Ajker Patrika

ইংরেজি শেখান তাঁরা

আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭: ০২
ইংরেজি শেখান তাঁরা

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নূরে জান্নাত মীম ও লিমন হাসান। করোনাকালে ‘ওয়ান মিনিট ইংলিশ উইদ মীম’ নামে একটি ফেসবুকে পেজ খুলে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার ওপর ভিডিও প্রকাশ করে পরিচিতি পান মীম। লিমন হাসানও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইংরেজি শেখাতেন। একসময় কাজের প্রয়োজনে যোগাযোগ হয় দুজনের। হয় মনের মিল। পরে দুজন বিয়ে করে

একসঙ্গে ইংরেজি শেখানোর কাজ শুরু করেন। দুজনের আলাদা ইংরেজি শেখানোর প্ল্যাটফর্ম এক করে নাম দেন ‘লিংগুয়াল একাডেমি’। তাঁদের একসঙ্গে পড়াশোনা, প্রেম, বিয়ে ও কাজের গল্প শুনেছেন সিফাত রব্বানী।

শুরুটা ছিল বেশ রোমাঞ্চকর। দুজনেই আলাদাভাবে অনলাইনে ইংরেজি শেখান। হঠাৎ একসঙ্গে ইংরেজি শেখানোর ভিডিও বানানোর প্রস্তাব দিয়ে লিমন খুদে বার্তা পাঠান মীমের কাছে। তখন অনলাইনে তাঁর বেশ পরিচিতি। আর লিমনকে অনুসরণ করে মাত্র ১ হাজার মানুষ। খুদে বার্তা পাঠিয়ে অপেক্ষা করতে করতে তিন দিনের মাথায় সেই বার্তার জবাব পেলেন লিমন। শুরু হলো তাঁদের একসঙ্গে কাজের কথাবার্তা।

কাজের মিলের সঙ্গে মনের মিল
কাজের সুবাদে প্রায়ই তাঁদের কথা হতো। সে সময় কনটেন্ট, কনটেন্টের বাইরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলত। কিছুদিন পর লিমনের মনে হয়, হয়তো মীমকে তাঁর ভালো লাগে। বিষয়টি সরাসরি না বলে বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন তিনি। মীমও বুঝতে পেরে প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু লিমন চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। মাস তিনেক পরে মীমের কাছ থেকে হ্যাঁ সূচক জবাব আসে। লিমন তখন রংপুরে থাকতেন। সেখান থেকে ঢাকায় আসতেন মীমের সঙ্গে দেখা করতে।

এক বছর পর হঠাৎ মীমের বাবা বিষয়টি জানতে পেরে তাঁর পছন্দের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেন। মীমও সব স্বীকার করেন। মীমের বাবা লিমনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং প্রথম দেখাতেই পছন্দ করেন। এরপর তাঁদের বিয়ে হয় পারিবারিকভাবে।

বিয়ের দুই বছর না কাটতেই লিমন ও মীমের পৃথক দুটি প্ল্যাটফর্ম লিংগুয়াল একাডেমি নামে একীভূত হয়ে যায়। বর্তমানে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ এই ইংরেজি শিখছে।

একসঙ্গে পথচলা
মীম ও লিমন—দুজনই শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয়। ঘরসংসার সামলে তাঁরা ইংরেজি শেখানোর নতুন নতুন ভিডিও তৈরি করেন। রান্না, বিড়ালের দেখাশোনা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস— এই তিন কাজ করেন মীম। তাঁকে সাহায্য করার পাশাপাশি নিজের পড়াশোনা করছেন লিমনও। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আগে যখন আলাদা কনটেন্ট বানাতেন, তখন নিজেদের কাজ একই রকম হতো। কিন্তু একসঙ্গে হওয়ায় কাজে বৈচিত্র্য এসেছে, ভিন্নতা এসেছে, বেড়েছে কাজের গতি। 

স্মরণীয় মুহূর্ত
এক সন্ধ্যায় লিমন ও মীম ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বরের আশপাশে ঘুরছিলেন। এ সময় ফুচকার দোকানে ফুচকা চাইতেই দোকানি তাঁদের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলতে শুরু করেন। তখন তাঁরা দোকানির কাছে জানতে চান, কোথায় ইংরেজি শিখেছেন তিনি। দোকানি উত্তর দেন, তাঁদের ভিডিও দেখে নোট টুকে ইংরেজিতে কথা বলা শিখেছেন।

উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা 
দেশের অনেক শিক্ষার্থীর ইংরেজিতে কথা বলতে জড়তা কাজ করে। এই ভীতি দূর করতে চান মীম ও লিমন। ইংরেজি না জানার কারণে অনেকে কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। ইংরেজি না জানা মানুষগুলোর জন্য এ ভাষা সহজভাবে শেখানোই তাঁদের মূল উদ্দেশ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৫-এর ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছর গড় পাসের হার ৬২ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাবিবুল্যাহ মাহামুদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বছর প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষ মিলিয়ে মোট ৩৮ হাজার ৩৪২ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৩১ হাজার ৪২১ জন শিক্ষার্থী। আর চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেন ১৬ হাজার ৭৮৩ জন, যার মধ্যে ১০ হাজার ৪৬৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫ হাজার ৬৪০ জন ছাত্র ও ৪ হাজার ৮২৩ জন ছাত্রী। পরীক্ষার ফল বাউবির ওয়েবসাইট (result.bou.ac.bd) থেকে জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশ্বের ৫০ তরুণের একজন আমিমুল

আব্দুর রাজ্জাক খান
বিশ্বের ৫০ তরুণের একজন আমিমুল

বিশ্বের নানা প্রান্তের তরুণেরা যখন পরিবর্তনের স্বপ্নে ভবিষ্যৎ গড়ছেন, তখন সেই স্বপ্নবাজদের সারিতে বাংলাদেশের তরুণ আমিমুল এহসান খান যোগ করেছেন এক অনন্য অধ্যায়। সম্প্রতি তিনি নির্বাচিত হয়েছেন ‘গ্লোবাল চেঞ্জমেকার ২০২৫’ হিসেবে। বিশ্বের ৫০ জন তরুণের মধ্য থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি অর্জন করেছেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গ্লোবাল ইয়ুথ সামিট ২০২৫-এ অংশ নেন আমিমুল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৫০ তরুণ নেতাকে নিয়ে আয়োজিত এই সামিটে আলোচনা হয় নেতৃত্ব, টেকসই উন্নয়ন, সামাজিক পরিবর্তন ও বৈশ্বিক সহযোগিতা নিয়ে। এই সম্মেলন ছিল ফুল ফান্ডেড। সামিটে অংশগ্রহণ করা তরুণদের সব ব্যয় বহন করেছে আয়োজক সংস্থা।

টোকিও থেকে বিশ্বমঞ্চে

আমিমুলের উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে জাপানের টোকিও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পেয়েছেন ৮০ শতাংশ স্কলারশিপ, পাশাপাশি জাপান সরকারের এক বছরের বৃত্তিও পেয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি কাজ করছেন অ্যাওয়ারনেস ৩৬০ নামের একটি বৈশ্বিক তরুণ নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট লিড হিসেবে। পাশাপাশি জাপানের এশিয়ান বিজনেস নেটওয়ার্কে তিনি মার্কেটিং ম্যানেজার পদেও কর্মরত।

পরিবর্তনের পথে নেতৃত্ব

নিজের যাত্রা নিয়ে আমিমুল বলেন, ‘আমি এই সুযোগ পেয়েছি যুব ক্ষমতায়নমূলক কাজের জন্য, যা আমি অ্যাওয়ারনেস ৩৬০-এর সঙ্গে করে আসছি। আমি একা পৃথিবী বদলাতে পারব না জানি, তাই আমি অন্যদের অনুপ্রাণিত করছি, যাতে তারাও পরিবর্তনের পথে এগিয়ে আসে।’

39f00df0-২

তাঁর নেতৃত্বে প্রতিবছর আয়োজিত হয় অ্যাওয়ারনেস ৩৬০ ফেলোশিপ প্রোগ্রাম। যেখানে তরুণদের শেখানো হয় নেতৃত্ব, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ও সামাজিক প্রভাব তৈরির দক্ষতা। পাঁচ বছর ধরে প্রতিবছর এই উদ্যোগে যুক্ত হয়েছেন বিশ্বের ৭০টির বেশি দেশের প্রায় ৫০০ তরুণ।

পুরস্কার ও স্বীকৃতি

যুবসমাজের জন্য নিরলস পরিশ্রমের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২২ সালে আমিমুল পেয়েছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘দ্য ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড’। এটি ছিল তরুণ নেতৃত্ব এবং সামাজিক প্রভাব তৈরির অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার।

অনুপ্রেরণার বার্তা

দক্ষিণ আফ্রিকার সামিটে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা তাঁকে আরও দৃঢ় করেছে। তিনি বলেন, ‘এই সম্মেলনে অংশ নিয়ে বুঝেছি, পৃথিবীর প্রত্যেক তরুণই পরিবর্তনের বাহক হতে পারে। আমাদের চিন্তা, কাজ আর সহযোগিতার মাধ্যমে গড়ে উঠতে পারে এক সুন্দর, টেকসই ভবিষ্যৎ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাইবার সুরক্ষায় শিক্ষার্থীদের পাশে আরাফাত চৌধুরী

নওসাদ আল সাইম
আরাফাত চৌধুরী।
আরাফাত চৌধুরী।

দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে সাইবার অপরাধের ঝুঁকি। ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং, ভুয়া আইডি থেকে অপপ্রচার, অনলাইন প্রতারণা কিংবা ডিপফেক ভিডিও—সবকিছু মিলিয়ে এখন সাইবার অপরাধ এক বড় সামাজিক সংকটে পরিণত হয়েছে।

সাইবার এইড বাংলাদেশের সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, ডিপফেক ও এআইনির্ভর অপরাধের হার এখন ২৩ শতাংশের বেশি। সোশ্যাল মিডিয়া হ্যাকিং ২১ শতাংশ, ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে অপপ্রচার ১৫ শতাংশ, ই-কমার্স প্রতারণা ১৫ শতাংশ এবং অনলাইন হুমকি ১১ শতাংশ। ভুক্তভোগীদের প্রায় ৭৯ শতাংশের বয়স ১৮-৩০ বছরের মধ্যে, তাঁদের ৫৯ শতাংশই নারী।

অধিকাংশ ভুক্তভোগী জানেন না, কোথায় অভিযোগ করতে হবে। জরিপে দেখা গেছে, ৪২ শতাংশ অভিযোগ দাখিলের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে অজ্ঞ এবং যাঁরা অভিযোগ করেন, তাঁদের মাত্র ১২ শতাংশ আইনি প্রতিকার পান। ফলে সচেতনতার অভাব ও আইনি কাঠামোর সীমাবদ্ধতায় সাইবার নিরাপত্তা এখন দেশের বড় এক চ্যালেঞ্জ।

এই বাস্তবতায় এগিয়ে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত চৌধুরী। ২০২২ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘সাইবার এইড বাংলাদেশ’, যা সাইবার অপরাধের শিকার মানুষের আইনি সহায়তা এবং মানসিক সাপোর্ট দেয়। মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে সংগঠনটি দেশে সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে।

আরাফাত বলেন, ‘সাইবার অপরাধ শুধু মানসিক যন্ত্রণা নয়, সামাজিক মর্যাদাহানির কারণও। কিন্তু বেশির ভাগ ভুক্তভোগী ভয় বা লজ্জায় মুখ খুলতে চান না।’ সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ১ হাজার ৭৬১ জন এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রায়

৪ হাজার মানুষ সাইবার এইডের সহায়তা পেয়েছেন। সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে ৭৬ শতাংশই নারী। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসে ব্ল্যাকমেল ও ই-কমার্স প্রতারণা-সংক্রান্ত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান সুমনা বলেন, ‘একজন আমার ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেল করতে থাকে। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। তখন সাইবার এইডে যোগাযোগ করি। শুধু আইনি সহায়তাই নয়; মানসিকভাবেও তারা পাশে দাঁড়ায়।’

অন্যদিকে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘অনলাইনে একটি পেজ থেকে আইফোন কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছিলাম। সাইবার এইডের সহায়তায় পুলিশে অভিযোগ করতে পারি। এখন অন্তত জানি, প্রতারণার শিকার হলে চুপ করে না থেকে লড়াই করা যায়।’

শুধু আইনি সহায়তা নয়, সচেতনতা সৃষ্টিতেও কাজ করছে সংগঠনটি। এ পর্যন্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইবার সচেতনতা ক্যাম্পেইন এবং বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৫৬টির বেশি সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছে তারা। অনলাইনে ‘বেসিক সাইবার লিটারেসি’, ‘সাইবার স্পেস সিকিউরিটি’ ও ‘ডিজিটাল ফরেনসিক’ কোর্স চালু করেছে। ভবিষ্যতে চালু হবে একটি মোবাইল অ্যাপ, যেখানে থাকবে লাইভ চ্যাট সাপোর্ট, এআইনির্ভর নিরাপত্তা নির্দেশনা এবং দ্রুত অভিযোগ দাখিলের সুবিধা।

ভুক্তভোগীরা হটলাইন, ফেসবুক পেজ বা গ্রুপের মাধ্যমে অভিযোগ করলে সাইবার এইড বাংলাদেশ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন ও সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।

সাইবার অপরাধ বাড়ার পেছনে আরাফাত দুটি বড় কারণ দেখছেন। সেগুলো হলো সচেতনতার অভাব এবং আইনগত সীমাবদ্ধতা। তাঁর মতে, বেশির ভাগ সাইবার অপরাধ জামিনযোগ্য হওয়ায় অপরাধীদের ভয় কম। আবার ডিজিটাল প্রমাণ সংগ্রহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দক্ষতায়ও ঘাটতি রয়েছে।

আরাফাতের বিশ্বাস, প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সাইবার ঝুঁকিও বাড়ছে। তাই প্রয়োজন আগাম প্রস্তুতি ও সচেতনতা। তাঁর ভাষায়, ‘আমরা চাই তরুণেরা শুধু প্রযুক্তির ব্যবহারকারী নয়, বরং প্রযুক্তির নিরাপত্তা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করুক।’

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট আল মামুন রাসেল বলেন, সাইবার এইড বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে সাইবার ক্রাইম ভিকটিমদের আইনি সহযোগিতা করে যাচ্ছে। পাশাপাশি সাইবার‌ ক্রাইম প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। সাইবার ক্রাইম ভুক্তভোগীদের আইনি সহযোগিতা প্রদানে এটি অনন্য ও কার্যকরী উদ্যোগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্কিল ডেভেলপমেন্ট ক্লাব

জাককানইবি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র

আশরাফুল আলম
জাককানইবি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ প্রতিষ্ঠিত স্কিল ডেভেলপমেন্ট ক্লাব (এসডিসি) অন্যতম। এটি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি এবং ক্যারিয়ার গঠনের কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রশংসা অর্জন করেছে।

এসডিসির লক্ষ্য ও ভিশন হলো শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করা এবং একটি দক্ষতানির্ভর তরুণ প্রজন্ম গড়ে তোলা। এসব তরুণ জাতীয় এবং বৈশ্বিক অঙ্গনে নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখবে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এসডিসি শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত ওয়ার্কশপ, সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতা আয়োজন করে আসছে। যোগাযোগ দক্ষতা, নেতৃত্ব, নেটওয়ার্ক তৈরি, ক্যারিয়ার পরিকল্পনা ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

সম্প্রতি এসডিসি আয়োজন করেছে জাতীয় পর্যায়ের বিজনেস কেস প্রতিযোগিতা ‘বিস কেইস ২০২৫’। তিন ধাপে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ২৮৫টির বেশি দল, যার পুরস্কারমূল্য ছিল ১ লাখ টাকা। এতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন হয়। ইভেন্টের টাইটেল স্পনসর ছিল এসআর ড্রিম আইটি এবং সহ-স্পনসর ছিল ২৫টির বেশি প্রতিষ্ঠান।

ক্লাবটির অন্যতম সিগনেচার আয়োজন ‘ফ্রেশারস চয়েস’। এখানে নবীন শিক্ষার্থীরা মঞ্চে কথা বলার আত্মবিশ্বাস অর্জন এবং পাবলিক স্পিকিং দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ পায়। এটি শুধু প্রতিযোগিতা নয়; বরং নবীনদের আত্মপ্রকাশের সাহস জোগানো এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে।

শিক্ষার্থীদের চাকরির প্রস্তুতিতে সহায়তার জন্য এসডিসি আয়োজন করে ‘জব ফেয়ার ২০২৫’। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী সিভি জমা দেন এবং অনেকে ইন্টারভিউ কল পান। এই আয়োজন ক্যারিয়ার প্রস্তুতির পাশাপাশি নেটওয়ার্কিং এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতেও বড় ভূমিকা রাখে।

বর্তমানে ক্লাবটির ষষ্ঠ কার্যনির্বাহী কমিটি দায়িত্ব পালন করছে। সভাপতি মো. মোস্তাকিম, সাধারণ সম্পাদক বেলাল হাসান শাওন, মরিয়ম আক্তার তানিয়াসহ নির্বাহী সদস্যরা দলগতভাবে নানা সৃজনশীল উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছেন।

এসডিসি আগামী দিনে উদ্যোক্তা উন্নয়ন, প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ ও গবেষণামূলক কর্মসূচি গ্রহণের পরিকল্পনা করছে। পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ে আরও বিস্তৃত পরিসরে দক্ষতা উন্নয়নমূলক উদ্যোগ নিতে চান তাঁরা।

সভাপতি মো. মোস্তাকিম বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য শুধু প্রশিক্ষণ নয়, শিক্ষার্থীদের এমনভাবে গড়ে তোলা, যেন তারা প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে নিজেদের দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারে।’

ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘এসডিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম কার্যকর সংগঠন। শিক্ষার্থীরা এখানে যোগ দিয়ে তাদের ইন্টারপারসোনাল স্কিল উন্নয়নের সুযোগ পাচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারে অত্যন্ত সহায়ক।’

দক্ষতা ও শিক্ষার মেলবন্ধনে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কিল ডেভেলপমেন্ট ক্লাব হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী এবং দক্ষ ভবিষ্যতের সহযাত্রী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত