Ajker Patrika

ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবে গ্রিন ইউনিভার্সিটি

ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবে গ্রিন ইউনিভার্সিটি

প্রশ্ন: খুবই অল্প দিন হলো গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে যোগদান করেছেন। প্রাথমিকভাবে কেমন দেখছেন?
উত্তর: একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স দুই দশক যদিও খুব বেশি নয়, আবার বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে তা কমও নয়। ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্রিন ইউনিভার্সিটি ইতিমধ্যে দুই দশক পার করেছে। গত ১৬ মে আমি যোগদানের পর সিনিয়র শিক্ষক, ডিন, চেয়ারপারসন ও বিভাগীয় শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রত্যেককেই আন্তরিক ও যোগ্য মনে হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, খোলামেলা ও নান্দনিক পরিবেশে গড়ে ওঠা গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। যতটা সুনাম আছে, এটাকে ভবিষ্যতে আরও উন্নতি করতে চেষ্টা করব।

প্রশ্ন: নিজস্ব ক্যাম্পাসের পরিবেশ ও প্রশাসনের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর: একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোয়ালিটি এডুকেশন যেমন জরুরি, তেমনি এর সঙ্গে উন্নত ভৌত অবকাঠামো সুবিধা নিশ্চিত করাও অপরিহার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু ভালো ক্লাসরুম থাকলে চলবে না; ওপেন স্পেস, ইনডোর-আউটডোর খেলার মাঠও থাকতে হবে। মূলত এই বিষয় আমলে নিয়েই ঢাকার পূর্বাচলে আমেরিকান সিটিতে নান্দনিক পরিবেশে গড়ে উঠেছে আমাদের গ্রিন ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস। যাতায়াতের জন্য রয়েছে অর্ধশতাধিক বাস। যেগুলো রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলায় নিয়মিত যাতায়াত করছে। এ ক্যাম্পাসে পুরোদমে ক্লাস শুরু হয়েছে গত বছর থেকে। এখানে মূল প্রশাসনিক ভবনের সঙ্গে এনেক্স বিল্ডিং হিসেবে আটটি ভবন রয়েছে। আরেকটি ভবনে রয়েছে আধুনিক ফুড কোর্ট। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে গড়ে তোলা হয়েছে খেলার মাঠ। নতুন ক্যাম্পাস হিসেবে চ্যালেঞ্জ তো রয়েছেই। তবে ইতিমধ্যে সেটি উতরে শিক্ষাসংক্রান্ত সব উপকরণ ও অন্যান্য সুবিধা শিক্ষার্থীদের জন্য নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। এই সুবিধা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, আশা করি ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।

প্রশ্ন: সহপাঠ্যক্রমিক শিক্ষায় কতটা এগিয়ে গ্রিন ইউনিভার্সিটি?
উত্তর: শিক্ষার অংশ বলে সহশিক্ষা কার্যক্রমকে এক্সটেন্ডেট লার্নিং বলা হয়ে থাকে। গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় ২১টি ক্লাব গড়ে তোলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে ডিবেটিং ক্লাব, স্পোর্টস ক্লাব, কালচারাল ক্লাব, সিনে ক্লাব, ব্লাড ক্লাব, ইকো ওয়ারিয়র ক্লাব, সোশ্যাল বন্ডিং ক্লাব। এ ছাড়া বিভাগীয় ৮ ক্লাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের সহশিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা নিয়মিত আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ও আন্তকলেজ স্পোর্টস প্রতিযোগিতার আয়োজন করছি। গত ২১ থেকে ২৭ মে ৪৮টি কলেজের অংশগ্রহণে ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হলো এখানে। বাংলাদেশ টেলিভিশন জাতীয় বিতর্ক ও এটিএন বাংলা-ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট ডিবেটসহ অনেক আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় পর্যায়ের বিতর্কে আমাদের ডিবেটিং ক্লাব চ্যাম্পিয়ন ও রানারস-আপ। নিয়মিত সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে ক্লাবগুলো।

প্রশ্ন: দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কী কী সুবিধা রয়েছে?
উত্তর: গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর বিশেষ স্কলারশিপ সুবিধা রয়েছে। এখানে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, ছাত্রীসহ বিভিন্ন কোটায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পাচ্ছে। অপেক্ষাকৃত কম সচ্ছল ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েদের জন্য রয়েছে বিশেষ টিউশন ফি মওকুফের ব্যবস্থা। গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে ‘স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার ফান্ড’ রয়েছে। সেখানে শিক্ষক-কর্মকর্তারা মাসিক চাঁদা দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করছে। গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রতি সেমিস্টারে এই ফান্ড থেকে বৃত্তি পেয়ে থাকে।

প্রশ্ন: গবেষণার ক্ষেত্রে গ্রিন ইউনিভার্সিটি কী করছে?
উত্তর: গবেষণায় উৎসাহ বাড়াতে গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে চালু রয়েছে বেস্ট রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড ও রিসার্চ এক্সিবিশন অ্যাওয়ার্ড। এই কার্যক্রমকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সেন্টার ফর রিসার্চ, ইনোভেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন বা সিআরটি। এর মাধ্যমে নানাভাবে শিক্ষকদের গবেষণায় উৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রতিবছর তিনটি জার্নাল প্রকাশ করা হচ্ছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা নিয়মিত আর্টিকেল প্রকাশ করছেন। আমি নিজে যেহেতু গবেষণামুখী মানুষ, তাই ভবিষ্যতে এই দিকটায় আমার আরও বেশি নজর থাকবে।

প্রশ্ন: শিক্ষার্থীদের কর্মমুখী করতে গ্রিন ইউনিভার্সিটি কী উদ্যোগ নিয়েছে?
উত্তর: যোগ্য, দক্ষ ও চাকরিযোগ্য গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে সচেষ্ট গ্রিন ইউনিভার্সিটি। শিক্ষা, সহপাঠ্যক্রমিক শিক্ষা ও আধুনিক অনেক বৈশিষ্ট্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি তৈরিতে সহায়তা করছে। সেন্টার ফর ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট (সিসিডি) নামে একটি সেন্টারের মাধ্যমে নিয়মিত ইন্টার্নশিপ ও চাকরির জন্য সর্বাত্মক সাহায্য করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি এই সেন্টারের উদ্যোগে একটি প্রফেশনাল লাইফ স্কিল ডেভেলপমেন্টের কোর্স পড়ানো হচ্ছে। 

প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
উত্তর: গ্রিন ইউনিভার্সিটি এখন যে অবস্থানে আছে, পাঁচ বছর পর এর চেয়ে অনেক ভালো করবে। সে প্রত্যাশা আমার আছে এবং সেই স্বপ্ন দেখি। এ জন্য গবেষণার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সব দিকে নজর দেওয়ার চেষ্টা করব। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে ওয়ার্ল্ড র‍্যাঙ্কিংয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে চাই। এ জন্য আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে দেশের লিডিং ইনস্টিটিউটে রূপ নেবে গ্রিন ইউনিভার্সিটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত