সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে খুন হয় কলেজছাত্র রাহাত

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম রাহাত খুনে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আজ বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ সুরমার হাজীপুর এলাকার একটি ডোবা থেকে চাকুটি উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন ও জেলা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা। 

জানা যায়, গত ২১ অক্টোবর আরিফুল ইসলাম রাহাত প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়। এ সময় চাচাতো ভাই রাফি তার সঙ্গে মোটরসাইকেলে ছিল। চাচাতো ভাইকে কলেজ গেটে রেখে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে কলেজ ক্যাম্পাসে যায় রাহাত। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কলেজের মূল গেট থেকে ২০-২৫ গজ ভেতরে সামসুদ্দোহা সাদী ও তানভীর আহমদ মোটরসাইকেল যোগে পেছন থেকে এসে রাহাতকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

এ ঘটনায় ২২ অক্টোবর রাতে তাঁর চাচা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে তিন জনের নাম উল্লেখ এবং আরও ৫-৭ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা করেন। 

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজার থানা এলাকার সিলাম পশ্চিমপাড়ার মৃত মোবারক আলীর ছেলে সামসুদ্দোহা সাদীকে। অপর দুই আসামি হলেন-একই এলাকার জামাল মিয়ার ছেলে তানভীর আহমদ (১৯) ও দক্ষিণ সুরমার তেতলি ইউনিয়নের আহমদপুর গ্রামের মৃত গৌছ মিয়ার ছেলে ওলিদুর রহমান সানী। 

সিআইডি সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পর সাদী পালিয়ে ঢাকার মিরপুরে অবস্থান নেন। সেখান থেকে গোপনে কুষ্টিয়া যান। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে গতকাল বুধবার বিকেলে তাঁকে সিলেটে পাঠানো হয়। 

এ বিষয়ে মীরাবাজারে সিলেট মেট্রো ও জেলা সিআইডি কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সুজ্ঞান চাকমা বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ইউনিয়নের দুর্গম চর এলাকা থেকে রাহাত খুনের প্রধান আসামি সামসুদ্দোহা সাদীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হত্যায় ব্যবহৃত চাকুটির সন্ধান পায় সিআইডি। চাকুটি হাজীপুর এলাকার একটি ডোবায় ফেলে দেন সামসুদ্দোহা সাদী। উদ্ধার করা চাকুটির দৈর্ঘ্য বাটসহ সাড়ে ৭ ইঞ্চি। 

সুজ্ঞান চাকমা আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সাদী হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। বয়সে সাদী ছিলেন রাহাতের বড়। এ জন্য সিনিয়র হিসেবে রাহাতের কাছে সম্মান চাইতেন। এই সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বের জেরে রাহাতকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন তিনি।