Ajker Patrika

ইংরেজি মাধ্যমে বাংলাদেশ স্টাডিজ পড়ানোর সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃতি করে পড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের অধিভুক্ত ‘বাংলাদেশ স্টাডিজ’ বই পড়ানোর সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন সুপারিশ করা হয়। বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 
 
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সদস্য আজকের পত্রিকাকে জানান, বৈঠকের বিবিধ আলোচনায় বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন কমিটির সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি সেখানে দেশের ইংরেজি মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে সরকারি পাঠ্য পুস্তক না পড়িয়ে, বেসরকারি বিভিন্ন বই পড়ানোর কথা উল্লেখ করেন। যেগুলোতে দেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বিকৃত তথ্য রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। যেটা ষড়যন্ত্র বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

বিষয়টি জানতে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে শিক্ষামন্ত্রীকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। সংসদীয় কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদও কল রিসিভ করেননি। 

কমিটির সদস্যরা আরও জানান, বৈঠকে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজকে সরকারিকরণে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের ও সেই সঙ্গে কাজের সুবিধার্থে প্রেষণে একজন প্রিন্সিপাল নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। কমিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলমান প্রকল্পসমূহের ঠিকাদারদের নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। প্রকল্পগুলোতে বিলম্ব সৃষ্টিকারী ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, তাদের শাস্তি ও জরিমানার আওতায় আনা, প্রয়োজনে ঠিকাদার পরিবর্তন করার সুপারিশ করে কমিটি। 

বৈঠকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়-যেসব ঠিকাদার নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে গড়িমসি করছে, তাদের কালো তালিকাভুক্ত করার জন্য। 

বৈঠকে কমিটির এক সদস্য বলেন, পাঠ্যপুস্তকে যেসব কাগজ ব্যবহার করা হচ্ছে তা নিম্নমানের। একই সঙ্গে ওই সদস্য আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নকাজে অসমতা রয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় অনেক বেশি কাজ হয়েছে, আবার কিছু এলাকায় খুবই কম হয়েছে। 

এ দিকে বৈঠকের কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে, আগের বৈঠকে এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের পেনশন নিয়ে আলোচনা করা হয়। 

সেখানে কমিটির সদস্য মোতাহার হোসেন বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবসরের পর পেনশনের বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। এমনকি অনেকেই পেনশন অর্থ না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেন। 

আরেক সদস্য আহমদ হোসেন বলেন, যেহেতু এই সমস্যার দ্রুত সমাধানের কোনো সম্ভাবনা নেই, তাই শিক্ষকদের পেনশন এককালীন পরিশোধ না করে, দুটো কিস্তিতে প্রদানের অনুরোধ জানান। 
 
একই প্রসঙ্গে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার বলেন, বেসরকারি শিক্ষক ও কর্মচারীদের পেনশন এককালীন পরিশোধ না করে সরকারি কর্মচারীদের অর্ধেক এককালীন এবং বাকিটা মাসিক পেনশন হিসেবে দেওয়া যায় কি না, তা ভেবে দেখার অনুরোধ করেন। 

বৈঠকে অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী বলেন, শিক্ষকদের কাছ থেকে আদায়কৃত চাঁদা এবং স্থায়ী আমানতের সুদ মিলে বছরে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। আর বর্তমানে সুদের হার বাড়ায় এ খাত থেকে বছরে ৫০-৫৫ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। কিন্তু শিক্ষকদের দাবিকৃত অবসর ভাতা পরিশোধে প্রয়োজন ৪৪৪ কোটি টাকা। 

ঘাটতি পূরণের জন্য সরকারের অনুদান বাড়ানোর পাশাপাশি ষষ্ঠ থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত ২ কোটি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বছরে ১০০ টাকা, পাবলিক পরীক্ষার সময় প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা বোর্ডের তহবিল থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দিলে, স্থায়ী সমাধান সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষক ও কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনার বিষয়ে পর্যালোচনা করে, একটি প্রতিবেদন কমিটিতে উপস্থাপনের জন্য সচিব বরাবর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। 

পরে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিষয়টি মন্ত্রণালয় থেকে পর্যালোচনা করে একটি প্রতিবেদন কমিটিতে উপস্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। 

কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও অংশগ্রহণ করেন—কমিটির সদস্য ও শিক্ষা মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবদুল মজিদ, আহমদ হোসেন, বিপ্লব হাসান, আব্দুল মালেক সরকার এবং আজিজুল ইসলাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত