Ajker Patrika

জয়পুরহাটে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

জয়পুরহাটে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার দায়ে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. আব্বাস উদ্দীন এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। 

বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম জুয়েল হোসেন (৪৭)। তিনি জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার রসুলপুর দাহাড়পুকুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। 

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জুয়েল হোসেনের বাবা আব্দুল জলিল (৬৭) এবং মা লিলি বেগম (৬০)। 

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার রসুলপুর দাহারপুকুর গুচ্ছ গ্রামের জুয়েল হোসেনের সঙ্গে লাইলী খাতুনের (২০) বিয়ে হয় ২০০৫ সালে। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকের দাবিতে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি মিলে লাইলী খাতুনকে নির্যাতন করতেন। নির্যাতন সইতে না পেরে, একপর্যায়ে লাইলী খাতুন তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যান। বিষয়টি নিয়ে গ্রাম্য সালিসও বসে। 

সালিসের সিদ্ধান্ত মতে, লাইলী খাতুনকে তাঁর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি আর নির্যাতন করবেন না শর্তে অঙ্গীকার করেন। ফলে লাইলী খাতুন তাঁর স্বামীর বাড়িতে ফিরে গিয়ে পুনরায় ঘর সংসার শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন। ২০০৭ সালের ২৩ জুলাই তিনি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। সেদিন রাতে যৌতুকের দাবিতে লাইলী খাতুনকে এলোপাতাড়ি মারপিট করা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। 

ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে জুয়েল হোসেন প্রচার করেন যে, তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। নিহতের স্বজনেরা খবর পেয়ে পরদিন ২৪ জুলাই সকালে লাইলী খাতুনের বাম পায়ের বুড়ো আঙুল রক্তাক্ত জখম দেখতে পান। এতে তাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। ফলে নিহতের বড় বোন রাবেয়া খাতুন বাদী হয়ে সেদিনই ক্ষেতলাল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়। সে সময়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ক্ষেতলাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আতিয়ার রহমান। তিনি মামলাটির তদন্ত শেষে ২০০৭ সালে ৩১ অক্টোবর তিনজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ঘটনার প্রায় ১৬ বছর পর মামলার যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে (আজ) মঙ্গলবার আদালত রায় ঘোষণা করেন। 

এ বিষয়ে জয়পুরহাট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল লতিফ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রায় ঘোষণার পরপরই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’ 

মামলায় সরকারি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ‘আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপিল করব।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘালয়ে হানিমুনে গিয়ে বর খুন, নিখোঁজ নববধূকে উদ্ধারে নেমেছে ড্রোন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান বিচার ও কিছু প্রশ্ন

‘তাণ্ডব’ সিনেমার শো চলার সময় ছায়াবাণী হলে দর্শকদের ভাঙচুর, টাকা লুট

‘৫ মিনিট রুলস’ যেভাবে ইলন মাস্কের জীবনে সাফল্য আনল

যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশের গার্মেন্টসের বাজার দখলের চেষ্টা ভারতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত