগিতা করে যাচ্ছে। পাশাপাশি সাইবার‌ ক্রাইম প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। সাইবার ক্রাইম ভুক্তভোগীদের আইনি সহযোগিতা প্রদানে এটি অনন্য ও কার্যকরী উদ্যোগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত