Ajker Patrika

ব্রিটিশদের ‘রাষ্ট্রদ্রোহ আইন’ নতুন মোড়কে আনছে মোদি সরকার

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৩, ২০: ৩৬
Thumbnail image

ব্রিটিশ উপনিবেশ যুগের রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বদলের উদ্যোগ নিয়েছে ভারত সরকার। গতকাল শুক্রবার ভারতের সংসদে সংশোধিত আইনের প্রস্তাব তোলা হয়। চলতি বর্ষা অধিবেশনেই পার্লামেন্টের দুই কক্ষে বিলটি নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বেশ কয়েক বছর ধরে আইনটির অপব্যবহার নিয়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে বিরোধীরা। বিরোধী মত দমনেই এই আইনের ব্যবহার বেশি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সমালোচকেরা।

অবশেষে আইনটি পরিবর্তনের উদ্যোগ নিল সরকার। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সে অর্থে এর কোনো পরিবর্তন আসছে না। শুধু নাম পরিবর্তন করে নতুন মোড়কে একই আইন আনছেন নরেন্দ্র মোদি।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত সরকার রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের নিজস্ব সংস্করণ আনার পাশাপাশি নারী ও শিশু নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যৌন নির্যাতনের জন্য আরও কঠোর শাস্তির বিধান রেখে একটি বিল উপস্থাপন করেছে।

ব্রিটিশরা ভারত শাসনের সময় ১৮৬০-এর দশকে স্বাধীনতাবাদীদের দমনের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন চাপিয়ে দেয়। এ আইন অনুসারে জনগণকে সরকারবিরোধী হতে বা সরকারবিরোধী কাজে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কোনো কাজ করাকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ বলে গণ্য করা হয়। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচকেরা বলেন, এই সরকার ভিন্ন মতাবলম্বীদের ‘দেশের প্রতি অনুগত নয়’ আখ্যা দিয়ে তাঁদের ওপর রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ চাপিয়ে দেয়। এতে দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ আজীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। 

গতকাল শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সাংবাদিকদের বলেন, ভারতীয় আইনপ্রণেতাদের কাছে প্রস্তাবিত এই বিলে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বাতিল করে নতুন আইন চালুর কথা বলা হয়েছে। 

এ বিষয়ে আইন বিশেষজ্ঞ চিত্রনশুল সিনহা এপিকে বলেন, ‘সরকারের প্রস্তাবিত বিধানটি “ভারতের সার্বভৌমত্ব, ঐক্য ও অখণ্ডতাকে হুমকিতে ফেলে”এমন সব কাজকে শাস্তির আওতায় আনবে।’ এতে সাত বছর থেকে আজীবন কারাদণ্ড হতে পারে। 

তবে তাঁর মতে, নতুন আইনের ফলে ব্রিটিশ আমলের আইনটি কার্যত বিলুপ্ত হবে না। সরকার এর বিধান পুনর্বিন্যাস করবে মাত্র। এটি শুধু নামের পরিবর্তন। কার্যত কিছুই বদলাচ্ছে না। 

নারী ও শিশুর সুরক্ষায় উত্থাপিত বিল অনুসারে বিয়ে, চাকরি ও পদোন্নতির প্রলোভনে বা পরিচয় গোপন করে যৌন নির্যাতন অপরাধ বলে গণ্য হবে। 

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ আইনে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। শিশু ধর্ষণের শাস্তি হতে পারে মৃত্যুদণ্ড। 

এই বিল পাস হলে গণপিটুনির জন্য সাত বছর কারাদণ্ড থেকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘এই বিলগুলো আমাদের অপরাধীদের বিচারব্যবস্থা পাল্টে দেবে বলে আমি সংসদকে নিশ্চিত করতে পারি। অপরাধ বন্ধে নজির সৃষ্টির জন্য শাস্তি কার্যকর করা হবে।’ 

এ বছর ভারতীয় পার্লামেন্টের দুই কক্ষই এ দুই বিল নিয়ে পর্যালোচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত